Year-20 # Issue-15 # 26 May 2013

নির্দলীয় সরকার গঠনে সংলাপের আহ্বান বিএনপি স্থায়ী কমিটির
নির্দলীয় সরকার গঠনে সংলাপের আহ্বান বিএনপি স্থায়ী কমিটির
ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে ঐক্যমত গঠনের জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য আবারো সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২২ মে বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ আহ্বান জানানোর পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়।
এছাড়া সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, সর্বক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা, অপশাসন, দুঃশাসন, কুশাসন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, সমন্বয়হীনতা এবং দায়িত্বশীলদের কাণ্ডজ্ঞানহীন উস্কানিমূলক বক্তব্য ও হটকারী আচরণ দেশকে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। সর্বগ্রাসী সংকটে জাতি আজ হাবুডুবু খাচ্ছে।
জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়, এমন সংঘাতপূর্ণ অনিশ্চিত পরিবেশ বাংলাদেশে এর আগে আর কখনো সৃষ্টি হয়নি। জাতীয় সম্পদের এমন নিষ্ঠুর লুণ্ঠন, এমন নির্লজ্জ জঘন্য দলীয়করণ ও এমন বর্বর পৈশাচিক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কোনো অভিজ্ঞতা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষের আর কখনো হয়নি।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় স্থায়ী কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, সরকারের এই দুঃশাসন ও সর্বব্যাপী ব্যর্থতার প্রতিবাদে সারা দেশের মানুষ যখন ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ও বিরোধী দল যখন দেশবাসীর অধিকার, জাতীয় স্বার্থ ও গণতন্ত্র রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন গড়ে তুলছে, সেই সময় সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর মতো ব্যবহার করে গণহত্যা চালাচ্ছে।
বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় পাইকারি গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটি বলে, দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে শুরু করে সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে পর্যন্ত হাস্যকর সব মিথ্যা অভিযোগে বারংবার গ্রেফতার করা হচ্ছে।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় আটক করে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি দলের নেতা ও মন্ত্রীদের পাশাপাশি প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পর্যন্ত প্রকাশ্যে মিডিয়ায় রাজনৈতিক ধাঁচের উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছে।
সরকারের সমালোচনা করে সভায় বলা হয়, সরকার এই শৃঙ্খলা ও আইন ভঙ্গ এবং এখতিয়ার বহির্ভূত অপতৎপরতায় মদদ দিচ্ছে এবং তাদের নানাভাবে পুরস্কৃত করছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও প্রজাতন্ত্রের চাকরিরত কিছু সদস্য জনগণ ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দলীয় সন্ত্রাসীর মতো আচরণ করছে।
জাতীয় স্থায়ী কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সরকার দেশে অঘোষিত একদলীয় বাকশাল পদ্ধতি প্রবর্তন করে গণতন্ত্রের নাম-নিশানাও মুছে দিতে চায়। এই অসদুদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তারা এক অ¯পষ্ট ও বেআইনি নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। এমনকি দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপিকে দোয়া মাহফিল পর্যন্ত করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির কোনো কর্মসূচিই সরকার পালন করতে দিচ্ছে না জানিয়ে স্থায়ী কমিটি জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বেশির ভাগ সময়ে পুলিশ-র‌্যাব দিয়ে কার্যত অবরোধ করে রাখা হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে যে নেতাই মিডিয়ায় কথা বলছেন, তাকেই মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলের প্রতিটি কর্মসূচিতেই সশস্ত্রভাবে বাধা এবং মামলা দেওয়া হচ্ছে।
জামিনে মুক্ত নেতাকর্মীদের জেলগেট থেকে ধরে আবারো জেলে ঢোকানো হচ্ছে। এভাবে বিরোধী দলের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা কার্যত অসম্ভব করে তোলা হচ্ছে।
জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে, গত ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থানরত হেফাজতে ইসলামের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে হঠাতে আলো নিভিয়ে গভীর রাতে রক্তক্ষয়ী অভিযান চালাবার পর দেশে-বিদেশে সরকার যে ভয়ঙ্কর চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে, তা আড়াল করতে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে শাসক দলের বিভিন্ন নেতা বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য প্রচারাভিযান শুরু করেছে।
বিএনপি সরকারের প্রতি আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছিল জাতীয় কমিটির সভায় উল্লেখ করা হয়, বিতর্কিত মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে ভালোভাবে দেশ চালাবার জন্য খালেদা জিয়া গত ৪ মের ঢাকার জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের ব্যাপারে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আলোচনায় বসুন। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চায়ের আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন।
সরকার সে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সমঝোতা প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে বলে জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে।
ইসলামী টিভি ও দিগন্ত টিভি বন্ধ করার সমালোচনা করে সভায় বলা হয়, গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সরকার শৃঙ্খলিত করেছে। এভাবে কোনো স্বৈরাচার দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। এছাড়া বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ার ওপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জাতীয় স্থায়ী কমিটি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া আগামী ৩০ মে সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর অধিনায়ক, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের শাহাদৎবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের আহ্বান জানানো হয়। 
পাহাড়ে জেএসএস ও ইউপিডিএফের অস্ত্র ভাণ্ডার
বান্দরবান: পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনীতিকে আরও ব্যাপকভাবে অস্ত্র নির্ভর করে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে নতুন মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টসহ (ইউপিডিএফ) বিবদমান সংগঠনগুলো। ফলে পাহাড়ে শান্তির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও কার্যত তা ব্যর্থ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ে শান্তির জন্য পাহাড়ে নাগরিক কমিঠি নামে একটি গ্রুপ দুই বছর আগে কাজ শুরু করে। তাদের ডাকে সাড়া ইউপিডিএফ সাড়া দিলেও জেএসএস এ ব্যাপারে সাড়া দেয়নি। ২০মে (সোমবার) পার্বত্য ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) দুই যুগপূর্তী অনুষ্ঠানে উভয় দলের নেতারা একে অপরকে যে কোনো মূল্যে প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
এদিকে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা নেতারা দলের কর্মীদের উজ্জিবিত করতে ফের প্রকাশ্যে আসার কারণে সামনের দিনগুলোতে পাহাড় আরও অশান্ত হয়ে ওঠার পূর্বাভাস হিসাবে দেখছে স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা বলেন, “আন্দোলনের সামনে দিনগুলো হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ, আসতে পারে মনুষ্য সৃষ্ট বাধা, সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।”
অন্যদিকে রাঙামাটিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) `চুক্তিবিরোধী শক্তি` উল্লেখ করে তাদের নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে সোজা আঙুল বাঁকা করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নেতারা।
সংঘাতের শুরু যেভাবে:
মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা) পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়ার দাবি এবং পাহাড়িদের বাঙালি হিসেবে জাতীয় পরিচয়ের প্রতিবাদে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গঠন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। অধিকার আদায়ে সশস্ত্র আন্দোলন করার পর সংগঠনটি ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে।
ওই চুক্তিতে আদিবাসীদের মুক্তি মিলবে না এবং একে কালো চুক্তি উল্লেখ করে প্রসিত খীসার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালে গঠিত হয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। এরপর থেকে মূলত চুক্তির পক্ষ-বিপক্ষ অবস্থানকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে আধিপত্য ধরে রাখতে একে অপরকে ঘায়েল করতে মাঠে নামে সংগঠন দুটি।
