Year-20 # Issue-23 # 21 July 2013

থামানো যায়নি আটশ’ মানুষের অনিশ্চিত যাত্রা 
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিনের অদূরে মিয়ানমারের নিকটবর্তী সাগরের মৌলভীশীল নামক পয়েন্টে অপেক্ষারত জাহাজটি শুক্রবার ভোরে যাত্রা দিয়েছে। আটশ’ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে থাইল্যান্ডের এ জাহাজটি রওয়ানা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। এ বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও থামানো যায়নি ৮শ’ মানুষের অনিশ্চিত যাত্রা। আপাচারকারী দালাল, প্রলোভনে মালয়েশিয়া যাত্রা দেওয়া লোকজন এবং বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গভীর সাগরে থাইল্যান্ড ভিত্তিক একটি বড় জাহাজ সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে মিয়ানমারের নিকটে অবস্থান করছিল গত ৩ জুলাই থেকে। জুনের মধ্যবর্তী সময়ে এ জাহাজটি থাইল্যান্ড থেকে পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। সেখানে পণ্য খালাস করে থাইল্যান্ড ভিত্তিক পাচারকারীরা জাহাজটি মিয়ানমারের উপকূলে এনে কক্সবাজার কেন্দ্রিক দালালদের খবর জানায়। পরে ৩ জুলাই রাত থেকে ট্রলারে করে ওই জাহাজে যাত্রী পৌঁছে দেওয়া শুরু করে। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ওই জাহাজে পৌঁছানো হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ৮শ’ নারী-পুরুষ। যদিও এ সময়ের মধ্যে বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪শ’ জনকে আটক করেছে। এর মধ্যে ১৭ জুলাই ৬ জন, ১৬ জুলাই ৭, ৪ জুলাই ২৩, ৬ জুলাই ২৩, ৮ জুলাই ২২০, ১৪ জুলাই ৯ এবং ১৫ জুলাই ১৪ জনকে আটক করা হয়। অবৈধভাবে সাগরে পথে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারকারী চক্র নানা কৌশলে ওই জাহাজে পৌঁছে দিয়ে টার্গেটের ৮শ’ যাত্রী। আর ওই ৮শ’ যাত্রী নিয়ে জাহাজটি অনিশ্চিত পথে যাত্রা দিয়েছে শুক্রবার ভোরে। প্রায় সাড়ে ৩শ’ দালাল কৌশলে এসব যাত্রীদের জাহাজে পৌঁছে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত এসব দালালের মধ্যে রয়েছে প্রভাবশালীরাও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, আনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলানিউজ এর ইনভেষ্টিগেটিভ টিম মানবপাচারের মূল পয়েন্ট কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন সরেজমিনে ঘুরে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে ধারাবাহিক অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ। এ সংবাদে ওই সব দালাল নামও পরিচয় রয়েছে।
বিএনএফ আতংকে বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। চলতি মাসেই নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এ রাজনৈতিক দলটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে তারা। এমনকি সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে বিএনএফকে নিবন্ধন দিলে ইসির বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে করা বিএনপির আগের অভিযোগে বিএনএফের নিবন্ধনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকলেও এবার বেশ কোমর কষেই বিরোধিতায় নেমেছে চার দলীয় ঐক্যজোট নেতা। বিএনএফের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ, জিয়াউর রহমানের ছবি ও ১৯ দফা এবং দলীয় প্রতীক হিসেবে গমের শীষ ব্যবহারের। এমকে আনোয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অভিযোগকারী সংসদীয় দলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। এ দলের প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার এই বিএনএফ এর উত্থানকে দেখছেন বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্র হিসেবেই। সদ্য গঠিত এ দলটি তাদের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করেছেন জিয়াউর রহমানকে। তাদের দলীয় পতাকায়ও রয়েছে বিএনপির সঙ্গে সাদৃশ্য। তারা প্রতীক হিসেবে নিয়েছে গমের শীষ। দলের নামও রেখেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট। এমকে আনোয়ার বলেন, বিএনএফ তাদের পোস্টারে বিএনপির লোগো, জিয়াউর রহমানের ছবি ও তার ১৯ দফা ব্যবহার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। এই