সিদ্দিকুর রহমান
বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রতি নজর
পড়েছে বিশ্বের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের। প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতে
বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে দেশের
জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রায় ৪
হাজার কোটি টাকার
রফতানি অর্ডার পেয়েছে। ডেনমার্ক, জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ও আফ্রিকার অনেক দেশ এখন
বাংলাদেশের জাহাজ আমদানির দিকে ঝঁুকছে। তারা বিনিয়োগেও এগিয়ে আসছে। আশা
করা হচ্ছে, আগামী
৫ বছরের মধ্যে
সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসবে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে। এ সময়ের
মধ্যে এখাতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশ জাহাজের চাহিদার ক্ষেত্রে এখন পুরো
আত্মনির্ভরশীল দেশই নয়
সেইসঙ্গে জাহাজ রফতানিকারক দেশও। কয়েক বছরের
মধ্যে এ খাত
গার্মেন্টের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাতে পরিণত
হবে। চলতি অর্থবছর (২০১২-'১৩) জাহাজ
রফতানি খাতে ২৫৬
মিলিয়ন ডলার আয়
হবে বলে আশা
করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশের জাহাজ
নির্মাণ শিল্পে প্রায় ১
লাখ দক্ষ এবং
দেড় লাখের বেশি
অদক্ষ শ্রমিক কাজ করছেন। এ তথ্য জানা
গেছে, নেৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে।
সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে,
জাহাজ নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে এরইমধ্যে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের ডেনিস, জার্মান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে
গেছে। ইউরোপের ২০টি কোম্পানির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে
বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগকে খুবই লাভজনক বিনিয়োগ বলে অভিহিত করেছে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশ থেকে জাহাজ সংগ্রহের ক্ষেত্রে আগ্রহের মূল কারণ
হচ্ছে, বাংলাদেশের জাহাজ বিশ্বমানের অত্যাধুনিক জাহাজ এবং
দামে কম। ভারত,
চীন, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপানের তুলনায় বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণে ব্যয় ৩০ থেকে
৩৫ শতাংশ কম।
এখানে শ্রমিকের সহজলভ্যতা, স্বল্প মজুরি, পরিশ্রমী দক্ষ কর্মীর নিশ্চয়তা, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অপেক্ষাকৃত কম লাভে
জাহাজ নির্মাণের আগ্রহ, মূলধনের নিরাপত্তা এবং ভেৌগলিক সুবিধা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে।
সূত্রমতে, বর্তমানে জাহাজের বিশ্ব চাহিদার তুলনায় প্রতিবছর জাহাজ সরবরাহ হচ্ছে ৭৫ শতাংশ। বিশ্বে জাহাজ সরবরাহের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ
ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। চাহিদার এ ঘাটতির আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য
হচ্ছে ১ লাখ
৫০ হাজার মার্কিন ডলার। আগামী ৫
বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এ ঘাটতি চাহিদার ১ শতাংশ জাহাজ
সরবরাহ করতে পারলে
তা থেকে বছরে
১ হাজার ৫শ'
কোটি ডলার আয়
করতে পারবে। বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড, কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেড, হাইস্পীড শিপবিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড মনে করে
উপযুক্ত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, ব্যাংকের পর্যাপ্ত ঋণ সহায়তাসহ এ শিল্প বিকাশে অনুকূল নীতি গ্রহণ
করা হলে আগামীতে বাংলাদেশ জাহাজের বিশ্ব চাহিদার ৫ থেকে ১০
শতাংশ সরবরাহ করতে সক্ষম
হবে।
আনন্দ
শিপইয়ার্ড এন্ড শি্লপওয়েজ থেকে জানা গেছে,
বর্তমানে বিশ্বে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ছোট ও
মাঝারি আকারের সমুদ্রগামী জাহাজের চাহিদা। ইউরোপের শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের খরচ এশিয়ার শিপইয়ার্ডের চেয়ে অনেক
বেশি। বাংলাদেশে নির্মিত জাহাজের ওপর উন্নত
দেশগুলোর আস্থা ও
আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে এখন প্রয়োজন দেশের বিভিন্ন শিপইয়ার্ডকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণসহ আরও নতুন শিপইয়ার্ড গড়ে তোলা। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ভবিষ্যত্ নিয়ে ভাবছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও এ
শিল্পের উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে
ও কম সুদে
ঋণ প্রদানের জন্য সকল
বাণিজ্যিক ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী এ এম
এ মুহিত, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, নেৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানও জাহাজ
নির্মাণ শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। আনন্দ
গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহেল বারি Èবাংলাদেশ সময়'-কে
বলেছেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্প হচ্ছে একটি
শ্রমঘন শিল্প। বেকার সমস্যা জর্জরিত বাংলাদেশে এ শিল্প
আলোকবর্তিকা হয়ে দেখা
দিয়েছে। বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশ সবচেয়ে কম দামে
সবচেয়ে ভালো মানের
ও কারিগরি উত্কর্ষতায় শ্রেষ্ঠ জাহাজ নির্মাণ করতে পারছে। সকল দেশই
অপেক্ষাকৃত কম খরচে
ভালো মানের জাহাজ
নির্মাণ করতে চাচ্ছে। এখন বাংলাদেশকে এ সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।
জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রে বাত্সরিক ২০ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট আছে। বাংলাদেশকে এ মার্কেটের অন্তত ১০
শতাংশ টার্গেট করে আগামী
৫ বছরের মধ্যে
শতাধিক আধুনিক শিপইয়ার্ড গড়ে তুলতে
হবে। এখন থেকে
জাহাজ নির্মাণ শিল্পের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজে নেমে পড়লে
আগামী ৫ বছরের
আগেই জাহাজ রফতানি করেই বাংলাদেশের পক্ষে বছরে
১শ' কোটি ডলার
আয় করা সম্ভব
হতে পারে। আগামীতে বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গ, জাপানের ওসাকা, পোলান্ডের গদানস্ক (সাবেক লেনিন
শিপইয়ার্ড)-এর মতো
বিশাল শিপইয়ার্ড গড়ে তুলতে
সক্ষম হবে। আনন্দ
শিপইয়ার্ড থেকে এরই
মধ্যে ৩শ'টির
বেশি নেৌযান তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে
জাহাজ, টাগবোট, প্যাসেঞ্জার ভ্যাসেল, নেৌ-বাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জন্য পেট্রোল বোটসহ বিভিন্ন ধরনের যানি্ত্রক নেৌযান। বাংলাদেশ নেৌবাহিনীর পরিচালনায় খুলনা শিপইয়ার্ড এখন একটি খুবই
লাভজনক ও সম্ভাবনাময় শিপইয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। এ শিপইয়ার্ডও বড় ধরনের
সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণে সক্ষম। বর্তমানে এ শিপইয়ার্ডে নির্মিত হচ্ছে সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক ও অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ। এ শিপইয়ার্ডের প্রতিও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
রাজধানীমুখী মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদের
লম্বা ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরতে শুরু
করেছেন লোকজন। লঞ্চ, বাস
ও রেল স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া
ভিড়। তবে পথে
পথে ভোগানি্ত ও অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সবগুলো লঞ্চ শুক্রবার ভোর থেকেই
সদরঘাটে ভিড়তে শুরু
করে। প্রতিটি লঞ্চের মেঝে, বাম্পার, সঁিড়ি এবং ছাদে
বসে মানুষ ঢাকা
ফিরেন। লঞ্চগুলোতে ঠাসাঠাসি করে জীবনবাজি রেখে উঠেছেন যাত্রীরা। আর পদে
পদে বিপদ, নানা
প্রতারণা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে জবরদসি্ত করারও অভিযোগ করেন যাত্রীরা। তবে ঈদ পরবর্তী পূর্বাঞ্চলের মহাসড়কগুলো যানজট মুক্ত। তাই পূর্বাঞ্চলের যাত্রীরা স্বসি্ততে ঢাকায় আসতে পারছেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের
ছুটি কাটানোর আনন্দে এ দুর্ভোগকে যেন হাসিতে উড়িয়ে দিচ্ছে সবাই। আর এতকিছুর পরে ঠিকঠাক মতো ফিরতে
পেরেই যেন স্বসি্ত সবার। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের
আনন্দ উপভোগ করে ফিরে
আসা এক নারী
বলেন, একটু কষ্ট
হয়েছে। কিন্তু বছরে এই
৭/৮ দিন
