Year-19 # Issue-1 # 19 February 2012

ডিজেলচালিত সেচ পাম্পসমূহে সৌরবিদ্যুত প্রতিস্থাপন করা হবে : প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুতের উপর নির্ভরতা হ্রাসে পর্যায়ক্রমে সবধরনের ডিজেলচালিত মিনিগ্রিড ও সেচ পাম্পসমূহে নবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে। তিনি বলেন, এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে ইনফ্রাসট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে আরো ১০ লাখ হোম সোলার সিস্টেম ও ২০ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হবে। ইডকল ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম ও ১২ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বায়োগ্যাস প্লান্ট থেকে উন্নতমানের জৈবসার তৈরি হচ্ছে। তিনি শনিবার এখানে ইডকলের নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের আওতায় সোলার হোম সিস্টেম ও বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমির ঊর্বরতা বাড়াতে জৈবসারের ব্যবহার সহায়ক ভূমিকা রাখছে এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে। তিনি গ্রাম অঞ্চলে ব্যাপক হারে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদপে নিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধির ল্েয সৌরবিদ্যুতের জন্য আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের ওপর সম্পূর্ণ কর মওকুফ এবং ইডকলের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গ্রামের মা-বোনেরা পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে যাতে রান্নাবান্না করতে পারে সেজন্য সরকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় কিন এনার্জি পৌঁছে দেয়ার জন্য ইডকলের মাধ্যমে বিভিন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইডকলের সৌরশক্তি ও বায়োগ্যাস কর্মসূচির অধীনে ২০ হাজার প্রত্য ও ৩০ হাজার পরো কর্মসংস্থান হয়েছে। এখাতে আগামী এক বছরে আরো ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৬ সালে দেশের প্রথম জ্বালানি নীতি প্রণয়ন করে। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছেনি, সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১৯৯৭ সালে ইডকল প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইডকলের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদপে এবং নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে অর্থায়ন ও কারিগরি সুবিধাদি প্রদান করা হচ্ছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ একটি অপরিহার্য উপাদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পেলে সবধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড থমকে যায়। সরকার ইডকলের মাধ্যমে মিনিগ্রিড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এই সন্দ্বীপেই প্রথম ১শ’ কিলোওয়াট বিশিষ্ট একটি মিনিগ্রিড স্থাপন করা হয়েছে।
দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতির ওপর গুরত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১ হাজার ৬শ’ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছিল।  কিন্তু পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ও পরবর্তীকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোন পদপে না নেয়ায় ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি হ্রাসে দ্রুত অনেকগুলো স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গৃহীত হয় এবং এ কারণে গত তিন বছরে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। চলতি বছরেই বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৩ সাল নাগাদ ৭ হাজার মেগাওয়াট ও ২০২১ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে কয়লাভিত্তিক ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন এবং সৌর ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিভিন্ন পদপে হাতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পদপেও নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরীও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীন ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানে ইডকল চেয়ারম্যান ও ইআরডি সচিব ইকবাল মাহমুদ সভাপতিত্ব করেন। ইডকলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইসলাম শরিফ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রী পরে সোলার হোম সিস্টেম ও বায়োগ্যাস প্লান্টের প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন। এর আগে তিনি উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বর্তমান সরকারের গত তিন বছরে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতির খোঁজ-খবর নেন। বৈঠকে তিনি জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।


রাজধানীতে পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়ের নামে ফুটপাত দখল
হাসান মাহমুদ রিপন
রাজধানীতে ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হাজিরার নামে ডিসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফুটপাত দখল করে তৈরি করা হয়েছে হাজিরা-ঘর। কোথাও আবার পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়। এ অফিসগুলোতে কর্মী হাজিরা, এলাকাবাসীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সমস্যা মোকাবেলা করার কথা থাকলেও সেসব কাজও হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, ঘরগুলো ভাড়া দেয়া হচ্ছে ভাঙ্গারি দোকানিদের কাছে। ডিসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বেশ কিছু ওয়ার্ড অফিস, যার অধিকাংশই ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় শান্তিনগর কর্ণফুলি গার্ডেন সিটির পাশে ডিসিসির একটি পরিচ্ছন্নতা কার্যালয়ের সঙ্গেই রয়েছে থাকার ঘর। পুরো ফুটপাতই এখন বন্ধপ্রায়। মধ্যবাড্ডা ডিআইটি  রোডের ফুটপাতের ওপর রয়েছে এমন একটি ঘর। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের অফিসটি করা হয়েছে পার্কের জমি দখল করে। এই অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাদের অভিযোগ, এসব ঘরে থাকার কথা লগ বই, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কর্মীদের কাজের সম্পর্কে ধারণা দেয়া, বর্জ্য সংগ্রহ এবং এর সঠিক তথ্য সংগ্রহের  ক্ষেত্রে পরিকল্পনার কার্যক্রম। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড লালমাটিয়ায় রয়েছে একটি অফিস। এই এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন (৬০) জানান, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের তৎপরতা চোখে পড়ে না। শাহবাগেও রয়েছে একটি হাজিরা ঘর। পাশেই ডাস্টবিন। পথচারীদের নাখ মুখ  চেপে ধরে যাতায়াত করতে হয়। এ হাজিরা ঘরের পাশে ডাস্টবিন থাকার পরও তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দাবি, ডিসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৩টি অফিস আছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি অফিস ওয়ার্ড এলাকার ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে। ডিসিসির  হিসেবে ৯, ৩৩, ৩৬, ৪০, ৪২, ৪৪, ৪৫, ৫০, ৫৮, ৬৩, ৬৯, ৭৫, ৮৪ ওয়ার্ডে অফিস রয়েছে। ডিসিসি সূত্রে জানা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অফিসগুলোর উদ্দেশ্য পরিচ্ছন্নকর্মীদের মাধ্যমে এলাকাবাসীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করা। আর এ জন্যই  তৈরি করা হয়েছে পাকা ও আধাপাকা টিনশেড  ঘর। এ ব্যাপারে ডিসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা জানান, রাত ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঝাড়ু দেয়ার কাজ করে পরিচ্ছন্নকর্মীরা। আর তাই বর্ষাকালে কর্মীদের আশ্রয়ের জন্য ঘর তোলা হয়ে থাকে। তবে এ ঘরগুলো ফুটপাতের ওপর হওয়ার কথা নয়। তাছাড়া ফুটপাত ঘর তৈরির জায়গা নয়। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে অফিস করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে করে এলাকাবাসীর নানা সমস্যার সমাধান ও কর্মীদের তদারকি করা যায়। তিনি বলেন, আমরা সবসময় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি। 


২২ ফেব্র“য়ারি সারাদেশে সাংবাদিক সমাবেশ
মামলা ‘ধামাচাপা’ দেয়ার আশঙ্কা অমূলক: সাহারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
খোদ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক দম্পতি হত্যা মামলার বিষয়টি তদারকি করছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন, পুলিশ এ মামলা ‘ধামাচাপা’ দেবে- এমন আশঙ্কা অমূলক। গতকাল শনিবার গেণ্ডারিয়ায় পুলিশের মিলব্যারাক আউটরেঞ্জ শুটিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি মামলাটি মনিটরিং করছি। কারো চাপ বা প্রভাবে এ মামলা ধামাচাপা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তদন্তে এতো সময় লাগছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সাহারা খাতুন বলেন, যারা বিষয়টি তদন্ত করছেন, তারাই এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। তবে একটি বিষয় তদন্ত করতে গেলে অনেক ডালপালা বের হয়। এ কারণেই সময় লাগছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করায় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি মহল এ মামলা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ওপর মহলে চেষ্টা করছে। দোষীদের আড়াল করতে প্রভাবশালী কারো চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে প্রভাবশালী আর কে আছেন? তিনি নিজেই মামলার বিষয়টি তদারকি করছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। কারো কোনো প্রভাব বা চাপে দোষীদের আড়াল করা সম্ভব হবে না বলেও উল্লেখ করেন সাহারা। সাংবাদিকদের কর্মসূচি: এদিকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং সব সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে ২২ ফেব্র“য়ারি সারা দেশে সমাবেশ করবে সাংবাদিকরা। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী দু’টি অংশ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের এক যৌথসভার পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুরে সভা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার দাবিতে ২২ ফেব্র“য়ারি সকাল ১১টা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সাংবাদিক সমাবেশ হবে। ওইদিন সারা দেশে স্থানীয় সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের সব সংগঠন একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে। ২২ ফেব্র“য়ারির আগে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে ওই দিন চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান রহুল আমিন গাজী।
গত ১১ ফেব্র“য়ারি ভোররাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ থাকলেও পুলিশ তা পারেনি। আঙুলের ছাপের প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, তারা যে আলামত পেয়েছে তা অস্পষ্ট। ফলে এ পর্যন্ত তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতির তথ্যও পুলিশ দিতে পারেনি। খোদ প্রধানমন্ত্রী এ মামলার বিষয়টি তদারকি করছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন, এ মামলা ‘ধামাচাপা’ পড়ার কোনো কারণ নেই। বিএফইউজের অপর অংশের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সভাপতি কামালউদ্দিন সবুজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সরকার সমর্থক অংশের সভাপতি ওমর ফারুক, বিরোধীদল সমর্থক অংশের সভাপতি আব্দুস শহীদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশাহসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা যৌথসভায় অংশ নেন।
তিস্তা চুক্তির ভবিষ্য
অনিশ্চিত
ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতাকে বোঝাতে গতকাল শনিবার কলকাতায় পৌঁছেছেন ভারতের বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। তারপরও এ চুক্তির ভবিষ্যৎ আপাতত অনিশ্চিত বলেই আশঙ্কা ভারতের রাজনৈতিক শিবিরের। ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকায় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, যার শিরোনাম ‘ফরাক্কার (ফারাক্কা) পরে তিস্তায় আরও অনড় মমতা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিস্তা চুক্তি নিয়ে জল ঘোলা হয়েছিল আগেই। এবার ফরাক্কা (ফারাক্কা) ব্যারেজ তাকে ঠেলে দিল বিশ বাঁও জলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি সই হয়নি। তাকে বোঝাতে কলকাতায় পৌঁছেছেন বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। দু’জনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। মাথাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝাবেন, তিস্তা চুক্তি না হলে বাংলাদেশকে ঘিরে নতুন করে ভূ-কৌশলগতভাবে সমস্যায় পড়বে দিল্লি। এই মুহূর্তে তাই কূটনৈতিক দিকটির কথা মাথায় রেখে রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন। ফারাক্কার দুটি স্লুইস গেট খারাপ হওয়ার ঘটনা নিয়ে বলা হয়েছে, দু’টি স্লুইস গেট খারাপ হওয়ার জন্য ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশ বেশি জল পেয়ে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। নিজের অবস্থানে মমতা আরও অনড় হয়েছেন। ফলে মাথাই বোঝানোর চেষ্টা করলেও চুক্তির ভবিষ্যৎ আপাতত অনিশ্চিত বলেই আশঙ্কা রাজনৈতিক শিবিরের।