শান্তির আহ্বানে সাড়া নেই:  
তিন পার্বত্য জেলায় আদিবাসীদের নিয়ে গড়া নাগরিক কমিটি জেএসএস ও ইউপিডিএফের সংঘাত বন্ধ করে মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ করে উভয় সংগঠনকে শান্তির পথে আসার জন্য আহ্বান জানালে ইউপিডিএফ একে স্বাগত জানালেও জেএসএসের কোনো জবাব মেলেনি।
বান্দরবান নাগরিক কমিঠির আহ্বায়ক রাজপুত্র নু শৈই প্রু বাংলানিউজকে বলেন, “সংঘাতময় কর্মকাণ্ড পার্বত্য জেলাসহ দেশের জন্য ভালো নয়, দেশের শান্তি প্রিয় মানুষজন পাহাড়ে শান্তি চায়। সহিংসতা কেউ পছন্দ করেনা, আমার বিশ্বাস তারা বিষয়টি অনুধাবন করে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনবে।”
পাহাড়ে অপহরণের রেকর্ড:
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির লংগদু থেকে ৫২ আদিবাসীকে অপহরণ করা হয়। এ অপহরণের জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করা হলে তারা তা অস্বীকার করে। অন্যদিকে তাদের উদ্ধারে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকা এবং উভয় দলের নমনীয়তা অভাবের কারণে অপহৃতরা বেঁচে আছে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছে পার্বত্যবাসী। গত ৯ ফেব্রুয়ারি একই জেলার কুতুকছড়ি এলাকা থেকে গ্রামীণফোনের একজন প্রকৌশলীসহ দুই কর্মচারী অপহৃত হন ইউপিডিএফ সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে। এরপর গ্রামীনফোন তিন জেলায় তাদের অফিস গুটিয়ে নেয়। গত সোমবার (২০ মে) খাগড়াছড়ির পানছড়ির ধুধুকছড়ায় সন্ত্রাসীরা প্রায় ৪০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।  পরে অনেক চেষ্ঠা তদবিরের পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
চুক্তির পর হত্যা-অপহরণ:
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর থেকে জেএসএসের ৩ শতাধিক, ইউপিডিএফের ২৪৭, ও জেএসএস- এমএন লারমার গ্রুপের ২৪ জন নিহত এবং অপহরণ হয়েছে ১ হাজারেরও বেশি। পরস্পর সংঘাতে প্রাণ গেছে মূলত আদিবাসীদেরই।
পাহাড়ে শান্তির ডাক প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বান্দরবান জেলা সভাপতি মিল্টন ত্রিপুরা বাংলানিউজকে জানান, “নাগরিক কমিটি জেএসএসকে শান্তির জন্য কোনো আহ্বান জানায়নি, তাদের লক্ষ ও উদ্দেশ্য অস্পষ্ট।”
অস্ত্র ভান্ডার সমৃদ্ধ করছে সংগঠনগুলো:
ইউপিডিএফ ও জেএসএসের মধ্যে ১৯৯৭ সাল থেকে যে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে তা বন্ধে সাড়া দিচ্ছে না দলগুলো। সংঘাত বন্ধে দুটি দলের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগও বার বার ভেঙে যাচ্ছে। পাহাড়ে প্রতিদিন অপহরণ, চাঁদাবাজি, খুন, গুমের ঘটনা ঘটছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে উভয় গ্রুপই ভারতের মিজোরাম ও ত্রিপুরা থেকে ভারী অস্ত্র সংগ্রহ করেছে, সমৃদ্ধ করছে অস্ত্র ভাণ্ডার।
ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ অন্য দৈনিকগুলো তাদের খবরে জানায়, গত ৮ মার্চ মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরের কাছের খামারবাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে মিজোরাম পুলিশ ও আসাম রাইফেলস। অভিযানে ৩১টি একে-৪৭ রাইফেল, একটি এলএমজি, একটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ৮০৯টি গুলি ও ৩৩টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, এ অস্ত্র চালানের গন্তব্য ছিল পার্বত্য জেলা।
শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনের চেয়ে তারা একে অপরকে ঘায়েল করতেই সংঘাত বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে মরছে মানুষ, নি:স্ব হচ্ছে আদিবাসীরা।
আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা প্রসিত প্রকাশ্যে:
প্রসিত বিকাশ খিসা এক যুগ আত্মগোপনে থেকে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে নিজের উপস্থিতির জানান দেন। যাকে সরাসরি দেখা দূরে থাক, ফোনে কথা বলাটায় যেন ঢাকা ও পাহাড়ের সাংবাদিকদের জন্য দুস্কর ছিলো। পাহাড়ের এ অন্তরালের রাজনীতিবীদ ইউপিডিএফের কর্ণধারকে ২০০১ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে দেখা গেলেও দীর্ঘ এক যুগ পর বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) প্রতিষ্ঠার দুই যুগপূর্তি উপলক্ষে গত সোমবার খাগড়াছড়িতে বক্তব্য রেখে প্রকাশ্যে আসেন।

আত্মগোপনে থাকা পাহাড়ের এ নেতা ফের প্রকাশ্যে আসার কারণে অনেকে মনে করছেন, নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে ও নিজেদের শক্তির জানান দিতেই তার এ প্রকাশ্যে আসা।