ছুটি অনেক কিছু।
লঞ্চ পরিবহণের এক কর্মকর্তা বলেন, সারা বছর
ব্যবসা করি না।
ওই দিনের আসায়
থাকি। মোটামুটি স্টাফদেরও অনেক সময়
বাকি থাকে। আমরা
ওদের টাকা-পয়সা
দিতে পারি না।
আমরা ঈদের সময়
ওদের ২/৪
মাসের যে পাওনা
টাকা থাকে তা
দিয়ে দিই। শুক্র
ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায়
রোববার ঢাকায় ফেরা
মানুষের চাপ আরো
বাড়বে বলে মনে
করেন সংশি্লষ্টরা।
যানজটমুক্ত পূর্বাঞ্চলের মহাসড়ক: ঈদ পরবর্তী পূর্বাঞ্চলের মহাসড়কগুলো যানজট মুক্ত। তাই পূর্বাঞ্চলের যাত্রীরা স্বসি্ততে ঢাকায় আসতে পারছেন। তবে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলায় কাজলা থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় যাত্রীদের যানজটে পড়তে হচ্ছে। পূর্বাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী যেসব যাত্রী অগ্রিম টিকিট ক্রয় করেননি তাদের টিকিট পেতে ভোগানি্তর শিকার হতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার বাসযাত্রী, বিভিন্ন পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এশিয়া ক্লাসিক পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আবু তৈয়ব বলেন, পূর্বাঞ্চলের মহাসড়ক যানজট মুক্ত রয়েছে। তাই রাস্তায় যাত্রীদের ভোগানি্তর শিকার হতে হচ্ছে না। তবে কাজলা থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় যাত্রীর ভোগানি্ততে পড়তে হচ্ছে। এই অল্প রাস্তা অতিক্রম করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। এই রাস্তাটুকুতে অনেক খানাখন্দ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সকালের দিকে যাত্রীর চাপ কম ছিল। বিকালে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। নোয়াখালী থেকে সপরিবারে ঢাকায় আসা গৃহিনী শামছুন্নাহার বলেন, মহাসড়কে কোনো যানজট ছিল না। অগ্রিম টিকিট ক্রয় করায় টিকিট পেতেও কোনো সমস্যা হয়নি। তাই ঈদ শেষে স্বসি্ততে ঢাকা আসতে পেরেছি।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার জহিরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দরবন, রাঙ্গামাটির যাত্রীদের ঢাকায় আসাতে এবং ঢাকা থেকে ঐসব জেলায় যাওয়ার যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। অনেকে টিকিট না পেয়ে ভোগানি্তর শিকার হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লম্বা ছুটি পেয়ে অনেকে এসব জায়গায় বেড়াতে গেছেন। আবার ছুটি শেষ হওয়ায় সবাই এক সঙ্গে ঢাকায় ফেরত আসছেন। অনেকে ঈদের ছুটিতে এখনো এসব স্থানে ভ্রমণে যাচ্ছেন। ইউনিক পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আরিফ বিল্লাহ বলেন, যত দিন যাচ্ছে ঢাকাগামী যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। অনেক যাত্রী ঢাকা থেকে কুমিল্লা, ফেনী, কক্সবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মেৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী যাচ্ছেন। ২৫, ২৬ ও ২৭ আগস্ট এ তিনদিন ঢাকায় ফেরত আসা যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি থাকবে।
গতকাল দুপুর থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে শুরু হয়েছে উপচে পড়া ভীড়। সবাই কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় এসে নিজ নিজ ঠিকানায় ফিরছেন। ঈদের আগে যেমন জনস্রোত ঢাকার বাইরে যায়। এখন ঠিক তার বিপরীত জনস্রোত এখন ঢাকামুখি। ঈদের আগে নাড়ীর টানে বাড়িতে ফেরা আর ঈদের পর তেমনি কর্মের টানে ঢাকায় ফেরা। কাজের তাগিদে সবাই তাদের কর্মস্থলে ফেরার জন্য ঢাকা আসছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সম্ভাবনা না থাকায় শিক্ষক সমাজ হতাশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান মহাজোট সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ
সদস্যরা বাজেট অধিবেশনে এমপিওভুক্তির পক্ষে বারবার জোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই বাজেটে এমপিও বঞ্চিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও'র
কোন সম্ভাবনা না থাকায়
শিক্ষক সমাজ দারুণভাবে হতাশ। গত