বিএনএফ সেই বিএনএফ [জিয়া প্রতিষ্ঠিত] নয়। বিএনপিকে ভাঙার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। ১/১১ এর সময়ও ষড়যন্ত্রকারীরা বিএনপিকে ভাঙার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলো, এবারো তারা সফল হবে না। বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপিকা জাহানারা বেগমের নেতৃত্বে নতুন এ দলটি ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন করে ২০১২ সালের অক্টোবরে। বস্তুত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৪৩টি দল নিবন্ধনের আবেদন করে ইসিতে। এরমধ্যে বিএনএফ ও সাংস্কৃতিক জোট নামে দু’টি দলকে নিবন্ধনের জন্য বাছাই করে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়েছে কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, বিএনএফ সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চলছে। এরপর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মতামত নেওয়া হবে। তখন কারো আপত্তি থাকলে বলতে পারবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এখনো নতুন কাউকে আমরা নিবন্ধন দেই নি। নিবন্ধন পেলেই প্রতীক দেওয়া হবে। এদিকে বিএনপির অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী ফ্রন্ট প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শেই তার (জিয়া) প্রতিষ্ঠিত বিএনএফ-এর ধারাবাহিকতায় নতুন দলের আত্মপ্রকাশ করেছি। বিএনপিকে ভাঙার জন্য এ দল নয়। বরং বিএনপি নিজেদের ধরে রাখতে না পারলেই আপনা আপনি ভেঙে যাবে। আবুল কালাম আজাদকে প্রধান সমন্বয়ক ও অধ্যাপিকা জাহানারা বেগমকে সহ-সমন্বয়ক করে চলতি বছরের ২ মে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে বিএনএফ। দলের পোস্টারে জিয়াউর রহমান এবং ধান গাছ ও সবুজ জমিনে দলীয় পতাকা ব্যবহার করছে দলটি। এর আগে দলের প্রাথমিক যাত্রায় আহবায়ক ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। নতুন এ রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ক আজাদ জানান, ছয়টি দলের সমন্বয়ে (ন্যাপ ভাসানী, ছাত্তারের জাগদল, শাহ আজিজের মুসলীম লীগ, কাজী জাফরের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি ও জাতীয়  ফেডারেশন) ১৯৭৮ সালের ২ মে জিয়াউর রহমানের বিএনএফ আত্মপ্রকাশ করে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনএফ আর বিলুপ্ত না করেই ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠন করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর ৭ নভেম্বর কাজ শুরু করে বর্তমান বিএনএফ। আর যাত্রা শুরু করে গত ২ মে। নিবন্ধন পেলেই ইসির দেওয়া প্রতীকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা রাখেন আবুল কালাম আজাদ। এদিকে বিএনপিকে ধ্বংস করতে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে অংশ নিলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলনে যাবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। লিখিত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, বিএনপির নির্বাচনী প্রতীকের অনুরূপ কোন প্রতীক, অফিসিয়াল লোগো, ১৯ দফা কর্মসূচি এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ছবি সম্বলিত কোন ভূঁইফোড় সংগঠনের নিবন্ধনের আবেদন অনুমোদনের উদ্যোগ থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় বিএনপিকে ধ্বংস করতে সরকারের অশুভ পরিকল্পনার অংশীদার হলে বিএনপি’র নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের পাশাপাশি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, নামগোত্রহীন উচ্ছিষ্ট ও আগাছা নিয়ে গঠিত দলে নির্বাচন কমিশন মনোযোগ দিলে কমিশনের সঙ্গে বিরোধীদলের আলোচনার সুযোগটুকুও থাকবে না। এতে তাদের জন্য বাড়া ভাতে ছাই-এর মতো অবস্থা হবে।
সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামছে আ’লীগ
বিএনপি-জামায়াতসহ হেফাজতের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামছে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের কার্যনির্বাহী সভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে রোজাকে কেন্দ্র করে প্রচার-প্রচারণায় নামবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য টিম গঠন করা হবে। যে টিমগুলো সরকারের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পাশাপাশি নির্বাচনী জনমত গঠনে কাজ করবে।’ ঈদের পরপরই আওয়ামী লীগ সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবে বলেও জানান তিনি। পদত্যাগ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফ বলেন, ‘গুজব নিয়ে কি বলবো। সে রকম কিছু হলে আমি তো আপনাদের সামনে আসতাম।’ এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, প্রচার প্রচারণার জন্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলো আলাদা আলাদা টিম করবে। আওয়ামী লীগের টিম প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে গঠিত হবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সমন্বয়ে এসব টিম গঠন করা হবে। নেতাদের এলাকাকে প্রাধ্যন্য দিয়ে টিম গঠন করা হবে। টিমগুলো মূলত বিএনপি-জামায়াত, হেফাজতের বিভিন্ন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাজ করবে। পাশাপাশি তারা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতার যৌক্তিক কারণ ও বাস্তবতা পরিষ্কার করবেন জনগণের কাছে। এভাবে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের চাঙা করে ঈদের পরই সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ। ঈদের পর বিভিন্ন এলাকা সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের পর পুরো মাস জুড়ে টানা কর্মসূচি রাখার সিদ্ধান্ত হয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে।

অনৈক্যই দ.এশিয়ায় বন্যা সতর্কীকরণে বড় বাধা
অনৈক্যই দ.এশিয়ায় বন্যা সতর্কীকরণে বড় বাধা
অনৈক্য ও অসহযোগিতামূলক মনোভাবের কারণেই সময়মত বন্যার পূর্বাভাষ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রগুলো । ফলে বিপুল প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে। শুধু সময়মত পূর্বাভাষ আদান প্রদান সম্ভব হলে ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালের বন্যাপ্রবণ এলাকার অসংখ্য মানুষের প্রাণ এবং সম্পদ রক্ষা পেত। শুক্রবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বন্যা নিয়ন্ত্রণে মূলত এ অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগ এবং তথ্য আদান-প্রদানের ঘাটতির কথা উঠে আসে। দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যার অন্যতম একটি কারণ হলো অতিবৃষ্টি। অতিবৃষ্টির কারণে এই অঞ্চলে প্রায়ই মারাত্মক বন্যা দেখা দেয়। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ভারতের উত্তরাখণ্ড এবং নেপালের বন্যা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কিন্তু পানি ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের কারণে বৃষ্টিপাত ও বন্যার গতিপ্রকৃতি সম্পর্কীয় (হাইড্রোলজি) কোন তথ্য আদান-প্রদানে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা যায়।অবশ্য সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা অনুধাবন করছেন, বন্যা ও নদীর পানির প্রবাহের তথ্য আদান প্রদানের জন্য এ অঞ্চলে একটি আলাদা নেটওয়ার্ক প্রয়োজন। গত মাসে হয়ে যাওয়া ভয়াবহ বন্যার কথা উল্লেখ করে পশ্চিম নেপালের দারচুলা জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা চিরঞ্জীবী অধিকারী বলেন, “বন্যা সম্পর্কে আমরা ভারতের পক্ষ থেকে কোন পূর্ব সতর্কীকরণ পাইনি।” নেপালের এ অঞ্চলটি ভারতের উত্তরাখণ্ড সংলগ্ন হওয়ায় সেখানেও ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত মাসের ওই বন্যায় ভারতের উত্তরাখণ্ডের প্রায় সহস্রাধিক লোক প্রাণ হারান। এখনও নিখোঁজ আছেন কয়েক হাজার মানুষ। অধিকারী বিবিসিকে আরও জানান,“আমরা বন্যার কারণ সম্পর্কে জানতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগে চেষ্টা করছি, কিন্তু তাদের সঙ্গে এখনও টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।” একইভাবে ২০১০ সালে কাবুল নদীর প্লাবন থেকে পাকিস্তানে সংঘটিত ভয়াবহ বন্যার উদাহরণও টানা যায়। আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সীমান্তের অনেকটা পথ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বন্যাপ্রবণ এই নদীর পানি প্রবাহের পূর্বাভাষ আদান প্রদানের ক্ষেত্রে দেশদু’টির মধ্যে কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ রিয়াজ বলেন, “অবশ্যই কাবুল নদী আমাদের জন্য হুমকি, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বৃষ্টিপাত কিংবা বন্যা সম্পর্কিত কোন তথ্য আদান প্রদানের ব্যবস্থা নেই।” সমস্যা সমাধানে নীতি নির্ধারণী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেও তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। চাইলেই পাকিস্তানের পক্ষে ভারত থেকে তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। আর যেটুকু তথ্য পাওয়া যায়, সেটা বন্যা পূর্বাভাষের জন্য যথেষ্ট নয়। বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে আসে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতিও। বেশ কয়েকটি অভিন্ন নদী ভাগাভাগি করলেও নদীর প্রবাহ কিংবা বন্যার পূর্বাভাষ সম্পর্কে বাংলাদেশ নেপাল কিংবা ভারত থেকে খুব কমই তথ্য পায়। এ ব্যাপারে নেপালের কর্মকর্তারা জানান, আগে ফ্যাক্সের মাধ্যমে ঢাকায় তথ্য পাঠানো হলেও বর্তমানে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যা ও নদীর পানি প্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে গঙ্গার তিনটি এবং ব্রহ্মপুত্রের চারটি বন্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তথ্য পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের বন্যা পরিস্থিতির ওপর চীনা নিয়ন্ত্রিত তিব্বত থেকেও নিয়মিত তথ্য পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আমিরুল হোসেন। তবে আরও অগ্রবর্তী তথ্যের জন্য তিনি ভারতের থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন,“যেহেতু আমাদের দেশের লোকজন কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগেই বন্যার ব্যাপারে আগাম সতর্কীকরণ তথ্য পেতে চায়, তাই আমাদের প্রয়োজন ভারতের থেকে প্রাপ্ত তথ্য।” তবে নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ থাকায় এ সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদান একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এসব সমস্যা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, একমাত্র সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতামূলক মনোভাব এবং সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রসমূহের উর্ধ্বতন মহলের পদক্ষেপ গ্রহণই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।
একাডেমির সুযোগ সুবিধা পাবেন আমির!
একাডেমির সুযোগ সুবিধা পাবেন আমির!
স্পোর্টস ডেস্ক
 নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মোহাম্মদ আমির যেন শিগগিরই জাতীয় দলে ফিরতে পারে সেজন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এবার বোর্ডের কোচদের তত্ত্বাবধায়নে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে আমিরকে সুযোগ সুবিধা দিতে আইসিসির অনুমোদন চেয়েছে তারা।
জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে আমিরকে সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে সর্বশেষ বোর্ড সভায় আইসিসিকে অনুরোধ করেছিল পিসিবি,‘আমরা এই অনুরোধটি করেছিলাম। আমরা আশাবাদী এ বছরের শেষদিকে আমরা অনুমতি পাব আইসিসির কাছ থেকে। এই সময়ের মধ্যে আমির পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার চার বছর পূর্ণ করবে।’ শাস্তির শেষ সময়ে এসে আইসিসি আমিরকে ক্লাব ক্রিকেট খেলারও অনুমোদন দিবে এমনটাই আশা পিসিবি কর্মকর্তার,‘দুর্নীতিবিরোধী আইনবিধি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা শেষ না হওয়া পর্যন্ত একজন খেলোয়াড় তার বোর্ডের কোনো সুযোগ সুবিধা পেতে পারে না। তবে শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আমির যেন তা পায় সে ব্যাপারে আমরা অনুরোধ করেছি।’ তবে আইসিসি আমিরকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অনুমোদন দিয়েছে সংবাদমাধ্যমের এমন খবরকে ভিত্তিহীন বলেছেন বোর্ডের সিনিয়র এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা পিটিআই’কে জানালেন, অক্টোবরে আমিরের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে আইসিসির নির্বাহী বোর্ডের গঠিত চারসদস্য বিশিষ্ট সাব-কমিটি আলোচনা করবে।
অন্ধ হয়ে শুটিং করছেন ইশানা!
অন্ধ হয়ে শুটিং করছেন ইশানা!
অন্ধ হয়েছেন লাক্সতারকা ইশানা! শুক্রবার ঢাকার বনানী থানার আশেপাশের বিভিন্ন লোকেশনে অন্ধ হয়ে শুটিং করছেন তিনি। আসছে ঈদের জন্য নির্মিত ছয় পর্বের ‘চোখ’ শিরোনামের একটি নাটকে অন্ধ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইশানা। আসিফ রহমান জয়ের রচনায় নাটকটি নির্মাণ করছেন জামাল মল্লিক। এ নাটকে আরো অভিনয় করছেন বিজরী বরকতউল্লাহ, তৌকির আহমেদ, পীযুষ বন্দোপাধ্যায় প্রমূখ। নাটকটি নিয়ে ইশানা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এই প্রথম এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করছি। এখানে আমার চরিত্রের নাম মিথিলা। আমার  বড়বোন বিজরী এবং দুলাভাইয়ের চরিত্রে তৌকির ভাই অভিনয় করছেন। গল্পে আমার বোন ও দুলাভাইয়ের কোন সন্তান থাকে না। আমি মফস্বল থেকে শহরে এসে তাদের কাছে নিজের মেয়ের মতই বড় হতে থাকি। কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় আমার চোখের কর্ণিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আমার জীবনে ঘটে নানা দুর্ঘটনা।’ ঈদে যে কোন একটি চ্যানেলে নাটকটি প্রচার হবে বলে জানা গেছে।
পুরুষের পারফিউম ব্যবহার করি : আলিয়া ভাট
পুরুষের পারফিউম ব্যবহার করি : আলিয়া ভাট
বিনোদন ডেস্ক
বলিউডে আলিয়া ভাটের অভিষেক ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে। করণ জোহর পরিচালিত আলিয়া ভাটের মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ওই একটাই। বলিউডের খ্যাতিমান পরিচালক মহেশ ভাটের কন্যা আলিয়া বর্তমানে শুটিং করছেন একাধিক চলচ্চিত্রে। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন সিয়াম আনোয়ার।
টু স্টেটস চলচ্চিত্রে আপনার সহঅভিনেতা অর্জুন কাপুর...
‌হ্যাঁ। ওর মুখের মধ্যে একরাশ বিরক্তি, অহংকার আর শান্তভাব আছে। ওর এই মুখটার জন্য আমার খারাপ লাগে। ওকে আমি ডাকি বদমেজাজি বিড়াল বলে। তবে অর্জুন এক বিস্ময়কর মানুষ। মজার, বুদ্ধিমান এবং প্রাণবন্ত। আমার দেখা অন্যতম সেরা ভালো মানুষ। ওর সেন্স অব হিউমার আমার ভালো লাগে। আমি বিশ্বাস করি ‘কভার দেখে বইকে মুল্যায়ন করিও না’ প্রবাদ বাক্য। অর্জুন দেখতে যেমন আসলে তেমন না। যদিও ওর খুনো একটা হাসি আছে।
‘স্টুডেন্ট অব দি ইয়ার’ করার সময় দুই সহঅভিনেতার সাথেই সমান ভাবে ছিলেন। কীভাবে এই সংযোগ সামলেছেন?
আমার মনে হয় না সম্পর্ক সামলে চলতে হয়। আমি বরুণ ধাওয়ান এবং সিদ্ধার্থ মালহোত্রা দু’জনের সাথেই যুক্ত ছিলাম। কারণ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় উভয়ের সাথে আমাকে দেখা গেছে। ওরা দুজনই আমার কাছে বিশেষ।
আপনার বড় প্রতিযোগী ?
পরিণীতা চোপড়া। যখন আমি তাকে ‘লেডিস ভার্সেস রিকি ভাল’ সিনেমায় দেখেছি, তখন নিজেকে বলেছি ‘আমি আছি রোলার কোস্টার রাইডেই’। আক্ষেপ হয় ভাষার উপর পরিণীতার মত দখল যদি আমার থাকত! ইশকজাদে চলচ্চিত্রের পর আমি তাকে বলেছি ‘তুমি আমাকে শিখিয়েছ কীভাবে কাঁদতে হয়’। তবে ওর সাথে আমার প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক কিছু নেই। আমি সবসময় পরিণীতার ভক্ত হয়ে থাকতেই পছন্দ করব।
আপনাকে ডেটিংয়ে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে একজন পুরুয়ের কী গুণ থাকতে হবে?
aliaতাকে লম্বা হতে হবে। খোঁচা খোঁচা দাড়ি থাকবে। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং মজার মানুষ হতে হবে। যদি মজার মানুষ না হয় তবে হবে না। আর খুব সুন্দর হাসি থাকতে হবে। হাসি এমন একটা ব্যপার যেটি আমাকে খুব তাড়াতাড়ি আকর্ষণ করে। তাই কেউ যদি সুন্দর করে হাসতে পারে, আমাকে সহজেই আকর্ষণ করতে পারবে। আর একটা কথা আমি শুধু পুরুষদের পারফিউম ব্যবহার করি। প্রতিমাসেই আমার পারফিউম বদল করি।
অভিনেত্রী না হলে কী হতেন?
আমি কিছুই হতাম না। বেঁচে থাকতেও চাইতাম না।
পছন্দের পরিচালক কারা?
জয়া আখতার, রাজু হিরানী, অয়ন মুখার্জি এবং আমার ভাই মোহিত সুরি।
আপনার স্টাইল মন্ত্র কী?
আমার বয়স মাত্র ২০ চলছে। আমার স্টাইলও পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতি মাসে প্রতি সপ্তাহে নতুন কিছু আমাকে টানে। আমি আমার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজি সবসময়। আমি এখনো তরুণী। আমি যদি শুধু জিন্স আর টি-শার্ট পরে দৌড়াই, তবে জীবন অনেকটা ছোট হয়ে যায়। তাই এখন আমার জন্য জীবন উপভোগের সময়। ঝুকি নেয়া নিয়ে আমি ঘাবড়াই না।
রোমান্টিক ডেট নিয়ে আপনার ধারণা?
রোমান্টিক ডেট চলচ্চিত্রে দেখতে খুব দুর্দান্ত হয়। একটা বার্গার নিয়ে ড্রাইভে বের হওয়া এবং খুবই বাধাবিঘ্নহীন এক মজার মুহুর্ত। আমার জন্য রোমান্টিক ডেট হবে পাজামা পরে আমি যাকে চাই তাকে নিয়ে বসে থাকা।
আপনার কাছে সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা কী ?
কেউ একজন আমাকে বলেছিল ঘুম থেকে জেগে উঠার পর তোমাকে সুন্দর দেখায়। আমার কাছে সৌন্দর্যের ধারণাটাই এমন যে, আপনি জেগে ওঠার পর যেমন থাকবেন, আপনি তেমনই সুন্দর। যদি আপনি সুন্দর হন, তবে মেকআপ, পোষাক আর সুবিন্যস্ত চুল ছাড়াই সুন্দর।
ভক্তদের জন্য আপনার বার্তা...
আমি বিশ্বাস করি আমাকে মোমের মত নরম হতে হবে। তাই যদি কখনো আমাকে এই ভাবে না দেখা যায় তবে আমাকে ক্ষমা করবেন। কারণ এটা আসল আমি নই। ভুল আমিও করতে পারি, এবং অনেক সময়ই করি। যদি আমার ভুলের পরও আমাকে ভালোবাসেন তবে আমিও আপনাদের সব সময় ভালোবেসে যাব।