Year-19 # Issue-31 # 16 September 2012



দুর্নীতি থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী তার পরিবার ছোট করেছেন
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
বিএনপির চেয়ারপারসন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারকে ছোট করে ফেলেছেন। তার পরিবার যতই ছোট হবে আমাদের ধরতে ততো সুবিধা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকারের আমলে সাংবাদিকরা অনেক বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিএনপির নির্যাতনের খবর যারা প্রকাশ করছে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। ‘এ সরকার গণতান্ত্রিক নয়, দলীয় সরকার। দলীয় সরকার বলে সব কিছু দলীয় হচ্ছে। বিচারকরা মন্ত্রীর কথায় রায় দিচ্ছেন। নিদোর্ষ লোককে দোষী বানানো হচ্ছে, আর দোষীদের নিদোর্ষ বানিয়ে মুক্ত করা হচ্ছে।’ শনিবার রাত ৯টা ২০মিনিটে শুরু হওয়া চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘বড় বড় কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ না করার কারণে ওএসডি হচ্ছেন। অনেকে আবার চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।’ আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে এমন অবস্থায় নিয়ে গেছে এ দেশ থাকবে কী থাকবে না সে অবস্থায় এসে দাড়িয়েছে। বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করছে তাই বিএনপিকে মানুষ পছন্দ করে। খালেদা জিয়া বলেন, তারেক রহমান রাজনীতিতে আছে। তিনি কাউন্সিলে নির্বাচিত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। এ দেশেরে মাটির সঙ্গে তার সম্পর্ক। তিনি সুস্থ হলেই ফিরেন আসবেন। তিনি বলেন, ‘এ সরকারকে বিদায় করে আমরা দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবো। আমাদেরকেই এদেশের জন্য কাজ করতে হবে।’ এর আগে সাংবাদিকদের মধ্যে অনেকেই তাদের ওপর নির্যাতনসহ দেশের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, নিউ নেশনের সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি আব্দুস শহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, খন্দকার মনিরুল আলম, বার্তার সম্পাদক সর্দার ফরিদ, কবি মাহামুদ শফিক, এনটিভির ফরিদ আলম, সদরুল আমিন, নাহিদ নজরুল, বাসসের সাবেক সাংবাদিক আসাদুর জামান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সেলিম রেজা, দিগন্ত টেলিভিশনের আমিরুল মোমিনিন মানিক, আমার দেশের প্রধান সহকারী সম্পাদক সঞ্জীব চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি ইলিয়াস খান, সমকালের যুগ্ম সম্পাদক রাশেদুল নবী বাবু, আমানুল্লাহ কবির, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন, মো. কামরুজ্জামান, আওয়াল ঠাকুর, আজম মীরসহ শতাধিক সাংবাদিক। বিরোধী দলীয় নেতার বক্তব্য শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে কৃঞ্জতাস্বীকার করে ধন্যবাদ জানান।
তোফায়েলের মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আশরাফের অভিযোগ
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদের মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে অভিযোগ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
শুধু তাই নয়, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অনেকের সঙ্গে আলোচনা করে তোফায়েল আহমেদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আশরাফ দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জানিয়েছেন। শনিবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জনা যায়। সূত্র জানায়, দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রী সভায় যোগদানের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সৈয়দ আশরাফ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় আশরাফ বলেছেন, তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রীত্ব প্রত্যাখান করে ঠিক করেননি। তিনি দলকে কলঙ্কিত করেছেন। এটা একটা বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ এর আগে তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে একটি ডিনারে অংশ নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। সভায় আশরাফ আরও বলেছেন, মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তিনি (তোফায়েল আহমেদ) প্রাথমিকভাবে বাহবা পেলেও কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন। দলের জন্য ক্ষতি করেছেন। মন্ত্রী হওয়া শুধু সম্মানের না, এটা দায়িত্বও বটে। দায়িত্ব না নিয়ে তিনি ভোটারদের অপমানিত ও বঞ্চিত করেছেন। এসময় আশরাফ পদ্মাসেতু প্রসঙ্গে বলেছেন, পদ্মাসেতু আমাদের করতেই হবে। এ ব্যাপারে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ড. ইউনুসের ষড়যন্ত্রে পদ্মাসেতু বন্ধ হয়ে যেতে পারে না। অর্থমন্ত্রীর প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, মুহিত সাহেবের বয়স হয়েছে। তিনি উল্টা-পাল্টা কথা বলছেন। সৈয়দ আশরাফ অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকে তিন মাসের ছুটি দেওয়ার কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুহিত সাহেবের বয়স হয়েছে। কিন্তু উনি তো আমাদের ছেড়ে যেতে চান না। অর্থ উপদেষ্টাকে ছুটি দিলেই সব সমস্যা সমাধান হবে না। মশিউর রহমান চলে গেলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে এর নিশ্চয়তা কোথায়। সভায় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মুহাম্মদ মনসুর ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের নাম উল্লেখ করে বলেন, তারা বিভিন্ন জায়গায় সরকার ও দলের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছেন। এটা দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী। তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, পটুয়াখালি থেকে নির্বাচিত একজন এমপিও দল ও সরকারের বিরুদ্ধে টকশোতে নানা কথা বলছেন। হানিফ ও নাছিমের বক্তব্য শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পকেট কমিটি দিয়ে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না। মনোনয়ন পেতে হলে জনগণের সমর্থন থাকতে হবে, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সূত্র আরও জানায়, সভায় আগামী ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে । সভায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে জেলা ও উপজেলা সম্মেলন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোনো জেলা ও উপজেলা যথা সময়ে সম্মেলন করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

দুর্নীতি ধরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ স্কোয়াড!
সাইদ আরমান
দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনৈতিক চর্চা, অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরতে বিশেষ স্কোয়াড গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পেশাদার ৫০ জন কর্মকর্তা নিয়ে এর যাত্রা শুরু হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই স্কোয়াড রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি সব ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংকের সব শাখা বিনা নোটিশে পরিদর্শন করে অনিয়ম বা দুর্নীতি খতিয়ে দেখবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনাকে অবহিত করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বিশেষ পারদর্শিতা অর্জনে স্কোয়াডের সদস্যদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, “ব্যাংকগুলো দিন দিন অনৈতিক ব্যাংকিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। বাড়ছে অনিয়ম-দুর্নীতি। প্রায় সব ব্যাংকেই কৌশলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না মেনে চলার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সব ব্যাংকই মুনাফার জন্য ঝুঁকিভিত্তিক ব্যাংকিং করার দিকে চলে যাচ্ছে। আর এ জন্য তারা নতুন নতুন কৌশল বের করছে।”