শুক্রবার তোপখানাস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বীকৃতি/মঞ্জুরী প্রাপ্ত সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, ভোকেশনাল ও কৃষি ডিপে্লামা ইনস্টিটিউট (সকল স্তরের) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবিতে নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারি পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নন এমপিও
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. আলমগীর কবীর মিলন।
সংবাদ
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, নন
এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক এম. সুশান্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক বাবুল আক্তার, দপ্তর সম্পাদক প্রভাষক সুব্রত দাস, অধ্যক্ষ নন্দিতা রানী পাল,
মোঃ নূর ই
আলম সিদ্দিক, মাও. মোঃ
আব্দুল মন্নাফ, মাও. মোঃ
কোরবান আলী, মোঃ
জাহিরুল আলম, প্রভাষক জয়তীষ রঞ্জন মন্ডল
ও বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারি পরিষদের সভাপতি মোঃ হানিফ
উলাহ, সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম জহিরুল ইসলাম, সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন স্বপন ও
সাধারণ সম্পাদক মোকদ্দেম হোসেন, শাহ& মোঃ
রাশেদুল ইসলাম তপন
ও এস.এম.এস শাহজাহান প্রমুখ। সংবাদ
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলমগীর কবীর মিলন
বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার
ক্ষমতা ছাড়ার পূর্ব
মুহূর্তে শতভাগ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এমপিও না
দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত ৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে থাকেন। যে কারণে আমরা
এমপিও বঞ্চিতরা প্রাণপণ চষ্টো চালিয়ে মহাজোট সরকারকে বিজয়ী করেছিলাম। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতি বছরই
নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।
প্রথম বছর ১৬১২টি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে এমপিওভুক্ত বন্ধ রাখা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বিগত দিনে
আন্দোলনরত অবস্থায় কেন্দ্রীয় কমিটির ১২ সদস্যের টিম তার দপ্তরে ডেকে নিয়ে গত
২৭ জুন এক
বৈঠকের পর ওয়াদা
করে বলেছিলেন, আগামী ২৭
জুলাইয়ের মধ্যে আপনাদের ন্যায্য দাবী অথর্াত্ এমপিওভুক্তি করে দিবো। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাসের নামে নিরাশার মিথ্যা চোরা বালুচরে ডুবিয়ে ৭ হাজারের উপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ
১৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারিকে হতাশায় নিমজ্জিত করেছেন। ইতোমধ্যে অর্থাভাবে বিনা চিকিত্সায় মানসিক ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে গত
২১ আগষ্ট সেবিয়া মাধ্যঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান, মহেশপুর, ঝিনাইদহ মৃতু্যবরণ করেছেন এবং এসএম
সুলতান ফাইনআর্ট কলেজ, যশোর'র প্রভাষক গেৌতম কুমার বিশ্বাস'র স্ত্রী (স্বামী অর্থ যোগানে ব্যর্থ হওয়ায়) অত্মহননের পথ বেছে নেন
এবং একটি শিশু
সন্তান রেখে গেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান
মেনন এম.পি
বলেছিলেন, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখা না
হলে তিনি স্থায়ী কমিটির সভাপতি থেকে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু তিনি তার
ওয়াদা অনুযায়ী পদত্যাগ করেননি। সম্মেলনে তিনি বলেন, এসব
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিরা বিনা বেতনে
মানবেতর জীবন-যাপন
করছেন। তারা দৈনন্দিন জীবনে পদে পদে
বিড়ম্বনার শিকার। এ রকম
পরিস্থিতিতে তারা যথাযথ
পাঠদানের ভিতর দিয়ে
সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল তার
প্রমাণ মেলে। ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার একালে শিক্ষকগণের পক্ষে আর স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়া সম্ভব নয়।
এহেন পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবন থেকে
পরিত্রাণ করে দেশ
ও জাতির কল্যাণে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২৬ আগস্টের মধ্যে এমপিওভুক্ত করা না হলে আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
ঈদে কেমন ছিলেন ছয় তারকা?
