শত বাধার পরও এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস-এর অনলাইন সংস্করণের গ্লোবাল বিজনেস বিভাগে “In an Unlikely Corner of Asia, Strong Promise of Growth” শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ হয় গত ২৩ এপ্রিল। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করা হয়। পরদিন ২৪ এপ্রিল পত্রিকাটির নিউইয়র্ক সংস্করণেও (প্রিন্ট) নিবন্ধটি প্রকাশ হয় “In Bangladesh, a Quick Evolution From
Backwater to Growth Center” শিরোনামে।
বাংলাদেশ এশিয়ার নতুন দিগন্ত যেখানে সমুদ্র সৈকত ঘেঁষা বিলাসবহুল হোটেল
ও রিসোর্টের বিস্তার সহজেই চোখে পড়ে। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের শহর
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে গড়ে উঠছে এ রকম অসংখ্য হোটেল ও রিসোর্ট। অনুকূল আবহাওয়ায় কক্সবাজার হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের মানুষের ছুটি
কাটানোর সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত স্থান। শীতের সময় মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
না থাকায় ছুটির দিনগুলোতে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত মুখরিত হয়ে ওঠে ইতস্তত
ছুটে বেড়ানো শিশু আর তাদের অভিভাবকদের পদভারে। বঙ্গোপসাগর উপকূলে অবস্থিত এই ছোট্ট শহরে ৫ বছর আগেও বিলাসবহুল হোটেলের
সংখ্যা হাতে গোনা যেত। কিন্তু সেখানে এখন গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল, মোটেল
আর গেস্টহাউজ। একটি প্রত্যন্ত সমুদ্রতীরবর্তী এলাকা থেকে কক্সবাজারের সৈকত নগরীতে
পরিণত হওয়া আসলে ১৬ কোটি মানুষের দেশটিতে গত কয়েক বছরে হওয়া উন্নয়নকেই
নির্দেশ করছে। এ ব্যাপারে ঢাকাস্থ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ
হোসেন বলেন, কক্সবাজারের এই উন্নয়ন বাংলাদেশের অন্যান্য খাতেও অর্জিত
উন্নয়নকেই নির্দেশ করে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা এখানে দিন দিন বাড়ছে এবং
ক্রমান্বয়ে এটিই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই উন্নয়ন সত্ত্বেও অন্যান্য উন্নয়নশীল এশীয় রাষ্ট্রের মতো
বাংলাদেশেও ধনী ও গরীবের মধ্যে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে
সামাজিক অস্থিরতা। আর এই বৈষম্য আর অস্থিরতা মাঝে মাঝেই সহিংস প্রতিবাদে
রূপ নিচ্ছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশের প্রখ্যাত
শ্রমিক-অধিকারকর্মী আমিনুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনাকে। তিনি মূলত শ্রমিকদের
নিম্ন বেতন ও কাজের খারাপ পরিবেশের বিরুদ্ধে সচেতনা বৃদ্ধি ও শ্রমিকদের
জন্য পরামর্শমূলক কাজ করতেন। বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতই ছিলো মূলত তার
প্রধান কর্মক্ষেত্র। কিছুদিন আগে তাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে
তাকে নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে ময়নাতদন্তে। ধারণা করা হচ্ছে,
শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সচেতন ও সংগঠিত
করার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করে একটি পক্ষ। এছাড়া বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করে দেশের ৭০ শতাংশ জনগণ।
কৃষির ওপর নির্ভরশীল এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে। প্রতিবছরই দেশটির নিম্নভূমি প্লাবিত হওয়ার
পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৌসুমি সামুদ্রিক ঝড় এবং
জলোচ্ছ্বাসে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বছরে মাত্র ১০০ কোটি ডলার। যা
আলবেনিয়া ও বেলারুশের থেকেও অনেক কম। বিদেশি বিনিয়োগের এই পরিমাণ
নিকটবর্তী থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় হওয়া বিদেশি বিনিয়োগের এক দশমাংশ
মাত্র।
অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং নড়বড়ে পরিবহন ব্যবস্থা , দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক সংঘাত, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দুর্নীতির পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তির অভাব এদেশের বিনিয়োগের উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে এতসব বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ।
অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ এবং নড়বড়ে পরিবহন ব্যবস্থা , দুর্বল অবকাঠামো, রাজনৈতিক সংঘাত, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দুর্নীতির পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তির অভাব এদেশের বিনিয়োগের উজ্জ্বল সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে এতসব বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টর্ড ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের হিসাব অনুযায়ী
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি খুব শগগিরই ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এই হিসেবে
বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার প্রতি দশকে দ্বিগুণ হবে বলেও ধারণা করছেন তারা। এইচএসবিসি ব্যাংকের হিসেবে বাংলাদেশ ২৬টি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির দেশের
অন্তর্ভুক্ত। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত ও চীনের মত রাষ্ট্র। এই
অর্থনৈতিক গতিশীলতা আগামী বছরগুলোতেও পৃথিবীর অনেক অংশের তুলনায় মোটামুটি
স্থিতিশীল থাকবে বলেও আশা করা হচ্ছে। বৈশ্বিক উৎপাদন উন্নত বিশ্ব থেকে ক্রমাগত কম শ্রমব্যয়ের দেশগুলোতে
স্থানান্তরিত হওয়া এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। এই ধারাই এশিয়ার
অন্যান্য অংশ যেমন চীনকে ৮০ এর দশকের পর থেকে বৈশ্বিক উৎপাদনের
কেন্দ্রভূমিতে পরিণত করেছিলো। আর এই ধারাটিই এখন বাংলাদেশের দিকে ধাবিত
হওয়া শুরু করেছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান উৎপাদন খাত মূলত তৈরি পোশাককেন্দ্রিক।
বর্তমানে এর রপ্তানি দাঁড়িয়েছে হাজার কোটি ডলারেরও বেশিতে। এতে ৩৬ লাখ
শ্রমিক সরাসরি জড়িত। দেশটির অর্থনীতির ৭৮ শতাংশ স্থান দখল করে আছে তৈরি
পোশাক খাত। এ ব্যাপারে পরামর্শক সংস্থা ম্যাককিনসে তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে
উল্লেখ করেছে, বহু বছর ধরে বিশ্বের পাইকারি ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে চীন
ছিলো সব সমস্যার সমাধান। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমা পাইকারি ক্রেতারা বিশেষ
করে গার্মেন্টস খাতের সঙ্গে জড়িতরা চীনের বিকল্পের খোঁজ করছে। নিঃসন্দেহে
তাদের জন্য বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য।
অপ্রদর্শিত অর্থের কর ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ইলিয়াসকে ছেড়ে দেওয়াই একমাত্র সমাধান: ফখরুল
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এখনো আশাবাদী ইলিয়াস আলীকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দেবে সরকার। এখনো বিকাল পর্যন্ত সময় আছে। এই সময়ের মধ্যেই ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়াই একমাত্রহচ্ছে সমাধান। তা না হলে সরকার নিজেই নিজের ক্ষতি করবে । শনিবার সকাল এগারোটায় জিয়ার মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
গত ২৩ এপ্রিল হরতালের দ্বিতীয় দিনে পুলিশ বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানসহ বিরোধী দলের ১৫ জন নেত্রীকে আটক করে। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর শনিবার সকালে তারা জিয়ার মাজার জিয়ারত করতে যান। এসময় তাদের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন। মাজার জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ``এই সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও বাস্তবে গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। এটি তারা আবারও প্রমাণ করলেন। কারণ সরকার বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেত্রী সেলিমা রহমানকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়ে যে কাজটি করেছে তাতে মনে হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রতি তাদের একটুও শ্রদ্ধাবোধ নেই।`` জেল থেকে মুক্ত হওয়া নেত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ``আমরা নতুন করে শপথ নিচ্ছি। ইলিয়াস আলীকে ফেরত না পেলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।`` শনিবার বিকেলে আবারও হরতাল ঘোষণা করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বেঁধে দেওয়া সময় এখনো বাকি আছে। আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি, দেখি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সরকার কি করে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ইলিয়াসকে ছেড়ে না দিলে বিকাল ৫টায় নতুন কর্মসচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারের একজন মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল হকের বক্তব্যকে শিশুসুলভ বলে মন্তব্য করেছেন। এ সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ``সরকারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে কেউ এ ধরনের বক্তব্য আশা করে না। কিন্তু, দুর্ভাগ্য তারা এ ধরনের বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন।`` তিনি বলেন, সরকার ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনায় সান্ত্বনা তো দেয়ই না, বরং নানা ধরনের বিদ্রুপ করে কথা বলছে। এ সরকারের সময় ১২৭ জন মানুষ গুম হয়েছেন। দেশে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। তিনি বলেন, ``যে ভাবে মানুষ গুম হচ্ছে তাতে দেশের প্রতিটি মানুষই আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সরকার এই গুমের বিষয় নিয়ে নানা কথা বলছে। তারা বলছেন, ইলিয়াস আলী জীবিত ফিরে আসবেন। তাদের এই কথায় প্রতীয়মান হয় এ ঘটনায় সরকারের লোকেরা জড়িত।`` ইলিয়াস আলীর মতো একজন জনপ্রিয় নেতা গুম হওয়ার কারণে রাজনীতিকদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মাজার জিয়ারতের সময় বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরে আরা সাফা, সাধারন সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী বাজেটে ভর্তুকি কমানো হবে : অর্থমন্ত্রী
‘আগামী বাজেটে সার্বিকভাবে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে’ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি সুবিধা ধনী-গরীব সমানভাবে পায়’। শুক্রবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত কৃষি বাজেট সংক্রান্ত এক প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় চ্যানেল আই-এর কৃষি কার্যক্রম ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে কৃষি ও কৃষকের জন্য করণীয় ৫৫ দফা সুপারিশমালা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। চ্যানেল আই’র বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ এসব সুপারিশমালা তুলে ধরেন। উপস্থাপিত সুপারিশমালার মধ্যে কৃষি খাত সম্পর্কিত ১৮ দফা, পোল্ট্রি খাত সম্পর্কিত ১৪ দফা, মৎস্য খাত সম্পর্কিত ১২ দফা ও দুগ্ধ খাত সম্পর্কিত ১১ দফা সুপারিশ রয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি বাজেটের পুরোটাই ভর্তুকি। দু’দিকে এ ভর্তুকি দিতে হয়। একটা হচ্ছে কৃষিতে, আর অন্যটি খাদ্যে।’ চলতি অর্থবছরে কৃষিখাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে এটাকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে কৃষি খাতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এর আকার অনেক বেড়ে গেছে। এবারের মত ভর্তুকি আগামী বাজেটে দেওয়া সম্ভব হবে না।’ তবে আগামী বাজেটে পোল্ট্রি শিল্পকে সহায়তার জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান তিনি। অন্যান্যের মধ্যে ভুট্টা উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারের মূল্য বাড়লেও সরকার ভর্তুকি বাড়িয়েছে, কিন্তু দাম বাড়ায়নি। জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে সারের মূল্যের সম্পর্ক রয়েছে। এবার কতটা ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে, সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে এবার একটা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও ডিজেলে ভর্তুকি সরাসরি কৃষকের হাতে পৌঁছে। কারণ এখানে কার্ড সিস্টেম চালু রয়েছে।
সারের ক্ষেত্রে এটা নেই।’ কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি পণ্যের বিক্রয় মূল্য অবশ্যই উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে। তবে আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে।’ শাইখ সিরাজ বলেন, ‘কৃষি খাতে ভর্তুকি এটা কিন্তু কৃষকের জন্য করুণা করা নয়। তিনি বলেন, এ ভর্তুকিটুকু না দিলে সরকারকে অধিক দাম দিয়ে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে।’ অন্যান্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিদ্যুতের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের জন্য নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেটা কবে কার্যকর করা সম্ভব হবে জানি না।’ জেলা বাজেট ও একীভূত বাজেট পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এতে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ে।’ দেশের শিল্পখাতের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন যেসব প্রস্তাব দেয় সেটাকে ‘এলিট শ্রেণীর বাজেট’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রুশ সমরাস্ত্র কিনতে চুক্তি ‘শিগগিরই’
শেখ শাহরিয়ার জামান
ঢাকা, এপ্রিল ২৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- রাশিয়া থেকে একশ কোটি ডলারের সমরাস্ত্র কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এবং এর চুক্তি শিগগিরই হবে বলে জানিয়েছেন মস্কোয় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এস এম সাইফুল হক। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত তেল-গ্যাস সংস্থা গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তির পরপরই সমরাস্ত্র কেনার এই চুক্তি হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত সাইফুল হক শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এক থেকে দুই মাসের মধ্যে চুক্তি হবে বলে আমরা আশা করছি।” রাশিয়ার সঙ্গে কী পরিমাণ অর্থের চুক্তি হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হবে।” এর আগে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মস্কোর কাছ থেকে ৮৫ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনবে ঢাকা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৭ হাজার ১৪০ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের বাজেটের ৪ শতাংশের বেশি।
রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া ঋণে এই সমরাস্ত্র কেনা হবে বলে রাষ্ট্রদূত জানান। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি। সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আওতায় রাশিয়ার কাছ থেকে এক স্কোয়াড্রন এমআরসিএ জেট ট্রেইনার বিমান এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার কিনবে বাংলাদেশ। গ্যাজপ্রমের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন সাইফুল হক। শুক্রবারই তিনি মস্কো রওনা হন। রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমাদের বিশ্বস্ত মিত্রদের মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। দেশটির সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে।” আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি ও পারমাণবিক সহযোগিতার ক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে। দেশটির সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে পরিসর আরো বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সহযোগিতার সম্পর্ক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিজয় যখন সন্নিকটে, তখন যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে পর পর তিন বার ভেটো দিয়েছিল সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে মাইনমুক্ত করে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছিল সোভিয়েত নৌবাহিনী।
কী দোষ ছিলো কৃষ্ণচূড়ার!
ওয়াই-ফাই সুবিধা পাচ্ছে মোবাইল গ্রাহকেরা
রাজশাহীতে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে
শরীফ সুমন
রাজশাহীর পবা উপজেলার মথুরা গ্রামের ভুট্টা চাষি নূরুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে পোল্ট্রি, ডেইরি ও ফিসারি খাতে দিন দিন বাড়ছে ভুট্টার চাহিদা। আর এ চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ ভুট্টা আমদানি করতে হয়। ব্যাপক চাহিদা এবং ভালো লাভের কারণে দেশেও বাড়ছে ভুট্টার আবাদ। রাজশাহীতে ভুট্টার আবাদ বেশি হয় চলতি খরিপ-১ মৌসুমে। তিনি জানান, রবি মৌসুমের আলু ওঠানোর পর দেরি না করে ওই জমিতে এখানকার চাষিরা ভুট্টার আবাদ করে থাকেন। আলুর জমিতে আবাদ করার কারণে জমিতে বাড়তি সার দিতে হয় না। এছাড়া এ মৌসুমে একটু বৃষ্টিপাত হওয়ায় জমিতে তেমন সেচও দিতে হয় না। তাই রাজশাহীর চাষিরা এই মৌসুমে ভুট্টার আবাদ করে থাকেন। এ সময় ভুট্টা আবাদে খরচও কম হয়। নূরুল আমিন বলেন, বিঘাপ্রতি ভুট্টাচাসে খরচ হয় দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। বিঘায় ফলন পাওয়া যায় ১৫ থেকে ২০ মণ। গত বছর এ সময় প্রতিমণ ভুট্টা বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ফলে গত বছর এ সময় ভুট্টা আবাদ করে চাষিরা ভালো লাভ পেয়েছেন। একই উপজেলার বড়গাছী গ্রামের চাষি হোসেন আলী বাংলানিউজকে জানান, তার এলাকার চাষিরা এবার আলুর জমিতে ব্যাপকভাবে ভুট্টা আবাদ করেছেন। তিনিও ২ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। গত সপ্তাহে কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে ভুট্টা খেতে তেমন সেচ দিতে হচ্ছে না। হোসেন আলী বলেন, রাজশাহীতে এবার আবহাওয়া এখনও পর্যন্ত ভুট্টা চাষের অনুকূলে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া এমন থাকলে এবার ভুট্টা আবাদে খরচ আরও কম পড়বে। এছাড়া অঞ্চলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষকরা গতবারের চেয়ে বেশি মুনাফা পাবেন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরুল আমিন বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৪২ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছর হয়েছিল ৪ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে।
ভোগান্তির আরেক নাম বথুয়াবাড়ী ব্রিজ!
গ্রাফটিংয়ে সাফল্য এবার কাঁঠালে
আশরাফুল ইসলাম
বাণিজ্যিকভাবে আবাদ, বিদেশে রফতানি, বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদনে জাতীয় ফল কাঁঠালকে নিয়ে যখন এসব সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে, তখন এ ধরণের সাফল্য খুবই ইতিবাচক বলে মনে করছেন ফল গবেষক ও চাষিরা। দেশে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে খাদ্য ও পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ফল এবং ফসলের উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের প্রতি। একই সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে স্বল্প সময়ে ভালো ফলন পাওয়ার প্রতিও। আর এসব গবেষণার ফসল হচ্ছে গ্রাফটিং পদ্ধতি। যা কম সময়ে দ্রুত ভালমানের ফলন পেতে ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। আম ও লিচুর ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। কাঁঠাল গাছে এ গ্রাফটিং বা কলম পদ্ধতি খুব পরিচিত না হলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় তা সাফল্য পেয়েছে। এ পদ্ধতির অন্যতম দিক হচ্ছে, স্বল্প সময়েই সমগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া যাবে।
কাঁঠাল গাছে গ্রাফটিং পদ্ধতির গবেষক ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান বাংলানিউজের কাছে এই গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। জিল্লুর রহমান জানান, কাঁঠাল জাতীয় ফল হওয়া সত্ত্বেও অতীতে এটি বেশি গুরত্ব পায়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া কাঁঠালের স্বাদ ও আকৃতির ভিন্নতা রয়েছে। রোপনের ৭-৮ বছর পর ফল ধরে, তাই কাঁঠাল গবেষণায় সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। এমন বাস্তবতায় এ ফল গবেষণায় বেশি আগ্রহী হন না বিজ্ঞানীরাও। তিনি জানান, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে কাঁঠালের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিদেশে রফতানি ও বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালনির্ভর শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে ২০০৮ সালের জুলাই মাসে বারি’র উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ফল গবেষণা মাঠে কাঁঠালের গ্রাফটিং করা চারা রোপন করা হয়। পাঁচ ক্যাটগরিতে বিভক্ত ২০টি চারার ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে জিল্লুর রহমান জানান, ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরিতে পৃথক পরিচর্যা করে রোপণের তিন বছরের মাথায় এ মৌসুমে ২টি ক্যাটাগরির গাছে কাঁঠাল ধরে। তবে এ গবেষণা একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই ভালো সাফল্য পেতে এ বিষয়ে অধিকতর গবেষণা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
এম. আবদুল্লাহ আল মামুন খান
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদারদের স্থাপত্যসমৃদ্ধ স্থাপনা এখনো পর্যটকদের
দারুণ কৌতূহল জাগায়। মুক্তাগাছার জমিদাররা শুধু খাজনা আদায় আর ভোগ-বিলাসেই
মত্ত থাকেননি তারা অনন্য সুন্দর স্থাপনা নির্মাণ করে তাদের রুচির পরিচয়
রেখে গিয়েছেন। কর্মের মাধ্যমেই তারা অমর হয়ে রয়েছেন। তাদের
স্থাপত্যকীর্তির মধ্যে অন্যতম হলোÑ শশী লজ (বর্তমানে মহিলা টিচার্স ট্রেনিং
কলেজ), আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল (বর্তমানে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ), সূর্যকান্ত
হাসপাতাল (বর্তমানে এসকে হাসপাতাল), রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ট্যাঙ্ক, শিব
মন্দির, মহাকালী স্কুল, বিদ্যাময়ী স্কুল, ময়মনসিংহ টাউন হল, পণ্ডিতপাড়া
ক্লাব অন্যতম। এরমধ্যে আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল লোহার কুঠি বলে পরিচিত।
বাড়িটি তৈরি করতে লোহার পরিমাণ বেশি লেগেছিল বলেই এর এ নামকরণ হয়েছে। বহু
বিখ্যাত ব্যক্তি এ বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। অন্যতম হলেন- বিশ্বকবি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত এ ক্যাসেলের দামি শ্বেত
পাথর একে একে খোয়া গেছে। স্মৃতির সঙ্গে এ উদাসীনতা
শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে রীতিমতো ব্যথিত করে। এ ব্যথা পেরিয়ে সামনে কিছু
দূর এগুলেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সামনের বিরাট প্রাচীর ঘেরা ফটক। ফটক
পেরুলেই ফোয়ারা। ফোয়ারার মাঝে নার্সিসাস ভঙ্গিতে নারী মূর্তি। এটিই শশী লজ।
আজ এ লজে নেই বিস্ময়কর সেই মিউজিক্যাল সিঁড়ি। যা বেয়ে উঠতে গেলেই
বেজে উঠতো মোহনীয় সঙ্গীত। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে এ বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়
মিউজিক্যাল সিঁড়ি। এটি যথাস্থানে ফিরিয়ে আনতে শশীকান্ত ব্যয় করেছিলেন ওই
সময়ে ৩ লাখ টাকা। মুক্তাগাছার জমিদারদের বিভিন্ন স্মৃতি ছড়িয়ে
ছিটিয়ে আছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় যা পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। পূর্ব বাংলার
প্রথম ঘূর্ণায়মান নাট্য মঞ্চটি ভূপেন্দ্র কিশোর মুক্তাগাছার আটানী বাড়িতে
স্থাপন করেন। আজো তার গোলাকৃতি চিহ্ন সেই বাড়ির পরিত্যক্ত স্থানে স্পষ্ট
হয়ে আছে। মুক্তাগাছায় রাজ রাজেশ্বরী মন্দির, শিব মন্দির, বিষ্ণু সাগর (বিশাল আকারের দীঘি), বিভিন্ন পরিখা পর্যটকদের ইতিহাসের ঢঙ্কা বাজায়। বীরেন্দ্র
কিশোর শশীকান্ত নামে পরিচিত ছিলেন। তার নির্মিত শশী লজ এখনো অনেকের মনে
বিস্ময় জাগায়। তিনি রাজা থেকে মহারাজা পর্যন্ত উপাধি পেয়েছিলেন। ১৯২০
সালে বাংলার গভর্নর রোনাল্ড তাকে মহারাজা উপাধি দেন। তিনি ছিলেন কেমব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। এ বংশের জমিদারদের জন্যই ময়মনসিংহ শহর ‘জমিদারদের
শহর’ বলে পরিচিত। দৃষ্টিনন্দন শশী লজ, আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল, এঁদেরই
কীর্তি। ময়মনসিংহে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন মহারাজ শশী
কান্তের আমন্ত্রণে। ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কবি ময়মনসিংহে আসেন । বেশ
কয়েকদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অবস্থান করেছিলেন। কবিগুরু অবস্থান করেছিলেন সূর্যকান্তের বাগানবাড়ি আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে । কবিগুরুর ময়মনসিংহে আগমন ময়মনসিংহবাসীর জন্য পরম গৌরবের।
ওরা রোদে পোড়ে, বৃষ্টিতে ভেজে
ফিরোজ আমিন সরকার
ফিরোজ আমিন সরকার
ফাকা
মাঠের মধ্যে বাঁশের খুঁটির ওপর একটি খড়ের চালা। চারদিকে কোনো বেড়া নেই। এক
পাশ থেকে তাকালে অন্য পাশের দৃশ্যপট অনায়াসে দেখা যায়। ঘরের পাশে উড়ছে
একটি পতাকা। স্কুলের চিহ্ন বলতে ওই পতাকাটি। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সর্বমঙ্গলা রেজিস্টার্র্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। বিদ্যালয়
সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সর্বমঙ্গলা গ্রামের
কয়েকজন উদ্যোমী তরুণ সর্বমঙ্গলা রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা
করে। ২০১০ সালে বিদ্যালয়টি নিবন্ধন হয়। বর্তমানে পাঁচটি শ্রেণীতে দেড়শ’
শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। শিক্ষক আছেন চারজন। বাঁশের বেড়ার
তৈরি ঘরটির দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট, আর উচ্চতা ৭ ফুট। চারপাশের অবস্থা জরাজীর্ণ।
রোদের তীব্রতা থেকে রক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের মাথার ওপরে খড়ের তৈরি
আচ্ছাদনটিও অর্ধেক খসে পড়েছে। সেই ঘরেই তিনটি শ্রেণিকক্ষ। মাঝখানে নেই
কোনো বিভাজন।
তিনটি শ্রেণিকক্ষের মাঝে ঝুলছে একটি মাত্র ব্লাকবোর্র্ড। স্কুলটিতে বেঞ্চ আছে ১৮ জোড়া। তারও অর্ধেক ভাঙা। মূল্যবান কাগজ ও খাতা সংরক্ষণের জন্য কোনো কোনো আলমারি নেই। ফলে জরুরি কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক তার বাড়িতে নিয়ে যান। স্কুলটিতে নেই কোনো শৌচাগার। প্রকৃতির ডাকে শিক্ষার্থীরা চলে যায় আশপাশের মাঠে। আর পিপাসা পেলে স্কুলের পাশের বাড়ির নলকূপই তাদের একমাত্র ভরসা। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী নাসিমা আক্তার বলে, সামান্য বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় ক্লাসরুম। প্রখর রোদেও হয় ভীষণ কষ্ট। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র আল আমিন জানায়, তৃষ্ণা পেলে বাড়িতে গিয়ে পানি খেয়ে আসতে হয়। ফলে পড়ালেখার সময় নষ্ট হয়। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মোসাদ্দেক আলী জানায়, প্রচ- রোদের সময় ক্লাসরুমে বসে থাকা যায় না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকেজ বলেন, ‘এ স্কুলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনো স্কুল নেই। এই স্কুলটিই এলাকার একমাত্র ভরসা। সমস্যাগুলো অনেকবার কর্র্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা এ স্কুলে পড়ালেখা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবকাঠামো না থাকলেও গত বছরে এ স্কুল থেকে ২২ শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২১ জন কৃতকার্য হয়’। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাজেদুর রহমান জানান, প্রতি বছর নিজ উদ্যোগে স্কুলঘরের বেড়া মেরামত করা হয়। কিন্তু কিছু দিন পর সেগুলো আবারও নষ্ট হয়ে যায়। স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রত্যুষ চ্যাটার্জী জানান, বিদ্যালয়টির অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তিনটি শ্রেণিকক্ষের মাঝে ঝুলছে একটি মাত্র ব্লাকবোর্র্ড। স্কুলটিতে বেঞ্চ আছে ১৮ জোড়া। তারও অর্ধেক ভাঙা। মূল্যবান কাগজ ও খাতা সংরক্ষণের জন্য কোনো কোনো আলমারি নেই। ফলে জরুরি কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক তার বাড়িতে নিয়ে যান। স্কুলটিতে নেই কোনো শৌচাগার। প্রকৃতির ডাকে শিক্ষার্থীরা চলে যায় আশপাশের মাঠে। আর পিপাসা পেলে স্কুলের পাশের বাড়ির নলকূপই তাদের একমাত্র ভরসা। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী নাসিমা আক্তার বলে, সামান্য বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় ক্লাসরুম। প্রখর রোদেও হয় ভীষণ কষ্ট। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র আল আমিন জানায়, তৃষ্ণা পেলে বাড়িতে গিয়ে পানি খেয়ে আসতে হয়। ফলে পড়ালেখার সময় নষ্ট হয়। পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মোসাদ্দেক আলী জানায়, প্রচ- রোদের সময় ক্লাসরুমে বসে থাকা যায় না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকেজ বলেন, ‘এ স্কুলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনো স্কুল নেই। এই স্কুলটিই এলাকার একমাত্র ভরসা। সমস্যাগুলো অনেকবার কর্র্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা এ স্কুলে পড়ালেখা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবকাঠামো না থাকলেও গত বছরে এ স্কুল থেকে ২২ শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২১ জন কৃতকার্য হয়’। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাজেদুর রহমান জানান, প্রতি বছর নিজ উদ্যোগে স্কুলঘরের বেড়া মেরামত করা হয়। কিন্তু কিছু দিন পর সেগুলো আবারও নষ্ট হয়ে যায়। স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রত্যুষ চ্যাটার্জী জানান, বিদ্যালয়টির অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে।
মহিউদ্দিন মাহমুদ
মাছ-মুরগী ও সবজির বাজারে দাম নিয়ে চরম নৈরাজ্য চলছে। বিক্রেতারা নিয়মকানুনের বালাই না করেই একেক জনের কাছে একেক রকম দাম আদায় করছেন।
এক্ষেত্রে রাজধানীর বাজারগুলোতে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মূল্য তালিকা ঝোলানোর কথা থাকলেও বাজার কমিটিগুলো বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছে না। এ অনিয়ম দূর করার কাজে নিয়োজিত ট্রেড্রিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মোবাইল টিম ঝিমিয়ে পড়েছে অনেক আগেই। ফলে দাম নিয়ে বাজারগুলোতে নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করেছে। শনিবার মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ও কৃষি মার্কেটসহ কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। দেখা যায় একই মাছ একজন ক্রেতার কাছে যত টাকা বিক্রি করা হচ্ছে তা অন্য আরেকজন ক্রেতা কিনছেন তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে। কখনো দেড় থেকে দুই গুণ বেশি দামও আদায় করা হচ্ছে কারো কারো কাছ থেকে। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটে এক বিক্রেতা মাঝারি আকারের (২-২.৫ কেজি) কাতল মাছের কেজি বিক্রি করছেন ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। অন্য দিকে সেই একই বিক্রেতা কিংবা অন্য আরেকজন বিক্রেতা একই আকারের মাছের দাম হাকছেন প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। এ রকম ঘটনা ঘটছে সবজির বাজার ও মুরগীর বাজারেও। মুরগী’র বাজারে দেশি ও পাকিস্তানি মুরগীর মধ্যে গোলমাল পাকানো খুব স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিকা হিসেবে আধা কেজি ওজনের একটি দেশি মুরগী কারো কাছে ৩০০ টাকা, ৩৫০ টাকা, ৪০০ টাকা যার কাছে যা ইচ্ছে দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। সবজির বাজারেও বিক্রেতার বদলের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সবজির দাম কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য হয়ে যায়। এর বাইরে আবার মাছ কেজি হিসেবে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও ইলিশ মাছসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ঠিকা নিয়মে বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে ক্রেতারা দুর্ভোগে রয়েছেন। তার উপর দাম নিয়ে এত অনিয়ম তাদের ভোগান্তিকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরো কয়েকগুণ। এ বিষয়ে একজন সাধারণ ক্রেতা বনি আমিন সাগর বাংলানিউজকে বলেন, ‘এরকম অবস্থার মধ্যে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়তে হয়। আমরা বুঝতে পারি না কোন একটা জিনিসের প্রকৃত মূল্য। যার ফলে প্রায়ই প্রতারিত হচ্ছি। এ রকম অনিয়মের অবসান হোক এটাই চাই।’ অন্যদিকে মাছ বিক্রেতা কাউসার আহমেদ বলেন, ‘আমরা যে দামে জিনিস কিনি আনি সেই অনুযায়ীই বিক্রি করতে হয়। মাছের কোয়ালিটির, সাইজের উপর অনেক সময় দাম সামান্য কম বেশি হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও ট্রেড্রিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার সারওয়ার জাহান তালুকদারকে পাওয়া যায়নি।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
‘হোক দীপ্তিময় জীবনের স্বপ্ন পূরণের সেতু বন্ধন’ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে আবারও অসহায় ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালো বেসরকারি খাতের ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকের সামাজিক কল্যাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৮৫৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রদান করা হলো শিক্ষা বৃত্তি। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ২০১১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আনুষ্ঠানিকভাবে মেধাবীদের হাতে এ শিক্ষাবৃত্তি তুলে দেন। ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএস তাবারেজ।
বিদায় গার্দিওলা
স্পোর্টস ডেস্ক
গুরুর বিদায়ে আবেগাপ্লুত মেসি
স্পোর্টস ডেস্ক
গর্ভবতী মায়ের যত্ন
মো. আবদুর রহমান
কথায় বলে ‘শিশুর হাসিতে মায়ের খুশি’। আর এই হাসি দেখতে হলে মাকে গর্ভকাল থেকেই থাকতে হবে হাসিখুশি ও দুশ্চিন্তামুক্ত। গর্ভবতী মাকে নিয়মিত ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। সর্বোপরি সুস্থ শিশুলাভের জন্য গর্ভবতী মায়ের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রয়োজন। পরিবারের সবারই গর্ভবতী মাকে এ ব্যাপারে সাহায্য ও সহযোগিতা করা উচিত। গর্ভবতী মায়ের নিজের প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর জন্য বাড়তি খাদ্যের প্রয়োজন হয়। তাই গর্ভবতী মা ও তার অনাগত শিশুর সুস্থ জীবনের জন্য গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও দারিদ্র্যের কারণে আমাদের দেশের অনেক গর্ভবতী মা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন না। মায়ের অপুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ শুধু তার জন্যই ক্ষতিকর নয়, ভ্রুণ এবং নবজাত শিশুর জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় মা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করার কারণে শিশু ও গর্ভবতী মা উভয়ই অপুষ্টিতে ভোগেন। আর মা যদি গর্ভাবস্থায় অপুষ্টিতে ভোগেন তাহলে যে শিশু জন্মগ্রহণ করবে তার জন্ম-ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হবে, শিশু জন্মগতভাবেই অপুষ্টি নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে। এ ধরনের শিশুর মৃত্যুঝুঁকিও বেশি থাকে। পক্ষান্তরে গর্ভকালীন সময়ে মা যদি পুষ্টিকর খাদ্য না খান, তাহলে মায়ের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়বে। এ ধরনের মায়েদের গর্ভপাত, অপরিণত ও মৃতশিশু প্রসব এবং প্রসবকালীন মৃত্যুর ঝুঁকিও বেশি থাকে। গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন ভাত, মাছ (মলা, ঢেলা ইত্যাদি ছোট মাছ), সম্ভব হলে মাংস, ডিম, দুধ এবং ঘন ডাল, সিমের বিচি প্রভৃতি খেতে হবে। এছাড়া গাঢ় সবুজ ও হলুদ রঙের শাকসবজি ও তাজা ফলমূল, বিশেষত পাকা আম, পেঁপে, কাঁঠাল, পেয়ারা, আনারস, কচুশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক, গাজর, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া এসব ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত। কারণ ভিটামিন ‘এ’ শরীরে আয়রন (লৌহ) ব্যবহারে সাহায্য করে। আমলকি, পেয়ারা, বাতাবিলেবু, কামরাঙা, পাতি লেবু, কাগজী লেবু, কুল ইত্যাদি খেলে সহজেই ভিটামিন ‘সি’-র অভাব পূরণ হবে। শরীরে আয়রন (লৌহ) শোষিত হওয়ার জন্য ভিটামিন ‘সি’ অত্যন্ত জরুরি। গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্যালসিয়ামও গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালসিয়ামের অভাবে উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-একলাম্পশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুধ, ঘি, মাখন, ডিমের কুসুম, ছোট মাছ (কাঁটাসহ) কলিজা, ডাল, মাংস এবং সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। কোনও কারণে সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার জোগাড় করা সম্ভব না হলেও বাড়িতে তৈরি স্বাভাবিক খাবার যেমন- একটু বেশি ভাত, বেশি পরিমাণ ঘন ডাল, তরকারি এবং পর্যাপ্ত ফলমূল খেলে এই প্রয়োজন মিটবে। গর্ভাবস্থায় মাকে লৌহসমৃদ্ধ খাবার (যেমন- মাংস, ডিম, কলিজা, ডাল, কাঁচাকলা, কচুশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইশাক) এবং অন্যান্য সবুজ শাকসবজি ও টাটকা ফলমূল প্রতিদিন বেশি করে খেতে হবে। গর্ভবতী মায়ের খাদ্যে আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং সামুদ্রিক মাছ ও সামুদ্রিক মাছের তেল থাকা উচিত। প্রচুর শাকসবজি ও তাজা ফলমূল খেলেও আয়োডিনের অভাব পূরণ করা যায়। গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ১৫-২০ গ্লাস বিশুদ্ধ ও আর্সেনিক মুক্ত নিরাপদ পানি পান করা উচিত। এ সময় মায়েদের বারে বারে খেতে হয়। সন্তান প্রসবের সময় মায়ের শরীরের ওপর অনেক চাপ পড়ে এবং তার দেহের অনেক ক্ষয় হয়। দেহের এ ক্ষয়পূরণ, পুষ্টি সাধন এবং দেহকে সুস্থ-সবল ও নিরোগ রাখার জন্য গর্ভবতী মায়ের মতো প্রসূতি মাকেও বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এছাড়া শিশুর জন্মের পরই তার খাবার অর্থাৎ মায়ের দুধ তৈরি হওয়ার জন্য মায়ের অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন হয়। জন্মের পর থেকে পাঁচ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ খেতে দিতে হবে। শিশুর জন্য মায়ের শাল দুধ ও বুকের দুধ পৃথিবীর সেরা পুষ্টিকর খাবার। মায়ের দেহ থেকে বুকের দুধের উপাদান তৈরি হয়। সুতরাং প্রসূতি মায়ের নিজের স্বাস্থ্য রা ও বুকের দুধ তৈরি করার জন্য মাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি সমৃদ্ধ সব ধরনের খাবার খেতে হবে। প্রসূতি মহিলাদের নিজের দেহের ক্ষয়পূরণ ও বুকে দুধ উৎপাদনের জন্য প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। এজন্য প্রসূতি মাকে প্রতিদিন প্রোটিন জাতীয় খাবার যথা-মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল ইত্যাদি বেশি করে খেতে হবে। সাধারণত প্রসূতি মায়ের বুকে দৈনিক ২০-৩০ আউন্স দুধ তৈরি হয়। ২ গ্রাম খাদ্য প্রোটিন থেকে ১ গ্রাম দুধের প্রোটিন তৈরি হয়। এটি তখনই সম্ভব মায়েরা যদি দৈনিক ১০০ গ্রাম প্রোটিনের মধ্যে কমপে অর্ধেক বা দু-তৃতীয়াংশ প্রাণিজ প্রোটিন যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি গ্রহণ করেন। প্রাণিজ প্রোটিন মায়ের দুধের উৎকৃষ্ট উপাদান। শিশুর শরীর বৃদ্ধি শিশুকালই সবেচেয়ে বেশি হয়। এজন্য প্রচুর প্রোটিন প্রয়োজন। আর এ প্রোটিন শিশু মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে থাকে। ক্যালসিয়াম ও লৌহজাতীয় খাবারও প্রসূতি মাকে বেশি করে খেতে হবে, যাতে দুধের মাধ্যমে এ দুটি উপাদান শিশুর দেহের চাহিদা পূরণ করতে পারে। ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণের জন্য প্রসূতি মাকে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আর লৌহের চাহিদা পূরনের জন্য মার লৌহসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত। স্তন দানকালে মায়ের প্রথম ছয় মাস অতিরিক্ত ক্যালরি প্রয়োজন। এ ক্যালরি দুধ তৈরি ও নিঃসৃত করার কাজে ব্যয় হয়। সেজন্য বেশি করে ভাত, রুটি ইত্যাদি খাওয়া উচিত। তাছাড়া ভিটামিন ‘এ’, ‘বি-১’ (থায়ামিন), বি-২ (রাইবোফেবিন) এবং ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণের জন্য প্রসূতি মাকে প্রতিদিন চাহিদার অতিরক্তি শাক-সবজি ও মৌসুমী ফলমূল খেতে হবে। প্রসূতি মা যখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তখন তার শরীর থেকে প্রতিদিন অনেক পানি বের হয়ে যায়। এ ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য তাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে, তাহলে দুধের প্রবাহ সহজ হয়। এছাড়া রসালো ফলমূল এবং বেশি করে ঝোল দিয়ে রান্না করা মাছের তরকারিও বেশ উপকারী। বাচ্চা প্রতিদিন যে পরিমাণে মায়ের দুধ খায় অন্তত সেই পরিমাণ পানি জাতীয় খাবার প্রসূতি মায়ের শরীরে ফিরিয়ে দেয়া উচিত। শিশু জন্মের পর কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ প্রসূতি মাকে ভারী কোনও কাজ করতে দেওয়া যাবে না। এ সময় মা যাতে পরিপূর্ণ বিশ্রাম পান সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রসূতি মায়ের পরিমিত বিশ্রাম যেমন মায়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, তেমনি শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
ঢালিউডের নায়িকা নিপুণ
ঢালিউডের
নায়িকা নিপুণ। অভিনয় প্রতিভার প্রমাণ রাখছেন একের পর এক চলচ্চিত্রে।
মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি জীবন ঘনিষ্ঠ বিকল্প ধারার
ছবিতেও সমানে অভিনয় করছেন। সমসাময়িক অন্য চলচ্চিত্র নায়িকাদের মতো মুখ
ফিরিয়ে রাখেননি ছোটপর্দা থেকেও। বড়পর্দার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে টিভিনাটকেও
অভিনয় করছেন। মডেলিংয়েও নিপুণ দেখিয়েছেন নৈপুণ্য। তার করা একাধিক বিজ্ঞাপন
পেয়েছে জনপ্রিয়তা। সবমিলিয়ে সময়টা এখন নিপুণের ভালোই কাটছে ।মৌসুমী আর পূর্ণিমার পর সম্ভাবনার দ্যুতি হয়ে এসেছিলেন নিপুণ। ক্যারিয়ারের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই পেয়ে যান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে সবাইকে চমকে দেন এই নায়িকা। চলতি বছর নিপুণ প্রথমবার দর্শকদের সামনে আসছেন, আগামী ৪ মে । মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘বাজারের কুলি’ ছবিতে ডিপজলের বিপরীতে তাকে দেখা যাবে। যদিও নিপুণ অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘পিতার আসন’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ডিপজল। ছবিতে নিপুণের নায়ক ছিলেন শাকিব খান। এবার সরাসরি ডিপজলের নায়িকা হিসেবে দর্শকদের সামনে আসছেন তিনি।
‘বাজারের কুলি’ ছবিতে ডিপজলের বিপরীতে অভিনয় প্রসঙ্গে নিপুণ বললেন, নিজের যোগ্যতা দিয়েই ডিপজল ভাই আজকে নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। দর্শকরাও নায়ক হিসেবে ডিপজলকে পছন্দ করছে, তার মুক্তিপাওয়া ছবিগুলোর বাণিজ্যিক সাফল্য তারই প্রমাণ। খুব ভাল লেগেছিল যখন আমি এই ছবিতে ডিপজল ভাইয়ের নায়িকা হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হই। কাজ করতে গিয়ে আরও ভাল লেগেছে। রোমান্টিক গানও রয়েছে আমাদের। আমার বিশ্বাস আমাদের এই নতুন জুটিকে দর্শক বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করবে।
নিপুণ অভিনীত সর্বশেষ ছবি শাহাদাত হোসেন লিটন পরিচালিত ‘আদরের জামাই’ মুক্তি পেয়েছিল গত বছর ৩০ ডিসেম্বর। এতে নিপুণের সঙ্গে আরো ছিলেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। ছবিটি ব্যবসায়িক সাফল্য পেয়েছিল। ‘বাজারের কুলি’ ছবিটি দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পেলে ‘লাকি নায়িকা’ হিসেবে খ্যাত নিপুনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। বর্তমানে নিপুণ আরটিভি প্রযোজিত ছবি ‘এইতো ভালোবাসা’ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। এটি পরিচালনা করছেন শাহীন কবির টুটুল। বর্তমানে উত্তরায় চলছে ছবিটির শুটিং। এতে নিপুণের বিপরীতে অভিনয় করছেন নতুন প্রজন্মের দুই নায়ক ইমন ও নীরব। এ ছবিতে অভিনয় প্রসঙ্গে নিপুণ বলেন, ‘এইতো ভালোবাসা’ ছবিটির শুটিং অনেক দিন আটকে ছিল । গতবছর ছবিটির মহরতের পর শুটিংয়ের প্রস্তুতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে যায়। গতবছর ঈদে ছবিটির গানের অ্যালবাম রিলিজ পায়। জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় গানগুলো। তারপর থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম কাজ শুরু করার। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে শিডিউল মেলাতে সমস্যা হওয়ায় শুটিং শুরুর তারিখ কেবলই পিছিয়ে যাচ্ছিল। শেষপর্যন্ত ছবিটির শুটিং শুরু হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি বিকল্পধারার ছবিতেও সমানতালে কাজ করছেন। অয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। গত সপ্তাহে ছবিটি বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে।।এবারের এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই ‘অন্তর্ধান’ মুক্তি পাবে। নায়ক ফেরদৌসের বিপরীতে এ ছবিতে নিপুণকে দেখা যাবে পদ্মাচরের একজন সাধারণ গৃহিণীর চরিত্রে। সর্বনাশা পদ্মার গ্রাসে চরাঞ্চলের সর্বহারা মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে এ ছবিটি নির্মিত হচ্ছে। নদীর ভাঙনে সবকিছু হারানো পরও একজন অসহায় নারীর ভালোবাসা জিইয়ে রাখার চিত্ররূপ এটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মাচরে ছবিটির শুটিং হয়েছে। এ ছবিতে অভিনয় প্রসঙ্গে নিপুণ বললেন, ডায়মন্ড ভাইয়ের ‘গঙ্গাযাত্রা’ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি আমাকে তার নতুন ছবি ‘অন্তর্ধান’-এ অসাধারণ একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছেন বলে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। প্রচন্ড গরমের মধ্যে পদ্মার পারে কাজ করতে গিয়ে মনে হচ্ছিল, রোদে পুড়ে যাচ্ছি। এ ধরণের পরিবেশে কাজ করা তো দূরে থাক, আমার আগে কখনো যাওয়াই হয় নি। ভালো কাজের জন্য তো একটু কষ্ট করতেই হবে। এই কষ্টের মধ্যেও আছে স্বার্থকতা।
বতর্মানে নিপুণ অভিনীত নির্মাণাধীন ছবির মধ্যে রয়েছে এম এ আউয়ালের ‘কাছের শত্রু’, শাহীন কবির টুটুলের ‘এইতো ভালোবাসা’, মানিক মানবিকের ‘শোভনের স্বাধীনতা’, শাহনাজ কাকলী`র ‘জল রঙ’, শফিউদ্দিন শফির ‘ঢাকার কিং`’ইত্যাদি। এছাড়াও নিপুণ অভিনীত মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছবির মধ্যে রয়েছে- রকিবুল আল রাকিবের ‘জান তুমি প্রাণ তুমি’, অনন্য মামুনের ‘কাছে এসে ভালোবাস’, আশরাফুর রহমানের ‘তুমি আসবে বলে’ এবং শাহজাহান চৌধুরীর ‘আত্মদান’ ।
সবশেষে নিপুণ বাংলানিউজের মাধ্যমে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বললেন, আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান ছবি দেখতে সিনেমা হলে আসুন। এখনো ভালো ছবি তৈরি হয়। আপনারা সিনেমা হলে এলে ভালো ছবির নির্মাতারা উৎসাহিত হবেন। ভালো ছবি নির্মাণের সংখ্যা বাড়বে।
টাইম ম্যাগাজিনের জরিপে প্রভাবশালী তালিকায় পপক্রেজ অ্যাডেল
প্রীতি ওয়ারেছা
আতংকিত সাব্বির-চুমকি
অনন্যা আশরাফ
সজলকে নিয়ে রুমানা ও নওশীনের মধ্যে টানাপোড়েন
অনন্যা আশরাফ
‘মনের আকাশে নীল মেঘ’ নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে সজল বলেন, এ নাটকে আমি চমৎকার একটি চরিত্রে অভিনয় করছি। নিজের ভেতরের দ্বৈত সত্ত্বা ফুটিয়ে তোলার এই চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করে আমি বেশ তৃপ্তি পেয়েছি। নাটকটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে নওশীন বলেন, সজল আর রুমানা সঙ্গে আমার অনেকদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। নাটকটির শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আমরা একসঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছি। রুমানা বলেন, চলচ্চিত্রে কাজ করার পাশাপাশি ভালো গল্পের নাটক হলেই আমি কেবল অভিনয়ে সম্মত হই। ‘মনের আকাশে নীল মেঘ’ নাটকটির গল্প আমার খুব পছন্দ হয়েছি। আশা করি দর্শকরাও নাটকটি উপভোগ করবেন। সজল, রুমানা ও নওশীন ছাড়াও নাটকটিতে আরো অভিনয় করেছেন হাবিবুর রহমান হাবীব ও মাহিন।
বিয়ের জন্য কোনো শিডিউল খালি নেই : কণা
প্রীতি ওয়ারেছা‘প্রিয় যাই যাই বলো না/ আর করো না ছলনা না না না/ প্রিয় যাই যাই বলো না’ -- নিজের কণ্ঠে গাওয়া নজরুলের এই বিখ্যাত গানটি সঙ্গীতশিল্পী কণার মোবাইলের রিংটোন। আজকের প্রজন্মের জনপ্রিয় গায়িকা কণার গান শেখায় হাতেখড়ি হয়েছিল নজরুল সঙ্গীতেই। নজরুল একাডেমীতে গান শিখেছেন প্রায় ৯ বছর।এখনও নজরুল সঙ্গীত চর্চাটা ধরে রেখেছেন। এ পর্যন্ত কণার ৩টা একক অ্যালবাম বেরিয়েছে ৩টি, গান গেয়েছেন অসংখ্য মিশ্র অ্যালবামে আর প্রায় ৬০০ জিঙ্গেলে কন্ঠ দিয়েছেন। কণার পুরো নাম দিলশাদ নাহার কণা। নিজের শ্বাস- প্রশ্বাসের মতোই কণা ভালোবাসেন গানকে। খুব ছোটবেলায় বয়স যখন মাত্র ৫ কী ৬! সেই বয়সেই হারমোনিয়াম আর তবলার যে ভুবনে এই মিষ্টি মেয়েটির যাত্রা শুরু হয়েছিল সেটা আজ ১৬ কী ১৭ বছর পরে এসেও চলছে দারুণ গতিতে। আজকের কনা সেদিন ভাবতেও পারেননি- একদিন তার গান সারাদেশের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ভালোবেসে গ্রহণ করবে। সম্প্রতি কণার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলানিউজ। কণা বলেছেন তার সাম্প্রতিক সময়ের কর্মকান্ড, গান নিয়ে ভাবনা ও ব্যক্তিজীবনের পরিকল্পনা সম্পর্কে। কণার সঙ্গে বাংলানিউজের একান্ত আলাপচারিতার নির্বাচিত অংশে আসুন চোখ রাখি।
বাংলানিউজ : সাম্প্রতিক সময়ে কী কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন?
কণা : ইদানিং স্টেজ শো নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে দেশের বাইরে অনেক শো’ করছি। এই তো কদিন আগে অস্ট্রেলিয়া আর ব্রুনাইতে শো’ করে ফিরলাম। দেশেও প্রচুর স্টেজ শো’ করছি। এবারের বৈশাখে বের হওয়া ‘কানামাছি মৌমাছি’, ‘মনের ঠিকানা’ ও ‘নারী’ এই তিনটি মিক্সড অ্যালবামে গান করেছি। আমার শেষ একক অ্যালবাম ‘সিম্পলি কণা’ আর মিক্সড অ্যালবাম থেকে বাছাই করা কয়েকটি গান নিয়ে এখন মিউজিক ভিডিও তৈরির কাজ করছি। সেখানে প্রচুর সময় দিতে হচ্ছে।
বাংলানিউজ : প্লে-ব্যাকে কী কী কাজ করছেন ?
কণা : প্রচুর প্লে-ব্যাক করছি। সত্যি বলতে কী, আমার কাজের প্রধান জায়গা এখন প্লে-ব্যাকে হয়ে যাচ্ছে। ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’, ‘ভালবাসার রঙ’, ‘ভালবাসার রংধনু’, ‘ফিরিয়ে দাও আমার প্রেম’, ‘এক কাপ চা’, ‘চোরাবালি’সহ আরো বেশ কিছু ছবিতে প্লে-ব্যাক করছি। সম্প্রতি ‘লালটিপ’ ছবির গান নিয়ে একটা অ্যালবাম বের হল। সেখানে আমার ২টা গান আছে। শ্রোতারা ব্যাপকভাবে আমাকে গ্রহণ করেছেন। সবমিলিয়ে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি প্লে-ব্যাক করে।
বাংলানিউজ : প্রজন্মের প্রতিভাবান সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক বাপ্পা মজুমদার, হাবিব, ফুয়াদ, আরফিন রুমীসহ প্রায় সবার সাথেই কাজ করছেন। কার সঙ্গে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
কণা : আসলে প্রত্যেকেরই কাজের আলাদা আলাদা ধরণ আছে। আলাদা আলাদা স্টাইল আছে। যে যার জায়গাতে ফিট। বাপ্পা মজুমদারের প্রতি আমার পক্ষপাতটা একটু বেশি। ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় থেকেই আমি তার সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় কাজ করার সুযোগ পাই। বাপ্পা ভাইয়ের সঙ্গে আমার খুব শ্রদ্ধা এবং স্নেহের সম্পর্ক । হাবিব ওয়াহিদ অসম্ভব মেধাবী একজন মিউজিশিয়ন। তিনি সঙ্গীতে একটা নতুন ধারা তৈরি করেছেন। কাজে সবসময় তিনি নতুনত্ব যোগ করতে চান। একটা ছড়া তার সামনে দিলে সেটাকে তিনি অবলীলায় গান হিসেবে উপস্থাপন করার ক্ষমতা রাখেন। হাবিব ভাই একাই অডিও জগতকে একটা সম্মানজনক জায়গায় দাঁড় করাতে পেরেছেন। ওয়েস্টার্ন মিউজিকের সব ধারাতেই ফুয়াদ ভাইয়ের আছে অদ্ভুত দখল। সেই ধারার সঙ্গে সংমিশ্রণ করে সঙ্গীতায়োজন করতে তিনি পারদর্শী। আরফিন রুমীও চান গানে নতুন মাত্রা যোগ করতে। আসলে এখনকার অনেক মোস্ট জুনিয়র মিউজিশিয়নদের সঙ্গেও আমি কাজ করেছি। সবারই আলাদা ধরণ কাজ করার এবং নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে সুন্দর কাজ করার চেষ্টা আছে। আমি নিজেকে একজন ভার্সেটাইল সিঙ্গার মনে করি। সবার সঙ্গে এবং সব ধরণের গান গান গাইতেই আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
বাংলানিউজ : কোন ট্র্যাকটিকে নিজের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে মনে করেন?
কণা: ‘বর্ষা’ ট্র্যাকটি ছিল আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। শাহান কবন্ধের লেখা, ফুয়াদ নাসের বাবুর সুরে এবং ফুয়াদ আল মুক্তাদীর এর সঙ্গীতায়োজনে বর্ষার গানটি আমাকে আলাদা শিল্পী ইমেজ দিয়েছে। স্টেজ শো’ করতে গেলে দর্শকশ্রোতাদের কাছ থেকে গান গাওয়ার প্রচুর অনুরোধ আসে তার মধ্যে বর্ষা গানটি শ্রোতাদের টপ ফেভারিট।
বাংলানিউজ : পরবর্তী একক অ্যালবামের পরিকল্পনা সম্মন্ধে জানতে চাই?
কণা : আমার শেষ একক অ্যালবাম ‘সিম্পলি কণা’তে আমি পরীক্ষামূলকভাবে একটি নজরুল সঙ্গীত ‘প্রিয় যাই যাই বলো না’ গেয়েছিলাম। বাপ্পা মজুমদার খুব যতœ নিয়ে এর সঙ্গীতায়োজন করেছিলেন। সবার কাছ থেকে এত প্রশংসা পেয়েছি নজরুলের এই গানটার জন্যে যে আমি অভিভূত। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার পরের একক অ্যালবামটি নজরুল সঙ্গীতের ওপর করব। নজরুল সঙ্গীতেই আমার হাতে খড়ি, নজরুল সঙ্গীত গাইতেও আমি খুব পছন্দ করি। নজরুল সঙ্গীতের একটি একক অ্যালবাম বের করার জন্য আমি এখন মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাংলানিউজ : নিজেকে সঙ্গীত জগতের কোন জায়গায় দেখতে চান?
কণা : দেশের বাইরের অনেক মানুষদের কাছে আমাদের দেশটি অপরিচিত একটা দেশ। যারা সঙ্গীত ভালবাসেন তারা জানেন বাংলাদেশ হল রুনা লায়লার দেশ। আমিও আমার দেশের এমন গৌরবাজ্জ্বল প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। নিজেকে সেই জায়গায় দেখার স্বপ্ন মনে লালন করি।
বাংলানিউজ : সঙ্গীতে আপনার আইডল কী রুনা লায়লা?
কণা : ঠিক ধরেছেন। রুনা লায়লা আমার আইডল। তার গান আমার সবচেয়ে প্রিয়। । রুনা লায়লার যে কোনো গান শুনলেই আমার ভেতর একধরণের ভালোবাসা তৈরি হয়। আমি তার অন্ধ ভক্ত। এর বাইরে সামিনা চৌধুরী, ফাহমিদা নবী, হাবিব ছাড়াও ভারতের সুনীধি চৌহান আর আঁশা ভোসলে আমার প্রিয় শিল্পী।
বাংলানিউজ : সঙ্গীত জগতে কাজ করতে গিয়ে কোনো অতৃপ্তির মুখোমুখি হয়েছেন কী?
কণা : অতৃ্প্তি আছে অডিও অ্যালবাম নিয়ে। আমাদের অডিও বাজার বলতে এখন আর কিছু নেই বললেই চলে। তাই অডিও অ্যালবামের সাফল্য থেকে আমরা পুরোপুরি বঞ্চিত। আমরা যে অ্যালবামগুলো করি সেগুলো থেকে আমরা আর্থিকভাবে উপকৃত হই না। নিজের উদ্যোগে আর অর্থায়নে অডিও অ্যালবাম করি এবং সেগুলো নিয়ে মিউজিক ভিডিও করি। কিন্তু অডিও বাজারে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো পাইরেসির কবলে পড়ে। বিনা পয়সায় যে গান ডাউনলোড করা যায়, পয়সা দিয়ে শ্রোতার তা কেন কিনবে! আমাদের দেশের অডিও বাজারের কোনো প্রটেকশন নেই, নেই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা। শ্রোতাদের কাছাকাছি নিজের গান নিয়ে যেতে হলে নিজেরই দায়িত্ব নিতে হয়। অথচ বাইরের দেশ গুলোকে পৃষ্ঠপোষকতার কোন অভাব নেই। যুগের পরিবর্তন হয়েছে। নিজেকে উপস্থাপনের জন্য মানসম্মত অ্যালবাম ও মিউজিক ভিডিও এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বায়নের সাথে তাল মেলাতে নিজেকেও আপডেট রাখতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশের অডিও ইন্ড্রাষ্ট্রি পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না। যা সত্যিই কষ্টদায়ক।
বাংলানিউজ: এ বছরই নাকি আপনি বিয়ে করছেন ?
কণা : কী যে বলেন! যার বিয়ে তার খবর নাই। এ বছর বিয়ের জন্য কোনো শিডিউল খালি নেই । কারণ সামনের মাস থেকে দেশের বাইরে একটানা কয়েকটা ট্যুর আছে। অনেকদিন থাকতে হবে দেশের বাইরে। ফিরে এসে জমে থাকা কাজগুলো শেষ করতে রাতদিন সময় দিতে হবে। নজরুল সঙ্গীতে অ্যালবামটার কাজ শুরুর ইচ্ছে আছে এবছরই। বিয়ে করব কখন!
বাংলানিউজ : নিজের সম্পর্কে শোনা বিরক্তিকর কোন গুজব নিয়ে বলুন।
কণা : আসলে আমাকে নিয়ে কোনো গুজব নেই। নিজের সম্মানের প্রতি দৃষ্টি রাখলে ইচ্ছে করলেই গুজব-গুঞ্জনের উর্দ্ধে থাকা সম্ভব। তবে মজার একটা ঘটনা আছে। আমার একটি আড়াই বছর বয়সী ভাগ্নি আছে। নাম সোবহানা। সে আমার জান প্রাণ। আমার বাইরে যাওয়া দেখলেই জামা টেনে ধরে। মাঝে মাঝেই ওকে কোলে নিয়ে বাইরে যাই। এভাবেই অনেক সময় ক্যামেরার সামনে পড়ে গেছি। অনেকেরই ধারণা, এটা আমার বাচ্চা। আমি নিজেও অনেকের মুখে শুনেছি- ‘আপনার বাচ্চাটা তো অনেক কিউট’!
স্বপ্নের ঠিকানায় হাসিন
টপ মডেল খেতাব নিয়ে শোবিজে অভিষেক হয়েছিল হাসিনের। বেশ কয়েকটি একক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও মডেল হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান নি অনেকদিন। অবশেষে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌছাতে পেরেছেন হাসিন। সম্প্রতি দুটি বিজ্ঞাপনে কাজ করলেন তিনি। বর্তমানে চ্যানেলে চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে নিহার হেয়ার অয়েল ও মেরিল রিভাইভ ট্যালকম পাউডার-এর নতুন বিজ্ঞাপনচিত্র। এই বিজ্ঞাপনচিত্র দুটিতে মডেল হিসেবে পারফর্ম করেছেন ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল হাসিন রওশন জাহান। পদ্মাপাড়ের শহর রাজশাহীতে বড় হয়ে উঠেছে হাসিন রওশন জাহান। শৈশব-কৈশোরে স্বপ্ন দেখেছেন, একদিন সারা দেশের মানুষ তাকে চিনবে। রাজশাহীতে কলেজের পাঠ চুকিয়ে মেধাবী ছাত্রী হাসিন ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি খুঁজতে থাকেন স্বপ্ন পূরণের সিঁড়ি। বড় বোনের উৎসাহে ভিট-চ্যানেল আইয়ের অডিশন নাম লেখান। নিজের মেধা ও পারফর্মেন্স দিয়ে জিতে নেন টপমডেলের মুকুটটি। শিরোপা জেতা প্রসঙ্গে হাসিন বলেন, ‘অডিশন দেওয়ার সময় আমি মোটেও ভাবিনি যে, সেরা হবো। কিন্তু সেরা দশে আসার পর আমার মনোবোল অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সেই প্রত্যয় নিয়েই নিজেকে প্রেজেন্ট করি গ্রান্ড ফাইনালে। আত্মবিশ্বাস আর একাগ্রতায় আমাকে টপ মডেল খেতাব এনে দেয়’। গত বছরের জুলাই মাসে ‘ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল’-এর মুকুট জিতেছিলেন হাসিন রওশন। কিন্ত নিজের ‘টপ মডেল’ খেতাবের যথার্থতা প্রমাণ করার সুযোগ পান নি অনেকটিদন। সেরা মডেল নির্বাচিত হওয়ার পর স্বাক্ষর রাখতে পারেননি মডেলিংয়ের কোনো শাখায়। যদিও শোবিজে পা রাখার পর পরই তিনি নিজের গন্তব্যের কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘মডেলিংয়েই আমার আগ্রহটাও সবচেয়ে বেশি। নিজেকে মডেল হিসেবেই পরিচিত করে তুলতে চাই’।মডেলিংয়ে চমক দেখাবার সুযোগ পাওয়ার আগেই একের পর টিভিনাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব তার পিছু নেয়। রিয়েলিটি শো থেকে বেরিয়ে আসা অন্যসব সুন্দরীর তুলনায় হাসিন অল্প সময়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েন অভিনয় নিয়ে। টিভিনাটকে গ্ল্যামার যোগ করতে অনেক নির্মাতাই আগ্রহী হয়ে উঠেন হাসিনের প্রতি। প্রথম নাটকেই হাসিন নজর কাড়েন দর্শকদের। মডেল আইকন নোবেলের বিপরীতে প্রথম এক ঘণ্টার নাটক ‘আমাদের ছোট নদী’তে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। এরপর দ্বিতীয় নাটক ‘সখা হে’ -তে অভিনয় করেন ছোটপর্দার বড় তারকা মাহফুজ আহমেদের সঙ্গে জুটি বেঁধে। নাটক দুটো প্রচার হওয়ার পর হাসিনের অভিনয় আর গ্ল্যামারের দ্যুতি নজর কাড়ে নির্মাতাদের। অল্প সময়ের মধ্যেই পর পর তিনটি ধারাবাহিক নাটকের অভিনয় করেন ।
‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’, ‘পুতুল মানুষ’ আর ‘ব্যাচেলর দ্য ফ্যামিলি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেও অতৃপ্তিতে ভুগছিলেন তিনি। কারণ আর কিছু নয়, মডেলিংয়ের কাজ করতে না পারা। শোবিজে অভিষেকের দীর্ঘ নয় মাস পর অবশেষে গন্তব্যের দেখা পান তিনি। হাতে ধরা দেয় মডেলিং নামের সেই সোনার হরিন। নিহার হেয়ার অয়েল ও মেরিল রিভাইভ ট্যালকম পাউডার-এর বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে টপ মডেল খেতাবধারী হাসিন পৌছে যান স্বপ্নের ঠিকানায়। দুটি বিজ্ঞাপনচিত্রে ঝলমলে পারফর্মেন্স দিয়ে প্রমাণ করেছেন, নিজের যোগ্যতা। খ্যাতিমান নির্মাতা অমিতাভ রেজা নির্মিত সুপরিচিত ব্র্যান্ড প্যারাসুটের নতুন বিজ্ঞাপনেও তাকে শিগগিরই দেখা যাবে।
বিজ্ঞাপনে কাজ করলেও হাসিন রওশন সমানে চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনয়। সম্প্রতি রায়হান খানের পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক ‘দ্য লাস্ট কটেজ’ শুটিংয়ে তিনি অংশ নিয়েছে। থাইল্যান্ডে চিত্রায়িত এই ধারাবাহিকে হাসিন সারা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই নাটকে নিজের চরিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই চরিত্রে কাজ করার জন্য আমাকে সামনের চুলগুলো কেটে ফেলতে হয়েছে। সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে এই চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে। আমার চরিত্রটিও অনেক মজার। এই নাটকে অভিনয় করে আমি সিনিয়র আর্টিস্টদের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।’
পারফর্মিং আর্টের সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম চলচ্চিত্রে অভিনয় করার ইচ্ছে থাকে সব শিল্পীরই। তেমনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বপ্ন আছে ভিট সুন্দরী হাসিনের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রের প্রতি আমার বেশ আগ্রহ আছে। সুযোগ পেলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো। তবে চলচ্চিত্রটিকে হতে হবে অবশ্যই মান সম্পন্ন।ভালো গল্প, ভালো চরিত্র ও ভালো পরিচালক হলে ছবিতে কাজ করতে আমার কোনো সমস্যা নেই।’
ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে হাসিন বলেন, ‘মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করে যাবো। আমি অভিনয় দিয়ে দর্শকের মনে চিরকাল বেঁচে থাকতে চাই।’ গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে হাসিনের মাস্টার্স পরীক্ষা। চলবে মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ। পরীক্ষার জন্য আপাতাত মিডিয়া থেকে দূরে আছেন। পরীক্ষা শেষে আবারও জোরেশোরে তিনি শোবিজ কাজ করবেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
বিপুল হাসান
ঢালিউডের সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা সুচরিতার সংসার ভেঙে গেছে। স্বামী চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে তার ডিভোর্স সম্পন্ন হয়েছে । সেই সঙ্গে ভেঙে গেছে, তাদের দীর্ঘ ২৩ বছরের সংসার। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সুচরিতার সংসার ভাঙলো। আশির দশকের প্রথম দিকে ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় প্রেমের বিয়ে হয়েছিল তার প্রয়াত নায়ক জসিমের সঙ্গে। ভালোবাসার সেই সংসারের আয়ু হয়েছিল বছর-তিনেক। ঢালিউডের চলচ্চিত্রের সোনালী সময়ে ‘ড্রিমগার্ল’ খ্যাত সুচরিতা দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ১৯৮৯ সালে। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী ও ঢাকার কয়েকটি সিনেমা হলের মালিক কেএমআর মঞ্জুর সঙ্গে সুচরিতার এই বিয়েটিও ছিল প্রেমের। তাদের সংসারে পর পর আসে ৩টি সন্তান। সন্তান আর সংসারের ব্যস্ততায় সুচরিতা একসময় ঢালিউড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। সম্প্রতি অবশ্য আবারও চলচ্চিত্র অভিনয় শুরু করেছেন তিনি।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কেএমআর মঞ্জুর ও সুচরিতা আলাদা বসবাস করছিলেন। গতবছর শেষের দিকে কেএমআর মঞ্জুর ডিভোর্স নোটিশ পাঠান সুচরিতাকে। এ বিষয়ে শুনানীর জন্য বিধি অনুযায়ী সুচরিতাকে সিটি কর্পোরেশনের সালিশি পরিষদ একাধিকবার স্বশরীরে হাজির হওয়ার জন্য তলব করে। কিন্তু সুচরিতা এতে সাড়া দেন নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পারিবারিক আইন অনুযায়ী নোটিশের তৃতীয় মাসে তাদের ডিভোর্স কাযর্কর হয়েছে। বাংলানিউজ এ বিষয়ে ফোনে কথা বলে সুচরিতার সঙ্গে। তিনি বলেন, কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। সম্পর্কটা কেবল টিকে ছিল কাগজে কলমেই। কেবল কাগজের কোনো সম্পর্কের মূল্য আমার কাছে নেই। এবার কাগজে-কলমে ডিভোর্স হয়ে গেল। এ নিয়ে আমার বলার মতো কিছু নেই। সবই আমি মেনে নিয়েছি। নামে মাত্র সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেয়ে না-থাকাই ভালো।
এ প্রসঙ্গে জানার জন্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী চলচ্চিত্র প্রদর্শক কেএমআর মঞ্জুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ১৪ বছর ধরে আমরা আলাদা আছি। তার সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও কোনো বনিবনা হয়নি। আগামীতে বনিবনা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল কাগজে-কলমে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা অর্থহীন । তাই এবার সবকিছুর ইতি টেনে তাকে মুক্তি দিলাম আর আমি নিজেও মুক্ত হলাম।
কেএমআর মঞ্জুর ও সুচরিতা দাম্পত্যজীবনে তিন সন্তানের জনক-জননী। তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, তিনজনই বর্তমানে মালয়েশিয়া পড়াশোনা করছেন। তাদের পড়াশোনাসহ সব খরচই বহন করছেন কেএমআর মঞ্জুর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাবা হিসেবে সন্তানের জন্য যা কিছু দরকার সবই আমি করছি এবং করবো। তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য যা কিছু করার দরকার আমি করে যাবো। একজন শিশু শিল্পী হিসেবে সুচরিতা চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৬৯ সালে, যখন তার নাম ছিল বেবী হেলেন। নায়িকা হিসেবে সুচরিতা প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭২ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘স্বীকৃতি’ ছবিতে। ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশি’ ছবির মাধ্যমে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা পান। মায়াময় ফটোজেনিক চেহারা আর আকর্ষণীয় দেহবল্লরী তাকে শক্ত ভীত গড়ে দেয় ঢালিউডে। আশির দশক পর্যন্ত তিনি ছিলেন দেশের প্রথম সারির নায়িকা।
সুচরিতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘দি ফাদার’, ‘বদলা’, ‘জীবন নৌকা’, ‘আসামী’, ‘নদের চাঁদ’ ‘কথা দিলাম’, ‘গাদ্দার’, ‘জনি’, ‘নাগরদোলা’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ প্রভৃতি। প্রায় দুই দশক বিরতির পর সম্প্রতি ফিরে এসে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন। ইদানিং সময়ের চলচ্চিত্রে নায়ক-নায়িকার মা-খালার গুরত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করতে বেশি দেখা যায়।
ডিটেকটি ভ মিমো
চলচ্চিত্রে কাজ করার উদ্দেশ্যে ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’ ইভেন্টে মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় পা রেখেছিলেন মিমো। সুপার হিরোইন খেতাব জয় করার পর কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেও টিভিনাটক নিয়ে এখন তিনি বেশি ব্যস্ত। সম্প্রতি তিনি অভিনয় করেছেন এটিএন বাংলার জন্য নির্মিত
প্রতিদিনের ধারাবাহিক নাটক ‘ডিবি’-তে। এতে মিমোকে দেখা যাবে একজন ডিটেকটিভ
অফিসারের চরিত্রে। ড. মাহফুজুর রহমানের পরিকল্পনায় জনপ্রিয় অভিনেতা ও
নির্মাতা শহীদুজ্জামান সেলিমের পরিচালনায় ব্যয়বহুল বাজেটের ডেইলি সোপ
‘ডিবি’। নাটকটির গল্প লিখছেন নাট্যকার লিটু সাখাওয়াত, মাহবুবা শাহরীন ও
জামাল রেজা। এক একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধারা বাহিকটি পাঁচ থেকে সাতটি পর্ব নির্মাণ করা হবে। মোট একহাজার পর্ব শেষ হবে এটি। এই নাটকটিতে পর্যায়ক্রমে দেশের প্রায় সব তারকাকেই অভিনয় করতে দেখা যাবে বলে জানা গেছে। ডেইলি সোপ ‘ডিবি’ প্রথম দিকের পর্বগুলোতে অভিনয় করছেন ডিএ তায়েব, মিমো, শাহরিয়ার
শুভ, বিপাশা, বাবু, অপু, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. গনি, শম্পা রেজা
প্রমুখকে। এতে ডিটেকটিভ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করা প্রসঙ্গে
বাংলানিউজকে মিমো বললেন, কিছুদিন আগে শহীদুজ্জামান সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে একটি
একপর্বের নাটকে অভিনয় করছিলাম। তিনি জানান একটি ডিটেকটিভ ডেইলি সোপ
নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। সেলিম ভাই আমাকে বললেন, তুই তো বেশ লম্বা তোকে
ডিটেকটিভ অফিসার চরিত্রে খুব মানাবে। কাজটি করতে গিয়ে বেশ এক্সাইটেড আমি।
ক্ল্যাসিক না চেও দক্ষ বলিউডের ফারহা খান
অনন্যা আশরাফ
‘ম্যায় হু না’ ছবির সহকর্মী সিরিশ কুন্দারকে ফারহা ২০০৪ সালে ৯ ডিসেম্বর জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। বিয়ের ৮ বছরের মাথায় ২০০৮ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি সিজার নামে একটি ছেলে এবং দিভা ও আনিয়া নামে দুইটি মেয়ে মোট ৩টি জমজ সন্তানের মা হন ফারহা খান।
১৯৯২ সালে ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ ছবিতে কোরিওগ্রাফার হয়ে আত্মপ্রকাশ করা ফারহা খান এ পর্যন্ত প্রতি বছরই অনেকগুলো ছবিতে কোরিওগ্রাফি করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - ‘কাভি হা কাভি না’, ‘ওয়াক্ত হামারা হে’, ‘পেহেলা নাশা’ ‘ইংলিশ বাবু দেশি মেম’ ‘ভিরাসাত’, ‘বর্ডার’, ‘দিল তো পাগল হে’, ‘কাহো না..পেয়ার হে’, ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘হাম তোমহারে হে সানাম’, কোয়ি মিল গ্যায়া’, ‘কাল হো না হো’, ‘কৃষ’, ‘কাভি আলভিদা না কেহনা’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘ওয়েলকাম’, ‘দাবাঙ’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘টিস মার খান’ সহ আরও অনেক ছবি।
কোরিওগ্রাফার ফারহা খান যে কেবল বলিউড হিরো হিরোইনকে নাচিয়েছেন তা নয়, কলোম্বিয়ান ড্যান্স কুইন শাকিরাকেও তিনি তার ইশারায় নাচিয়েছেন। ২০০৬ সালে ৩১ আগষ্ট এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে শাকিরার হিট গান ’হিপস ডোনট লাই’ গানে শাকিরাকে কোরিওগ্রাফ করেছেন ফারহা। এছাড়াও ‘ব্লু’ ছবিতে ‘চিগি উগি’ গানে ক্যালি মিনোগকেও কোরিওগ্রাফ করেছেন তিনি।
ফারহা আর্ন্তজাতিকভাবে খ্যাতি পান ‘মনসুন ওয়েডিং,বোম্বে ড্রিমস‘ ও ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ ছবিতে কোরিওগ্রাফিংয়ে। ২০০৪ সালে তিনি এ ছবির জন্যে টনি অ্যাওয়ার্ডে সেরা কোরিওগ্রাফারের জন্যে প্রথম নমিনেশন পান। নাচের মাধ্যমে বলিউডে আসা এ নৃত্যপরিচালক ভক্তদের কাছে তার আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন ছবি পরিচালনার মাধ্যমে । বন্ধু শাহরুখকে নিয়েই তৈরি করেন তার প্রথম ছবি ‘ম্যায় হু না’। রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় এ ছবি বক্স অফিসে বিশাল সাফল্য পায়। এরপর তার পরিচালনার দ্বিতীয় ছবি ‘ওম শান্তি ওম’ মুক্তি পেয়ে সে সময় ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রির সর্বোচ্চ ব্যবসা সফল ছবির খেতাব জিতে। এ পর্যন্ত তার শেষ ছবি নাম ‘তিস মার খান’। যেখানে তার কোরিওগ্রাফ করা ‘শীলা কি জাওয়ানি’ গানটি তুমুল দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। উপস্থাপক হিসেবে ফারহা খান নিজের জাদু দেখিয়েছেন সেলিব্রেটি চ্যাট শো ‘তেরে মেরে বিচমে’তে। এছাড়াও বিচারক হিসেবে অংশ নিয়েছেন জনপ্রিয় টিভি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ সিজন-০১ ও সিজন-০২তে, ‘জো জিতা ওহি সুপারস্টার’, ‘এন্টারটেইনমেন্টকে লিয়ে কুচভি কারেগা’, ‘ড্যান্স ইন্ডিয়া ড্যান্স লিটল মাস্টার’ এবং ‘জাস্ট ড্যান্স’ এ। ফারহা খান ও তার স্বামী শিরিশ কুন্দার একসঙ্গে সম্প্রতি ‘থ্রি‘স কোম্পানি’ নামে একটি প্রডাকশন কোম্পানি শুরু করেছেন। যা তাদের ৩টি জমজ সন্তানের নামানুসারে করা হয়েছে।
এক নজরে ফারহার পাওয়া পুরস্কার
ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড
সেরা কোরিওগ্রাফার হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিল্মফেয়ার পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে প্রথম স্থান দখলকারী সারোজ খানের পর ফারহা খান দ্বিতীয় স্থান দখলে আছেন। তিনি ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০১, ২০০২, ২০০৪ এবং ২০১১ মোট ৬বার ফিল্মফেয়ার সেরা কোরিওগ্রাফার অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন।
ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড
২০০৪ সালের ‘কোয়ি মিল গ্যায়া’ ছবির ‘ইধার চালা ম্যায় উধার চালা’ গানের জন্যে ফারহা খান ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডে সেরা কোরিওগ্রাফারের পুরস্কার পান।
ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম একাডেমি
২০০১ ও ২০০২ সালে সেরা টেশনিক্যাল এক্সিলেন্টস, ২০০৫ সালে সেরা নবাগত পরিচালক এবং ২০০৯ ও ২০১১ সালে সেরা কোরিওগ্রাফার হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম একাডেমি পুরস্কার জিতেছেন ফারহা খান।
স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড
২০০১,২০০২ ও ২০০৪ সালে সেরা কোরিওগ্রাফারের অ্যাওয়ার্ড এবং ২০০৫ সালে সেরা নবাগত পরিচালকের জন্যে স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
জি সিনে অ্যাওয়ার্ড
২০০৫ সালে সেরা নবাগত পরিচালক ও ২০১১ সালে ‘শিলা কি জাওয়ানি’ থেকে জি সিনে অ্যাওয়ার্ডে সেরা কোরিওগ্রাফারের পুরস্কার জিতেন।
গান আমার ছবির হাতিয়ার : মোস্তফা কামাল রাজ
অনন্যা আশরাফ
বাংলানিউজ : কেমন চলছে আপনার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘ছায়া-ছবি’র কাজ?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : ভালোভাবেই ছবিটির কাজ এগিয়ে চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুততার সঙ্গেই কাজ করার চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ীই সবকিছু চলছে।
বাংলানিউজ : কোথায় কোথায় ছবির শুটিং করলেন?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : ছবিটির শুটিং শুরু করি চট্টগ্রাম থেকে। প্রথম দিকে কয়েকটি গানের শুটিং করি চট্টগ্রাম আর কক্সবাজারের বিভিন্ন লোকেশনে। তারপর ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং হয়েছে। দেশের মধ্যেই শেষ করবো ছবিটির শুটিং।
বাংলানিউজ : কতখানি শেষ হয়েছে ছবির কাজ?
মোস্তফা কামাল রাজ : ছবির শুটিং এখনো চলছে। মনে হচ্ছে ‘ছায়া-ছবি’-নিয়ে অর্ধেক পথ হাঁটা শেষ। সামনে আরো অর্ধেক পথ যেতে হবে। মাঝেমধ্যে একটু থামতে হচ্ছে দম নেওয়ার জন্য। বাকি অংশের শুটিং শুরু করবো ২৮ এপ্রিল।
বাংলানিউজ : সম্প্রতি ‘ছায়া-ছবি’-এর গানের অ্যালবাম রিলিজ দেওয়া হয়েছে, ছবি মুক্তির অনেক আগেই এবার অ্যালবাম মুক্তি দেওয়ার কারণটা জানতে চাই?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : একটি ছবির প্রমোশনের পেছনে গানের ভূমিকা থাকে অনেক। গানের মাধ্যমেই দর্শকদের কাছে ছবিটিকে খুব সহজেই পরিচিত করা যায়। তাই আমি আগের ছবির মতো এবারও গানকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সবার আগে গানগুলোর শুটিং শেষ করি। দর্শকরা গান শুনে আগে মুগ্ধ হবেন, তারপর আমার ছবির দেখতে হলে আসবেন। এসব বিষয় মাথায় রেখেই একটু আগেভাগেই আমার অ্যালবামটি মুুক্তির কাজ শেষ করেছি।
বাংলানিউজ : ছবিটির গানগুলোতে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি। ছবিতে গানের কম্পোজিশনের দায়িত্ব ছিল আরেফিন রুমীর উপর। অসম্ভব ভালো কাজ করেছে সে। ছবির গল্প মাথায় রেখে গানগুলোর কথা লিখেছেন কবির বকুল, মারজুক রাসেল,মৌসুমী, মাহমুদ মানজুর,রবিউল ইসলাম জীবন ও আরেফিন রুমী নিজে। ছবির বিভিন্ন গানে কন্ঠ দিয়েছেন শান, অভিজিৎ, আকৃতি কাকর, জুনে ব্যানার্জি, রাঘব চ্যাটার্জি এবং অন্বেষার মত ভারতের নামী শিল্পীরা। আর বাংলাদেশী শিল্পীদের মধ্যে জনপ্রিয় আরেফিন রুমী, নিশিতা বড়–য়া ও পড়শি কন্ঠের জাদুও আছে গানগুলোতে। সবমিলিয়ে অ্যালবামের কাজটা কেমন হয়েছে তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। গানগুলো আমার ছবির সফলতার বড় একটি হাতিয়ার।
বাংলানিউজ : ছবির অভিনয় শিল্পীরা কেমন করছেন?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : ছবির নায়ক চরিত্রে আরেফিন শুভ আমার প্রত্যাশার চেয়েও ভালো অভিনয় করছেন। পূর্ণিমাও তার জায়গায় পারফেক্ট। রোমান্টিক ছবির জুটি হিসেবে আরেফিন শুভ ও পূণিমাকে দর্শক গ্রহণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। অন্যরাও প্রত্যেকে সাধ্যমতো ভালো করার চেষ্টা করছেন।
বাংলানিউজ : কোন ধরণের দর্শকদের জন্য ছবিটি তৈরি করছেন?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : ‘ছায়া-ছবি’ সবধরনের জন্যই তৈরি। সবশ্রেণীর দর্শকরা এ ছবিতে কিছু না কিছু ভালো লাগার উপদান খুজে পাবেন। এটি একটি লাভস্টোরি। তাই একটু বেশি খুশি হব সিনেমা হলে তরুণ প্রজন্মের দর্শকদের দেখতে পেলে।
বাংলানিউজ : আপনার আগের ছবি ‘প্রজাপতি’ কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে।
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : অবশ্যই প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে। সিনেমা হলে দর্শকরা এসেছেন ছবিটি দেখতে। একজন নবীন চলচ্চিত্র নির্মাতার ছবিকে দর্শক মনে হয় ভালোভাবেই নিয়েছেন। আমি সবসময় গানকে চলচ্চিত্রে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ‘প্রজাপতি’ ছবির গানগুলো দর্শক-শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। এটি আমার জন্য খুব আনন্দের একটি বিষয়।
বাংলানিউজ : আপনার নেক্সট প্রজেক্ট কী?
মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ : আমি রানিং প্রজেক্টের মধ্যে ডুবে আছি। নেক্সট প্রজেক্টের জন্য এখনও খাতা-কলম নিয়ে বসতে পারি নি। ‘ছায়া-ছবি’ কে ঘিরেই আমার এখন পূর্ণ মনোযোগ। আগে এই প্রজেক্টের কাজ শেষ হোক, তারপর নেক্সট প্রজেক্টের কথা ভাবতে চাই।
এবার রবীন্দ্র নায়িকা পাওলি
বিনোদন ডেস্ক
‘ছত্রাক’ আর ‘হেট স্টোরি’-এর এই নগ্ননায়িকাকে এবার দেখা যাবে রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসের নায়িকা হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ‘চার অধ্যায়’ অবলম্বনে কলকাতায় নির্মিত হচ্ছে ছবি। এতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করছেন পাওলি দাম। ছবিটি পরিচালনা করছেন বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ উপন্যাস ‘চার অধ্যায়’। তিন দশকের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র ধারার পটভূমিকায় গড়ে ওঠা প্রেমকাহিনী এটি। ১৯৩৪ সালে উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনার ঝড় ওঠে। এটি প্রেমের গল্প হলেও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সহিংস ধারার দোষত্রুটির কঠোর সমালোচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ তার এই উপন্যাসে। আর সেটাই আকৃষ্ট করেছে ছবির পরিচালক বাপ্পাদিত্যকে। পাওলি দাম ছাড়াও ছবিটিতে অভিনয় করছেন রুদ্রনীল ঘোষ, বরুণ চন্দ্র এবং আরো অনেকে। রবীন্দ্র-নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত পাওলি। এ প্রসঙ্গে নিজের অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, একজন বাঙালি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্ট চরিত্রে অভিনয় করতে পারাটা আমার জন্য দারুণ গৌরবের এক বিষয়। সিনেমাটিতে আমাকে ভারতের স্বাধীনতার আগের এক চরিত্রে দেখা যাবে। আমি সাধ্য মতো পর্দায় চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করবো।
মোস্ট বিউটিফুল ওমেন বিয়োন্সে নোয়েল
প্রীতি ওয়ারেছা
চলতি বছর শ্রেষ্ঠ সুন্দরীর মর্যাদা জয়ী বিয়োন্সে নোয়েল ব্যক্তি জীবনে র্যাপার জে-জেডের স্ত্রী। ব্লু আইভি নামে এই দম্পতির একটি কন্যা সন্তান আছে। ৩০ বছর বয়সী বিয়োন্সে পাঠক জরিপে বিশ্বব্রম্মা-ের সুন্দরীতমা উপাধি পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘এটি আমার জন্য একটি দামি উপহার। খুব খুশি আমি পাঠকদের রায় পেয়ে। সন্তানের মা হওয়ার পর আমার সৌন্দর্য বেড়ে গেছে বলে মনে করি। মাতৃত্ব সত্যিই সবসময় সুন্দর। এই মর্যাদা পাওয়ার পুরো কৃতিত্বই আমি আমার মেয়ে ব্লু আইভিকে দিতে চাই’। গত বছর পিপল ম্যাগাজিনের পাঠক জরিপে ‘মোস্ট বিউটিফুল ওমেন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ উপাধি জয় করেছিলেন গায়িকা ও অভিনেত্রী জেনিফার লোপেজ। পিপলের এবারের জরিপে প্রতিদন্দ্বীদের চুড়ান্ত তালিকায় ছিলে তিন অসি সুপারস্টার নিকোল কিডম্যান, রোজ বায়ার্ন এবং এলি ম্যাকফারসন । তাদের মধ্যে ৪৪ বছর বয়সী নিকোল কিডম্যান ২০০২ সালে পিপল পাঠকদের রায়ে সেরা সুন্দরী হয়েছিলেন। এবছরের পাঠক পছন্দের তালিকায় আরো ছিলেন কেট মিডলটন, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, চার্লিস থেরন, অ্যাডেল, সোফিয়া ভারগারা এবং মেগান ফক্স।
সেলিব্রিটি সংঘাত : কারিনা বনাম ক্যাটরিনা
বিনোদন ডেস্ক
একদিন হারিয়ে যাওয়া শৈশবে
এখনও অনেক জায়গায় ঘুরিনি আমি। এর মধ্যে একটি ছিল আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডম। বন্ধু-বান্ধবীদের মুখে অনেক শুনেছি এর এক্সাইটিং সব রাইডের কথা। এরপর থেকেই খুব লোভ হচ্ছিল সেখানে যাওয়ার। কিন্তু এতোদূরে যাওয়ার মত সঙ্গী, সময় বা সুযোগ হয়ে ওঠেছিল না। হঠাৎ একদিন বাংলানিউজের লাইফস্টাইলে চোখ বুলিয়ে দেখি ভালোবাসার গল্প লেখার আহ্বান। প্রকাশের যোগ্য হবে কিনা বা কতটুকু ভালো হবে এসব না ভেবেই লিখে ফেললাম একটি ভালোবাসার গল্প। খুব ভালো লাগলো যথন লাইফস্টাইল বিভাগে অন্যান্যদের গল্পের পাশে আমার গল্পটি দেখলাম। আরও ভালো লাগলো যখন পুরস্কার হিসেবে সব রাইডসহ ফ্যান্টাসি কিংডমের টিকিট হাতে পেলাম। টিকিটের মেয়াদ ছিল ১২ মার্চ পর্যন্ত। কবে যাবো সে প্রহরই গুণছিলাম। প্রায় ১০/১২ দিন পর অবশেষে ঠিক করলাম ২ মার্চ শনিবার যাবো। সঙ্গী আমার বর মেরাজ। সারারাত জেগে অফিস করায় বাসায় এসে সকাল সাড়ে ১০টায় ঘুম দিয়েছিলেন আমার সাহেব। তার ঘুম ভাঙলো দুপুর ২টায়। বাসার সবাই বলছিল আজ যেহেতু দেরি হয়ে গেছে তাই আগামী সপ্তাহে যেন যাই। কিন্তু মন কি আর মানে। আমি বললাম আজই যাব। ব্যস তারাতারি তৈরি হয়ে দুপুরে কিছু না খেয়েই রওনা হলাম। বাসা থেকে যখন বের হই তখন বাজে দুপুর পৌনে ৩টা। আমাদের বাহন হচ্ছে মটোরসাইকেল। বেরিবাঁধ হয়ে ছুটলো আমাদের বাইক। খুব ভালো লাগছিল সেই পথ চলা। দুপাশে সবুজ আর শান্ত। বেরিবাঁধের শেষ মাথা থেকে বায়ে মোড় নিলে আশুলিয়ার রাস্তা। রাস্তাটা যেন শেষ হচ্ছে না, মনে হচ্ছে কখন যাব সেই স্বপ্নের দেশে।৪৫ মিনিট পর আমরা পৌঁছালাম ফ্যন্টাসি কিংডমের গেটের কাছে। পার্কিংয়ে বাইক রেখে আমরা ভিতরে গেলাম। প্রথমেই ঢুকলাম হেরিটেজ পার্কে। আগেই খাওয়ার দাওয়ার পর্বটা সেরে নিলাম। হেরিটেজ পার্কে রয়েছে আহসান মঞ্জিল, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, সংসদ ভবন, সাতগম্বুজ মসজিদসহ বাংলাদেশের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ছোট ছোট প্রতিকৃতি। মনে হলো হারিয়ে গেছি সেই যুগে। শুরু হলো আমাদের দুজনার ফটোসেশন। সময় কম বলে হেরিটেজের কোনো রাইডেই চড়তে পারিনি আমরা। হেরিটেজ থেকে বের হয়ে ঢুকলাম ঈগলু হাউজে। অন্ধাকার ঘরটাতে ঢোকার পর একজন এসে হিন্দি একটি গান ছেড়ে দিলেন ফুল ভলিউমে। মাঝখানে রাখা আছে বরফ। আবার ওপর থেকে শিশিরের মতো পড়ছে পানি। এরপর ঢুকলাম ফ্যান্টাসি কিংডমের ভেতরে। ঢুকেই আবার ছবি তোলা। হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়লো রোলার কোস্টার নামে এক্সাইটিং একটি রাইডের দিকে। দু’জনার টিকিট দেখিয়ে মাত্র তিনজন উঠলাম সে রাইডটিতে। আমি আর মেরাজ বসেছিলাম একেবারে সামনে। রাইডটি যখনি চলতে শুরু করলো আমি ভয়ে প্রাণপণে চিৎকার শুরু করলাম। মনে হচ্ছিল এখনই ছিটকে পড়ে যাবো নিচে। তবে ভয়ের চেয়ে মজাই পেয়েছিলাম বেশি। আর মেরাজ এতোই মজা পেয়েছিল যে আরেকবার ওই রাইডে চড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল। পরে অবশ্য সময়ের জন্য চড়া হয়নি। ভয়ংকর ওই রাইড থেকে নামার পর সঙ্গীসহ কয়েকজনের সঙ্গে ঢুকলাম অন্ধকার একটি ঘরের মধ্যে। ঘরটির মধ্যে ঢুকে মনে হলো আমি সৌর জগতে আছি। লোহার গ্রিল বিছানো সরু একটি পথ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হলো আমি ঘুরছি। এই বুঝি উল্টে পরে গেলাম। আবারও চিৎকার করতে লাগলাম ভয়ে। সবাই আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে লাগলো ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমি ঘুরছি না ঘুরছে দেয়াল আলো করে ডিজিটাল ছবি। এরপর আন্ডারগ্রাউন্ডের মতো একটা পথ সোজা ওয়াটার কিংডমের ভেতরে। যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল আমি পানির নিচের জগতে আছি। ভেতরে ঢুকে শুনলাম পানির কৃত্রিম ঢেউ দিতে এখনও ৩০ মিনেটের মতো বাকি। টায়ার নিয়ে পানির রাইডগুলোতে চড়া শুরু করলাম। খুব মজা পাচ্ছিলাম দুজনই। বার বার টায়ারে নিয়ে ৩/৪ তলার মতো ওপরে ওঠে বড় পাইপের মত জায়গা দিয়ে নিচে নামা। দারুণ লাগছিল। মনে হচ্ছিল একদিনের জন্য একেবারেই হারিয়ে গেছি। যেন ফিরে গেছি পেছনে ফেলে আসা দূরন্ত শৈশবে। পানিতে কৃত্রিম ঢেউ দেওয়ার ৫ মিনিট আগে সবাইকে জানানো হলো, নেমে গেলাম পানিতে। ঢেউ এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যেন সত্যি সত্যি সাগরের ঢেউ। ওয়াটার কিংডম থেকে বের হয়ে দেখি হিন্দি গানের তালে তালে নাচছে একদল ছেলে মেয়ে। সন্ধ্যার নাস্তা খেতে খেতে দেখছিলাম সে নাচ। এরপর চড়লাম আরেকটা রাউডে। নামটা ঠিক মনে করতে পারছিনা। রেইলাইনের মতো একটা খোলা ছোট বগি আস্তে আস্তে উঠছে ওপরে, এরপর হঠাৎ দ্রুত গতিতে নিচে নেমে যাচ্ছে। পর পর তিনবার। বিদ্যুৎ না থাকায় সান্তা মারিয়া আর ম্যাজিক কার্পেটে উঠতে পারিনি। তবে তা পুষিয়ে নিয়েছি অন্য রাইডগুলোর সঙ্গে রিপ্লেস করে। বাম্পার কারে উঠেছি দুবার। গাড়ি কন্ট্রোল করা শিখতে শিখতে রাউডের সময় শেষ। এরপর জুজু ট্রেনে চড়ে দেখে নিলাম পুরো ফ্যান্টাসি কিংডম। সব শেষে ইজিডিজি। সময় একেবারে শেষ পর্যায়ে থাকায় আমরা দু’জনই চড়েছিলাম ওই রাইডে। এরপর আস্তে আস্তে বাড়ির পথে। ফ্যান্টাসি কিংডমে যতক্ষণ ছিলাম মনে হচ্ছিল প্রতিদিনের দায়িত্ব, হাজারো কাজ, সবকিছু ভুলে আমরা দু’জন শৈশব ফিরে পাওয়া মুক্ত মানুষ।
লাক্স ব্রাইডল শো
লাইফস্টাইল ডেস্ক
বিয়ে নিয়ে সাধারনত আমাদের দেশীয় টিভি চ্যানেলে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন অনুষ্ঠান হয়না। জনগণের চাহিদা এবং প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে আরটিভি আয়োজন করেছে বিয়ের যাবতীয় খুটিনাটি বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠান ‘ব্রাইডল শো’। বর কনে দেখা থেকে শুরু করে বিয়ের আগের প্রিপারেশন, বিয়ের আংটি (এনগেজমেন্ট), বিয়ের কেনাকাটা,কোথায় কি কি পাওয়া যায়, হলুদ সন্ধ্যার আয়োজন, হলুদের কেনাকাটা, বিয়ের সাজ, পোষাক, গহনা, মেকআপ, বিয়ের যাবতীয় অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও ধারন, বিয়ের আমন্ত্রনপত্র তৈরি ও বিতরন, বিয়ের দেনমোহর, স্বাক্ষী, উকিল, রেজিষ্ট্রেশন, বিয়ের অনুষ্ঠান কোথায় কোথায় হতে পরে: যোগাযোগ ও খরচ, বিয়ের গাড়ি, বাসর ঘর সাজানো। এছাড়াও দেশীয় বিয়ের বিভিন্ন রীতিনীতি (একটি প্যাকেজ), তারকাদের বিয়ে (একটি প্যাকেজ), সনাতন বিয়ের রীতিনীতি (মুসলিম বিয়ে, হিন্দু বিয়ে ও অন্যান্ন বিয়ের নিয়মকানুন),বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিয়ের আয়োজন (একটি প্যাকেজ) কনেকে ঘরে নেওয়ার যাবতীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তলে ধরা হয়। শাহরিয়ার ইসলামের প্রযোজনায় ও শারমিন লাকির সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি সপ্তাহের প্রতি সোমবার আরটিভিতে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে প্রচার হয়।
কাপড় আয়রন করার পদ্ধতি
লাইফস্টাইল ডেস্ক
টিপসগুলো দিয়েছেন বিখ্যাত ‘রোয়েন্টা আইরন্স’ এর পণ্য ব্যবস্থাপক ডোনা ওয়েলস। ১. তাপমাত্রা অনুযায়ী পোশাকের তালিকা তৈরি করুন। সিল্ক এবং সিনথেটিক কাপড় নিম্ন ও মাঝারি তাপমাত্রায় (প্রায় ৩৫০ ফারেনহাইট)। পশমি কাপড় মাঝারি থেকে উচ্চ তাপমাত্রায় । এবং সুতি কাপড় উচ্চ তাপমাত্রা ৪০০ থেকে ৪২৫ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ইস্ত্রি করুন। যেহেতু সঠিক তাপমাত্রা ঠিক করা কঠিন কাজ। তাই তাপমাত্রা পরিবর্তন করার পর কয়েক মিনিটের জন্য আয়রন মেশিনটি রেখে দিন। ২. আয়রন করার পর পরই কাপড় ভাঁজ করে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন। ৩. গোল করে কখনোই আয়রন করবেন না। এতে কাপড়ের মধ্যে টান লাগতে পারে। আর লম্বালম্বিভাবে আয়রন করলে কাপড়ের ভাঁজ দূর করে। ৪. অনেক বড় বা লম্বা কোন কাপড় যেমন: পর্দা বা টেবিলকভার আয়রন করার সময় পাশে ২টি চেয়ার বসিয়ে নিন, যাতে কাপড়গুলোতে আপনার আয়রন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভাঁজ না পরে। টেবিলে তোয়ালে বিছিয়ে নিন যাতে ইস্ত্রির গরমে আয়রন করার টেবিলটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ৫. আয়রন সংবেদনশীল কাপড়ের উপরে পরিষ্কার ছোট সুতির কাপড়, রুমাল বা গামছা দিয়ে আয়রন করুন। আয়রন সব সময় কাপড়ের উল্টো পাশে করুন যাতে কাপড় ঝলসে না যায়। ৬ . আপনার লোহার আয়রনের সঙ্গে একটা মাল্টিপ্লাগ ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া ১২ মাত্রার বিদ্যুত্প্রবাহের বৈদ্যুতিক তার হলে ভাল হয়। কম ওজনের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার না করাই ভাল। এতে আয়রন খুব গরম হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। নিশ্চিত হোন যে আপনি সঠিক মাপের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করছেন। ৭. কাপড়ের শুরু থেকে শেষ, বাইরে থেকে ভেতরে এভাবে আয়রন কহতে দিন।