সূত্র মতে, এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান তদারকি পদ্ধতি দিয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে পেরে উঠছে না নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারির আওতায় সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে রাখতে ও সঠিকভাবে পরিচালনা করতে যে অফসাইট (সংশ্লিষ্ট ব্যাংকটির কার্যালয়ে না গিয়ে নথিপত্রের মাধ্যমে যাচাই) তদারকি করছে তা এখন আর বাংলাদেশে কার্যকর হচ্ছে না। আর তাই অনৈতিক ব্যাংকিং, অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে ব্যাংকগুলোর অনসাইট (সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কার্যালয়ে স্বয়ং উপস্থিত হয়ে) তদারকি এখন জরুরি হয়ে ওঠেছে। আর সে লক্ষ্য নিয়ে গঠন করা হচ্ছে বিশেষ এই পরিদর্শন দল বা স্কোয়াড।

জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তদারকিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে অফসাইট তদারকিতে। যেখানে মূলত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পাঠানো কাগজপত্র থেকে এর অনিয়ম, দুর্নীতি অথবা অব্যবস্থাপনা ধরা হয়। এর বাইরে একটি নির্দিষ্টি মেয়াদ পর পর বিশেষ কিছু শাখা পরিদর্শন করে একইভাবে কাগজপত্র নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন করা হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির এই দুর্বলতা নিয়ে নানাভাবে অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। একইভাবে অনিয়ম বাড়ছে বেসরকারি অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাত ঝুঁকির দিকে চলে যাচ্ছে। বাড়ছে সাধারণ গ্রাহকদের আমানত ঝুঁকি। এসব পরস্থিতি বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার তদারকি প্রক্রিয়ায় অভ্যন্তরীণ (অনসাইট) বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিষয়টি এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্রাধিকার  হয়ে দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে শূর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ তদারকিতে যেতে চাইছে। এজন্য একটি বিশেষ স্কোয়াড গঠন করা হবে শিগগিরই। এর কাজ হবে সারা দেশের ব্যাংকগুলোর আট হাজার শাখা পরিদর্শন করে অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখা। প্রাথমিক ভাবে ৫০ সদস্য নিয়ে এটি শুরু হবে। এজন্য একজন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে।” তিনি আরো বলেন, “বিশ্বব্যাংকের কেন্দ্রীয় ব্যাংক শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের (সিবিএসপি) অধীনে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি স্কোয়াড পরিচালনা এবং কর্মীদের পারদর্শী করে তুলবেন। এব্যাপারে বিশ্বব্যাংককে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, তারা এব্যাপারে এগিয়ে আসবে।”
আবারো সদস্য সংগ্রহে নামছে ছাত্রলীগ
মিজানুর রহমান সুমন
দুই মাস বিরতি দেয়ার পর অক্টোবরে আবারো সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামছে ছাত্রলীগ। শোকের মাস আগস্টের বিভিন্ন কর্মসূচি ঈদুল ফিতরের কারণে ছাত্রলীগের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত জুলাই ছাত্রলীগের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চেৌধুরী। জুলাই মাসজুড়ে সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ চললেও শোকের মাস আগস্ট আসায় সেই কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রলীগের এবারের সদস্য সংগ্রহের টার্গের ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ। এবারই প্রথম ছাত্রলীগ স্কুলে স্কুলে গিয়ে ক্যালেন্ডার বিতরণ করাসহ বেশ কিছু শিক্ষা সহায়ক উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে।  ছাত্রছাত্রীদের কাছে ফরম বিতরণ করা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অন্যান্য আনুষঙ্গিক তথ্যাদি সংরক্ষণে রাখার চষ্টো করছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনটি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি , মারামারি, টেন্ডারবাজিসহ বেশকিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা দলিয় কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ততা দেখানোর জন্য সদস্য সংগ্রহে নেমেছিল। তাছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রলীগে শুদ্ধি অভিযানের কথা বলা হচ্ছিল। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ মানেই মারামারি বা চাঁদাবাজি নয় বরং বেশ কিছু শিক্ষা সহায়ক কাজকর্ম করে ছাত্রলীগ তাদের ভাবমূর্তী পুনরুদ্ধার করতে চাইছে। সেই প্রেক্ষাপটে অপেক্ষাকৃত মেধাবীদের নিয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠনসহ ক্লিন ইমেজের ছাত্রছাত্রীদে নিজেদের সদস্য হিসেবে চাইছে দেশের সবথেকে পুরোনো ছাত্র সংগঠনটি।
 দল ক্ষমতায় থাকায় সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াটিতে স্বচ্ছতা রাখা ছাত্রলীগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ অনেকেই মনে করেন ছাত্রলীগ সরকারি দলের অঙ্গসংগঠন বলে তারা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর জোর করতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল বাংলাদেশ সময়কে বলেন, আমরা কোনো ভয় ভীতি দেখানোতে বিশ্বাস করি না। বরং বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দলে নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাথে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।  তিনি বলেন, আগামী মাসের প্রথম দিন থেকেই পুনরায় সদস্য ফরম বিতরণ শুরু হচ্ছে। নতুন করে সদস্য সংগ্রহের জন্য পুরোনো লক্ষমাত্রাই রাখা হয়েছে। অর্থাত্ পূর্বের মতই পঁাচ লাখ ছাত্রকে নতুন  সদস্য হিসেবে চাইছে ছাত্রলীগ।
বিষয়টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সভাপতি তারেক রায়হান বলেন, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের সদস্য সংগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন তারা। তিনি মনে করেন ছাত্রলীগের সদস্য বৃদ্ধি পেলে দেশে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির যে জাগরণ তৈরি হয়েছে তা কেউ রুখে দিতে পারবে না।
ছাত্রলীগের সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে সর্বশেষ ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্যপদ দেয়া হয় ২০০৩  সালের শেষের দিকে। এরপর আর সদস্য ফরম ছাপানো হয়নি, বিতরণও করা হয়নি। এরপর যারা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের অনেকেরই সংগঠনে প্রাথমিক সদস্যপদ নেই।
শিবির ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। তিনি বলেন, সংগঠনকে বিতর্ক বদনামমুক্ত করতে নতুন সদস্য নেয়া হচ্ছে।
ছাত্রলীগের গঠনতনে্ত্রর () ধারায় প্রতি সেশনে সদস্যপদ হালনাগাদ করার কথা বলা হলেও তার কার্যকারিতা নেই। গঠনতনে্ত্রর () ধারায় বলা আছে, Èসদস্যপদ লাভের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদ্ধিান্ত মোতাবেক নিজ-নিজ জেলা শাখার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নির্ধারিত সদস্যভুক্তির নিয়ম অনুযায়ী শপথপত্রে স্বাক্ষর করে সদস্যপদ গ্রহণ করতে হবে। বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ  বলেন, সদস্য সংগ্রহ ছাত্রলীগের একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংগঠনের নিয়মানুযায়ী সারা বাংলাদেশে আবারো একযোগে এই কার্যক্রমটি শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।
নাঈম ছুটছেন আপন গতিতে
কামরুজ্জামান মিলুচাকরি জীবনে শখের বসে অভিনয় শুরু করলেও নাঈম এখন মডেল ও অভিনেতা। টেলিভিশনে প্রচারিত বিজ্ঞাপন ও অনেকগুলো ধারাবাহিকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে তাঁকে। বিশেষ করে বর্তমানে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত গ্রামীণ ফোনের বন্ধু প্যাকেজের বিজ্ঞাপনটি দারুণ প্রশংসিত হয়েছে। তানভীর হাসানের নির্দেশনায় এ বিজ্ঞাপনটিতে তার জুটি হিসেবে কাজ করেছেন অভিনেত্রী অগ্নিলা। নতুন এ বিজ্ঞাপনটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা বিষয়ে নাঈম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘এর আগেও তানভীর ভাইয়ের নির্দেশনায় মুরগী মার্কা ঢেউটিন শিরোনামের একটি বিজ্ঞাপনে আইনস্টাইনের চরিত্রে কাজ করেছি। ওই বিজ্ঞাপনে ‘নতুন দিনের নতুন সিদ্ধান্ত‘ সংলাপটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। আর গ্রামীণফোনের এ নতুন কাজটি করার পর ভাবতেই পারিনি এতটা সাড়া পাবো। বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছি।’ এছাড়া ২০১০ সালে খিজির হায়াত খানের পরিচালনায় ‘জাগো’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। আর সম্প্রতি শেষ করেছেন সৈয়দ নাবিল আশরাফের নতুন চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসার রংধনু’র কাজ। এখানে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন আঁচল ও অ্যানি।
নিজের অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র  নিয়ে নাঈম বলেন, ‘‘ এখানে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। একদিন ট্রেনে ওঠার পর আমার পাশে বসা এক তরুণীর সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। মেয়েটিকে দেখে অদ্ভুত এক ভালোলাগা তৈরি হয় আমার মনে। কিন্তু আমার অপেক্ষায় থাকে শহরের আরেক বান্ধবী।  কিন্তু ট্রেনের মেয়েটিকে দেখার পর আমি সবকিছু ভুলে সে মেয়ের পিছু নেই। তারপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। আশা করি সিনেমার গল্প ও আমার অভিনয় দর্শকদের ভালো লাগবে।’ নাঈমের জন্ম মানিকগঞ্জের গোপালপুরে। বাবা আব্দুল ওয়াদুদ সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার কারণে ঢাকায় পড়াশুনা। ছোটবেলা থেকে হাসিমাখা প্রাণবন্ত এই ছেলেটি সারাক্ষণ বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে থাকতেন। নাটক ও সিনেমা পাগল এই ছেলে মতিঝিল গভ: বয়েজ স্কুলে থেকে এস.এস.সি পাস করেন ১৯৯৯ সালে। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কোডা (কলেজ অব ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভ) থেকে ২০০১ সালে এইচএসসি শেষ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবি-তে (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশ) ইংরেজিতে অনার্সে ভর্তি হন। তখনও মিডিয়া বা অভিনয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়ানোর কথা চিন্তাও করেননি তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালে চ্যানেল আইয়ে মার্কেটিং অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন । কে জানত এই চাকরি থেকেই তার অভিনয় জীবনের সূত্রপাত ঘটবে। ২০০৭ সালের কথা। তখন রীতিমত  নাঈম চ্যানেল আই’র একজন মার্কেটিং এক্সিউটিভ অফিসার। হঠাৎ অফিসে একদিন জানলেন তার সিনিয়র অফিসার রুমানা রশীদ ঈশিতা ‘এক নিঝুম অরণ্যে’ নামে একটি নাটক পরিচালনা করছেন। এতে তাকে সহযোগিতার জন্য নাঈম ধামরাই শ্যুটিং লোকেশনে গেলেন।  সেখানে শ্যুটিং এর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সেই সময়ের লাক্স তারকা শানু ও সোমা। জীবনে প্রথম তারকাদের সামনে থেকে দেখা ও লাইট, ক্যামেরা, শট সবকিছু  মিলে নাঈমের মনে তখন নতুন এক স্পন্দন শুরু হল। হঠাৎ ঈশিতা নাঈমকে ডেকে বললেন, তুমি তোমার সঙ্গে করে কি কি জামা কাপড় নিয়ে আসছ? নাঈম তো শুনে অবাক, কেন আপু? ঈশিতা হাসতে হাসতে বলল এই নাটকের প্রধান চরিত্রে তুমি অভিনয় করবে, এটা আমার সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে নাঈম বাংলানিউজকে  বলেন, ‘কোন পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না, এমনকি আমি কথাটা শুনে সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত ছিলাম। তারপর কোন রকম কাপড় যোগাড় করে অভিনেতা হিসেবে জীবনে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। ‘ এরপর সবার উৎসাহে ও ইচ্ছায় ফটোগ্রাফার ইকবাল আহমেদের কাছে ব্যক্তিগত ফটোসেশন করে দেশের নামকরা বিজ্ঞাপন এজেন্সিতে ছবি জমা দেন নাঈম। ২০০৮ সালে অমিতাভ রেজার পরিচালনায় প্রথম বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হবার সুযোগ ঘটে তার। ‘মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি’-এর এই বিজ্ঞাপনের সুবাদে সবার কাছে মডেল হিসেবেও অভিষেক ঘটে তার মিডিয়াতে। এর মধ্যে চ্যানেল আই-এর ‘মরুর বুকে সবুজ বাংলাদেশ’ ও ‘আইস্পিড’ নামে দুটো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনাও করেন তিনি। ৪ বছর আগে ঈশিতা পরিচালনায় ‘এক নিঝুম অরণ্যে’ নাটকের মাধ্যমে অভিষেক হলেও এখন নাঈমের বেশ কিছু ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হচ্ছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। সেগুলো হলো এনটিভিতে সকাল আহমেদের ‘টার্মিনাল’, সাইফুল ইসলাম মান্নুর ‘অজানা গন্তব্যে’, চ্যানেল আই-এ সকাল আহমেদের ‘সীমানা পেরিয়ে’, এনটিভিতে রাইয়ান খানের ‘অচেনা প্রতিবিম্ব’। তাছাড়া  বেশ কিছু এক ঘণ্টার নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে কৌশিক শংকর দাসের ‘বন্ধুত্ব ভালবাসা ইত্যাদি’, শিহাব শাহীনের ‘ইট কাঠের খাঁচা’, ইফতেখার আহমেদ ফাহমীর ‘পেন্ডুলাম’, রুমানা রশীদ ইশিতার ‘রবে নীরবে’ ও ‘বাতাস খুজে পেল কাশবন’, মাহফুজ আহমেদের ‘প্রেম আসে যাই’ ,আবুল হায়াতের ‘অতি প্রাকৃতিক’ এবং এবারের ঈদে নাঈমের অভিনীত দেশটিভিতে প্রচারিত মাসুদ হাসান উজ্জলের ‘হিমশীতল রেফ্রিজারেটর’, এবং চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ফয়সাল রিপনের ‘নায়িকার খোঁজে’ নাটকগুলো দারুন জনপ্রিয়তা পায়। কাজের ব্যস্ততার মাঝেও অনার্স কমপ্লিট করে এখন নর্থ সাউথে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছেন নাঈম। পড়াশুনা ও শ্যুটিং-এর বাইরে অবসরে বাবা-মার সঙ্গে গল্প করে সময় কাটান এবং সুযোগ পেলেই তার প্রিয় মেটালিক সিলভার রং-এর (মার্ক-২) মডেলের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন লং ড্রাইভে।
অল্প কিছুদিনের মধ্যে তার অভিনীত বেশকিছু মেগাসিরিয়াল বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখতে পাবে দর্শকরা। নাটকগুলো হচ্ছে সকাল আহমেদের ‘হাডুডু’, অরণ্য আনোয়ারের ‘আমার কিছু মেঘ আছে’, ও আলভী আহমেদের ‘শোধ’। অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে নাঈম বলেন, ‘কখনও ভাবিনি অভিনেতা হব। আর এখন অভিনয়ই আমার ধ্যান-জ্ঞান ও আমার কাছে চমৎকার একটি পেশা এটি। একটা মানুষ অনেকগুলো মানুষের জীবনের বিভিন্ন চরিত্র অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারে। আর সবসময় বিখ্যাত হবার স্বপ্ন দেখতাম। আমি কাজের ক্ষেত্রে সব সময়ই অগ্রাধিকার দেই কোথায় নিজেকে নতুন ভাবে উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়া যাবে। নাটক কিংবা চলচ্চিত্রে বিভিন্ন ভাল চরিত্রের মাধ্যমে নিজেকে দর্শকদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থাপন করতে চাই।’
এনটিভিতে নাটক ‘পথ ভুলে দেখা’
কামরুজ্জামান মিলু’
সাম্য ও ইপ্সিতা দুজনের জীবনের গতি ভিন্ন। একজন ভবঘুরে স্বভাবের ফটোগ্রাফার তো আরেকজন অনেকটা নি:সঙ্গ-একাকী জীবন যাপন করে আসছেন। কোন এক যাত্রাপথে সাম্যর চোখের ফ্রেমে আটকা পড়ে ইপ্সিতা। ইপ্সিতা বয়সে একটু বড় হবে। তবুও কেন যেন সাম্য তার দিকে ছুটতে থাকে। সাম্য নিজের গন্তব্য ভুলে গিয়ে ইপ্সিতাকে অনুসরণ করতে করতে- চট্টগ্রাম, ফয়ে’স লেক, কক্সবাজার গিয়ে পৌঁছায়। কোন এক বিকেলে ইপ্সিতার ছবি তুলতে গেলে সাম্য ইপ্সিতার তোপের মুখে পড়ে। কিন্তু তার পিছু কিছুতেই ছাড়ে না। এতে ইপ্সিতা বিরক্ত, সে একা থাকতে চায় কিন্তু তার চোখ কি যেন খোঁজে। এই বিষয়টা তখনও দর্শকের কাছে রহস্য থেকে যায়। এদিকে ইপ্সিতাকে ফলো করা নিয়ে ইপ্সিতা আর সাম্যের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হতে থাকে। ইপ্সিতা বেশ কয়েকবার সাম্যকে অপমানও করে। কিন্তু নাছোড়বান্দা সাম্য ইপ্সিতার গল্প বলতে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে সাম্য জানতে পারে, ইপ্সিতার স্বামী সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। কোন এক মিশনে সে মারা যায়। এরপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। এরকমই এক গল্প নিয়েই নাটক ‘‘পথ ভুলে দেখা``। ইভান রেহানের রচনা ও পরিচালনায় এ নাটকটি প্রচারিত হবে ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় এনটিভিতে। কক্সবাজার, ফয়েস লেক, ঢাকাসহ বিভিন্ন লোকেশনে শ্যুটিং হওয়া এ নাটকটিতে সাম্য চরিত্রে কল্যাণ ও ইপ্সিতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্পণা। আর বিশেষ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন র‌্যাম্পের মডেল আসিফ খান।
নারীর পছন্দ
লাইফস্টাইল ডেস্ক
নারীদেরও রুচি এবং পছন্দ রয়েছে। জীবন সঙ্গী নিয়ে তারও রয়েছে কিছু ব্যক্তিগত পছন্দ- অপছন্দ। আমরা অনেক সময় মনে করি নারীরা লম্বা, সুদর্শন পুরুষ পছন্দ করে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পুরুষের শারীরিক সৌন্দর্য থেকে নারীকে বেশি আকৃষ্ট করে তাদের `পুরুষালী` গুণাবলী।পুরুষকেও জানতে হবে কোন বিষয়গুলো নারীর কাছে আপনাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে:
পরিপাটি, পরিচ্ছন্নতা
হ্যাঁ, আপনি হয়ত অনেক লম্বা কিন্তু উচ্চতা সত্যিই নিজেকে উপস্থাপন করার গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর না। মূল বিষয় হচ্ছে নারী লক্ষ করে আপনি নিজের বিষয়ে কতোটা সচেতন। আপনাকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে প্রথম দেখা করার সময়। হতে হবে নিজের প্রতি যত্নশীল, মনে রাখবেন এলোমেলো চুল, নোংরা নখ, দুর্গন্ধযুক্ত মোজা, কালি ছাড়া জুতা, শার্ট বা জিন্সে দাগ এসব কিছুই হতে পারে আপনাকে অপছন্দ করার অন্যতম কারণ।
সেন্স অব স্টাইল
খুব দামী কাপড় পরে নারীর সামনে যেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে, পোশাকটি অবশ্যই ফ্যাশনেবল এবং আধুনিক ডিজাইনের হতে হবে। সেই সঙ্গে লক্ষ্ রাখতে হবে, যেন পোশাকে আপনি সাবলিল থাকতে পারেন এবং এতে আপনার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে।
সেন্স অব হিউমার
নারীর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল যে তারা পুরুষের বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন রসবোধের বিষয়টি উপভোগ করে। কিন্তু মজা করতে গিয়ে যেন এমন কিছু বলা বা করা যাবে না যা অন্যকে উপহাস করে বা ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে যায়।
কেয়ারিং
ধরুন রাস্তা পার হচ্ছেন। আপনার দায়িত্ব হচ্ছে নারী সঙ্গীটিকে নিরাপদে রাস্তা পার হতে সাহায্য করা। কখনোই তাকে পেছনে ফেলে নিজে এগিয়ে যাবেন না। কোন জায়গায় ঘুরতে যাবেন বা কী খাবেন সব বিষয়েই তার পছন্দের গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন নারীরা গুরুত্ব পেতে ভালোবাসে।

মুগ্ধতা
নারী সঙ্গীর প্রতি মুগ্ধতা দেখান। বাইরে যাওয়ার সময় তার সাজের প্রশংসা করুন। নারী সঙ্গীর দেওয়া উপহার সানন্দে গ্রহণ করুন। তার রান্নার প্রশংসা করুন। কখনো যদি পছন্দ মতো নাও হয়, কোনো ভাবেই বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না। মনে রাখবেন অনেক আন্তরিকতা নিয়ে কষ্ট করে শুধু অাপনাকে খুশি করার জন্যই সে এতো সব করেছে। তার সাথে দেখা হলে প্রথমেই মিষ্টি করে হাসুন।
শান্ত থাকা
অনেক পুরুষের বৈশিষ্ট হচ্ছে তারা খুব অল্পতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু খুব সহজেই আবার রাগ কমে যায়। পুরুষের কাজ হবে, কিছুটা সময় শান্ত থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ রাখা। নারীরাও আজকাল রাগী, আক্রমণাত্বক সঙ্গী পছন্দ করে না। রাগ করার মতো সুনির্দিষ্ট কারণ থাকলে আপনি নারী সঙ্গীকে শান্তভাবে বুঝিয়ে বলুন।
সম্মান
নারীকে সম্মান করতে হবে। অনেকের মাঝে নারীকে হেয় করে কথা বলার প্রবণতা দেখা যায়। তবে নারীও মানুষ সে পুরুষের সমান গুরুত্ব এবং সম্মান পাওয়ার অধীকার রাখে। ওপরের বিষয়গুলো মেনে চললেই কাঙ্ক্ষিত নারীর কাছে আপনি হয়ে উঠবেন অনেকের মাঝে অনন্য।