বিনোদন প্রতিবেদক
ঈদ আসার প্রায় দু’মাস আগেই তারকাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। দেশে টিভি চ্যানেল বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে বাড়ছে ব্যস্ততা। ঈদের মাত্র কদিন আগে তারা হাতে কিছুটা সময় পান। ঈদের ছুটিতে তারকারা কে কোথায় ছিলেন, কেমন হলো এবার তাদের ঈদ? এই প্রশ্ন নিয়ে বাংলানিউজ কথা বলে আমাদের মিডিয়ার জনপ্রিয় ক’জন তারকার সঙ্গে।
ঘুমের মধ্যেই ঈদ শেষ : মোশাররফ
জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম এবার ঈদের দুদিন আগেও একটি নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেন। ঈদে তিনি ঢাকাতেই ছিলেন। স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ঈদের ছুটির কয়েকটা দিন আরাম করে ঘুমিয়েছি। ঈদের দিনেও কোথাও বের হয়নি। ঘুমের মধ্যেই আমার ঈদ শেষ। এবার ঈদে প্রায় ৩০টি একক নাটক আর ৬ পর্বের চারটি ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও মোশাররফ করিম টিভির সামনে বসেছেন খুব কম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদে আমি টেলিভিশন দেখি না। এমনকি নিজের নাটকগুলোও আমি দেখতে বসি না। আমার মনে হয়, যে ধরনের অভিনয় করা দরকার তা আমি করতে পারি নি। তাই এসব নাটক দেখতে বিব্রত লাগে। তবে একটা নাটক অবশ্য খুব মন দিয়ে দেখেছি। নাটকটির নাম ‘অথেলো সিনড্রেলা’। ঈদের চতুর্থ দিন এটি বিটিভিতে প্রচার হয়েছে। এটি আমার স্ত্রী রোবেনা রেজা জুঁইয়ের লেখা, পরিচালনা করেছেন রাজীব রসুল। এ নাটকে আমার স্ত্রী অভিনয়ও করেছে। কাজেই না দেখে উপায় ছিল না।
ঈদ কেটেছে রান্নাঘরে : তিশা
জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিশার এবার ঈদ কেটেছে রান্নাঘরে। ঈদের ছুটিতে তিনি রান্নাবান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিশা বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন শুধু কয়েকঘণ্টার জন্য আম্মুর বাসা আর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলাম। এছাড়া ঈদের পুরো ছুটি বাসায় কাটিয়েছি। অন্য ঈদে আম্মুর বাসা আর শ্বশুরবাড়ি থেকে রান্না করা খাবার আসে আমাদের বাসায়। এবার আমি বাসায় নিজেই রান্নার কাজটা করেছি। ঈদের ছুটিতে যারা বেড়াতে এসেছেন তারা আমার রান্নার প্রশংসা করেছেন। তিশা আরো জানালেন, ঈদের তিনদিন আগেও তাকে নাটকের শুটিং করতে হয়েছে। আবার এরই মধ্যে আরেক ঈদের কাজ চলে এসেছে হাতে। রোববার থেকে তিনি পরবর্তী ঈদের নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেওয়া শুরু করবেন।
ঈদে নিজের অভিনীত নাটকগুলো মধ্যে ‘আমি তৃণা ও ম্যাজিক’, ‘আরমান ভাই হাউজ হাজবেন্ট’ আর ‘মনফড়িংয়ের গল্প’ নাটকের জন্য অনেক প্রশংসা পেয়েছেন বলে তিশা জানান।
টিভি দেখে ঈদ কেটেছে : মাহফুজ আহমেদ
এবার ঈদে জনপ্রিয় অভিনেতা ঢাকাতেই ছিলেন। অন্য বছরের মতো ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন টিভি দেখে। এ প্রসঙ্গে মাহফুজ আহমেদ বলেন, আসলে ঈদ উপলক্ষে অনেক ভালো ভালো প্রডাকশন তৈরি হয়। কাজের ব্যস্ততায় অন্য সময় মন দিয়ে টিভি দেখা সেভাবে সম্ভব হয় না। ঈদের ছুটিতে তাই নাটক-টেলিফিল্ম দেখার সুযোগটা কাজে লাগাই। শুধু নিজের অভিনীত নাটকই নয়, যতদূর পারি অন্যদের কাজও দেখার চেষ্টা করি। মাহফুজ আহমেদ জানালেন, এবার ঈদের নাটকে বৈচিত্র্য ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশ কিছু নাটক দেখে এবার তিনি আনন্দ পেয়েছেন। এসবের মধ্যে তার ভালো লাগা কয়েকটি নাটকে কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের দিন বিকালে চ্যানেল আইতে প্রচার হয়েছে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘ফাঁদ’ নামের একটি নাটক। আমি জানি না, ঈদের বিকালটায় ক’জন এই নাটকটি দেখেছেন। নবীন পারফর্মারদের নিয়ে এই কাজটি আমার অসাধারণ লেগেছে। অমিতাভ রেজার একটি নাটক দেখলাম। এনটিভিতে। একটি সাধারণ ঘটনাকে তিনি তার নাটকে অসাধারণ করে তুলেছেন। চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরে দেখেছিলাম ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজড’ শিরোনামের একটি নাটক।
