হজের সময় বিমানের ফ্লাইটসূচিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উড়োজাহাজ ভাড়া করতে না
পারায় হজের সময়
বিমানের নিয়মিত অন্য ফ্লাইটগুলোর ঠিক রাখা যাবে
কি না, তা
নিয়ে শঙ্কা দেখা
দিয়েছে। ভাড়া করতে
না পেরে নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে অর্ধলক্ষাধিক হজযাত্রী
পরিবহনের সদ্ধিান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আর এই
কারণেই দেখা দিয়েছে এই শঙ্কা।
ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৭
সেপ্টেম্বর থেকে ২৯
নভেম্বর পর্যন্ত হজ ফ্লাইট চলবে। হজের মেৌসুমে যে নিয়মিত ফ্লাইটগুলোতে কাটছঁাট করতে হবে,
তা বিমান কর্তৃপক্ষই স্বীকার করছে। উড়োজাহাজ ভাড়া না পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আহমেদ বলেন,
এক্ষেত্রে নিয়মিত ফ্লাইটে কিছুটা কাটছঁাট করা হতে
পারে। তবে এ
বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে
রাজি হননি তিনি।
বিমান সংশি্লষ্টরা বলছেন, কাটছঁাটের পরও যদি আবহাওয়া সংক্রান্ত বা অন্য
কোনো কারণে কোনো ফ্লাইট বাতিল হয়,
তবে ফ্লাইট সূচিতে বড় ধরনের
বিপর্যয় দেখা দিতে
পারে। এ
বিষয়ে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য
কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন,
এ (নিজস্ব উড়োজাহাজে হজযাত্রী পরিবহন) সদ্ধিানে্তর কারণে ভয়াবহতম শিডিউল বিপর্যয়ে পড়তে যাচ্ছে বিমান। ইতোমধ্যে দিলি্ল, লন্ডন, মিলানসহ বেশ কয়েকটি দেশের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীরা টিকিট করতে
গিয়েও করতে পারছেন না। ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার
ধারণ করতে পারে।
এজন্য আগে থেকে
পরিকল্পনা ঠিক করে
প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে
করেন কাজী ওয়াহেদ। বিমানের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার
শর্তে বলেন, হজ
যাত্রী পরিবহনের জন্য পঁাচশরও বেশি যাত্রী ধারণে সক্ষম
তিনটি উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনার
পরিকল্পনা ছিল। এর
মধ্যে এভিকো এয়ারলাইন্স থেকে একটি
বোয়িং উড়োজাহাজ ভাড়া করা
হলেও বাকি দু'টি আনা
সম্ভব হয়নি। ভাড়ায়
উড়োজাহাজ না পাওয়ায় বিমানের নিজস্ব দু'টি
বোয়িং হজযাত্রী পরিবহনে কাজে লাগানো হবে। হজযাত্রী পরিবহনকে গুরুত্ব দেওয়ায় নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না,
স্বীকার করেন এই
বিমান কর্মকর্তা।
তবে
সঙ্কট এড়িয়ে নিয়মিত ফ্লাইটসূচি ঠিক রাখতে
মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছোট
উড়োজাহাজগুলো ব্যবহারের কথা চিন্তা করা হচ্ছে বলে
ওই কর্মকর্তা জানান। বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য
কাজী ওয়াহেদ ফ্লাইটসূচি বিপর্যয়ের সুদূরপ্রসারী প্রভাবের কথা তুলে
ধরে তা নিয়েও
বিমানকে সতর্ক করেছেন। তার মতে, এতে
ওই সব রুটে
নিজস্ব যাত্রী হারাবে বিমান। হজ মেৌসুম মাত্র দু' মাসের। কিন্তু এই সমস্যা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিস্তার করবে, যার
কারণে বিমানকে ভবিষ্যতে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে
হবে। হজ যাত্রী পরিবহনের জন্য তৃতীয়
বিমান সংস্থা (থার্ড কেরিয়ার) অন্তর্ভুক্ত করলে সমূহ
বিপর্যয় এড়ানো যেত বলে
মনে করেন কাজী
ওয়াহেদ। এ
বছর হজ যাত্রী পরিবহনের জন্য সেৌদি
আরবের সঙ্গে করা
চুক্তি অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সেৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স এবং সেৌদি
আরবেরই আরেক সংস্থা নাস এয়ার বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী আনা-নেওয়া
করবে। চুক্তি অনুসারে এই বছর
কোনো তৃতীয় বিমান
সংস্থা হজযাত্রী পরিবহন করবে না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১
লাখ ১২ হাজার
৫৬৮ জন হজে
যাবেন। এর মধ্যে
৫৬ হাজার ৬০০
যাত্রী পরিবহন করবে বিমান। এই তিন সংস্থার মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১২
আগস্ট ফ্লাইটসূচিও প্রকাশ করেছে। আগামী ১৭
সেপ্টেম্বর ভোর ৫টায়
৫৮২ জন যাত্রী নিয়ে প্রথম হজফ্লাইট রওনা হবে। হজযাত্রী নেওয়া চলবে ২২
অক্টোবর পর্যন্ত। হাজিদের নিয়ে ন
ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে
১ নভেম্বর, সর্বশেষ ফ্লাইট আসবে ২৯
নভেম্বর। বিমান
কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে বিমানের বহরে থাকা
একটি ডিসি-১০,
একটি এয়ারবাস, দুটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর,
ইজারায় আনা দুটি
বোয়িং ৭৩৭ ও
একটি বোয়িং ৭৪৭ দিয়ে
নিয়মিত যাত্রী পরিবহন চলছে। বিমান
প্রতি সপ্তাহে কলকাতায় ৭টি, কাঠমান্ডুতে ৭টি, দিলি্লতে ২টি, করাচিতে ২টি, লন্ডনে ৩টি, ম্যানচেস্টারে ২টি, রোমে ১টি,
মিলানে ১টি, ব্যাংককে ৪টি, সিঙ্গাপুরে ৬টি, হংকংয়ে ২টি, কুয়ালালামপুরে ৭টি, রিয়াদে ৫টি, জেদ্দায় ৫টি, দাম্মামে ৩টি, দুবাইয়ে ৭টি, দোহায় ২টি, আবুধাবীতে ৫টি, মাস্কাটে ৪টি ও কুয়েতে ৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড রিজার্ভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি, প্রায়
সাড়ে ১১ বিলিয়ন ডলারে দঁাড়িয়েছে। এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় পঁাচ
মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আমদানি ব্যয় হ্রাস
ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ায় রিজার্ভ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের শেষ দিন
গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১১
দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। এর
আগে ২০১১ সালের
১২ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার মজুদ সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৩৭
বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আমদানি ব্যয় বাড়তে
থাকায় এরপর এক
পর্যায়ে তা ৯
বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে
আসে। গভর্নর আতিউর রহমান
বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রেমিটেন্স প্রবাহ ভাল থাকায়
এবং আমদানি ব্যয় কমে
আসায় রিজার্ভ প্রায় সাড়ে
১১ বিলিয়ন ডলারে দঁাড়িয়েছে। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার
শর্তে বলেন, ঈদ
সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি বেশি টাকা
পাঠানোর কারণেই রিজার্ভ বেড়েছে। এছাড়া দেশের
রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরাও ঈদের আগে
শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার জন্য রফতানি বিল ক্যাশ করায়
রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ১২০ কোটি
ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে,
যা একক মাস
হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। এর আগে
জানুয়ারি মাসে ১২২
কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছিল। চলতি আগস্ট
মাসের ২৪ দিনে
(২৪ আগস্ট পর্যন্ত) ৮৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। ২০১১-১২
অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে মাত্র ৫ দশমিক
২ শতাংশ। অথচ আগের
বছরে (২০১০-১১)
এই ব্যয় বেড়েছিল প্রায় ৪২ শতাংশ। চলতি ২০১২-১৩
অর্থবছরের প্রথম মাস
জুলাইয়ে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ১৭
দশমিক ৩৭ শতাংশ। ১৮ আগস্ট পর্যন্ত কমেছে ১০ দশমিক
৪৭ শতাংশ। এর আগে
২০১১-১২ অর্থবছরে রফতানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৯৩
শতাংশ। গত
এক বছরে রিজার্ভের গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করে দেখা
যায়, ২০১১ সালের
২৮ আগস্ট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০
দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের
৩০ জুন ছিল
১০ দশমিক ৩৬
বিলিয়ন ডলার। ৩১
জুলাই ছিল ১০
দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থে সেতু
নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বলেন,
এতে যে বিদেশি মুদ্রা প্রয়োজন হবে তা
রিজার্ভ থেকে জোগান দেওয়া হবে। এরপর
রিজার্ভ বাড়াতে রেমিটেন্স ও বন্ড
বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন দেশে রোড-শো এবং
বিনিয়োগ মেলা আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম পর্যায়ে সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ
ব্যাংকের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিনিধিদলের সফরের মধ্য
দিয়ে এ রোড
শোর কার্যক্রম শুরু হবে।
পরে অন্যান্য দেশেও রোড
শোর কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
হুমায়ূনের শেষ ছবি ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ আসছে ৭ সেপ্টেম্বর
বিপুল হাসান ও কামরুজ্জামান মিলু‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ ছবিটির শুভ মহরতে নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ ঘোষণা দিয়েছিলেন, এটাই তার পরিচালিত শেষ ছবি। তাৎক্ষণিকভাবে অনেকেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য তাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। জবাবে হুমায়ূন আহমেদে মৃদু হেসেছিলেন। তিনি তার কথা রেখেছেন। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। হুমায়ূন আহমেদের শেষ ছবি ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ দর্শকদের সামনে আসছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এ ছবিটি শুরুতে ঢাকার বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স ও বলাকা সিনেওয়ার্ল্ডে মুক্তি পাচ্ছে। পরবর্তীতে সারাদেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে ছবিটি মুক্তি পাবে।
হুমায়ূন আহমেদকে হারানোর গাঢ় বেদনার মধ্যেও স্বস্তি এটুকুই যে, ছবিটি তিনি দেখে যেতে পেরেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানসার চিকিৎসাধীন থাকাকালে কিছুদিনের জন্য তিনি দেশে ফিরেছিলেন। কাছের কিছু মানুষ আর সংবাদকর্মীদের নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ গত ২৯ মে উপভোগ করেন তার আন-রিলিজড ছবি ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’।
সেদিন অবশ্য অনেকেই আশা করেছিলেন যে, হুমায়ূন আহমেদ সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন। আবার তিনি বানাবেন চলচ্চিত্র। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর হয় আরেক। কঠিন বিষয়কে সহজভাবে তুলে ধরাই ছিল হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে বড় গুণ। প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া সমাজের কঠিন সত্যগুলোকে তিনি নিপুন দক্ষাতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তার রূপালী ক্যানভাসে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরী ‘আগুনের পরশমণি’ ছবি দিয়ে ১৯৯৫ সালে চলচ্চিত্র পরিচালনা শুরু করেন হুমায়ূন আহমেদ। এরপর একে একে নির্মাণ করেন ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ও ‘আমার আছে জল’। তার পরিচালিত সর্বশেষ ছবি ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’। ছবিটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মামুন। এছাড়াও অন্যসব চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, প্রাণ রায়, তমালিকা কর্মকার, মুনমুন আহমেদ, জয়ন্ত চট্রপাধ্যায়, জুয়েল রানা, পুতুল, কুদ্দুস বয়াতি, আগুন, আবদুল্লাহ রানা, মাসুদ আখন্দ, খুদে গানরাজ প্রতিযোগিতার শিল্পী প্রাপ্তি ও প্রান্তি এবং আরও অনেকে। ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ ছবি মুক্তির তারিখ ঘোষণার পর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্মের পরিচালক ইবনে হাসান খানের সঙ্গে কথা বলে বাংলানিউজ। তিনি বলেন, ‘এ ছবিটি মুক্তি দেওয়া নিয়ে ছোট একটি ঘটনা মনে পড়ে। আমরা এবার ঈদে ছবিটি চ্যানেল আইতে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের কথা ভেবেছিলাম। হুমায়ূন স্যার তখন জীবিত ছিলেন। অনুমতি নেওয়ার জন্য যখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, তখন স্যার অনেক অসুস্থ। আমি স্যারের চিকিৎসাকালীন সফর সঙ্গী অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলামের মাধ্যমে স্যারের সম্মতি চাই। স্যার তখন জানান, তিনি চান ছবিটি আগে সিনেমা হলেই মুক্তি পাক। স্যারের সিদ্ধান্ত বলে আমার মেনে নেই।’ ইবনে হাসান খান আরও বলেন, ‘নিজের নতুন কোনো ছবি মুক্তির আগে হুমায়ূন স্যারের আনন্দ আমাদের চোখে ভাসে। যেমন ছবির পোস্টার ডিজাইন কেমন হবে, বিলবোর্ড কোথায় লাগাবো, লোকজন কী বলছে- সবকিছু মিলে অন্য রকম খুশি দেখতাম। এজন্য ভেবেছিলাম স্যার সুস্থ হয়ে ফিরলেই ছবিটি মুক্তি দেব। যেহেতু স্যার আজ নেই, তাই তার শেষ ইচ্ছেতেই ছবিটি সর্বপ্রথম হলে মুক্তি দিচ্ছি। ’ তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক সৌভাগ্য যে, হুমায়ূন আহমেদের শেষ ছবিটি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের মাধ্যমে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটির মুক্তিতে আমাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে প্রাণ ঝালমুড়ি। আর এর প্রচারে কাজ করতে পেরে আমরা গর্ববোধ করছি। কারণ এ ছবিটি ছাড়া আমাদের কাছে তার নতুন কোন সৃষ্টিকর্ম নেই।’ বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের এক সময়ের সমাজ বাস্তবতার বাস্তব গল্প নিয়েই ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’। আধুনিকতা বা শিক্ষার আলো যখন বর্ষায় বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ভাটি অঞ্চলের মানুষদের মাঝে পৌঁছেনি। সে সময় সেখানকার সচ্ছল ও সামর্থ্যবান পুরুষরা বিনোদন হিসেবে ‘ঘেঁটুর গান’ নিয়ে মেতে থাকতো। কমবয়সী যেসব ছেলে বিভিন্ন জায়গায় মেয়ে সেজে গান পরিবেশন করতো, তাদের একধরনের বিকৃত যৌনাচারের শিকার হতে হতো। সৌখিন মানুষের স্ত্রীরা ঘেটুুঁপুত্রদের দেখতেন সতীন হিসেবে। এক সময়কার সমাজের এই অন্ধকার দিক আলোতে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ এ ছবির মাধ্যমে।
‘বাজে বংশী রাজহংসী নাচে দুলিয়া দুলিয়া নাচে পেখমও মেলিয়া।’ এরকম বেশ কিছু লোকজ গান এ ছবিতে ব্যবহার করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদের নিজের লেখা গানও আছে ছবিতে। গানগুলোর সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু ও এসআই টুটুল।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের বধূ প্রিন্সেস ডায়ানার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার। এদিন ব্রিটেনে তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হবে।
১৯৯৭ সালের এই দিনে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে ডায়ানা ও তার বন্ধু দোদি ফায়েদ গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন। প্রিন্সেস ডায়ানা ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের প্রথম স্ত্রী এবং ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত ব্রিটেনের প্রিন্সের ছিলেন। তাদের দুই ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি। ডায়ানার জীবন এবং মৃত্যু ব্রিটিশ রাজপরিবারের নতুন প্রজন্মকে প্রচণ্ড প্রভাবিত করেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। মৃত্যুর বছর খানেক আগেই প্রিন্স চার্লেসের সঙ্গে ডায়ানার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ পুত্রবধূ ডায়ানার স্বাধীনচেতা জীবনাচরণে সন্তুষ্ট ছিলেন না। ডায়ানার মৃত্যুর সময় প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি একেবারেই শিশু ছিলেন। সেদিনের সেই শিশু দুটির ওপর তাদের মায়ের প্রভাব ব্যাপক। ১৯৮১ সালে বিয়ের পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রিন্সেস অব ওয়েলস সম্বোধন করা হত তাকে। ডায়ানার জন্ম ১৯৬১ সালের ১ জুলাই। এইডস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে তার অবদান, ভূমি মাইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন তাকে জনপ্রিয় করে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গলেও তার মৃত্যু-রহস্যের জট খোলেনি। আপাতদৃষ্টিতে তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হলেও এর পেছনে কারণ খুঁজেছেন অনেকেই। কারো মতে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। কেউ বলেছেন, তাদের গাড়িচালক মাতাল অবস্থায় ছিলেন। একই দুর্ঘটনায় নিহত ডায়ানার বন্ধু দোদির বাবা বলেন, “এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এর পেছনে ছিল ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা।”
ম্যাডোনা কন্যা লিওনের অভিষেক
বিনোদন ডেস্ক