Year-19 # Issue-27 # 19 August 2012



রাজধানীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়ের নামে ফুটপাত দখল
হাসান মাহমুদ রিপন
রাজধানীতে ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হাজিরার নামে ডিসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফুটপাত দখল করে তৈরি করা হয়েছে হাজিরাঘর। কোথাও আবার পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়। অফিসগুলোতে কর্মী হাজিরা, এলাকাবাসীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সমস্যা মোকাবেলা করার কথা থাকলেও সেসব কাজও হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া হচ্ছে ভাঙ্গারি দোকানিদের কাছে।
ডিসিসির বর্জয ব্যবস্থাপনা বিভাগের বেশকিছু ওয়ার্ড অফিস, যার অধিকাংশই ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শানি্তনগর কর্ণফুলি গার্ডেন সিটির পাশে ডিসিসির একটি পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়ের সঙ্গেই রয়েছে থাকার ঘর। পুরো ফুটপাতই এখন বন্ধপ্রায়। মধ্যবাড্ডা ডিআইটি রোডের ফুটপাতের ওপর রয়েছে এমন একটি ঘর। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের অফিসটি করা হয়েছে পার্কের জমি দখল করে। এই অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাদের অভিযোগ, এসব ঘরে থাকার কথা লগ বই, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কর্মীদের কাজের সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, বর্জয সংগ্রহ এবং এর সঠিক তথ্য সংগহের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার কার্যক্রম। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড লালমাটিয়ায় রয়েছে একটি অফিস। এই এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন (৬০) জানান, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের তত্পরতা চোখে পড়ে না। শাহবাগেও রয়েছে একটি হাজিরা ঘর। পাশেই ডাস্টবিন। পথচারীদের নাখ মুখ চেপে ধরে যাতায়াত করতে হয়। হাজিরা ঘরের পাশে ডাস্টবিন থাকার পরও তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বর্জয ব্যবস্থাপনা বিভাগের দাবি, ডিসিসির বর্জয ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৩টি অফিস আছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড এলাকার ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে হাজিরা ঘর। ডিসিসির হিসেবে , ৩৩, ৩৬, ৪০, ৪২, ৪৪, ৪৫, ৫০, ৫৮, ৬৩, ৬৯, ৭৫, ৮৪ নং ওয়ার্ডে ডিসিসির বর্জয ব্যবস্থাপনা বিভাগের অফিস রয়েছে। ডিসিসির সূত্রে জানা যায়, বর্জয ব্যবস্থাপনা বিভাগের অফিসগুলোর উদ্দেশ্য পরিচ্ছন্নকর্মীদের মাধ্যমে এলাকাবাসীর বর্জয ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করা। আর জন্যই তৈরি করা হয়েছে পাকা আধাপাকা টিনশেড  ঘর। এ ব্যাপারে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের নব নিযুক্ত প্রধান বর্জয ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, রাত ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঝাড়ু দেওয়ার কাজ করে পরিচ্ছন্নকর্মীরা। আর তাই বর্ষাকালে কর্মীদের আশ্রয়ের জন্য ঘর তোলা হয়ে থাকে। তবে ঘরগুলো ফুটপাতের ওপর হওয়ার কথা নয়। তাছাড়া ফুটপাত ঘর তৈরির জায়গা নয়। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে অফিস করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে করে এলাকাবাসীর নানা সমস্যার সমাধান কর্মীদের তদারকি করা যায়। তিনি বলেন, আমরা সবসময় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চষ্টো করি।


বিরোধী দলের প্রতি শেখ হাসিনা
সংসদে এলে সহযোগিতা পাবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে জানিয়ে নিয়ে কোনো প্রস্তাব থাকলে তা সংসদে দিতে বিরোধী দলের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে গণতানি্ত্রক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। সরকার পরিবর্তন হবে গণতানি্ত্রক সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায়। যারা পার্লামেন্টে আছেন, পার্লামেন্টে যত রকম সহযোগিতা দরকার, আমরা তা দিতে রাজি আছি। নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের হুমকির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সংবিধান সংশোধনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলোপের ফলে বর্তমান ব্যবস্থায় দলীয় অর্থাত্ মহাজোট সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না দাবি করে বিএনপি নির্দলীয় সরকার পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছে। দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালও এক আলোচনা সভায় বলেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। বিএনপির দাবির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমপ্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে নির্বাচনকালীন সরকারে বিরোধী দলকেও রাখার কথা জানিয়ে তা নিয়ে সংসদে প্রস্তাব তুলতে বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানান। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলে বিরোধী দলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে উপ-নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ প্রায় পাঁচ হাজারের ওপর নির্বাচন হয়েছে। কোনো নির্বাচনে অনিয়ম হয়নি। জীবনহানি হয়নি। রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন কেন সুষ্ঠু হবে না ? আওয়ামী লীগ জনগণের দল, কোনো জেনারেলের পকেট থেকে গজিয়ে ওঠা দল নয়।
