Year-20 # Issue-21 # 7 July 2013

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়ানোর ঘোষণার পরও মজুদ গড়ে তুলছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিজস্ব প্রতিবেদক :  পবিত্র রমজানের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। রমজানকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্যের মজুদ গড়ে তুলছে অসাধু একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ইতোমধ্যে ওই ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে এখনো কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। রাজধানীর শতাধিক ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিশনে ওই মালামাল গুদামজাত করার অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সূত্র জানায়, এ রমজানকে পুঁজি করে ক্রেতাদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে ভোগ্যপণ্যের মজুদ গড়ে তুলছে একশ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীরা মালামাল মজুদের পর তা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে কিংবা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেয়ারও পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায় এ অনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের দাম।
ওদিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ ও প্রশাসন রমজানকে কেন্দ্র করে ভোগ্যপণ্যের মজুদ গড়ে না তোলার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন। আবার মজুদের আগাম তথ্য সংগ্রহের জন্য মাঠে নামানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরকেও। তারপরও অনেকেই সংশয়মুক্ত হতে পারছেন না।
প্রসঙ্গত, রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং আইন-শৃ´খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে  ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি একটি বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে রমজানে বেশকিছু সীদ্ধান্ত গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়া হয়। যদিও মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের এসব বাস্তবায়ন নিয়ে বরাবরের মত সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী সূত্র জানায়, চিনি, মসুর ও মোটর ডাল, খেজুর, ছোলা ও পেঁয়াজসহ মসলাজাতীয় পণ্য ইত্যাদির দাম রমজানের আগেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।এতে করে সাধারণ ক্রেতারা পড়েছে চরম বিপাকে। মুনাফালোভীরা ইতোমধ্যে এসব পণ্যের মজুদও গড়ে তোলেছে।
এরপর বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজটি বর্তমানেও বাস্তবায়ন করছে ব্যবসায়ী চক্রটি। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নজরদারি তাদের কোন প্রকার বেকায়দায় ফেলতে পারে না। আবার অভিযোগ রয়েছে, মুনাফালোভী ব্যবসায়ী চক্রটি ক্ষমতাধর প্রভাবশালিসহ প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এ ধরনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।  ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য রমজান মাসে বৃদ্ধি পাবে না। তারা আসন্ন রমজান মাসে ভোক্তাদের সুবিধার্থে ব্যবসায়ীগণ চিনি ও তেলের বিক্রয় মূল্য ঘোষণা করেছেন। ঘোষিত মূল্য মোতাবেক চিনি মিল গেটে প্রতি কেজি ৪১.৫০ টাকা, পাইকারি সর্বোচ্চ প্রতিকেজি ৪২.৫০ টাকা এবং খুচরা সর্বোচ্চ প্রতিকেজি ৪৫.৫০ টাকায় বিক্রয় করা হবে। পামঅয়েল মিল গেটে প্রতি লিটার ৬৯ টাকা, পাইকারি সর্বোচ্চ প্রতিলিটার ৭০ টাকা এবং খুচরা সর্বোচ্চ প্রতিলিটার ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা। সয়াবিন (লুজ) মিল গেটে প্রতি লিটার ১০১ টাকা, পাইকারি সর্বোচ্চ প্রতি লিটার ১০২ টাকা এবং খুচরা প্রতি লিটার সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা থেকে ১০৮ টাকা। এছাড়া পেট বোতল প্রতিলিটার ১২৭ টাকা, যা পূর্বে ছিল ১৩২ টাকা এবং ৫ লিটার বোতল ২৫ টাকা কম মূল্যে বিক্রয় করা হবে। বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদের সভাপতিত্বে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সাথে এ সকল নিত্য পণ্যের মূল্য, সরবরাহ ও মজুদ নিয়ে গত রোববার এক জরুরি মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় বলা হয়, আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য, আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম অয়েল), চিনি, ছোলা, মশুর ডাল, খেজুরের মজুদ ও সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। বাজারে এগুলোর সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে, কোন ধরনের সমস্যা হবে না। এ সকল পণ্যের আমদানি, এলসি, পাইপ লাইনে থাকা পরিমাণ সন্তোষ জনক রয়েছে। আসন্ন রমজান মাসের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পণ্য মজুদ আছে বলে সভায় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। আসন্ন রমজান মাসে চিনি ও তেল নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয়ের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এফবিসিসিআই-এর নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিটি বাজারে মূল্য তালিকা টাঙ্গানো এবং নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি সরকারি মনিটরিং টিম কার্যক্রম জোরদার করবে। নির্ধারিত মূল্যে এ সকল নিত্যপণ্যের বিক্রয়, সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। মূল্য যাতে কোন কারণে অস্বাভাবিক না হয়, সেজন্য ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সকলে সতর্ক থাকবে। আশাকরা হচ্ছে এবার কোন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হবে না এবং সরবরাহ পর্যাপ্ত ও স্বাভাবিক থাকবে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হয়। এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআই-এর সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, এফবিসিসিআই-এর সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মর্তজা রেজা চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (মহাপিরচালক, ডব্লিউটিও) অমিতাভ চক্রবর্তী, অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) মনোজ কুমার রায়, টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারওয়ার জাহান তালুকদার, সিটি গ্র“পের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, টিকে গ্র“প, এস আলম গ্র“প, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লি. মেঘনা গ্র“প, এস এ ওয়েল রিফাইনারি লি. এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি রমজানে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে প্রায় দুই লাখ টন। চিনির চাহিদা থাকে দেড় লাখ টন। ছোলার চাহিদা থাকে ৫০ হাজার টন। আর মসুর এবং মোটর ডালের চাহিদা থাকে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টনের মত। রমজানে বেসরকারি পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের আমদানির পাশাপাশি টিসিবি’র মাধ্যমে আমদানি করে ভর্তুকি মূল্যে তা সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা মূল্যের চার লাখ ৮৩ হাজার টন ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে এক লাখ ২৩ হাজার টন ভোজ্যতেল, দেড় লাখ টন অপরিশোধিত চিনি, ২৫ হাজার টন মোটর ডাল, এক লাখ ৮৫ হাজার টন গম ও মসুর ডাল আমদানি হয়েছে। দেশের শীর্ষ আমদানিকারক যথাক্রমে আবুল খায়ের গ্র“প, সিটি গ্র“প, বিএসএম গ্র“প, মেঘনা গ্র“প, টিকে গ্র“প, এস আলম গ্র“প, আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারিসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য আমদানি করে।
সরকারি বাংলো বরাদ্দে নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারি বাংলো বরাদ্দে নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা নেই। এক্ষেত্রে বিরাজ করছে চরম নৈরাজ্য। অধিকাংশ বাংলো বরাদ্দের ক্ষেত্রেই ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম) অনুসরণ করা হয়নি। তাছাড়া কিছু সরকারি বাংলো সরকারি বরাদ্দ ছাড়াই বেদখল হয়ে রয়েছে। যদিও সরকারি বাড়ি বরাদ্দ নীতিমালা ১৯৮২ অনুযায়ী সরকারের ৮ ধরনের বাড়ি রয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, সুপিরিয়র ও বাংলো। এর মধ্যে আইন মোতাবেক বাংলো টাইপের বাড়িগুলোর বরাদ্দ দিতে হয় ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্টের ভিত্তিতে। রাজধানীর অধিকাংশ সরকারি বাংলোর ক্ষেত্রেই এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। বরং ইচ্ছেমাফিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি বাংলো বরাদ্দে অনিয়মের কারণে ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্টের ভিত্তিতে অনেক কর্মকর্তাই বাংলো বাড়ি বরাদ্দ পায়নি। বরং এক্ষেত্রে অনেক পেছনের সারির কর্মকর্তাদের নামে বাংলো বরাদ্দ করা হয়েছে। এমনকি ওএসডি পদে কর্মরত একজন যুগ্ম-সচিবের নামেও বাংলো বরাদ্দ রয়েছে। সরকারি তালিকানুযায়ী রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় সংরক্ষিত ‘ক’ তালিকাভুক্ত পরিত্যক্ত বাংলো শ্রেণীর সর্বমোট ৪০টি বাড়ি সরকারি আবাসন পরিদফতর থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩ মন্ত্রীর নামে, ৮টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বিচারপতিদের। তাছাড়া অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের নামে ১টি এবং সচিব বা সচিবের চেয়ে নিম্ন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নামে বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০টি। বাকি বাড়িগুলোর মধ্যে ভারতীয় দূতাবাসের দখলে রয়েছে একটি বাংলো এবং অন্য বাংলোগুলোতে বিভিন্ন সংস্থার অফিস রয়েছে। তাছাড়া মিন্টু রোড, বেইলি রোড ও সার্কিট হাউস রোডের মোট ৮৪টি বাংলো শ্রেণীর বা সমমানের বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি বাড়ি বরাদ্দ রয়েছে সচিব ও সচিবের নিম্ন পদমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নামে।