ঈদের মধ্যেও কাজ ছিল : নওশীন
ঈদের আগেও যেমন কাজের ব্যস্ততা ছিল, ঈদের ছুটিতেও নওশীনকে থাকতে হয়েছে কাজের মধ্যে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদেও কাজ আমার পিছু ছাড়ে নি। জিটিভিতে এসএলপিএ খেলা উপস্থাপনা করতে হয়েছে। বেশ কয়েকটা লাইভ অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছি। বাকিটা সময় অবশ্য বাসায় কাটিয়েছি। বৃষ্টি হওয়ার কারণে ঈদে আর কোথাও বের হওয়া হয়নি। ছেলেকে তেমন সময় দেওয়া হয় না বলে তাকেই আলাদাভাবে সময় দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
নওশীন জানালেন, বাসায় সবার সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি টিভি পর্দাতেও তিনি চোখ রেখেছেন। এবার ঈদের টিভি অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে নওশীন বললেন, আমার মনে হয়েছে টিভি অনুষ্ঠানমালায় এবার যথেষ্ট বৈচিত্রের ছোঁয়া ছিল। অনেক ভালো ভালে নাটক ও টেলিফিল্ম দেখার সুযোগ দর্শকরা পেয়েছেন। টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ায় সব চ্যানেলই অনুষ্ঠানমালায় বৈচিত্য আনতে চেয়েছে। এতে লাভবান হয়েছে দর্শকেরা।
পরিবারকে সময় দেওয়াটাই বড় প্রাপ্তি : চঞ্চল চৌধুরী
জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বছর জুড়েই। ঈদের দুমাস আগে থেকে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ছুটির দিনেও তাকে শিডিউল দিতে হয়। ঈদের ছুটির পুরোটা সময় তাই পরিবারের সঙ্গেই তিনি কাটিয়েছেন।
বাংলানিউজকে তিনি বললেন, কাজের চাপে পরিবারে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না, তাই ঈদের পুরোটা ছুটি পরিবারের সঙ্গেই কাটিয়েছে। পরিবারকে সময় দিতে পারাটাই ঈদের ছুটির বড় প্রাপ্তি বলে মনে করি।
চঞ্চল চৌধুরী আরো বললেন, এবারের ঈদে চ্যানেল একাত্তরের আয়োজনে গার্মেন্টকর্মীদের কিছুটা সময় ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সময় বেশ ভালো লেগেছে। আমরা কতো আনন্দ করে সময় কাটাই আর ওরা কতো কষ্ট করে অল্প চাহিদার মধ্যে জীবনকে বেঁধে রাখে। ওরা আমার নাটক ও ছবি দেখে, আমার অসম্ভবভক্ত। আমার কিছু গান ও অভিনয় তারা আমাকে দেখালো যা বেশ ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে ঈদটাকে বেশ স্বস্তির সঙ্গে উপভোগ করেছি।
ঈদে ঘিরে ছিল অন্যরকম ভালালাগা : নিপুণ
ঢালিউডের নায়িকা নিপুণ ঈদে করেছেন ঢাকাতেই। কোথাও বেড়াতে যান নি। তবে এবারের ঈদটি তার কাছে ছিল একেবারেই অন্যরকম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের ঈদে বড় পর্দার ৪টি ছবিসহ ছোটপর্দার একাধিক নাটক, অনুষ্ঠান আর নতুন বিজ্ঞাপন আমাকে দেখা গেছে। সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া ৬টি ছবির মধ্যে ৪টিতে অভিনয় করি। এবারই প্রথম একসঙ্গে আমার এতোগুলো ছবি মুক্তি পেয়েছে। আমার কাজের ভালো সাড়াও পাচ্ছি। তাই এবার ঈদ ঘিরে ছিল আমার অন্যরকম ভালোলাগা।
তিনি আরও বলেন, সামনে আবার কাজের ব্যস্ততা বাড়ছে। ২৮ আগস্ট থেকে মাসুদ সেজানের নতুন ধারাবাহিক কাজ করতে হবে। আগামী মাসে আছে ২টি ছবির শুটিং। সব মিলিয়ে নিজের জন্য সময় বের করা সম্ভব হবে না। তাই ঈদের ছুটিতে নিজের পেছনেই ব্যয় করলাম।
বিনোদন প্রতিবেদক
ঈদ আসার প্রায় দু’মাস আগেই তারকাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। দেশে টিভি চ্যানেল বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে বাড়ছে ব্যস্ততা। ঈদের মাত্র কদিন আগে তারা হাতে কিছুটা সময় পান। ঈদের ছুটিতে তারকারা কে কোথায় ছিলেন, কেমন হলো এবার তাদের ঈদ? এই প্রশ্ন নিয়ে বাংলানিউজ কথা বলে আমাদের মিডিয়ার জনপ্রিয় ক’জন তারকার সঙ্গে।
ঘুমের মধ্যেই ঈদ শেষ : মোশাররফ
জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম এবার ঈদের দুদিন আগেও একটি নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেন। ঈদে তিনি ঢাকাতেই ছিলেন। স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ঈদের ছুটির কয়েকটা দিন আরাম করে ঘুমিয়েছি। ঈদের দিনেও কোথাও বের হয়নি। ঘুমের মধ্যেই আমার ঈদ শেষ। এবার ঈদে প্রায় ৩০টি একক নাটক আর ৬ পর্বের চারটি ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও মোশাররফ করিম টিভির সামনে বসেছেন খুব কম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদে আমি টেলিভিশন দেখি না। এমনকি নিজের নাটকগুলোও আমি দেখতে বসি না। আমার মনে হয়, যে ধরনের অভিনয় করা দরকার তা আমি করতে পারি নি। তাই এসব নাটক দেখতে বিব্রত লাগে। তবে একটা নাটক অবশ্য খুব মন দিয়ে দেখেছি। নাটকটির নাম ‘অথেলো সিনড্রেলা’। ঈদের চতুর্থ দিন এটি বিটিভিতে প্রচার হয়েছে। এটি আমার স্ত্রী রোবেনা রেজা জুঁইয়ের লেখা, পরিচালনা করেছেন রাজীব রসুল। এ নাটকে আমার স্ত্রী অভিনয়ও করেছে। কাজেই না দেখে উপায় ছিল না।
ঈদ কেটেছে রান্নাঘরে : তিশা
জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিশার এবার ঈদ কেটেছে রান্নাঘরে। ঈদের ছুটিতে তিনি রান্নাবান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিশা বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন শুধু কয়েকঘণ্টার জন্য আম্মুর বাসা আর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলাম। এছাড়া ঈদের পুরো ছুটি বাসায় কাটিয়েছি। অন্য ঈদে আম্মুর বাসা আর শ্বশুরবাড়ি থেকে রান্না করা খাবার আসে আমাদের বাসায়। এবার আমি বাসায় নিজেই রান্নার কাজটা করেছি। ঈদের ছুটিতে যারা বেড়াতে এসেছেন তারা আমার রান্নার প্রশংসা করেছেন। তিশা আরো জানালেন, ঈদের তিনদিন আগেও তাকে নাটকের শুটিং করতে হয়েছে। আবার এরই মধ্যে আরেক ঈদের কাজ চলে এসেছে হাতে। রোববার থেকে তিনি পরবর্তী ঈদের নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেওয়া শুরু করবেন।
ঈদে নিজের অভিনীত নাটকগুলো মধ্যে ‘আমি তৃণা ও ম্যাজিক’, ‘আরমান ভাই হাউজ হাজবেন্ট’ আর ‘মনফড়িংয়ের গল্প’ নাটকের জন্য অনেক প্রশংসা পেয়েছেন বলে তিশা জানান।
টিভি দেখে ঈদ কেটেছে : মাহফুজ আহমেদ
এবার ঈদে জনপ্রিয় অভিনেতা ঢাকাতেই ছিলেন। অন্য বছরের মতো ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন টিভি দেখে। এ প্রসঙ্গে মাহফুজ আহমেদ বলেন, আসলে ঈদ উপলক্ষে অনেক ভালো ভালো প্রডাকশন তৈরি হয়। কাজের ব্যস্ততায় অন্য সময় মন দিয়ে টিভি দেখা সেভাবে সম্ভব হয় না। ঈদের ছুটিতে তাই নাটক-টেলিফিল্ম দেখার সুযোগটা কাজে লাগাই। শুধু নিজের অভিনীত নাটকই নয়, যতদূর পারি অন্যদের কাজও দেখার চেষ্টা করি। মাহফুজ আহমেদ জানালেন, এবার ঈদের নাটকে বৈচিত্র্য ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশ কিছু নাটক দেখে এবার তিনি আনন্দ পেয়েছেন। এসবের মধ্যে তার ভালো লাগা কয়েকটি নাটকে কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের দিন বিকালে চ্যানেল আইতে প্রচার হয়েছে গিয়াসউদ্দিন সেলিমের ‘ফাঁদ’ নামের একটি নাটক। আমি জানি না, ঈদের বিকালটায় ক’জন এই নাটকটি দেখেছেন। নবীন পারফর্মারদের নিয়ে এই কাজটি আমার অসাধারণ লেগেছে। অমিতাভ রেজার একটি নাটক দেখলাম। এনটিভিতে। একটি সাধারণ ঘটনাকে তিনি তার নাটকে অসাধারণ করে তুলেছেন। চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরে দেখেছিলাম ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজড’ শিরোনামের একটি নাটক।