বিগত সেনা মদদপুষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অভিজ্ঞতা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা জনগণকে সতর্ক করে বলেন, অনেকেই আছেন- যারা রাজনৈতিক দল করতে পারেন না। তাদের জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার অধিকার নেই। কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে। তাদের খায়েশ অনেক। তারা চায় কীভাবে রাজনীতির অলি-গলি দিয়ে সহজে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। ওই খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। যারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের ভাগ্য গড়তে চায়। জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলতে চায়। টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানে সরকারের সমালোচনাকারীদেরও সমালোচনা করেন তিনি। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই আলোচনা সভায় বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের হারানোর বেদনাও ভারাক্রান্ত করে শেখ হাসিনাকে। তিনি বলেন, ১৫ দিন আগে আমি আমার ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে আমার স্বামীর কর্মস্থলে যাই। আর আসা হয়নি। যে বাংলাদেশে মা-বাবা আর ভাইদের রেখে গেলাম, ১৫ দিন পর শুনলাম কেউ নেই। আমরা এতিম হলাম। ১৯৮১ সালে নিজের অনুপস্থিতিতে সামরিক শাসকের চাপের মধ্যেও আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করায় নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। প্রতিকূল অবস্থায় রাজনীতি করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইত্তেফাকের মানিক মিয়ার ছেলে ফারুক-রশিদকে নিয়ে দল করলেন। এরশাদ তাদের দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করালেন। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর এক খুনিকে বিরোধী দলের নেতা বানান। এই পরিস্থিতিতে আমাকে রাজনীতি করতে হয়েছে। আমার দ্বারা বাংলাদেশের জনগণের এতটুকু ক্ষতি হোক, তা আমি হতে দেব না। তাতে আমার জীবন যায় যাক।
সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, যারা ১৫ অগাস্ট জন্মদিন উদযাপন করে উত্সব করে, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রশ্রয় দেয় এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়, তাদের সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতা করা হবে না। ১৫ অগাস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি একথা বলেন। আশরাফ অনুষ্ঠানে সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, যে দলের নেত্রী ১৫ অগাস্ট ইচ্ছাকৃতভাবে জন্মদিন পালন করেন। যে ব্যক্তি ১৫ আগস্ট জন্মদিন করে উল্লাস করে, তাদের সঙ্গে কী সমঝোতা সম্ভব ? মিলনায়তনে উপস্থিত সবাই তখন একসঙ্গে বলে ওঠেন, Íনা।"

নির্দলীয় সরকার ছাড়া অন্য বিকল্প বিএনপি মানবে না'
নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা বিএনপি মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। গতকাল শুক্রবার সকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আগামীতে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের রূপরেখায় দুটি বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে। প্রথমত সেই সরকার হবে নির্দলীয়। দ্বিতীয়ত তারা হবে নিরপেক্ষ। এর বাইরে অন্য কোনো বিকল্প আমরা মেনে নেব না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা প্রসঙ্গে এই বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে বলে দিয়েছেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা কি হবে, তাও তিনি বলেছেন। তারপরও সরকার Èজনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে' ক্ষমতাকে Èপাকাপোক্ত' করার ইচ্ছা নিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার ষড়যনে্ত্র লপ্তি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মঈন খান। তিনি বলেন, তারা জেনে গেছে, জনগণের ভোটে আবার ক্ষমতায় আসতে তারা পারবে না। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী আবদুল মঈন খান প্রশ্ন রাখেন, È২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি দুই তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পর যদি নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতো, তাহলে কি আওয়ামী লীগ তা মেনে নিত?
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপিপন্থী সংগঠন হূদয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. হানিফ। Èনির্বাচনকালীন সময়ে কেমন সরকার চাই' শীর্ষক আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদষ্টো ইনাম আহমেদ চেৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, যুব দলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য রাখেন।
বিপাকে কালো তালিকার ১২ এজেন্সি
সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশির হজে যাওয়া অনিশ্চিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
সেৌদি আরব সরকার Èকালো তালিকাভুক্ত' করায় বাংলাদেশের ১২টি হজ এজেন্সি হজযাত্রীদের কাছ থেকে Èমোয়ালে্লম ফি' নিয়েও বাড়িভাড়া পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারছে না। এতে করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশির হজে যাওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সংগঠনের নেতারা বলেছেন, সরকারের উচিত্ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সেৌদি কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা। তবে সরকার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। হজ প্যাকেজ না মানা এবং সেৌদি আরবে অতিরিক্ত সময় থাকার অভিযোগে গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের ১২টি এজেন্সির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেৌদি কর্তৃপক্ষ। নিবন্ধিত এসব প্রতিষ্ঠান এবার সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রীর কাছ থেকে মোয়ালে্লম ফি জমা নিয়েছে। এজেন্সিগুলো হচ্ছে- এয়ার মেটকো, কলম্বিয়া ট্রাভেলস, সাদ ট্রাভেলস, ইসলামিয়া ট্রাভেলস, ফার্স্ট বাংলাদেশ, হলিউড ট্রাভেলস, এয়ার পিস ট্রাভেলস, নিউ ইমাম ট্রাভেলস, সায়েম ট্রাভেলস, বাবে মদিনা, মোস্তফা এয়ার ট্রাভেল ওয়ার্ল্ড লিংক। হাবের মহাসচিব এমএ রশিদ শাহ সম্রাট বলেন, সরকার কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। সমাধান না হলে সরকারকেই বিকল্প ব্যবস্থায় সংশি্লষ্ট যাত্রীদের হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে পুরো দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। এই হাব নেতার মতে, এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে সেৌদি আরবে অতিরিক্ত সময় হজযাত্রীদের রাখার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা Èখুব একটা' গুরুতর কিছু নয়। নির্দষ্টি সময়ে ফ্লাইট নিশ্চিত করতে না পারায় তাদের দুয়েকদিন' বেশি থাকতে হয়েছে। বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম সচিব কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, এজেন্সিগুলোর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে তাদেরই কাজ করতে হবে। তাদের সেৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে।
এক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে না। তবে এসব সংস্থার কাছে টাকা জমা দেওয়া হজযাত্রীদের বিষয়ে সরকার ভাবছে। তাদের বিকল্প ব্যবস্থায় অন্য এজেন্সির মাধ্যমে অথবা সরকারের দলের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হতে পারে। এবার হজে যাওয়ার জন্য এসব এজেন্সিতে যারা টাকা দিয়েছেন, তাদের যাত্রা নির্বিঘ& করতে সংশি্লষ্ট এজেন্সি, হাব অথবা উত্তরার আশকোনায় হজ অফিসে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর আগে জুলাই মাসের শুরুতে ঢাকা চট্টগ্রামের আরো ১৪টি হজ এজেন্সির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সেৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত দুই বছর তাদের মাধ্যমে হজে যাওয়া কেউ আর দেশে ফেরেননি। আগের তালিকায় থাকা ১৪টি এজেন্সির মধ্যে রয়েছে- ঢাকার নয়াপল্টনের আল ফাতেহা ট্রাভেলস, আবাবিল ট্রাভেলস এন্ড টু্যরস, সোনিয়া ট্রাভেলস সেৌদি বাংলা হজ সার্ভিস, পুরানা পল্টনের হাইলিংকস ট্রাভেলস, ফার্মগেইটের ইনসাফ ট্রাভেলস অ্যান্ড টু্যরস, খিলগঁাওয়ের এসএইচ ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল, মতিঝিলের মিনি ট্রাভেলস এন্ড টু্যরস সাদমান এয়ার সার্ভিস এবং ফকিরাপুলের রাজন ওভারসিজ, আল-আমিন এভিয়েশন হান্না ট্রাভেলস অ্যান্ড টু্যরস। চট্টগ্রামের এজেন্সিগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্দরকিল্লার আমানত ট্রাভেলস এবং পূর্ব নাসিরাবাদের যোগাযোগ টু্যরস অ্যান্ড ট্রাভেলস।

রফতানি আয় হয়েছে ৩৩৫. ৫১ মিলিয়ন ডলার