সূত্র জানায়, সরকারি বাংলো বরাদ্দের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেছেন। এ প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স অনুযায়ী বাংলো বরাদ্দের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির পাশাপাশি রাজধানীতে বাংলো শ্রেণীর বাড়ি বরাদ্দের তালিকা চেয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর থেকে হাইকোর্টের ওই রুলের জবাবে রাজধানীর ১২৮টি সরকারি বাংলোর তথ্য হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্টে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ধানমন্ডি এলাকার পরিত্যক্ত বাংলো শ্রেণীর ২০টি বাড়ির মধ্যে বরাদ্দ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডা. মোদাচ্ছের আলী, বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাজ রেকা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ওএসডি) আখতার আহম্মেদ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু বকর সিদ্দিক ও অতিরিক্ত সচিব শিরিন আখতার। বাকি বাংলোগুলোর মধ্যে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সেইফ হোম, ধানমন্ডি থানা, বেপজা অফিস, উপবিভাগীয় প্রকৌশল গণর্পূত রক্ষণাবেক্ষণ উপবিভাগ-১ এর কার্যালয়, ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ভারতীয় দূতাবাসের দখলে ১টি বাংলো, অঁলিয়স ফ্রঁসেস অফিস, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার অফিস, বস্ত্র দফতরের অফিস, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার অফিস। গুলশান এলাকার ২০টি বাংলোর মধ্যে রবাদ্দ দেয়া হয়েছে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আবুল হাছান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবউল আলম হানিফ, দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, বিচারপতি রেজাউল হাসান, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেন, বিচারপতি আফজাল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও ৬তলা বিশিষ্ট ভবনে ১০ জন সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সূত্র আরো জানায়, সরকারি বাকি বাংলোগুলোর মধ্যে জার্মান দূতাবাসের অনুকূলে ১টি, সিটি কর্পোরেশন উত্তরের অফিস, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়, পাকিস্তানি দূতাবাস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন ১টি, ভারতীয় দূতাবাস, কাতার দূতাবাস, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতর ও সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বাড়ি রয়েছে। তাছাড়া মিন্টু রোড, হেয়ার রোড ও পার্ক রোডের ৫৪টি বাংলোর মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (সচিব) আবদুস সোবাহান গোলাপ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, গণপূর্ত সচিব ড. খন্দকার শওকত হোসেন, স্থানীয় সরকার সচিব মনজুর হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান, ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন আবদুল্লাহ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ম. নজরুল ইসলাম খান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব সুনীল কান্তি বোস, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম রোকেয়া সুরতানা, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান। তাছাড়া বাকিগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মা ও সুগন্ধা, পুরিশ কমিশনারের অফিস, প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহারের জন্য ১টি, প্রধান বিচারপতির ব্যবহারের জন্য ১টি, অফিসার্স ক্লাব, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের জন্য ১টি, ঢাকার জেলা প্রশাসকের জন্য ১টি, বিরোধী দলের নেতার জন্য ১টি, ঢাকার এসপির জন্য ১টি বাংলো ছাড়া বাকিগুলো বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বেইলি রোড ও সার্কিট হাউস রোডের মোট ৩০টি বাংলোর মধ্যে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অর্তিকত সচিব একেএম ইয়াহিয়া চৌধুরী, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের যুগ্ম-সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মইন উদ্দিন খন্দকারের নামে ১টি করে বাংলো বরাদ্দ দেয়া আছে। বাকিগুলো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এদিকে ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স অনুযায়ী ৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতিরা। আর মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব রয়েছেন ১২ নম্বর পদমর্যাদাক্রমে। আর পদমর্যাদাক্রমের ১৫ নম্বরে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পদমর্যাদাক্রমের ১৬ নম্বরে রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। ১৯ নম্বরে রয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবগণ। কিন্তু বাস্তবে হাইকোর্টের অনেক বিচারপতিই এখন পর্যন্ত সরকারি বাংলো বরাদ্দ পাননি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন