Year-18 # Issue-32 # 25 Spetember-2011


উইকিলিকস ভীতিতে রাজনীতিবিদরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইকিলিকস! উইকিলিকস! উইকিলিকস! অ্যাসাঞ্জের দুনিয়া কাঁপানো ওয়েবসাইটউইকিলিকসএখন বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনীতিক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের কাছে রীতিমত এক আতঙ্কের নাম। তারবার্তা অবমুক্ত করে উইকিলিকস কখন কার কোন গোপন খবর ফাঁস করে দেয়, বিশেষ করে ওয়ান-ইলেভেন পর্বের বিভিন্ন আলোচনা সাক্ষাতে করা তখনকার কোন তথ্য প্রকাশ
করে দেয়Ñ এই ভীতিতে দিন কাটছে অনেকের। বিভিন্ন স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে বহুল আলোচিত উইকিলিকস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে একাধিক তারবার্তা ফাঁস করেছে উইকিলিকস। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুল জলিল, সৈয়দ আবুল হোসেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ দলটির বেশ জন প্রভাবশালী নেতা সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, . খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মোসাদ্দেক আলী, হারিছ চৌধুরী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মোর্শেদ খান, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ এই দলের অন্তত ১৭ জন নেতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। বড় দুটি দলের এসব নেতার কারও কারও ওয়েন-ইলেভেনের আগে-পরের ভূমিকা তখন রাষ্ট্রদূতদের কাছে করা বিভিন্ন মন্তব্য প্রকাশ করেছে ওয়েবসাইটটি।
জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামীসহ কয়েক নেতা, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছাড়াও নোবেলজয়ী . মুহম্মদ ইউনূস দেশে জরুরি অবস্থা জারি থাকাকালে নতুন-নতুন দলের š§ দেওয়া নেতাদের সম্পর্কেও বিভিন্ন গোপন তথ্য প্রকাশ করে উইকিলিস। ওয়ান-ইলেভেনের আগে-পরে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, কালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন আহমেদ, ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ডিজিএফআই তখনকার দাপুটে কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার ফজলুল বারী . এটিএম আমিন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা . ফখরুদ্দীন আহমেদÑ কেউই বাদ পড়েননি উইকিলিকসের ধাবা থেকে। এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভূমিকা তুলে ধরার পাশাপাশি জঙ্গি উত্থান, বিডিআর বিদ্রোহ, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক পদ্মা সেতু প্রকল্পসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে অ্যসাঞ্জের তোলপাড় ফেলা এই ওয়েবসাইট। এমনকি জরুরি অবস্থার সময় সাবজেলে থাকাবস্থায় দুই নেত্রীর শারীরিক অবস্থা কালীন আইজি প্রিজনের কথাবার্তার তথ্যও উঠে এসেছে উইকিলিকসের ফাঁস করা তারবার্তায়। দেশের গণমাধ্যমও বেশ গুরুত্ব দিয়ে গত দিন ধরে উইকিলিকসের এসব তথ্য প্রকাশ-প্রচার করছে। উইকিলিকসের বরাত দিয়ে প্রতিদিনই থাকছে একাধিক প্রতিবেদন। আগ্রহী অগ্রগামী পাঠকও খুটিয়ে-খুটিয়ে এসব প্রতিবেদন পাঠ করে জানছে বাংলাদেশের রাজনীতি গোয়েন্দা সংস্থার অন্দরমহলের বিভিন্ন তথ্য। নিজেদের বিভিন্ন বিতর্কিত ভূমিকা মন্তব্য ফাঁস হওয়ায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতারা দলীয় প্রধান নেতা-কর্মীদের কাছে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন। দলে কোনঠাসা হওয়ার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের সন্দেহের মধ্যেও পড়ছেন তারা। উইকিলিকসের কারণে পদ-পদবী ধরে রাখা এবং নিজেদের রাজনৈতিক ভাগ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় এসব নেতা। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ওয়ান-ইলেভেনের আগে বলেছিলেনচারদলীয় জোট আবার ক্ষমতায় আসার চেয়ে অন্যকিছু আসাও মন্দ নয়’, ‘মইন-ফখরুদ্দীনদের বিচার করতে আগ্রহী নন শেখ হাসিনা’, ‘খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে রাজি ছিলেন এবং মালপত্রও গোছগাছ করে রেখেছিলেন’, ‘নির্যাতনকারীদের মধ্যে বিগ্রেডিয়ার বারীকে চিনতে পেরেছিলেন তারেক রহমান’, ‘দুর্নীতিবাজ দুই পুত্রকে রক্ষার চেষ্টাই কাল হয় খালেদা জিয়ার জন্য’, ‘হাওয়া ভবনের দুর্নীতির কথা খালেদা জিয়াকে কামাল সিদ্দিকী জানালেও পাত্তা দেননি তিনি’, ‘শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শর্ত নিয়ে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মধ্যস্থতা করতেন সৈয়দ আশরাফ’, ‘শেখ হাসিনার মুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন আমির হোসেন আমু’, ‘যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জেমস এফ মরিয়ার্টি’, ‘জেনারেল মইন রাষ্ট্রপতি হতে চেয়েছিলেন’, ‘গ্রামীণব্যাংকের পদবি ধরে রাখতে শেখ হাসিনার কাছে যান . ইউনূস’, ‘ডিজিএফআইয়ের অনেক সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতেন না মইন’, ‘মইনের নিয়ে যাওয়া প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে হাত কাঁপছিল ইয়াজউদ্দিনের’, ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সহায়তা চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া’, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূরদর্শিতা নিয়ে গওহর রিজভীর সন্দেহ প্রকাশ’, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যারিস্টার মওদুদকে দূত করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা’, ‘জঙ্গি খামারুর মুক্তির ব্যবস্থা করেন তারেক রহমান : বলেছেন রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুল’, ‘শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচার চান না’, ‘ডিজিএফআই সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা’, ‘বিডিআর বিদ্রোহের পর সেনানিবাসে যেতে শেখ হাসিনাকে বারণ করেছিলেন মন্ত্রীরা’ ‘সেনানিবাস থেকে শেখ হাসিনা অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসায় বিষ্মিত হন কয়েক মন্ত্রী’, ‘লগি-বৈঠা দিয়ে লীগের লোকজন জামায়াতের কর্মীকে হত্যা করে’, ‘বিশেষ টার্গেটে নিয়োগ পান গওহর রিজভী’, ‘সংকট নিরসনে ওয়াশিংটনের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল কফি গ্র’, ‘খালেদাকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ করেছিলেন বিএনপি নেতারা’, ‘জয়কে এখনই রাজনীতিতে না আনার জন্য শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছিলেন শীর্ষস্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা’, ‘হাসিনাকে গ্রেপ্তার দলে কল্যাণ বয়ে আনবে, বলেছিলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর’, ‘রাজনীতি ছাড়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হাসিনা-খালেদার, গীতা পাসিকে জানিয়েছিলেন এটিএম আমিন’, ‘বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে ব্যাপকহারে চলে দুর্নীতি’, ‘এরশাদ বলেছিলেন জিল্লুর রহমানের পর ছয় মাসের মধ্যেই তিনি রাষ্ট্রপতি হবেন’, ‘বিডিআর ব্রিদোহের ঘটনায় এরশাদ প্রথমে ভারতকে সন্দেহ করে পরে প্রত্যাহার’, ‘বিডিআর বিদ্রোহের কথা সেনাবাহিনীর অফিসাসরা আগেই জানতেন, বলেছেন এরশাদ’, ‘বাংলা ভাইয়ের উত্থানে সহযোগিতা করেন বিএনপি নেতারা’Ñ এরকম সব গোপন তথ্য ফাঁস করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে চমক তৈরি করে উইকিলিকস।  উইকিলিকসের ফাঁস করা এসব তথ্য সম্পর্কে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেউ কেউ প্রতিবাদ জানালেও বেশিরভাগ নেতা নীরব। এব্যাপারে তারা মুখ খুলছেন না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, উইকিলিকসের এসব তথ্যকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু বলেছেন, তার সম্পর্কে দেওয়া উইকিলিকসের তথ্য অসত্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলেছেন, উইকিলিকসের এসব তথ্যের কোন ভিত্তি নেই। এগুলো রূপকথার গল্পের মত। বাংলাদেশকে রাজনীতিশূন্য করতে এবং বিএনপিকে হেয় করার ষড়যন্ত্র হিসেবেই উইকিলিকসকে দিয়ে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মুফতি ফজলুল হক আমিনী বলেছেন, এর সবই যে সত্য তা নয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিকদের নৈতিক চরিত্র এত দুর্বল এবং তারা পাশ্চাত্যের এতটাই গোলাম যে দেশের এসব নেতার মুখে উইকিলিকস জুতা মেরেই যাচ্ছে কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছে না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এসব দুর্বল নৈতিক চরিত্রের অধিকারী রাজনীতিকদের উইকিলকসের জুতা খেয়েই রাজনীতি করতে হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেছেন, উইকিলিকসের প্রকাশিত তথ্য নিয়ে এত মাতামাতির কোন যৌক্তিকতা নেই। আমি নিজেও রাষ্ট্রদূত ছিলাম। দায়িত্ব পালনকালে সংশ্লিষ্ট দেশ সম্পর্কে নিয়মিত পলিটিক্যাল রিপোর্টিং করা রাষ্ট্রদূতদের একটি রুটিন ওয়ার্ক। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কিছু বললেই যে তা সত্য এর- তো কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। অতীত রেকর্ড দেখলে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে যুক্তরাষ্ট্র বা দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে যেসব তথ্য দিয়েছিলেন সেগুলোর বেশিরভাগই পরবর্তিতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ইরাকে আক্রমণের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ততকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জেনারেল কলিন পাওয়েল বলেছিলেন ইরাকে পারমাণবিক বোমা রয়েছে। সিআইএ- একই তথ্য দিয়েছিল। কিন্তু ইরাক যুদ্ধ শেষে কলিন পাওয়েল নিজের লেখা বইতে লিখেছেন, আমার জীবনের সবচে বড় ভুল ইরাকে পারমাণবিক বোমা থাকার ভুল তথ্য দেয়া, আমি গোটা পৃথিবীকে সেদিন মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলাম। এজন্য পাওয়েল তার বইতে অনুশোচনাও করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিম লীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূূতরা তারবার্তায় কিছু বললেই যে তা সত্য হয়ে যাবে তা ঠিক নয়। পেন্টাগন, ভারত, সৌদিআরব, ইরাক, আফগানিস্তান পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে উইকিলিকস এরকম লাখ লাখ রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু তাদের রিপোর্ট নিয়ে কোথাও কোন সরকারের পতন হয়েছে, কোন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কিংবা কোন দেশের ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়েছেÑ এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি।

শেষ হবে আগামী বছরের ডিসেম্বরে
মেয়র হানিফ ফাইওভারের ৪২ ভাগ কাজ সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফাইওভারের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই শতকরা ৪২ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই ফাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ২০১৩ সালের শুরুতে এই ফাইওভারের ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক মোঃ আশিকুর রহমান তথ্য জানান। তিনি জানান, রাজধানীর শনির আখড়া থেকে গুলিস্তান হয়ে পলাশী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফাইওভার চালু হলে এই দীর্ঘপথের যানজট হ্রাস পাবে। পাশাপাশি জনগণ দ্রুত গন্তব্যস্থলে যাতায়তা করতে পারবে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে নগরীতে চলাচলের যে অতিরিক্ত সময় জ্বালানি ব্যয় হবে তার অনেকটাই সাশ্রয় হবে। যানবাহন জনগণ সহজেই কাক্সিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফাইওভার নির্মিত হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২০৫৩ কোটি টাকা। বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন গ্রপের বেলহাসা কম অ্যান্ড এসোসিয়েটস লিমিটেডের নির্মাতা। প্রকল্প পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, ২০১২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফাইওভার নির্মাণ শেষ করার ল্য নিয়ে বর্তমানে ২৪ ঘন্টা এর নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ফাইওভারের উপরিভাগে সেগমেন্ট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। পিলার নির্মাণের কাজ একইভাবে এগিয়ে চলেছে। তিনি জানান, নগরীর গোলাপবাগ সেগমেন্ট তৈরি হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২২ জুন এই ফাইওভার নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ওই দিনই তিনি মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নামে ফাইওভারের নামকরণের ঘোষণা দেন। প্রকল্প পরিচালক জানান, এই ফাইওভারটি বাংলাদেশের প্রথম সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) প্রকল্প। ফাইওভারের ডিজাইন নির্মাণ বাবদ সকল ব্যয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বহন করবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের কোন অর্থ ব্যয় হবে না। বর্তমান সরকারের বিশেষ উদ্যোগে -লেন বিশিষ্ট এই ফাইওভারের ডিজাইন সংশোধন পরিবর্তন করা হয়। পদ্মা সেতু, ঢাকা-চট্টহ্রাম মহাসড়ক সম্প্রসারণ, ঢাকা মহানগরীর পূর্ব পশ্চিমাংশের উন্নয়ন পরিকল্পনা বিবেচনায় ফাইওভারে ডিজাইন সংশোধন করার ফলে মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১০ কিলোমিটার। আগে এর দৈর্ঘ্য ছিলো কিলোমিটার। উল্লেখ্য, ফাইওভারের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়হার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও এই ফাইওভার নির্মাণে সরকার জনগণের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি পয়ঃনিষ্কাষণ টেলিফোন লাইন না সরিয়েই নির্মাণ কাজ চলছে।
আধুনিক দৃষ্টিনন্দন ফাইওভার নির্মাণ আধুনিক যন্ত্রপাতি, জনবল আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফাইওভারের উপরিভাগ  আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রাতে স্থাপন করা হবে। যাতে করে নীচ দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাহত না হয়।
ফাইওভারের গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) সাথে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিইএস ইন্ডিয়া লিমিটেডের তত্ত্বাবধান ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ কাজ চলছে। বিদ্যমান সড়ক বাস টার্মিনালের সাথে যোগাযোগের জন্য এই ফাইওভারের উপরে ওঠার জন্য ৫টি নীচে নামার জন্য ৬টি ্যাম্প বা পথ থাকবে। এই ফাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ হলে মহানগরীর যানজট নিরসন এবং রাজধানী ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম মংলা বন্দরসহ প্রায় ৩০টি জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।

আমাদের প্রিয় জাকির স্যার আর নেই
এ্যাডভোকেট মোঃ তারিকুল ইসলাম
বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ সৈয়দ আমিনূল ইসলাম জাকির আজ আর নেই। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে ঢাকা গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্নাইলাইহে রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক নাবালিকা মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মী-সহমর্মী রেখে গেছেন। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন এবং শোকার্ত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি সকলের   কাছে “জাকির স্যার” হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ছুটে যান সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল আলম হানিফ, তথ্য সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির, সাবেক হুইপ সৈয়দ শহিদুল হক জামাল, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ শাহেআলম, চলচ্চিত্র পরিচালক এনায়েত করিম, শিল্পপতি আলহাজ্জ মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন তালুকদার, খোঁজখবর সম্পাদক মিজানুর রহমান, গিফ্ট ভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন লিটন। আগে থেকেই হাসপাতালে ছিলেন বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক ও ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানা। তিনি লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
 মৃত্যুর পর পরই তাঁর লাশ আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ এলাকায় ছোট ভাই অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল ইসলামের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সস্ত্রীক তাঁর মৃতদেহ দেখে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ঐ দিন রাত ১০ টায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ মাঠে তাঁর প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁর লাশ নিজ বাড়ি চাখারে পৌঁছলে সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ঐ দিন সকাল ১০ টায় বাইশারী কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয়, সকাল ১১ টায় বানারীপাড়া হাই স্কুল মাঠে তৃতীয়, দুপুর ১২ টায় চাখার হাই স্কুল মাঠে চতুর্থ এবং পারিবারিক মসজিদ ময়দানে পঞ্চম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বানারীপাড়ায় জানাজার পরে তাঁর কফিনে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ, বানারীপাড়া পৌরসভা সহ বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। চাখারে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাঁকে চিরনিদ্রায় সমাধিত করা হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর চাখারে তাঁর কুলখানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর জানাজা ও কুলখানিতে পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবীদ, পেশাজীবি সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন। তাঁর মৃত্যুতে ১৯ সেপ্টেম্বর শিকারপুর ডিগ্রি কলেজে শেকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর তাঁর দেহে ক্যান্সারের অস্তিত্ব সনাক্ত হলে তাঁকে ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দেশের অন্যতম শীর্ষ লিভার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ মোহাম্মদ আলী ও প্রফেসর ডাঃ এ. কে. এম. মহসিন তাঁর চিকিৎসা করেছেন। আইসিইউতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন- তিনি লিভার ক্যান্সারের পাশাপাশি কোলিনজাইটিস সেফটিসিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছিলেন। মৃত্যুর পূর্বক্ষণে একজন কীডনি বিশেষজ্ঞও তাঁকে চিকিৎসা দিয়েছেন। অনেক দেরিতে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়ায় বেশি কিছু করার ছিল না। ১৯৫৮ সনে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ছাত্রলীগের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৭ সনে তিনি বরিশালের চাখার ফজলুল হক কলেজে ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদে যোগ দেন। ১৯৬৮ সনে তিনি বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সন পর্যন্ত সভাপতি ও আমৃত্যু আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ৪৩ বছর তিনি বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭৫ সনে বঙ্গবন্ধু হত্যর পরে তিনি রাজনৈতিক হয়রানি মামলায় কারাবরন করেন। ১৯৭৯ সনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়নে পিরোজপুর-২ আসনে সংসদ নির্বাচন করেন। তিনি আশি ও নব্বই এর দশকে বাইশারী সৈয়দ বজলুল হক ডিগ্রি কলেজ ও শিকারপুর শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। চাকুরি ছেড়ে দিয়ে তিনি বেশ কিছু দিন বরিশালের আদালতে ওকালতি করেন। তিনি সুনামের সাথে বানারীপাড়া পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। জারিন নামে তাঁর ১১ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
অধ্যক্ষ সৈয়দ আমিনূল ইসলাম জাকির-এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বরিশাল সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন, সাংসদ মনিরুল ইসলাম মনির, সাংসদ তালুকদার মোঃ ইউনুচ, সাংসদ অধ্যক্ষ মোঃ শাহ আলম, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাসিম, বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ মোখলেছুর রহমান, সাধারন সম্পাদক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, জনতা ব্যাংকের পরিচালক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ শাহে আলম, সাবেক হুইপ সৈয়দ শহিদুল হক জামাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা হাবিবুর রহমান খান, বানারীপাড়া মুজিব বাহিনী প্রধান মোঃ আতিকুল হক, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সদস্য নুর মোহাম্মদ মিয়া, চলচ্চিত্র পরিচালক এনায়েত করিম, শিল্পপতি আলহাজ্জ মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন তালুকদার, খোঁজখবর সম্পাদক মিজানুর রহমান, গিফ্ট ভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন লিটন, বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গেলাম ফারুক, ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুন নেছা, বানারীপাড়া পৌর মেয়র গোলাম সালেহ, স্বরূপকাঠি উপজেলা চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম, স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র দেলোয়ার হোসেন ফারুক, বানারীপাড়া আওয়ামীলীগ নেতা এ.কে.এম ইউসুফ আলী, আব্দুল আজিজ তালুকদার, বানারীপাড়া মুক্তিযুদ্ধের বেস কমান্ডার বেনীলাল দাশ গুপ্ত, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মল্লিক, আব্দুল মোতালেব মৃধা, স্বরূপকাঠি আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারন সম্পাদক এস.এম ফুয়াদ, উজিরপুর আওয়ামীলীগ সভাপতি খালেক আজাদ, সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক এস.এম. জামাল, পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কানাই লাল বিশ্বাস, বানারীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তরুন ঘোষ, বানারীপাড়া উপজেলা বি.এন.পি সভাপতি সালেহ আহমেদ, বানারীপাড়া পৌর বি.এন.পি সভাপতি খলিলুর রহমান চোকদার, বানারীপাড়া ওয়ার্কাস পার্টির সম্পাদক অধ্যাপক মন্টু লাল কুন্ড, বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা কালীন সর্বোচ্চ জমিদাতা এস. আব্দুল কাদের, বানারীপাড়া প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাতা এ্যাডভোকেট মোঃ তারিকুল ইসলাম, বানরীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি গোলাম মাহমুদ রিপন, স্বরূপকাঠি প্রেসক্লাব সভাপতি নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় বালু উত্তোলন
বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি আবাদি জমি
মেঘনা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে আবাদী জমি বসত ভিটা মেঘনা নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। উপজেলা শেষ উত্তর পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে মেঘনা নদী প্রবাহিত।মেঘনা নদী বালু মহালটি সেলিনা ইসলামের মালিকানাধীন জেনারেল ট্রেডিং এন্ড কনষ্ট্রাক্টিং কোং লিঃ বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা নেয়। উক্ত বালু মহাল টি শেষ দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত নদীর মাঝা মাঝি স্থানে শেষ হয় যা নদী তীরবর্তী গ্রাম থেকে ২৭০০ ফুট উত্তর পশ্চিমে (নদীর ভিতরে) লিজ কৃত বালু মহালের বালুর পরিমান কমে যাওয়ায় ড্রেজার গুলো দিন রাত তীর ঘেষে বালু উত্তোলনের ফলে সেনের চর মৌজা ভাসানিয়া দড়িচর মৌজার প্রায় পাঁচ হাজার একর আবাদি জমি বসত ভিটা নদী গর্ভে প্রায় বিলীন হওয়া পথে। নদীর তীরবর্তী রামপ্রসাদের চর গ্রাম বাসীর বসত ভিটা আবাদি জমি ১৪০ ফুট/১৫০ ফুট গভির নদীতে পরিনত হচ্ছে। ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পাওর জন্য উচ্চ আদালতে রিটপিটিশন নং ৫৯৩/০৮ দাখিল করার ফলে আদালত রামপ্রাসাদের চর গ্রামের আশে পাশের এলাকায় বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। লিজ কৃত প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তীর ঘেষে দিন রাত অবিরাম বালু উত্তোলন করছে। এই ব্যাপারে রামপ্রাসাদের চর গ্রাম বাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক কুমিল্লা বরাবরে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি দুটি পৃথক লিখিত আবেদন করলে লিজ কৃত প্রতিষ্ঠানের চিহ্নিত পালিত সন্ত্রাসীরা রামপ্রসাদের চর গ্রাম বাসীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি চাঁদাবাজির মামলায় জরানোর ভয় দেখায়। শনিবার সকালে গ্রমাবাসীরা নদীতে ড্রেজার বন্ধ করতে গেলে
লিজ কৃত প্রতিষ্ঠানের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাদের ধাওয়া করে। ঘটনায় এলাকায় উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রাম বাসীরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে মামলা আতঙ্কে ভূঁগছে। ব্যাপারে লিজ কৃত প্রতিষ্ঠানের মালিক সেলিনা ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার মন্ডলের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নিকট একটি লিখিত আবেদন এসেছে আমি ব্যাপারটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছি। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

জনতার জব্বার ভাই একজন দেশ প্রেমিকের প্রতিকৃতি
হাসনাইন সাজ্জাদী
দেশ, মাটি ও মানুষ নেতা তৈরী করে দেয়। যুগে যুগে কালে কালে এ প্রক্রিয়ায় অসংখ্য নেতার জন্ম হয়েছে। কিন্তু যে সকল ব্যক্তিবর্গের মধ্যে জনতার কাতারে থেকে জনতার আপন সত্বা হিসেবে কাজ করে জনতার হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পাওয়া নেতার সংখ্যা কিন্তু হাতে গোনা। জনতার নেতা মানে জননেতা। আজকালের মত গন হারের কোন জননেতা নন। আন্তরিক অর্থের এই বিরল জননেতার সংখ্যা কিন্তু হাতে গোনা। সর্বত্রই জনপ্রিয় জননেতার সংখ্যা বেশী নয়। এই অল্প সংখ্যক জনপ্রিয় জননেতার মধ্যে সর্বকালের মাপকাঠিতে উতরে যাওয়া একজন যোগ্য ও আপাদমস্তক জনপ্রিয় জননেতা ছিলেন কুলাউড়ার মরহুম আব্দুল জব্বার এমপি। তিনি একাধারে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা ও আমরণ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক গুনাবলীর পাশাপাশি মানবিক গুনাবলীতেও তিনি ছিলেন একজন পূর্ণ মাত্রায় জন প্রতিনিধি। তার জনপ্রতিনিধিত্বশীল ভূমিকা ছিল সকল বিতর্কের উর্ধ্বে। শত্র“ মিত্র আপন পর ভোদাভেদ ছিল না তার রাজনৈতিক পরিমন্ডলে। প্রতিপক্ষের রাজনীতিবিদরা তার রাজনৈতিক গুনাবলীতে ঘায়েল হয়েছেন কিন্তু তাকে খারাপ বলতে পারেন নি। দলমত নির্বিশেষে এমন রাজনৈতিক নেতা আজকের প্রেক্ষাপটে বিরল। তিনি ছিলেন কুলাউড়ার কাদামাটিতে গড়া এক স্বর্ণমূর্তি। তার একান্ত শত্র“ও তার ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছে-এমন নজির কেউ দেখাতে পারবে না। এমপি থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির আসনে সমাসীন হওয়া সবই ছিল তার নেতৃত্বের গুনাবলী এবং যোগ্যতার অংশ। সকলের প্রতি সমান দৃষ্টি সম্পন্ন এবং অহিংসতার ধারক থেকেও ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন আপোষহীন। ব্যক্তিগত লোভ লালসা ও অর্থ সম্পদের মোহতার মধ্যে ছিল না। তার মত এমন গুনাবলী সম্পন্ন নির্লোভ ও নির্বিরোধী মানুষ আজকাল খুজে পাওয়া যাবে না। তবে তার মধ্যে সীমাবদ্ধতা ও পিছুটান ছিল। এটা ছিল মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে। জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মানুষ তার কাধে যে দায়িত্ব ও কর্তব্য কাজ অর্পন করেছেন তিনি তার সে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ছিলেন সম্পূর্ণ সজাগ। ঢাকামূখিতা বা রাজধানীর মহানাগরিক হওয়ার ইচ্ছা তার খাতে ছিল না। সুযোগ পেয়েও তিনি প্লট, ফ্ল্যাট আর দোকানদারী পাততে চাননি রাজধানীতে। তিনি ফিরে এসেছেন কুলাউড়ার মাটিও মানুষের ঠিকানায়। যে মাটি ও মানুষ নেতাকে নেতা হিসেবে তৈরী করেছিল, সেই মাটি ও মানুষ ছিল তার হৃদয়ের মনিকোঠায় বসানো চেনা সুর আপন রক্ত মাংসের মত অবর্জনীয় ও অলংঘনীয় সাধনা। এক কথায় কুলাউড়ার রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। আগেই বলা হয়েছে তিনি সাংসদ হয়েছেন কিন্তু তার ভোটারদের মায়া তিনি ত্যাগ করেননি। নেতা হয়েছেন কিন্তু মাটি ও মানুষের টান ভুলেননি। ফ্ল্যাট আর প্লট নিয়ে রাজধানীর মহানাগরিক হবার কথা ভাবেননি। আজকাল উপজেলা পর্যায়ের সাধারণ সম্পাদক বা সভাপতি পদ পেলে অনেক নেতাই রাজধানী ছাড়েন না। সেখানেই বাড়ি গাড়ি কিনে দোকানদারী খুলে বসেন। কিন্তু তিনি ছিলেন তার সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম। তিনি কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েছেন কিন্তু কুলাউড়া ছাড়েননি। আমি এই অর্থে বলেছি তিনি ছিলেন পশ্চাতমূখী। কেন্দ্র তাকে টেনেছে। কিন্তু তিনি সে বাধন ছিন্ন করে মুখ কুলাউড়া পানে ঘুরিয়ে নিয়েছেন। এটাই তার সীমাবদ্ধতা। এটাই ছিল তার অসহায়ত্ব। এই সীমাবদ্ধতা ও অসহায়ত্বকেই তিনি জয় করে চির বিজয়ী হয়েছেন। চির জাগরুক আজ তিনি জনতার হৃদয় মনিকোঠায়। কুলাউড়া বাসীর ভাগ্য ছিল তার মত নেতা পাওয়া কিন্তু কুলাউড়ার মায়া ত্যাগ করে তিনি নিজের ভাগ্য গড়েননি। বিত্তের পেছনে তিনি ছুটেননি। ছুটেছেন মাানুষের কল্যাণ ও সুখ দুঃখের সাথী হতে। চিরদিন থেকেছেন তিনি জনতার জব্বার ভাই। মরহুম আজিজ আহমদ বেগের কাছ থেকে তার বিষয়ে আমি অনেক অজানা কথা শুনেছি। আজিজ বেগ তদানীন্তন মৌলভীবাজার মহকুমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। তদানীন্তন মহকুমা ব্যাপী তিনি ঘুরছেন আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার জন্য কুলাউড়ায় হাতে গোনা ২-৩ জন ব্যক্তি নিয়ে প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যাত্রা শুরু করেছিল। তার মধ্যে মরহুম আব্দুল জব্বার একজন। পকেটের পয়সা দিয়ে গাড়ী ভাড়া পরিশোধ করে তখন মিটিং মিছিলে অংশ নিতে হতো। তখন আজকের মতো এত পয়সার ছড়াছড়ি ছিল না। তারা পায়ে হেটে অনেক জায়গায় গিয়ে মিছিল মিটিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কুলাউড়া থেকে দূরদুরান্ত লাঠিটিলা কিংবা ফুলতলা, মনু কিংবা পলকির পার বরমচাল কিংবা কাজলধারা কত জায়গায়, কত প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা পায়ে হেটে গিয়ে রাজনীতি করেছেন। একটা জিপ গাড়ির ব্যবস্থা হলে দেখা গেছে যাত্রী ১০জন। কি করা যায় ? সমাধান একটা বের করে নিতেন আব্দুল জব্বার। তিনি ২/১ জনকে সাথী করে ২/৩ঘন্টা পায়ে হেটে রওয়ানা হয়ে গেছেন। তদানীন্তন কুলাউড়া থানার পায়ে চলা মেটো পথে আব্দুল জব্বারের পদচিহ্ন আজিজ বেগ তার জীবদ্দশায় মনে করতেন আজও খুজে পাওয়া যাবে। তাইতো আব্দুল জব্বার ছিলেন গ্রাম গ্রামান্তরের এক জনপ্রিয় মুখ। জনপ্রিয় জননেতা, আব্দুল জব্বারের মত নেতা আর কুলাউড়া আসবেন না বলে আমি মনে করি। কারণ মাঠের হাল ছেড়ে জনতার দাবি আদায়ের মিছিল মিটিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবার মিছিল মিটিং শেষে যথারীতি তার লাঙ্গল কষে ধরেছেন ডাল-ভাতের সন্ধানে। মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে তিনি উদর পূর্তি করেননি। বরং মানুষকে খাবার তুলে দেয়ার রাজনীতি করে গেছেন আজীবন। জনতার কোন আবদার তিনি অপূর্ণ রাখতে চাননি। জনতার দাবির কাছে সমর্পিত ছিলেন তিনি। জনতার দাবিতে তিনি উপজেলা নির্বাচন করেছেন, চেয়ারম্যান হয়েছেন। সাংসদ হয়েছেন জনতার ভোটে। ভোটারের কাছে তিনি ছিলেন অতি আপনজন। আর গোটা কুলাউড়াবাসীতো বটেই। সারা দেশের কৃষক সমাজ তার কাছে ছিল তার শরীরের মতোই অঙ্গিভূত। একদেহ একমনের মত তার কাছে ছিল এদেশের কোটি কোটি কৃষক জনতা। কারণ তিনি যে, তাদেরই নেতা।
গত দুই বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ দিয়েছে
নিজম্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক গত দুটি অর্থবছরে (২০০৯-’১০ ২০১০-’১১) ল্যমাত্রার চেয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক এটিএম আনিসুর রহমান বুধবার এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, এই দুই অর্থবছরে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯-’১০ অর্থবছরে শতকরা ১০৫ ভাগ ২০১০-’১১ অর্থবছরে শতকরা ১১৩ ভাগ ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি জানান, একই সময়ে ব্যাংকের ঋণের টাকা আদায়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। আদায় হয়েছে হাজার ৫শ৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যার মধ্যে ২০০৯-’১০ অর্থবছরে আদায় হয়েছে  হাজার ৯৫ কোটি লাখ টাকা। ২০১০-’১১ অর্থবছরে আদায় হয়েছে হাজার ৪শ৪৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
তিনি জানান, গত দুই অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৭২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যার মধ্যে ২০০৯-’১০ অর্থবছরে ঋণ বিতরণ হয়েছে হাজার ৮শ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা আগের বছরের চেয়ে শতাংশ বেশি। ২০১০-’১১ অর্থবছরে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়ে অর্জিত হয় হাজার ৯শকোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।
এটিএম আনিসুর রহমান বলেন, এই দুই অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক যেসব খাতে ঋণ বিতরণ করেছে তা হলোÑ শস্য খাতে হাজার ৮শ৬০ কোটি ১০ লাখ টাকা, স্যখাতে ৭শকোটি ২৬ লাখ টাকা, প্রাণীসম্পদ খাতে ৫শ৬৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, সেচ কৃষি যন্ত্রপাতি খাতে ৭৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, চলমান খাতে হাজার ৫শ৮০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, এসএমই খাতে ৫শ১৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, কৃষিভিত্তিক প্রকল্প খাতে ৫শ৮৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, আর্থ-সামাজিক খাতে ১শ কোটি লাখ টাকা অন্যান্য খাতে ৭শ৩২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অত্যন্ত সচ্ছতা দ্রুততার সাথে কৃষিঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিশেষ করে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার মতায় আসার পর কৃষিঋণ কার্যক্রম ব্যাপক গতি লাভ করে। সেই ল্যমাত্রায় ব্যাংক ২০০৯-’১০ অর্থবছরে শতকরা ১০৫ ভাগ ২০১০-’১১ অর্থবছরে শতকরা ১১৩ ভাগ ঋণ বিতরণ করতে সম হয়েছে।
‘‘বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করে বহু কৃষক পরিবার তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এই দুই অর্থবছরে কৃষি ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করে প্রায় ৩৪ লাখ পরিবার উপকৃত হয়েছে এবং তাদের পারিবারিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছে’’ বলে তিনি জানান।
দেশে বর্তমানে যে সকল সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করা হয় তার মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৫০ ভাগ ঋণ বিতরণ করে আসছে। কৃষি ব্যাংক কৃষকদের সাথে অত্যন্ত সচ্ছতার সাথে ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। কোনো প্রকার অনিয়মের খবর পাওয়া গেলে ঋণ তদারিক সেলের মাধ্যমে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের আমদানি বিকল্প তেল, ডাল মসল্লা জাতীয় ফসল পাদনের জন্য কৃষি ব্যাংক শতকরা ভাগ হারে ঋণ বিতরণ করে আসছে। এই খাতে ব্যাংক গত অর্থবছরে ১৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে এবং চলতি অর্থবছরে ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বর্তমান সময়ে প্রায় ২৫ লাখ কৃষক কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ টাকায় একাউন্ট খুলেছে। যার মাধ্যমে কৃষকদের কৃষি ঋণ সরাসরি তাদের একাউন্টে জমা হচ্ছে।
শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা করার নির্দেশ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
পুঁজিবাজারের সব প্রতিষ্ঠান মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা করার নির্দেশ দিয়েছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)  বৃহস্পতিবার করা এসইসির সংক্রান্ত এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, যে সব প্রতিষ্ঠান মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা নয়, তাদের আগামী ডিসেম্বর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ডিসেম্বর থেকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে সব প্রতিষ্ঠান মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ইউনিট লেনদেন হবে।
সার্কুলারে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যে সব কোম্পানির শেয়ার মিউচুয়াল ফান্ডের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা নয়, সে সব কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডকে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করে ডিসেম্বর থেকে ইউনিফর্ম অভিহিত মূল্যে অর্থাত্, অভিহিত মূল্য ১০ টাকার মাধ্যমে ট্রেডিং শুরু করতে হবে।  জন্য ডিসেম্বর রেকর্ড ডেট ধার্য করতে হবে। জন্য কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে হইবে না। গত বছর অর্থ মন্ত্রণালয় অভিহিত মূল্য ১০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিলেও তখন কোনো বাধ্য-বাধকতা ছিলো না। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের অভিহিত মূল্য তখন ১০ টাকা করা হয়।

জাতিসংঘে ৬৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর
বিশ্ব শান্তির মডেল বাস্তবায়িত হলে বিশ্ব
শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