সম্প্রসারিত হচ্ছে জুতার বাজার
সিদ্দিকুর রহমান
বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হচ্ছে বাংলাদেশের জুতার বাজার। গত ২০১১-'১২ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি জুতা রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৩৩৫ দশমিক ৫১ মিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থ বছরে জুতা রফতানি থেকে ৩৮৮ মিলিয়ন ডলার আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি বিশ্বমানের ব্রান্ডের জুতা আমদানির দিকে ঝঁুকেছে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, আমেরিকা, কানাডা, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। রফতানি উন্নয়ন বু্যরো-ইপিবি সূত্রে তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রথম জুতা রফতানি শুরু করে ১৯৯৪ সালে। সে সময় মিলিয়ন ডলারেরও কম মূল্যের জুতা রফতানি হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় শিল্পবান্ধব নীতি গ্রহণের কারণে জুতা শিল্পের আরো বিকাশ ঘটে এবং সেইসঙ্গে রফতানির পরিমাণও বেড়ে যায়।
পাদুকা ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, দেশে অভ্যন্তরীণ জুতার বাজার প্রায় হাজার কোটি টাকার। এখন দেশে উত্পাদিত জুতার ৪৬ শতাংশ বিদেশে রফতানি হচ্ছে। গতবছর রফতানি হয়েছে ৭০ কোটি জোড়া জুতা। যেসব দেশে এখন বেশি জুতা রফতানি হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, রাশিয়া, বৃটেন, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়া এশিয়া আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও এখন বাংলাদেশের জুতা রফতানি হচ্ছে। সূত্রটি থেকে আরো বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুতা উত্পাদনকারী বৃহত্ দেশ চীন ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে ডাম্পিং বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। এছাড়া চীন, ভিয়েতনাম, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে মজুরিসহ জুতা উত্পাদনে খরচ বেড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত কম দামে বিশ্বমানের জুতা সরবরাহ করতে পারছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জুতার রফতানি বাজার আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বৃহত্ বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান Èইয়াংওয়ান' চট্টগ্রামে এশিয়ার বৃহত্তম জুতা কারখানা নির্মাণ করেছে। কারখানায় চলতি অর্থবছরে সাড়ে কোটি জোড়া জুতা উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুরেও ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বৃহত্ জুতার কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ রফতানি বাজারের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এখন দেশে জুতা শিল্প হচ্ছে অন্যতম দ্রুত বিকাশমান শিল্প। পুরনো ঢাকার বিভিন্ন স্থান, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার ছোট ছোট আধুনিক জুতা কারখানা। রফতানিকারকদের ফরমায়েশ অনুযায়ী এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে ফ্ল্যাট, হিল, হাইহিল জুতা, স্যান্ডেল সু, পাম্প সু, কেডস বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের জুতা। রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে একটি জুতা কারখানার ম্যানেজার আমির হোসেন বলেন, কারখানায় সব ধরনের হালফ্যাশনের জুতা তৈরি হচ্ছে। তবে বেশি তৈরি হচ্ছে লেডিস সু বাচ্চাদের জুতা। রফতানিকারকদের ফরমায়েস অনুযায়ী এসব জুতা তৈরি হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, স্থানীয় এসব কারখানা যে কোনো ডিজাইনের আধুনিক জুতা তৈরি করতে সক্ষম। এবার ঈদে অভিজাত সব জুতার দোকান থেকে শুরু করে ফুটপাথের জুতার পসরা পর্যন্ত জুতার চাহিদার পুরোটা পূরণ করছে দেশে তৈরি জুতা-স্যান্ডেল। রফতানি উন্নয়ন বু্যরো-ইপিবি' ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু বলেন, জুতা রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। চলতি অর্থবছরে বিশ্বে বাংলাদেশের জুতা রফতানির বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। উলে্লখ্য, বাংলাদেশে পাদুকা শিল্পকে কেন্দ্র করে পাদুকা প্যাকেজিংসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পও গড়ে উঠছে। এখন লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে পাদুকা শিল্পে নিয়োজিত রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন