Year-19 # Issue-33 # 30 September 2012





আমন্ত্রণ জানাবেন দুই নেত্রীকে
নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হতে রাজি ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক
নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হতে প্রস্তাব এলে তা গ্রহণে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। দেশের জনগণের স্বার্থে দুই নেত্রীকে একসঙ্গে বসানোর উদ্যোগ নেবেন বলেও জানিয়েছেন এই আইনজীবী। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তচিন্তা ফোরাম আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে অংশ নেন রফিক-উল হক। এতে বর্তমান চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই প্রধান দলের মুখোমুখি অবস্থান যেন সংঘাতের দিকে না যায়, সে জন্য সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন রফিক-উল হক। তিনি বলেন, কথা বলে দেখি। দুই নেত্রী দেশকে ভালবাসে না, গণতনে্ত্র বিশ্বাস করে না- এটা আমি বিশ্বাস করি না। একজনের সঙ্গে আজ দেখা হওয়ার কথা। আরেকজনের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। আপনি উদ্যোগ নিচ্ছেন কি না- প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার রফিক বলেন, উদ্যোগ নিয়েছি বলতে পারেন। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে এই কাজটুকু করতে আমি আপ্রাণ চষ্টো করব। আপনাকে যদি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়, তাহলে আপনি কী করবেন- এই প্রশ্ন করা হলে এরশাদ আমলের এই এটর্নি জেনারেল বলেন, এমন বিব্রতকর প্রশ্ন আমাকে করবেন না। তবে সদ্ধিান্ত যেহেতু জানতে চাচ্ছেন, তবে বলছি- যদি সেই রকম অকেশন আসে, দেশের জন্য দুই পার্টির জন্য আমি সব ধরনের রেসপন্সিবিলিটি নিতে রাজি আছি।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত হওয়ায় এখন বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে। তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না দাবি করে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। যদিও নির্বাচনকালে সরকারে বিরোধী দলকেও নেয়া যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়ে ব্যারিস্টার রফিক বলেন, বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়নি। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছে, কিন্তু কাদেরকে নিয়ে হবে কিভাবে হবে, তা বলেনি। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের পক্ষে মামলায় লড়ার জন্য কিছু দিন আগে সাংবাদিকদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল রফিক-উল হককে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এটিএন বাংলার মামলায় কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। সিভিল, ক্রিমিনাল বা যে কোনো মামলার সঙ্গে আইনজীবী হিসাবে আমার ডাইরেক্টরি, ইনডাইরেক্টলি এন্ড রিমোটলি কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ
বহুজাতিক দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার চাইলেন শেখ হাসিনা
ডেস্ক রিপোর্ট
জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বহুজাতিক দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে বহুজাতিক দাতা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের টানাপড়েন শেষে আপসরফার পর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে ভাষণে গত বৃহস্পতিবার আহ্বান জানান। ভাষণে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সংস্কারেরও দাবিও তোলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতিসংঘ, ব্রেটন উডস& ইনস্টিটিউশনস& অন্যান্য বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংস্কারের বিষয়ে পুনরায় গুরুত্ব আরোপ করছি। চীন, ভারত, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন স্বল্পোন্নত উন্নয়নশীল দেশ গত কয়েক বছর ধরেই জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার এবং এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের ভোটের ক্ষমতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে। ব্রেটন উডস কনফারেন্স নামে পরিচিত এক সম্মেলন থেকে ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ গঠন করা হয়। সংস্কারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের কাঠামো সদ্ধিান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ৬০ বছরের পুরোনো ক্ষমতার সমীকরণের প্রতিফলন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, (এতে) অধিকাংশ দেশের স্বার্থ উপেক্ষিত থাকে এবং কয়েকটি বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের স্বার্থ রক্ষা হয়। তিনি ব্রেটন উডসসহ অন্যান্য বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুষম অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিও তোলেন। সম্প্রতি ফোর্বস সাময়িকীতে Èবিশ্বব্যাংকের দুর্নীতি' নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি করতে বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন ব্যক্তি চক্রান্ত করেছে অভিযোগ এনে সংস্থাটির বৃহত্তম প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এই ঘটনার পর সরকারের সঙ্গে দাতা সংস্থাটির সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।
শেখ হাসিনা সব দেশে শ্রমিকের অবাধ চলাচল নিশ্চিতের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার কথা বলেন। শ্রমিক প্রেরণকারী গ্রহণকারী দেশগুলোর সুবিধা নিশ্চিতে ডবি্লউটিও' চুক্তি জিএটিএস দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদও দেন তিনি। তিনি বলেন, নিরাপদ অভিবাসন এবং নারীসহ অভিবাসী কর্মজীবীদের অধিকার সংরক্ষণে অভিবাসী প্রেরণকারী গ্রহণকারী দেশগুলোর যেৌথ দায়িত্ব ডবি্লউটিও নীতির অংশ করা উচিত। শেখ হাসিনা মনে করেন, নতুন সহস্রাব্দে বেশকিছু রাষ্ট্র এবং বিশ্বায়ন একটি পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। জাতিসংঘে উপস্থিত বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, আজ আমরা ন্যায়বিচার, সমতা, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মানবাধিকার, পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কথা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারছি। সবই আমাদের অগ্রাধিকার। এজন্য অতীতের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা ভুলে সবাইকে এক লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা শুরুতেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৬তম অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নাসির আবদুল আজিজ আল-নাসের এবং জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনকে ধন্যবাদ জানান। বিশ্ব গণজাগরণ, আন্তঃদেশীয় সংঘর্ষ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ, বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, খাদ্য জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সন্ত্রাসবাদের মতো সমস্যার শানি্তপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন কথা উলে্লখ করে শেখ হাসিনা এবারের আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য Èশানি্তপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিরোধ বা পরিস্থিতি নিষ্পত্তিকরণ' এর প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, আজ থেকে ৩৮ বছর আগে মঞ্চে দাঁড়িয়েই সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরিতা নয়, সকল বিরোধের শানি্তপূর্ণ সমাধান, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের অবসান এবং বিশ্ব শানি্ত নিরাপত্তা রক্ষায় অবদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পিতার এই নীতিই তাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শানি্ত চুক্তি সম্পাদনে এবং ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বর্ডার গার্ড বিদ্রোহ সঙ্কটের শানি্তপূর্ণ সমাধানের প্রেরণা যুগিয়েছিল বলে উলে্লখ করেন শেখ হাসিনা। সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪১ বছরের পুরনো বিরোধের শানি্তপূর্ণ মীমাংসার কথাও তিনি উলে্লখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের উন্নয়ন উদ্যোগগুলো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে দারিদর্্য, সম্পদহানি মানব স্থানচু্যতি হচ্ছে। যা সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দিচ্ছে। সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে স্থানচু্যত অভিবাসীরা গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি একটি নতুন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেন যা জলবায়ু অভিবাসীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা অভিযোজন, প্রযুক্তি হস্তান্তর ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড এর দ্রুত বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব নেতাদের তিনি সতর্ক করে দেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ব্যাপক অশানি্তর সৃষ্টি করতে পারে। যা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য উন্নত উন্নয়নশীল বিশ্বের বাজারে এলডিসি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং ওডিএ প্রতিশ্রুতি পূরণ জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, শানি্তর প্রতি আমাদের জাতীয় আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে, জাতিসংঘ শানি্তরক্ষা মিশনে আমরা অন্যতম সর্বাধিক শানি্তরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। তার ভাষায়, একমাত্র ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই শানি্ত নিশ্চিত করা সম্ভব, যা উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতনে্ত্রর পর্যায়ক্রমিক অনুপস্থিতিকে সামাজিক অবিচার, দারিদর্্য, বৈষম্য, বঞ্চনা এবং অসহায়ত্বের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি চরমপন্থা সন্ত্রাসবাদের জন্ম দেয়। ফিলিসি্তন জনগণের ওপর ইসরাইলের নগ্ন অবিচার, হত্যা, নির্যাতন অবমাননার ঘটনাগুলোকে মানব ইতিহাসের এক লজ্জাজনক অধ্যায় হিসাবে উলে্লখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার গণতানি্ত্রক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ফিলিসি্তন সমস্যা এবং একই ধরনের জ্বলন্ত ইসু্যগুলোর আশু সমাধান অত্যন্ত জরুরি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালকে নিরাপত্তার বলয়ে আনা হচ্ছে

আশীষ কুমার সেন
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটককারীদের বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালকে নিরাপত্তার বলয়ে আনা হচ্ছে। বিচারপতিসহ সংশি্লষ্ট অন্য কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার পাশাপাশি পুরো ট্রাইবু্যনালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অক্টোবর থেকে তদন্ত সংস্থার নিজস্ব বাড়ি সার্কিট হাউসের অফিস স্থানান্তর করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী . মহীউদ্দীন খান আলমগীর এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালে বেশ কিছু প্রসিকিউটরের নিরাপত্তার জন্য গানম্যান দেয়া হলেও তাদের গাড়ি দেয়া হয়নি। ফলে প্রসিকিউটররা গানম্যান পাবার পরও গাড়ির অভাবে তাদের নিয়ে চলাফেরা করতে পারছেন না। প্রসিকিউটরদের মধ্যে সবাই নিরপাত্তার ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও ক্ষেত্রে কারও কারও গাড়ি দেয়া হয়েছে। আবার কারও কারও দেয়া হয়নি, যা নিয়ে প্রসিকিউটরদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে প্রসিকিউশন বিভাগে ১৩ জন প্রসিকিউটর রয়েছেন। ডিএজি, এএজি সমপর্যায়ের যে সমস্ত প্রসিকিউটর আছেন তাদের গাড়ি দেয়া হয়নি। প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রসিকিউটর তার ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এখানে পদ মর্যাদাটা মুখ্য নয়। সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। গানম্যান আছে সে কিভাবে উঠবে। সবার জন্য সমান সুযোগ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাসায় কোন প্রহরা নেই। সেখানে সিকিউরিটির ব্যবস্থা থাকা উচিত। আমরা আশা করছি সরকার এটা নিজ দায়িত্বেই করবে।
তদন্তকারী সংস্থার প্রধান এমএ হান্নান খান বাংলাদেশ সময়কে গতকাল  বলেন, তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তাগণ সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সময় তদন্ত সংস্থার দাবি গুরুত্বসহকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী . মহীউদ্দীন খান আলমগীর তা শোনেন এবং বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বৈঠকে আমরা যা যা বলেছি তা গ্রহণ করা হবে। নিরাপত্তার বিষয়টি প্রথমে এসেছিল। ট্রাইবু্যনালে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থাসহ, বিচারপতিদের নিরাপত্তা, প্রসিকিউটর, তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তা, সাক্ষীদের নিরাপত্তার বিষয়ে কথা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সব বিষয়ে অতিসত্বর তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। সাক্ষীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সংশি্লষ্ট জেলার ডিসি এসপিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উলে্লখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী . মহীউদ্দীন খান আলমগীর  দ্বায়িত্ব নেয়ার পর সম্প্রতি সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে ট্রাইবু্যনালের নিরাপত্তার বিষয়টিকে জোর দেয়া হয়।
তদন্ত সংস্থার প্রধান আরও বলেন, তদন্ত সংস্থার স্থায়ী অফিস বরাদ্দ করা হয়েছে। অক্টোবরে সার্কিট হাউসে তদন্ত সংস্থার অফিস স্থানান্তর করা হবে। তদন্ত সংস্থার লোকবল কাঠামো, গাড়ির বিষয়ে জানালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। এতদিনও হয়নি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী / দিনের মধ্যে জিও হবে বলে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাইবু্যনালের বিষয়টি খুব ভালভাবে দেখছেন। তিনি বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছেন, আমি মনে করি এতদিন ট্রাইবু্যনালে যে সব সমস্যা ছিল তার নিরসন হবে। একাত্তরে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি বিশষ্টি গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক . মুনতাসীর মামুন বলেছেন, আমাদের দাবি অনেক ছিল। সরকারকে বার বার বলে আসছি, ট্রাইবু্যনালকে গতিশীল করার জন্য। ট্রাইবু্যনালকে গতিশীল করতে হলে নূ্যনতম সুবিধাগুলো দিতে হবে। সবার আগে বিচারপতিদের নিরাপত্তার বিষয়টি বলে আসছিলাম। সে বিষয়ে এতদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় উদাসীন ছিল। আজকে আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। জন্য আমি আনন্দিত। দেরিতে হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ট্রাইবু্যনালের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, সে জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। . মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, আশা করি, আইন মন্ত্রণালয় যে সব বিষয় নিয়ে কার্পণ্য করছেন, তাও তারা প্রদান করবেন। আমরা চাই না সরকারকে তারা অসুবিধায় ফেলুক। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় শুরু থেকেই এই ট্রাইবু্যনাল, প্রসিকিউটর, তদন্ত সংস্থা, সাক্ষী সুরক্ষা বিষয়ে যে ধরনের বিষয়গুলোর প্রতি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল জটিলতার কারণে এতদিন নিশ্চিত না হলেও বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী . মহীউদ্দীন খান আলমগীরের উদ্যোগে অল্প সময়ের মধ্যে তা হয়েছে। বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হলে বিচার ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ট্রাইবু্যনালের একমাত্র মহিলা প্রসিকিউটর নূরজাহান বেগম বাংলাদেশ সময়কে বলেছেন, প্রসিকিউটর সবাই সমান। এখানে সিনিয়র, জুনিয়র বলতে কিছু নেই। সবাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেও জোর দিতে হবে। কারণ ঝুঁকি সবাই সমানভাবে বহন করছে। আমাদের গাড়ি দেয়া হয়নি। আবার আবাসন স্থলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। বিচার কাজে যে সব কর্মকর্তা আছেন তাদের সবার জন্যই নিরাপত্তার বিষয়টি আগে ভাবতে হবে।


অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপিকে রাখার প্রস্তাব নজিরবিহীন: আমু
নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তী সরকারে বিরোধীদলকে রাখার প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে উদারতা দেখিয়েছেন তা রাজনীতিতে নজিরবিহীন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৬৬তম জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদষ্টোমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিহিংসা প্রতিশোধস্পৃহা ছাড়া বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দাবির কোনো যেৌক্তিকতা  নেই। তাছাড়া বর্তমান সরকারের আমলে সব নির্বাচন দলীয় প্রভাবমুক্ত থাকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিস্প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আমির হোসেন আমু বলেন, আমরা যে প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়কের দাবি করে আন্দোলন করেছিলাম, এখন সে অবস্থা নেই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় সাড়ে পঁাচ হাজার ইউনিয়ন, সাড়ে ৪০০ উপজেলা, ৪টি সিটি কর্পোরেশন, ৭টি সংসদ উপ নির্বাচন হয়েছে। একটি নির্বাচনও প্রশ্নবদ্ধি হয়নি। যে কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  কোনো প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে না হওয়ায় আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করেছিল। বাংলাদেশকে আফগানিস্তান পাকিস্তানের মত দেশ করতে চেয়েছিলো তারা। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার যে দাবি করেছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই দাবির কোনো যেৌক্তিকতা নেই।
তিনি বিরোধী দলকে অহেতুক আন্দোলন পরিহার করে আলোচনায় বসার আহবান জানিয়ে বলেন, অহেতুক আন্দোলন না করে আগামী নির্বাচনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরোধী দলের অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে উদারতা দেখিয়েছেন তা নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসুন। সভ্য রাজনীতিতে আলোচনার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। বিগত সরকারের সময় মান্নান ভূইয়া-জলিল আলোচনা বিএনপির কারণেই ভেসে্ত গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলের টকশোর তীব্র সমালোচনা করে আমু বলেন, টকশোতে যারা কথা বলেন তারা কেবল সরকারের সমালোচনাই করেন। তাদের কথা শুনলে মনে হয় সরকারের কোনো সফলাতাই নেই। অথচ অতীতের যে কোনো সরকারের থেকে সরকার বেশি সফল হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই দেশের জনগণের জন্য উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।
আন্তব্যাংক লেনদেনে বর্ধিত চার্জ আরোপ না করার  দাবি এফবিসিসিআই'
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বাস অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) দেশের অর্থনীতির স্বার্থে আন্তব্যাংক আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বর্ধিত চার্জ আরোপ না করার দাবি জানিয়েছে। গতকাল শনিবার এফবিসিসিআই' এক বিবৃতিতে বলা হয়েছেচেক এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে আন্ত:ব্যাংক আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দষ্টি হারে চার্জ আরোপ করতে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। আন্ত:ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে ধরনের চার্জ আরোপ করা হলে লেনদেনকারীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে। বিবৃতিতে উলে্লখ করা হয়েছে, এমনিতেই দেশের বিভিন্ন বানিজ্যিক ব্যাংক অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করছে, তদুপরি বাংলাদেশ ব্যাংক আন্ত:ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে চার্জ আরোপ করলে ব্যবসা-বানিজ্য খরচ Cost of doing business আরো বাড়বে, যা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে এফবিসিসিআই আশংকা করছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমান মন্দা আক্রান্ত বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের রফতানির ক্ষেত্রে এমনিতেই নেতিবাচক ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ব বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব স্থানীয় বাজারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অবস্থায় বিশ্ব বাজারে এদেশের পণ্যের প্রতিযোগীতামূলক মূল্য ধরে রাখা এবং স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে Cost of doing business বৃদ্ধি পায় এমন কোন উদ্যোগ নেয়া সমীচিন হবে না। এতে দেশের ব্যবসা-বানিজ্য তথা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অবস্থায় দেশের অর্থনীতির স্বার্থে আন্ত:ব্যাংক আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে চার্জ আরোপের সদ্ধিান্ত গ্রহন থেকে বিরত থাকার জন্য দেশের বেসরকারী খাতের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।