২০১১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের  সাধারণ পরিষদের ৬৬তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা ভাষায় ভাষণ দেনতিনি বাংলা ভাষণ দিয়ে বাংলা  ভাষা ও বাঙালি জাতির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেনজাতি ও দেশ তার নিকট কৃতজ্ঞতার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে প্রথম বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করেছেনপিতার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনি জাতিসংঘে মাতৃভাষায় বক্তব্য দিয়ে বিশ্ব শান্তির মডেল উপস্থাপন করেছেনতিনি বিশ্ব শান্তি মডেল বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশংসা করে বলেন, আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষাই জাতিসংঘের প্রধান কাজ নয়, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন জলবায়ু পরিবেশজনিত সমস্যা মোকাবিলা করাদারিদ্র্য বিমোচন, পানি ও জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি, ধনী-গরিবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য বিলোপ এ সকল ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সফলতা অর্জনে আমাদের বিশ্বাস জš§ছে যে, একবিংশ শতাব্দীতে মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পতিতে সকলের সম্মিলিত ইচ্ছাকে আরো জোরদার করার মতো সক্ষমতা সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত ও বৈধ একমাত্র আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘেরই রয়েছে
তিনি তার ভাষণে বলেন, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং শান্তিকেন্দ্রিক উন্নয়নই পারে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেতিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে একুশশতকের  শান্তিময় বিশ্বের জন্য ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সন্ত্রাসবাদের মূল উৎপাটনে শান্তির মডেল স্থাপন করেনজনগণের ক্ষমতায়ন এবং শান্তিকেন্দ্রিক উন্নয়ন মডেল শিরোনামে এ মডেল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব এবং এ মডেল প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেনতাই একই সঙ্গে বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষার মর্যাদা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবেদন জানানতিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় তিন শমিলিয়ন মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেবাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষায় মর্যাদা দিতে সকলের সমর্থন দাবি করেনপ্রধানমন্ত্রী তার সারা জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে জাতিসংঘে সকলের কাছে শান্তির মডেল উপস্থাপন করেনএ মডেল বহুমাত্রিক ধারণা, যেখানে গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবেতিনি আরো বলেনশান্তির জন্য ন্যায় বিচার আবশ্যক
আমরা আশা করি গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে মডেল দিয়েছেন তা জাতিসংঘ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে

দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মারাÍক হুমকিতে
আকরাম খান
দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কত দিনে পূর্ণ গণতান্ত্রিক হবে বলা কঠিনআমরা জানি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনের পথ ও মতের আপাতত সমাধানযোগ্য পদ্ধতিকে বলা হয় গণতন্ত্ররাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনের সীমা ছড়িয়ে গেছেবিশেষ করে ব্যক্তির বাইরে পক্ষ-বিপক্ষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই পদ্ধতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠজনের সমর্থনকে মেনে নিতে হয়বিশ্বের অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আবার সনাতনী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে ত্রটিমুক্ত করতে প্রয়োগকৃত জনমতের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে যুক্ত করা হচ্ছেফলে প্রচলিত সাধারণ গণতন্ত্রে যেখানে সংখ্যালঘিষ্ঠের মতামত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ আছে সেটি আর থাকছে নাতবুও উভয় ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত বা সমর্থনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এখন পর্যন্ত এ সকল ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রই একমাত্র রক্ষাকবজ হয়ে আছেআমাদের দেশে আমরা তার কতটুকু প্রয়োগ করতে পারছি সে ব্যাপারে চূড়ান্ত মূল্যায়নের সময় অনেকটাই দূরেপ্রচলিত ধারায় নির্বাচনের মাধ্যমে জয়-পরাজয়ের পর মেয়াদ গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জনগণ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্ব-স্ব ক্ষমতা সমষ্টিগতভাবে কারো প্রতি কিংবা কোনো দল অথবা অধিকতর জনকল্যাণমুখী আদর্শিক অঙ্গীকারের প্রতি ভোটের মাধ্যমে অর্পণ  করেনঅর্থাৎ একই মতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ কার্য সম্পাদনের অধিকার লাভ করেনমেয়াদান্তে ওই সকল জনগণই আবার তাদের মতামত বা সমর্থন প্রত্যাহার কিংবা অন্য কারো ওপর ন্যস্ত করতে পারেনযে কারণে সরকার বা স্থানীয় সরকার এর নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে নির্দিষ্ট সময়ের কথা মনে রাখতে বাধ্য হয়দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা এযাবতকাল মেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণের কবলে পড়ে হয়  স্বৈরাচারী না হয় দখলদার শক্তির কাছে বার বার হোঁচট খেয়েছে১৯৯৬ সালে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতা ব্যবহার করে পরবর্তী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের রেকর্ড গড়তে সক্ষম হয়তবুও অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমন, স্থানীয় সরকার এর ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ইত্যাদির মেয়াদ সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা বিরাজ করছেদেশের গণতন্ত্রবাদী এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজনৈতিক দলসমূহের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের বদলে শক্তি, অর্থ ও তৈলমর্দন ইত্যাদি কারণে মেয়াদোত্তীর্ণ দূষণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে ব্যবসাবৃত্তিক মুনাফাতন্ত্রে পরিণত করছেএকবার কেউ পদ-পদবিতে আসতে পারলেই আজীবন মেয়াদের স্বপ্ন দেখেনপদবিধারীদের ভাষায় জনগণের কোনো ক্ষমতা  নেই, সবই স্ব-স্ব দলের প্রধান নেতারজনগণ দেশের কোনো কাজই করে না, কেবল খায় আর শোয়; যা কিছু করে একমাত্র দলের প্রধান নেতাদ্বিতীয় সারি থেকে চৌদ্দ নম্বর সারির সব নেতারাই এ কথা বলতে বলতে মুখের ফেনা মুছতে মুছতে রুমাল ভিজিয়ে ফেলেনেতা খুশিতে ফুলে ফেফে মুচকি হেসে হাত নেড়ে কৃতজ্ঞতা জানায়দলীয় কর্মী আর সমর্থক জনতা হা করে নিশ্বাস ছাড়ে আর নাক দিয়ে প্রশ্বাস টানেসুতরাং রাষ্ট্রীয় এবং দলীয় ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণের কুফল সম্পর্কে সকলকে সচেতন হওয়া দরকার
            ২০০৩ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ এর মধ্যে দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার অধীনে ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দীর্ঘ ৮ বছর ৩ মাস ২০ দিন পর ২০১১ সালের ৫ জুলাই পরবর্তী নির্বাচন শেষ হয়েছেআর মাত্র ১ বছর ৮ মাস ১০ দিন সময় অতিক্রম করলেই একবারে দুটি মেয়াদ পূর্ণ হতোপৌরসভা সিটি কর্পোরেশন সম্পর্কে বলাই বাহুল্যসংবিধিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত পূর্বে নির্বাচিতরাই ক্ষমতায় বহাল থাকবেনকত দিন বহাল থাকবেন বা কত দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতেই হবে স্থানীয় সরকার এর বেলায় সেটি স্পষ্ট নয়কাজেই নির্বাচন বিলম্বিত করে বিশ-পঞ্চাশ বছর ক্ষমতায় থাকা বা রাখার যথেষ্ট সুযোগ আছেতবে কেন্দ্রীয় সরকার এর বেলায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে ভিন্ন কৌশলে অপব্যবহার করতে হয়আমরা লক্ষ্য করলাম  ২০১১ এর ইউপি নির্বাচনে শতভাগ অবাধ ও নিরপেক্ষতা বজায় ছিলনির্বাচনপূর্ব সহিংসতা  কিংবা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা কারো চোখে পড়ে নাইনির্বাচনোত্তর সামান্য কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা  ঘটলেও অধিকাংশের পেছনে পূর্বশত্রতার গন্ধ পাওয়া গেছেটাকার অপব্যবহার রোধ করতে নির্বাচন কমিশন কঠোর কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও ২০১১ এর নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করেছেন প্রার্থীরা যা গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে নষ্ট দিকেপ্রচলিত প্রথায় চা-পান, ব্যানার-ফেস্টুন, মিছিল-মিটিং, ভোজ ইত্যাদি প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ থাকায় মনে হতে পারে খরচের পরিমাণ কম ছিলআসলে নগদ অর্থের কারবারীদের দৌরাÍ্য ছিল বেশিযারা একবার নির্বাচিত হয়ে দুই মেয়াদ ক্ষমতা ভোগ করেছে তারা যেমন, তেমনি যারা মনে করেছে একবার নির্বাচিত হতে পারলে ভবিষ্যতে তিন মেয়াদও পূর্ণ করা যেতে পারে তারা পুঁজি বিনিয়োগে কার্পণ্য করেন নাইমেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণ জনগণের ম্যান্ডেটের ওপর ইনডেমনিটি আরোপ করার যেমন সহজ সুযোগ ব্যবহার করতে সক্ষম হয় তেমনি, প্রার্থীদেরও নির্বাচন একটি লাভজনক বাণিজ্যের বাজার বলে ধারণা করতে উদ্বুদ্ধ করে
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে সাধারণ অর্থে সম্মেলন বলা হয়সমঝোতা, মনোনয়ন, অথবা নির্বাচনের মাধ্যমে এ কাজটি সম্পন্ন হয়ে থাকেঅর্থাৎ গণতন্ত্রের নামাবলী গায়ে জড়িয়ে সর্বক্ষেত্রেই মেয়াদকে থোরাই পরোয়া করার চিত্র সার্বিক অগণতান্ত্রিক চরিত্রেরই বহির্প্রকাশএসব রাজনৈতিক সুবিধা-অসুবিধা, অথবা কৌশলগত কারণে নেতৃস্থানীয়দের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হতেই পারেদলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিসহ জনকল্যাণে দলীয় কর্মকাণ্ডের অব্যাহত ঘাটতির বিষয়টিকে অনেকেই প্রাধান্য দিতে চায নাক্ষমতায় যাওয়ার পথকে গণতন্ত্রের লেবাসে জায়েজ করাই হয়ত তাদের লক্ষ্যফলে দেশ-জাতি-জনগণের  উন্নয়ন বক্তৃতার উৎকর্ষতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছেগবেষণা করলে দেখা যায় সে সব বক্তৃতার এক-তৃতীয়াংশ সময় ব্যয় করা হয় শুধুমাত্র নেতা-নেত্রীর নাম উচ্চারণেযাই হোক, রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্রের চর্চা থাকবে কি থাকবে না সেটি সংশ্লিষ্ট দলের একান্তই নিজস্ব ব্যাপারগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণের কুফল নিয়ে আমাদের ভাবতে হবেবিশেষ করে সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে স্থানীয় সরকার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূর্ণ গণতান্ত্রিক করা খুবই জরুরি
            দেশের স্থানীয় সরকার কাঠামোর সকল স্তর নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ন্ত্রিতবিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হলেও কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক উন্নয়ন বরাদ্দ, ত্রাণসামগ্রী, দান-খয়রাত ইত্যাদির সিংহভাগ আত্মসাৎ করা ছাড়া সার্বভৌম ক্ষমতা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একেবারেই সীমিতবিয়ে, শ্রাদ্ধসরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত আর সালিশ-দরবার করেই তাদের সময় কাটাতে হয়আত্মসাতের টাকা থেকে আবার বিপদে আপদে দু’-একজন নাছোড়বান্দা জনগণকে এক-দুটাকা নগদ দিয়ে দাতার সুনাম কিনতে হয়জনগণকে সম্পৃক্ত করে এলাকার উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ কিংবা কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করে দারিদ্র্য বিমোচনে অংশগ্রহণ করার যথেষ্ট এখতিয়ার তাদের  নেইযে কারণে ভোটের পরে ভোটারদের কথা তারা সহজেই ভুলে যেতে পারেসরকারের ভেতরে থেকে সরকার এর বিরুদ্ধেই তারা দিতে হবে’ ‘করতে হবেসে­াগান নিয়ে জনগণের সঙ্গে রাস্তায় মিছিল করেজবাবদিহিতা এবং জনগণের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা থাকলে জনগণকেই তাদের বিরুদ্ধে মিছিল করার কথাকাজেই পঁচাশি হাজার গ্রামের  ৪৫০৩টি ইউনিয়ন আর ৩০৫টি পৌরসভার ঘনবসতিপূর্ণ এই স্বাধীন ভূ-খণ্ডটিকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল করতে হলে স্থানীয় সরকার পদ্ধতিকে সময়োপযোগী করা দরকারচলতি মেয়াদের উপজেলা পরিষদ জনজরিপে একটি বাহুল্য ঝামেলা বলে ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে আর গ্রাম সরকার ব্যবস্থা জাতীয় সরকার এবং জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছেআমরা মনে করি তিন, ছয়, নয় স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় সরকার এর ভাবনা আপাতত পরিত্যাগ করে সবার আগে তৃণমূল পর্যায়ে সর্বাধিক পরিচিত এবং প্রথাগতভাবে গ্রহণযোগ্য ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভাকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হোকভবিষ্যতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুশৃঙ্খল সমাজ বিনির্মাণে  প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণসহ দেশের উপযোগী সরকার কাঠামোর দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর স্তর বিন্যাসের কাজে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকারসে পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসিত স্থানীয় সরকারকে গণমানুষের কাছে জবাবদিহিতা ও জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বময় নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হোককৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়নে স্বোপার্জিত অর্থ ব্যয়ের অধিকার প্রদান করে প্রকৃত অর্থে জনগণের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা হস্তান্তর করার এটাই একমাত্র পথস্বল্প শিক্ষিত, অসচেতন সাধারণ মানুষগুলোকে  ভোটাধিকার প্রয়োগে অর্থলোভের কুপ্রভাব মুক্ত রাখতে স্থানীয় সরকারের মেয়াদ কমিয়ে তিন অথবা চার বছর নির্ধারণ করা উচিততাহলে ভোট প্রার্থীরাও  অবৈধ আয়ের নেশা ছেড়ে  সেবার মানসিকতা ফিরে পাবে বলে আশা করা যায়দানবীয় অশুভ শক্তি  রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মেয়াদ উত্তীর্ণের নিয়ামক হলেও স্থানীয় সরকারের বেলায় ক্ষমতাসীন সরকার যেন সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে না পারে তার জন্য সাংবিধানিক আইনের  বাধ্যবাধকতা থাকা দরকারআইনী সক্ষমতা থাকলে দেশের উচ্চ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনএভাবে মেয়াদান্তে মেয়াদবিহীন গণতান্ত্রিক চর্চা চলতে থাকলে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না যেদিন, মানুষ গণতন্ত্রের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থাহীন হয়ে পড়বেমনে রাখতে হবে যে, ক্ষমতালোভী অশুভ শক্তি কিংবা গণতান্ত্রিক লেবাসে ক্ষমতা দখলের কুমতলবধারীরা এখান থেকে বেরিয়ে আসতে সময়ের অপচয় করলেও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় তার প্রয়োজন অনিবার্য নয়রাজপ্রাসাদের গুপ্তধন আগলে রেখে ক্ষমতাসীনরা স্বপ্নবিলাসে বিভোর থাকলেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য জীবন ধারণের ন্যূনতম বাস্তব পরিবেশ সৃষ্টি করতে স্থানীয় সরকারকে পূর্ণ গণতান্ত্রিক হতে হবেশক্তিশালী শব্দটিকে বাদ দিয়ে স্বায়ত্তশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ছাড়া মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত হবে নাসদর দফতর রাজধানীতে শাহী মজলিশের দাওয়ায় বসার ইচ্ছা যাদের  নেই তারা সাধারণ মানুষগণতন্ত্র দূষণ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গণতন্ত্র দূষণ দূরীভূত হলে তারা  নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য গড়ে নিতে সক্ষম হবে বলে বিশ্বাস করা যায়
সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ সময় (26-09-2011)
শেয়ারবাজারে লাগাতার দরপতন
সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ারবাজারে লাগাতার দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না কোনোভাবেইএই ভয়াবহ এবং অস্বাভাবিক দরপতনের ফলে অসংখ্য ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পথে বসেছে ইতোমধ্যেএর প্রতিবাদে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রায় প্রতিদিনই ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ করছেবিনিয়োগকারীরা শেয়ারের মৌল ভিত্তি উপেক্ষা করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করায় এই নজিরবিহীন দরপতনের ঘটনা ঘটে চলেছেবিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ এবং পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটছেএর প্রভাব এসে পড়ে সাধারণ জনগণের ওপরসরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে নাবিশেষঞরা বলছেন, বর্তমান সূচক যেভাবে হিসাব করা হয় তাতে শেয়ারবাজারের প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে নাসূচক নিয়ে বিচলিত না হয়ে লগ্নিকারীদের উচিত কোম্পানির মৌল ভিত্তি বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া এবং অপেক্ষা করা
দীর্ঘদিন ধরে শতাধিক দুর্বল কোম্পানির শেয়ার মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া শেয়ারবাজারে ২৬৪টি কোম্পানির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারই নির্ভরযোগ্য নয় বলে অনেকেই মনে করছেনবিপুল পরিমাণ অর্থের বেশির ভাগই ঝুঁকিপূর্ণআর এই ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে বিনিয়োগ করে হাজার হাজার বিনিয়োগাকারীর পথে বসতে হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, এসইসি এবং ডিএসইর কিছু অসাধু কর্মকর্তা মিলে এ অস্থিরতা সৃষ্টি করছেনতারা এ সুযোগে বাজার থেকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেনএছাড়া ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে বাজারে এ ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন তারাএ দরপতন অস্বাভাবিক, অনাকাক্সিক্ষত এবং অভূতপূর্বএ ধরনের পতনের পেছনে কোনো অশুভ উদ্দেশ্য থাকতে পারে
অর্থনীতিবিদের মতে, শেয়ারবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে বড় ধরনের দরপতন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়তাদের মতে, শেয়ারবাজারের বর্তমান সরবরাহ অনুসারে সাধারণ মূল্যসূচক সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার পয়েন্ট থাকলে তা সহনীয়এর বেশি বাড়লেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত
পুঁজিবাজারে উথান-পতন থাকবেইবাজার পতনের জন্য অনেকেই সরকারকে দায়ী করছেকারণ সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার বারবার ঘোষণা দিলেও আজ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেইআমরা আশা করবো সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানির শেয়ার দ্রুত ছেড়ে দেবে এবং শেয়ারবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে
নিজেই প্রপোফল খেয়েছিলেন জ্যাকসন!
বিনোদন রিপোর্ট
২০০৯ সালে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে আকষ্মিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন। তাকে হত্যার অভিযোগে মামলা ঝুলছে জ্যাকসনের ব্যক্তিগত চিকিসক কনরাড মুরের উপর। তবে সম্প্রতি তার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পপ কিং নাকি মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে নিজেই প্রপোফল পান করেছিলেন। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের।
আগামি সপ্তাহেই এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে যা টেলিভিশনেও প্রচারিত হবে। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন আদালতকে জ্যাকসনের প্রপোফল পানের বিষয়টি অবহিত করার পরিকল্পনা করছেন মুরে। প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ময়না তদন্ত রিপোর্টে জ্যাকসনের মৃত্যুর জন্য কয়েক ধরনের ওষুধের সঙ্গে মিশিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনকেই দায়ী করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি, জ্যাকসন নিজেই এই কা- ঘটিয়েছিলেন। মুরের আইনজীবীরা এই বিষয়টিই আদালতকে অবহিত করবেন।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ‘সাধারণত ইনজেকশন হিসেবেই প্রপোফল ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না, এটা কীভাবে জ্যাকসনের পাকস্থলীতে পাওয়া গেলো! তিনি নিজে প্রপোফল পান না করলে তো এমনটা হওয়ার কথা নয়। এটা থেকেই প্রমাণিত হয়, তিনি প্রপোফলের প্রতি কতোটা আসক্ত ছিলেন। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে তিনি উন্মত্ত হয়ে উঠেছিলেন। তিনি বার বার ঘুমানোর জন্য ওষুধ চাইছিলেন। বিভিন্ন ধরনের ওষুধের বোতল নাড়া-চাড়াও করতে দেখা গেছে তাকে। কে জানে তিনি কী করেছিলেন যার জন্য মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়েছিলো তাকে!’
এদিকে মুরে দাবি করেছেন, অন্তত দুই দশক ধরে মাদকে আসক্ত ছিলেন জ্যাকসন। তিনি খুব ভালোভাবেই জানতেন কীভাবে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিতে হয়। ছাড়া বিভিন্ন পেইনকিলার সম্পর্কেও সম্যক ধারণা ছিলো তার। তিনি নিজেই এসব ওষুধ সেবন করতেন।
অবশ্য মুরের ধরনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন জ্যাকসনের পরিবারের সদস্যরা। দোষী সাব্যস্ত হলে বছরেরও বেশি কারাদ-ের আদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মুরের।
মালাইকার পরবর্তী আইটেম গান
বিনোদন রিপোর্ট
মুন্নি বদনাম হুয়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তার পর বলিউডি আইটেম গার্ল মালাইকা আরোরা খান আরো বেশ কিছু আইটেম গানের সঙ্গে পারফর্ম করার প্রস্তাব পেয়েও সেসব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তেমন আকর্ষণীয় মনে না হওয়াতেই প্রস্তাবগুলো তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে এবারে সাজিদ খানের প্রস্তাব তিনি গ্রহণ করেছেন।হাইজফুল ছবিতে তাকে আবারো আইটেম গানে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকরা। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার। এই গানটির মধ্য দিয়ে মালাইকা কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান তৃতীয়বারের মতো জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করতে যাচ্ছেন। এর আগে তারাছাঁইয়া ছাঁইয়াএবংমুন্নি বদনাম হুয়িআইটেম গানে একসঙ্গে কাজ করেছেন। দুটি গানই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। এই গানটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে বলেই আশা করছেন ছবির পরিচালক সাজিদ খান।