ঈদের মধ্যেও কাজ ছিল : নওশীন
ঈদের আগেও যেমন কাজের ব্যস্ততা ছিল, ঈদের ছুটিতেও নওশীনকে থাকতে হয়েছে কাজের মধ্যে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদেও কাজ আমার পিছু ছাড়ে নি। জিটিভিতে এসএলপিএ খেলা উপস্থাপনা করতে হয়েছে। বেশ কয়েকটা লাইভ অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছি। বাকিটা সময় অবশ্য বাসায় কাটিয়েছি। বৃষ্টি হওয়ার কারণে ঈদে আর কোথাও বের হওয়া হয়নি। ছেলেকে তেমন সময় দেওয়া হয় না বলে তাকেই আলাদাভাবে সময় দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
নওশীন জানালেন, বাসায় সবার সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি টিভি পর্দাতেও তিনি চোখ রেখেছেন। এবার ঈদের টিভি অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে নওশীন বললেন, আমার মনে হয়েছে টিভি অনুষ্ঠানমালায় এবার যথেষ্ট বৈচিত্রের ছোঁয়া ছিল। অনেক ভালো ভালে নাটক ও টেলিফিল্ম দেখার সুযোগ দর্শকরা পেয়েছেন। টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ায় সব চ্যানেলই অনুষ্ঠানমালায় বৈচিত্য আনতে চেয়েছে। এতে লাভবান হয়েছে দর্শকেরা।
পরিবারকে সময় দেওয়াটাই বড় প্রাপ্তি : চঞ্চল চৌধুরী
জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বছর জুড়েই। ঈদের দুমাস আগে থেকে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ছুটির দিনেও তাকে শিডিউল দিতে হয়। ঈদের ছুটির পুরোটা সময় তাই পরিবারের সঙ্গেই তিনি কাটিয়েছেন।
বাংলানিউজকে তিনি বললেন, কাজের চাপে পরিবারে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না, তাই ঈদের পুরোটা ছুটি পরিবারের সঙ্গেই কাটিয়েছে। পরিবারকে সময় দিতে পারাটাই ঈদের ছুটির বড় প্রাপ্তি বলে মনে করি।
চঞ্চল চৌধুরী আরো বললেন, এবারের ঈদে চ্যানেল একাত্তরের আয়োজনে গার্মেন্টকর্মীদের কিছুটা সময় ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সময় বেশ ভালো লেগেছে। আমরা কতো আনন্দ করে সময় কাটাই আর ওরা কতো কষ্ট করে অল্প চাহিদার মধ্যে জীবনকে বেঁধে রাখে। ওরা আমার নাটক ও ছবি দেখে, আমার অসম্ভবভক্ত। আমার কিছু গান ও অভিনয় তারা আমাকে দেখালো যা বেশ ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে ঈদটাকে বেশ স্বস্তির সঙ্গে উপভোগ করেছি।
ঈদে ঘিরে ছিল অন্যরকম ভালালাগা : নিপুণ
ঢালিউডের নায়িকা নিপুণ ঈদে করেছেন ঢাকাতেই। কোথাও বেড়াতে যান নি। তবে এবারের ঈদটি তার কাছে ছিল একেবারেই অন্যরকম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের ঈদে বড় পর্দার ৪টি ছবিসহ ছোটপর্দার একাধিক নাটক, অনুষ্ঠান আর নতুন বিজ্ঞাপন আমাকে দেখা গেছে। সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া ৬টি ছবির মধ্যে ৪টিতে অভিনয় করি। এবারই প্রথম একসঙ্গে আমার এতোগুলো ছবি মুক্তি পেয়েছে। আমার কাজের ভালো সাড়াও পাচ্ছি। তাই এবার ঈদ ঘিরে ছিল আমার অন্যরকম ভালোলাগা।
তিনি আরও বলেন, সামনে আবার কাজের ব্যস্ততা বাড়ছে। ২৮ আগস্ট থেকে মাসুদ সেজানের নতুন ধারাবাহিক কাজ করতে হবে। আগামী মাসে আছে ২টি ছবির শুটিং। সব মিলিয়ে নিজের জন্য সময় বের করা সম্ভব হবে না। তাই ঈদের ছুটিতে নিজের পেছনেই ব্যয় করলাম।