এদিকে স্থানীয় আদিবাসীরাই মনে করছে, পাহাড়ের আদিবাসীদের স্বাধীকার আন্দোলনের কথা বলেই আন্দোলন করতে যাওয়া সংগঠনগুলোর এ সংঘাতে ক্ষোধ আদিবাসীরাই আজ অসহায়, এর থেকে মুক্তি মিলবে কখন? এর উত্তর জানা নেই কারো কাছ।
তিন বছর কারাভোগের পর দেশে ফিরল ৬০ বাংলাদেশি নারী
বেনাপোল(যশোর): অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে মুম্বাই পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ৩ বছর পর বাংলাদেশের ৬০ নারী বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট দিয়ে দেশে ফিরে এসেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে স্বদেশ ভূমিতে ফিরে আসে তারা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, সংসারে অভাব অনটনের কারণে বিভিন্ন সময়ে দালালের খপ্পরে পড়ে সীমান্ত পথে এসব নারীরা ভারতে যায়। সেখানে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
সেখান থেকে ভারতীয় রেসকিউ ফাউডেশন নামে একটি এনজিও সংস্থা তাদের জেল থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে রাখে। পরে দু দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে ট্রাভেল পারমিট নিয়ে এরা স্বদেশে ফিরে আসে। এদের মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ৩১ জন, যশোর রাইটস ৩৩ জন ও অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভোলেপমেন্ট ১ জনকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে গ্রহণ করে তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। পরে এসব এনজিও সদস্যরা ফিরে আসা নারীদের পরিবারের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেবে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির যশোর এরিয়া ম্যানেজার এ বি এম মুহিত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এসব নারী দুই থেকে তিন বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরে এসেছে। যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, সিলেট ও চট্রগ্রামসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের বাড়ি। এসময় তিনি আরো জানান, শুক্রবার আরো ৩৭ জন নারী ট্রাভেল পারমিট নিয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে স্বদেশে ফিরবে।
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীনকার্ড পাওয়ার অপেক্ষা শেষ হচ্ছে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীনকার্ড পাওয়ার অপেক্ষা শেষ হচ্ছে
ভারতীয় নাগরিক সংকেত সেন্ট দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ২১ বছর বয়সে। ভারত থেকে প্রকৌশল বিদ্যায় মাস্টার্স করেন সংকেত সেন্ট। তারপর ভালো বেতন আর চাকরির আশায় যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রীও নেন।

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ ১৪ বছর অতিবাহিত করলেও সংকেত সেন্ট এখনো নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন আগন্তুক হিসেবেই দেখেন।  কারণ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য গ্রীনকার্ডের আবেদন করেও পাননি তিনি। আবেদন করার পর ছয় বছর পার হলেও এখনও অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে তার গ্রীনকার্ডটি। ফলে গ্রীনকার্ড নিয়ে এখন অনেকটাই হতাশ তিনি।
শুধু সেন্ট নয়, এরকম প্রায় দেড় লক্ষাধিক গ্রীনকার্ডের আবেদন পড়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কাছে।
তবে এবার দেশটির কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্রে একপ্রকার অবৈধভাবে থাকা এসব অভিবাসীদের গ্রীনকার্ড সমস্যা দূর করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি বৃহস্পতিবার নতুন একটি অভিবাসী আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে। এই আইনের বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে বিজ্ঞান, গনিত এবং প্রকৌশল বিদ্যায় ডিগ্রীধারীরা সহজেই গ্রীন কার্ড পাবেন।
তবে প্রতিটি দেশ থেকে ঠিক কতজন করে গ্রীন কার্ড পাবে তা ঐ দেশের জনসংখ্যার ঘনত্বই ঠিক করে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে গ্রীনকার্ড সহজীকরণে নতুন এই আইন দেশটির দুই দলের সংসদ সদস্যরাই সমর্থন করেন। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় অর্ধেকের বেশি বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী।
ফেইসবুক, মাইক্রোসফটের মতো বিশ্বখ্যাত টেকনোলজি কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরো ছাত্র-ছাত্রী নিয়োগ দিতে চায়। আর এজন্যই তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে গ্রীনকার্ড সহজীকিকরণে লবিং করে আসছিল।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রযুক্তিবিদই নতুন এই আইনের বিরোধীতা করেছেন। এর ফলে আমেরিকান শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মত দেন।
আর এইচ-১বিএস নামে পরিচিত ওয়ার্কার ভিসার অধীনে যেসব শ্রমিকরা যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করছেন তাদের গ্রীনকার্ড সম্পর্কে নতুন এই অভিবাসন আইনে কিছুই বলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রতি তিনজনের একজন এই এইচ-১বি ভিসার অধীনে কাজ করছে।  মাশরাফি-সাকিবকেও আকসুর জিজ্ঞাসাবাদ

চিটাগং কিংস ও ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা পূর্বেই ফ্র্যাঞ্চাইজি সেলিম চৌধুরী তার মিডিয়া ম্যানেজারকে দিয়ে জানায়, মাশরাফি বিন মুর্তজা খেলবে না। তার বদলি হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুল যে দলের নেতৃত্ব দেবেন সে কথাও বলেন তিনি। এই খবর তখনও মাশরাফি এবং দলের কোচ পর্যন্ত জানেন না।
সেই মুহূর্ত থেকে সন্দেহ ডালপালা মেলতে থাকে। পুরো ম্যাচে গ্ল্যাডিয়েটরসের খেলোয়াড়দের অভিনয় দেখে বিস্মিত না হয়ে পারেনি দর্শকরাও। ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের একটা বড় অংশই প্রকাশ্যেই বলেছেন, পাতানো ম্যাচ খেলেছে গ্ল্যাডিয়েটরস। এনিয়ে খেলা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হয় বদলি অধিনায়ক আশরাফুলকে। কথার মারপ্যাচে অধিনায়ক সেদিন পাশ কাটাতে পারলেও উত্তরটা কারও মনপুত ছিল না।
ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিক সেলিম চৌধুরী পর্যন্ত তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন ম্যাচ পাতানোর প্রশ্নে। প্রতিপক্ষ দলের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সাংবাদিকদের প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছিলেন এক ফুৎকারে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের কাছে পাতানোর প্রশ্ন তুলতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিপিএলে দুর্নীতি পাহাড়া দিতে আসা আকসু সদস্যরাও বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এতকিছুর পরও খবরের কাগজগুলো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রমাণ রেখে দেয়। সেই আকসুর নির্দেশে আইসিসি দুর্নীতিদমন বিভাগের কর্মকর্তারা ঢাকায় এসে সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশে গিয়েও প্রশ্ন করেছেন সন্দেহভাজন ম্যাচ ইস্যুতে।
২ ফেব্রুয়ারির ওই ম্যাচে গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক আশরাফুলকে দুবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আকসু। সে কথা অস্বীকার করেননি আশরাফুল,‘আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছে। যা যা জানতে চেয়েছে আমি তার উত্তর দিয়েছি।’ নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আকসুর সামনে হাজির হতে হয়েছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের সকল ক্রিকেটারকেই। এই তালিকা থেকে মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং সাকিব আল হাসানও বাদ যাননি। যদিও সে ম্যাচে এই দুজনের কেউ-ই খেলেননি। মাশরাফিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল আর সাকিব চোটাক্রান্ত ছিলেন। চিটাগং কিংসের কয়েকজন ক্রিকেটারকেও ডেকেছিল আকসু। সন্দেহের তালিকায় থাকা সকলকেই আকসুর মুখোমুখি হতে হবে বলে জানায় বিসিবি সূত্র।
ক্রিকেটারদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেও এখনও ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে দেখা করেনি আকসু প্রতিনিধি দল। সেলিম চৌধুরী বিদেশে থাকায় সেদিকে এখনও যায়নি তারা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেশে ফিরিছেন গ্ল্যাডিয়েটরস মালিক। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন,‘ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস আকসুকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে আমরাও আলাদা করে তদন্ত করতে প্রস্তুত।’ এদিকে বিসিবি থেকে পুর্ণ সহযোগিতা পাচ্ছে আকসু দল। বিসিবি ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীর সাহায্যে কার্য সম্পাদন করছেন তারা। এডহক কমিটির সদস্য গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলছিলেন,‘বিষয়টি গোপন রাখার কোনো সুযোগ নেই। আকসু অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। তখন যে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়েছিল সেগুলো তথ্য উপাত্ত হিসেবে কাজে লাগাতে পারে তারা।’ মৃত্যুর পরেও ধনী মাইকেল জ্যাকসন!

মৃত্যুর পরেও ধনী মাইকেল জ্যাকসন!
বিনোদন ডেস্ক : প্রয়াত পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে এ পর্যন্ত আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০০ মিলিয়নে। এটি জ্যাকসনের রেকর্ড পরিমাণ আয় করা ‘থ্রিলার’ অ্যালবামের চেয়েও বেশি। ৬০০ মিলিয়নের বিশাল এই অর্থ মূলত টিকেট বিক্রি থেকে এসেছে। ২০০৯ এর জুনে মৃত্যুর পর অর্জিত হয়েছে এ অর্থ। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে’র মতে জীবিত যেকোন শিল্পীর একই সময়ের আয়ের চেয়ে এটি অনেক বেশি। মাইকেল জ্যাকসনকে নিয়ে নির্মিত ‘মাইকেল জ্যাকসন’স ওয়ান’ এবং কনসার্ট পারফরমেন্স নিয়ে নির্মিত ‘দিস ইজ ইট’ ছবির টিকেট বিক্রি থেকে এসেছে বেশ বড় রকমের অর্থ। ইউএস ডকুমেন্টারী অনুসারে ‘মাইকেল জ্যাকসন’স সিক্সটি মিনিটস’ সারাবিশ্ব ব্যাপি ৩০০ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে। আইটিউনসে এখনো সবচেয়ে বেশি অ্যালবাম বিক্রি হচ্ছে জ্যাকসনের। তার মৃত্যুর পর থেকে প্রায় ৫০ মিলিয়ন কপি অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে এ পর্যন্ত। সবমিলিয়ে মৃত্যুর পরও দিন দিন ধনী হচ্ছেন মাইকেল জ্যাকসন।
বৃষ্টির দিন, বৃষ্টির গান
বৃষ্টির দিন, বৃষ্টির গান
 বৃষ্টির জীবনের রোমাঞ্চকর আর স্মরণীয় দিন ২০১২ সালের ৬ মার্চ। হওয়াটাই স্বাভাবিক। এদিন রাতেই যে চ্যানেল আই সেরাকন্ঠ ২০১২ প্রতিযোগীতার চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন তিনি।
“ইতিমধ্যে আড়াই মাসের মতো পেরিয়ে গেছে। অথচ ভাবতে গেলে মনে হয় ওই সময়টাতে আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি। এখনো উত্তেজনায় কাঁপছি। বুকে কাঁপনধরা উৎকন্ঠা নিয়ে তাকিয়ে আছি কখনো বিচারক আর কখনো আব্বু আম্মুর দিকে’’-বলেছিলেন বৃষ্টি।
চ্যানেল আই সেরাকন্ঠ ২০১২ এর গ্রান্ড ফিনালে বৃষ্টির জন্য ছিল নানা কারণেই অপেক্ষার। সেইসাথে উদ্বেগেরও। ৬৫ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম হওয়ার ব্যাপারটাতো আছেই। ছিল ‘অদেখা’ অনেক মানসিক বাধা।
সেটি কেমন?
জিজ্ঞেস করতেই বৃষ্টি জানালেন, “২০০৮ সালের সেরাকন্ঠে আমার বড় বোন নির্বাচিতা সেরা দশে ছিলেন। মা-বাবার প্রত্যাশা ছিল এবার আমি সেরা তিনে থাকব। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার সময় দেখা গেল আমি তৃতীয়তে নেই। নেই দ্বিতীয়তেও।
আগে থেকেই আরেকটা ভয় ছিল। আমরা হলাম সংখ্যালঘু, ধর্মে বড়‍ুয়া। প্রথমও হয়তো দিবে না। মা-বাবার দিকে তাকিয়ে দেখি তাদের চোখমুখ কালো হয়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে আমিও হতাশ। রীতিমত হেলে একপাশে পড়ে যাওয়া অবস্থা।”
এসময়ই বিচারকের আসনে বসা সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে ভেসে আসে ‘আয় বৃষ্টি ঝেপে’। মুহুর্তেই যেন বদলে যায় পৃথিবীটা। ততক্ষণে বোঝা হয়ে গেল, বাকি থাকা এক নাম্বার আসনটির বিজয়ী বৃষ্টি নিজেই।
সব আশংকার মেঘ কেটে গিয়ে মঞ্চে তখন শুধুই বৃষ্টির বারতা। সবাই এসে জড়িয়ে ধরছে বৃষ্টিকে। মাথায় উঠল চ্যাম্পিয়নের মুকুট। এতদিনের এত পরিশ্রম আর অপেক্ষার অবসান ঘটল। শেষ হল এক দীর্ঘযাত্রা।
আসলেই কী শেষ হল পথের যাত্রা? না। শেষ হইয়াও হইল না শেষ বলে একটা কথা আছে রবীন্দ্রনাথের। এই শেষ তো শেষ না। নতুন একটা শুরু।
বৃষ্টির ভাষায়, “যোগ্যতার সাথে সুযোগের একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে। এ দুইয়ের যোগফলেই আসে সাফল্য। গানের সাথে আছি দীর্ঘদিন। কিন্তু আমার যা সামর্থ, তা প্রকাশের জন্য, বিকশিত করার জন্য একটা প্লাটফর্মের দরকার ছিল। সেটি পেয়ে গেছি সেরাকন্ঠের মাধ্যমে। এখন আমাকে সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে।”
সুযোগ কাজে লাগানোর অংশ হিসেবে এখন দেশে, দেশের বাইরে ষ্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত আছেন বৃষ্টি। ওমানের মাসকটে শো করে এসেছেন ইতিমধ্যে। এবার যাচ্ছেন ইতালি। ফিরবেন জুনের প্রথম দিকে। বৃষ্টি বন্দরনগরী চট্রগ্রামের মেয়ে। বাবা রনদ্বীপ মুৎসুদ্দী আর মা শেলী বড়‍ুয়া। গানের সাথে সরাসরি জড়িত না থাকলেও বাবা-মা সবসময় চাইতেন সন্তানেরা গান শিখুক। প্রথমে মায়ের কাছেই গানের হাতেখড়ি। পাঁচ বছর বয়স থেকেই গান শেখা শুরু করেন বড় বোন নির্বাচিতার সাথে। প্রথমে ভর্তি হন চট্রগ্রামের খ্যাতনামা সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান ‘সঙ্গীত পরিষদ’-এ। পরেশ চন্দ্র কুড়ির কাছে শেখেন ক্ল্যাসিক্যাল এবং নজরুল সঙ্গীত। পরবর্তীতে গান শেখেন ওস্তাদ নির্মলেন্দু চৌধুরীর কাছে। ছোটবেলা থেকেই আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়েছেন।
এর মধ্যে একবার জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগীতায় দেশাত্মবোধক, নজরুলগীতিতে প্রথম স্থান লাভ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পদ্মকুড়ি কমলকুড়ি, শিক্ষা সপ্তাহসহ চট্রগ্রামের আঞ্চলিক প্রতিযোগীতায় অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার।
সেরাকন্ঠে বিজয়ী হওয়ার পর বৃষ্টি এখন ঢাকায় স্থায়ী হচ্ছেন। পড়ালেখা করছেন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিতে। “ ঢাকার বাইরে থাকলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সমস্যা হয়। আর পড়ালেখার ব্যপারটাতেও খুব ভালো করে মনোযোগ দিচ্ছি। যে কারণে ঢাকায় চলে আসা।”
বৃষ্টি জানালেন সামনেই তার অনার্স ফাইনাল। তখন প্রথম একক তৈরীর কাজে হাত দেবেন তিনি। তবে তারও আগে গানটাকে আরো ভালো করে শিখতে চান । বৃষ্টির মতে, “যতই পড়িবে ততই শিখিবে, তাই শেখাটা আমি সবসময় চালিয়ে যেতে চাই।”

Year-20 # Issue-14 # 19 May 2013



রাসিক নির্বাচন
জামায়াত প্রার্থী নিয়ে বিপাকে বিএনপি
রাজশাহী প্রতিনিধি
আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জামায়াতকে নিয়ে বিপাকে বিএনপি। মেয়র পদে মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি কারাবন্দি ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের প্রার্থী হওয়ার সদ্ধিানে্ত অনড় জামায়াত। নিয়ে বিএনপি একাধিকবার বৈঠকের চষ্টো করলেও জামায়াত রাজি হচ্ছে না। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে জোর তদবির চালানো হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে জটিলতা কাটেনি। বিএনপির পক্ষ থেকে কয়েকবার সমঝোতার চষ্টো করলেও জামায়াত তাতে সাড়া দিচ্ছে না। জামায়াত নেতাদের ক্ষোভ, ১৮ দলীয় জোটে জামায়াত থাকলেও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিগত দিনে রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো তাদের ছাড়াই পালন করেছে। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে জামায়াতকে তাদের সাথে নেয়নি। এছাড়াও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু বারবার জামায়াতের ভোট ব্যাংক ব্যবহার করে রাজশাহী সিটি মেয়র সংসদ সদস্য হয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের আর মূল্যায়ন করেননি। আর কারণেই আসন্ন সিটি নির্বাচনে জামায়াত একক প্রার্থী দেয়ার সদ্ধিান্ত নিয়েছে। এবছর সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তার পরিবর্তে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের ব্যানারে মেয়র প্রার্থী করা হয়েছে। তবে, মহানগর জামায়াতের প্রার্থী ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বিএনপি বুলবুলের জন্য প্রাচীর হয়ে দঁাড়িয়েছেন। কোনো কিছু দিয়েই তারা প্রাচীর সরাতে পারছেন না। একদিকে জামায়াত অনড় অন্যদিকে বিএনপি সমঝোতার চষ্টো অব্যাহত রেখেছে। এদিকে, বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু কিংবা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হলে জামায়াত তাদের সদ্ধিানে্ত অনড় থাকতো। তবে বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র প্রার্থী হওয়ার সদ্ধিান্ত নেয়ায় জামায়াত হয়তোবা ছাড় দিতে পারে। সূত্রটি আরো জানায়, এখনও জামায়াত তাদের সদ্ধিানে্ত অনড় রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জটিলতা নিরসন হতে পারে। আর যদি জামায়াতকে ম্যানেজ করতে বিএনপি ব্যর্থ হয় তবে তাদের পরাজয় হতে পারে। ইতোমধ্যেই মহানগর বিএনপি নেতারা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠকে বসার চষ্টো করছেন। তারা জামায়াতের ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের মেয়র পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের চষ্টো করছেন। কারণেই বিএনপি সম্মিলিত নাগরিক ফোরামের ব্যানারে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নাম ঘোষণা করতে পারছে না। রাজশাহী মহানগর জামায়াতের শীর্ষ নেতা এমাজ উদ্দিন জানান, ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের মেয়র পদে নির্বাচনের সদ্ধিান্ত প্রত্যাহারের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে অনবরত যোগাযোগের চষ্টো করা হচ্ছে। তবে জামায়াত নেতৃবৃন্দ এখনও তাতে সাড়া দেয়নি। জামায়াত তাদের সদ্ধিানে্ত অনড় রয়েছে। উলে্লখ্য, তফশিল অনুযায়ী রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। ভোটগ্রহণ করা হবে ১৫ জুন।

Year-20 # Issue-13 # 12 May 2013


Year-20 # Issue-12 # 05 May 2013


Year-20 # Issue-11 # 28 April 2013