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল হস্তান্তর চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে আটকে আছে মমতার আপত্তিতেই। এ বিষয়ে লেখা হয়েছে শুধু তিস্তা চুক্তিই নয়, মমতার তীব্র আপত্তিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে আটকে গিয়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল হস্তান্তরও। মমতার বক্তব্য, এর ফলে রাজ্যের বেশি জমি চলে যাবে। আর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি সেটা হতে দিতে পারেন না। দিল্লির যুক্তি, ছিটমহলের এই জমিগুলি ১৯৪৭ সাল থেকেই কোনো দেশ ব্যবহার করতে পারেনি। দু’দেশের ওই এলাকার মানুষও চান, ছিটমহল হস্তান্তর করা হোক। কিন্তু মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে না হলেও রাজ্যের ভাগের জল বা এলাকা কমে যাওয়া, কোনোটাই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে রাজি নন। স্লুইস গেট খারাপ বলে বাংলাদেশ বেশি পানি পাচ্ছে এমন রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মমতা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, আমরা তো জল পাচ্ছিই না। রঞ্জন মাথাইয়ের সঙ্গে বৈঠকেও যে এর ছাপ পড়বে, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবির প্রায় নিশ্চিত বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, বৈঠকে মমতাকে বোঝানোর সব রকম চেষ্টা করবেন প্রধানমন্ত্রীর দূত মাথাই। তার তথা দিল্লির প্রধান যুক্তি, বর্তমানে বাংলাদেশের যা রাজনৈতিক অবস্থা, তাতে এই চুক্তি সম্পাদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা সরকারের বয়স প্রায় তিন বছর। সরকার বিরোধী হাওয়ায় এখন সেই সরকারের অবস্থা যথেষ্ট নড়বড়ে। এই অবস্থায় তিস্তা চুক্তি না হলে হাসিনা সরকার আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে বলে মনে করছে আওয়ামী লিগ। আর তা হলে ভারতের ভূ-কৌশলগত সমস্যাও বহু গুণ বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের অন্দরের পরিস্থিতি এখন কেমন? সেখানে সরকার বিরোধী হাওয়াকে কাজে লাগাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মৌলবাদী শক্তি। হাসিনাকে সরাতে সামরিক বাহিনীর একটি অংশও সক্রিয়। রাজনৈতিকভাবে প্রবল চাপ তৈরি করেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। বিএনপি বলছে, তিস্তা চুক্তি করতে না পারা তো বিদেশনীতির ব্যর্থতা। এই অবস্থায় হাসিনার দল আওয়ামী লিগ কী করবে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দিল্লির একাংশের বক্তব্য, তিস্তা চুক্তি হলে হাসিনা সরকার সেটা তুলে ধরে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা সামলানোর চেষ্টা করত। এখন তিস্তা চুক্তি না হলে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে যদি আওয়ামী লীগই ভারত-বিরোধিতার তাস খেলতে শুরু করে, তা হলে সেটা দিল্লির পক্ষে অত্যন্ত আশঙ্কার। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর জমানার শেষ দিকে নড়বড়ে অবস্থায় জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন হাসিনা। দিল্লির আশঙ্কা, এ বারও কি তিনি তেমনই কিছু করতে চলেছেন? তা হলে সেটাও ভারতের দিক থেকে গভীর উদ্বেগের বিষয় হবে।
ভারতের আশঙ্কা বাড়িয়ে জামায়াতে ইসলামির প্রতি বার্তা দিয়ে আওয়ামী লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বাদ দিয়ে জামায়াত মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করুক। আমাদের বিচার জামায়াতে ইসলামির বিরুদ্ধে নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘যাদের বয়স ৪০ বছরের নিচে বা ১৯৭১ সালে যাদের বয়স ১০ বছরের কম ছিল, তারা কেন যুদ্ধাপরাধীদের দায় কাঁধে নিতে যাবে?’ মমতাকে এই পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে অবস্থাটা বোঝানোর চেষ্টা করবেন মাথাই। তাঁর বক্তব্য, এই অঞ্চলের ভূ-কৌশলগত সমস্যাটা বুঝতে হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা ছাপিয়ে রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকা পালন করতে হবে মমতাকে। কারণ, ভারতের ক্ষেত্রে সামরিক ও কৌশলগত কারণে বাংলাদেশে সুস্থির সরকার প্রয়োজন।
উষ্ণায়নরোধে ৬ দেশের নতুন জোটে বাংলাদেশ
ডেস্ক রিপোর্ট
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধ, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় দেশের নতুন এক জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন মিলনায়তনে গত শুক্রবার এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে এই জোটের ঘোষণা দিয়ে হিলারি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে আমরা এখনো খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, কানাডা, সুইডেন, মেক্সিকো ও ঘানাকে নিয়ে গঠিত এই জোট বায়ুমণ্ডলের মিথেন, ব্ল্যাক কার্বন ও হাইড্রো-ফ্লুরোকার্বন (এইচএফসি) কমিয়ে আসতে কাজ করবে। বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কানাডার পিটার কেন্ট, সুইডেনের লিনা এক, মেক্সিকোর জুয়ান রাফায়েল এলভিরা কুয়েসাডা, জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি-ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক আকিম স্টেইনার, যুক্তরাষ্ট্রের ইপিএ প্রধান লিসা জ্যাকসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টোড স্টার্নসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, গবেষক ও এনজিও প্রতিনিধিরা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী বক্তৃতায় হিলারি জানান, এই জোটের কার্যক্রম পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ১২ মিলিয়ন ডলার দেবে। জোটের বাকি সদস্যরা মিলে দেবে আরো ১৫ মিলিয়ন ডলার। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বায়ুমণ্ডলের শর্ট লিভড ক্লাইমেট পলিউট্যান্টস (এসএলসিপি) হিসেবে পরিচিত ক্ষতিকর কার্বনের মাত্রা কমিয়ে আনা গেলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যাবে। এতে ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ২০ লাখ লোকের অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে। প্রতিবছর ৩০ মিলিয়ন টন খাদ্য-শস্য নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। বাংলাদেশকে এ উদ্যোগে সম্পৃক্ত করায় হাছান মাহমুদ জোটের অন্য সদস্য দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান এবং অন্যান্য দেশকেও এতে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান। পরিবেশমন্ত্রী সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি, জনস্বাস্থ্য ও কৃষিতে এসএলসিপির ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ এবং কার্যক্রমের বর্ণনা দেন। বিজ্ঞানীর বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বড় অংশ সাগরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছাড়াও বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও মাত্রা বৃদ্ধি এবং মাটির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

বিশ্বমন্দায়ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী: গভর্নর
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিক থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আমাদের নজরে পড়ছে না। কিন্তু বিশ্বের নজরে ঠিকই পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বেসরকারি খাতের মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাপোর্ট টু ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিগত তিন বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫ গুন। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রত্যেটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তর অটোমেটেড হবে বলেও জানান তিনি। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাংসদ আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে অপর অতিথি ছিলেন ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত কুমার রায়। অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এম এস আহসান, পরিচালক ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, এএসএম ফিরোজ আলম, এম আমানুল্লাহ, এ কে এম সাহিদ রেজাসহ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আতিউর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাত, সরকার, বেসরকারি সংস্থা, টেলিকম খাতসহ সংশ্লিষ্ট সব খাত একসঙ্গে কাজ করলে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন তথা বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইতোমধ্যে প্রবর্তন করা হয়েছে অন-লাইন ব্যাংকিং, ই-কমার্স, অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক, অন-লাইন সিআইবি এবং ব্যাংকিং খাতে আধুনিকতার অন্যতম মাধ্যম আজকের এই মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম।
গভর্নর বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং প্রচলিত শাখা ব্যাংকিং এর একটি বিকল্প ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে স্বল্প খরচে দক্ষতার সঙ্গে আর্থিক সেবা ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে সীমিত এই আর্থিক সেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরো প্রসারিত করার সুযোগ রয়েছে। যে কোনো সময় যে কোনোস্থানে আর্থিক সেবার নিশ্চয়তা দেবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত ও কম খরচে টাকা লেনদেন বিশেষ করে, গ্রামীণ জনপদে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। সকলের জন্যে উন্নয়নের পূর্বশর্ত গুণমানের অংশীদারিত্বমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের বাস্তব ভিত্তি আরো প্রসারিত হবে। তিনি আরো বলেন, জনসাধারণের দোরগোড়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে পারে। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ১৭টি ব্যাংককে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের অনুমোদন দিয়েছে। যার মধ্যে ৮টি ব্যাংক ইতোমধ্যেই এ কার্যক্রম শুরু করেছে। ব্যাংকিং সেবাবহির্ভূত জনগণকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ব্যাংকগুলোর অনুসরণের জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে একটি অপারেটিং নীতিমালা জারি করেছে। বস্তুতপক্ষে, ব্যাংকিং-এ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এরসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবুজ ব্যাংকিং-এর দিকে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ব্যাংগুলোকে। এছাড়া এর ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিগত তিন বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১৫ গুণ। প্রত্যেক পরিবারকে ই-মেইল আইডি খুলতে বিশেষ উদ্যোগ নেবে সরকার। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রত্যেটি মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তর অটোমেটেড হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সরকারের গৃহীত নানামুখী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন তিনি।
রেডিও-টিভিতে বাংলা ভাষার বিকৃতি নয়: হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
টেলিভিশন ও রেডিওতে ‘বিকৃত বাংলা উচ্চারণে’ অনুষ্ঠান প্রচার এবং ‘ভাষা দূষণ’ না করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য এই আদেশ দেয়। বাংলা ভাষায় দেয়ার ওই আদেশে আদালত বলে, আমরা আদেশ জারি করছি যে, বাংলা ভাষার পবিত্রতা রক্ষা করতে সর্বোতভাবে চেষ্টা করতে হবে। এই ভাষার প্রতি আর কোনো আঘাত যাতে না আসে সে বিষয়ে সচেষ্ট হতে হবে। একইসঙ্গে ভাষার পবিত্রতা রক্ষা ও দূষণ রোধে একটি রুলও জারি করেছে আদালত। সংস্কৃতি সচিব, তথ্য সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান কর্মকর্তা, রেডিও টুডে, রেডিও এবিসি ও রেডিও ফুর্তির প্রধান কর্মকর্তাকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে হবে। বাংলা ভাষার দূষণ, বিকৃত উচ্চারণ, ভিন্ন ভাষার সুরে বাংলা উচ্চারণ, সঠিক শব্দ চয়ন না করা এবং বাংলা ভাষার অবক্ষয় রোধে বাংলা একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে একটি কমিটি করারও আদেশ দিয়েছে আদালত।
এসব বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে- সে বিষয়ে ২০ মার্চের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এই কমিটিকে। এই কমিটিতে কে কে থাকবেন, তা নির্ধারণে চূড়ান্ত ক্ষমতা দেয়া হয় আনিসুজ্জামানকে। তবে আদালত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, রফিক আজাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের নাম প্রস্তাব করেছে। আদালত বলে, তাদেরকে কমিটিতে রাখা যেতে পারে। পতিকায় প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা একটি নিবন্ধ গতকাল আদালতের নজরে আনার পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রকিব উদ্দিন আহমেদ ‘ভাষাদূষণ নদী দূষণের মতোই বিধ্বংসী’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন।
পরে আদালতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, এডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন। আদেশে বলা হয়, রকিব উদ্দিন আহমেদ স্বেচ্ছা-প্রণোদিত হয়ে বাংলা ভাষায় দূষণ প্রক্রিয়ায় ব্যথিত হয়ে, চিন্তিত হয়ে, এটা রোধকল্পে আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত একটি উপসম্পাদকীয় আমাদের নজরে এনেছেন, যাতে বলা হয়েছে, ভাষা দূষণ নদী দূষণের মতোই ভয়ঙ্কর। এই ভাষা বঙ্গবন্ধুর ভাষা, রবীন্দ্রনাথের ভাষা, শরৎচন্দ্রের ভাষা, জীবনানন্দের ভাষা, বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষা, আলাওলের ভাষা, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষা, লালনের ভাষা, হাসন রাজার ভাষা, শাহ আব্দুল করিমের ভাষা, জসীম উদ্দীনের ভাষা ও কায়কোবাদের ভাষা। এই ভাষার ওপর আজ বলৎকার চলছে। আমাদের জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই অনতিবিলম্বে এটা রোধ করতে হবে। বাংলা আজ কেবল বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরার ভাষা নয়, এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি ভাষা। আদেশের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এই ভাষার জন্য রফিক-জব্বার শহীদ হয়েছেন, ভাষা দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ভাষাতে রবীন্দ্রনাথ প্রথম এশীয় হিসাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এই ভাষা চর্চার কারণে আজ লন্ডনে শেক্সপিয়র জাদুঘরে তার ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, লালন ও হাসন রাজার ওপর গবেষণা হচ্ছে। বিশ্বের নানা দেশ থেকে ভাষা বিশেষজ্ঞরা এদেশে এসে এই ভাষার প্রাচুর্য অনুসন্ধান করছেন। এই ভাষায় বঙ্গবন্ধু প্রথম জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন, যা সে সময় বিশ্ব নেতাদের মুগ্ধ করেছিল। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দিন থেকেই এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল উল্লে¬খ করে আদালত বলে, পৃথিবীতে বাংলাই একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম দৃষ্টান্ত আর দ্বিতীয়টি নেই। সুতরাং এ ভাষার পবিত্রতা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। ধর্মান্ধতার বশবর্তী হয়ে যারা বাংলা ভাষার ওপর একসময় আক্রমণ করেছিল- তাদের সেই চেষ্টা এখনো চলছে উল্লেখ করে আদালতের আদেশে বলা হয়, তাদের অগ্রযাত্রা আমরা চলতে দিতে পারি না। মামলার শুনানিতে আগামীতে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিক উল হক, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আকতার ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন, লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের বক্তব্য শোনা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
বাংলাদেশে এডিবির নতুন প্রধান তেরেসা খো
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) নতুন আবাসিক প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশীয় নগর উন্নয়ন এবং জল বিভাগের পরিচালক তেরেসা খো। গত ১২ জানুয়ারি অবসরে যাওয়া থেভাকুমার কান্দিয়াহের স্থলাভিষিক্ত হলেন এই নারী। গতকাল বৃহস্পতিবার এডিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ২২ ফেব্র“য়ারি তেরেজা খো তার নতুন পদে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ১৯৯৭ সাল থেকে এডিবির হয়ে কাজ করছেন খো। অবকাঠামো, নগর উন্নয়ন, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, সহ-আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়ন প্রকল্পের প্রক্রিয়া, বাস্তবায়ন ও তদারকির ওপর জোর দিয়ে এ অঞ্চলের উন্নয়ন ব্যাংকিংয়ে তার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা।
দক্ষিণ এশীয় নগর উন্নয়ন এবং জল বিভাগের পরিচালক হিসেবে তেরেসা খো বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন নগরের পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা দেয়া নিয়ে কাজ করেছেন। এই মার্কিন নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি নেয়ার পর স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন। ম্যানিলাভিত্তিক এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ১৯৬৬ সালের ২২ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সংহতি জোরদার করার মাধ্যমে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর দারিদ্র্য কমাতে কাজ করছে এডিবি।
দশ কিশোর-কিশোরীর বাংলা চ্যানেল পাড়ি
নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন ঘণ্টা ৯ মিনিটে বাংলা চ্যানেলের ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে নিরাপদেই তীরে ফিরেছে ১০ কিশোর-কিশোরী। তাদের মধ্যে কয়েকজন আগে কখনো সমুদ্রই দেখেনি। কিন্তু তাদের পথে বাধা হতে পারেনি ভয়। ক্ষুদে সাঁতারুদের এই অভিযাত্রা শুরু হয় গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ৭টায়, বাংলাদেশের মূল স্থলভাগের শেষ বিন্দু টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার সাগর সাঁতরে সকাল ১০টা ২৪ মিনিট নাগাদ দেশের সর্ব দক্ষিণের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পৌঁছায় সবাই।
বঙ্গোপসাগরের ওই ১৫ কিলোমিটার অংশই পরিচিত ‘বাংলা চ্যানেল’ নামে। এই সাঁতারে অংশ নেয়া পাঁচ কিশোরের মধ্যে প্রথম হয়েছে রাজশাহীর আলমগীর সুইমিং ক্লাবের ফয়সাল আহমেদ। আর পাঁচ কিশোরীর মধ্যে সবার আগে সেন্ট মার্টিনে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) রুমানা আক্তার। বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন, স্পোর্টস ভিশন লিমিটেড এবং নেচার অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব ক্ষুদে সাঁতারুদের নিয়ে এই আয়োজন করে। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের কাছে সেন্টমার্টিনকে পরিচিত করতেই তাদের এ উদ্যোগ। সাঁতরে বাংলা চ্যানেল অতিক্রমের পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং সৈকতে ভলিভল, হ্যান্ডবল ও ফুটবল প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে। বিজয়ী সাঁতারুদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেবেন নৌবাহিনী প্রধান এবং বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতি ভাইস এডমিরাল জহির উদ্দিন আহমেদ।

বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্তী
জনগণের কাছে গিয়ে ক্ষমা চান তওবা করেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
গতকাল বিকেলে সন্দ্বীপ উপজেলার সরকারি হাজী আব্দুল বাতেন কলেজের মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলকে জনগণের কাছে গিয়ে তওবা করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আমরা ছোটবেলায় পড়েছি, ল্যাংড়াকে ল্যাংড়া বলবেন না, লুলাকে লুলা বলবেন না। আপনারা আপনাদের আচরণ ঠিক করুন। জনগণের কাছে গিয়ে আপনাদের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান, তওবা করুন। সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান মাস্টারের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম। ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো গতকাল দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এলাকা চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে ১৯৯৯ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর সন্দ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে সন্দ্বীপে ‘সোলার হোম সিস্টেম’ বিতরণ এবং বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন কর্মসূচি উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের মধ্যেই দেশে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। দায়িত্ব নিয়েই আমরা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের রেখে যাওয়া বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় দ্রুত, স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করি। ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করেছি। চলতি বছরের মধ্যেই বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার ২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালের মধ্যে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আর ২০২১ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার গ্যাসের ব্যবহার ছাড়াও কয়লা এবং পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত, মিয়ানমার, ভুটান ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সৌরবিদ্যুৎ এবং বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর সরকারের গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকলের) অর্থায়নে নতুন করে ১০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ এবং ২০ হাজার বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন কর্মসূচির উদ্বোধন করতে সকালে সন্দ্বীপ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা জানান, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সরকার সৌর বিদ্যুতের জন্য আমদানি করা যন্ত্রাংশের ওপর কর সম্পূর্ণ মওকুফ করেছে এবং ইডকলের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি দিচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি মানুষের দোরগোড়ায় পরিবেশবান্ধব জ্বালানি পৌঁছে দিতে ইডকলের মাধ্যমে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতা হ্রাসে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের ডিজেলচালিত মিনিগ্রিড ও সেচ পাম্পসমূহে নবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে। তিনি বলেন, এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে আরো ১০ লাখ হোম সোলার সিস্টেম ও ২০ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হবে। শেখ হাসিনা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সৌরবিদ্যুতের জন্য আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের ওপর সম্পূর্ণ কর মওকুফ এবং ইডকলের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রামের মা-বোনেরা পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে যাতে রান্নাবান্না করতে পারে সেজন্য সরকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় ক্লিন এনার্জি পৌঁছে দেয়ার জন্য ইডকলের মাধ্যমে বিভিন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৬ সালে দেশের প্রথম জ্বালানি নীতি প্রণয়ন করে। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছেনি, সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ১৯৯৭ সালে ইডকল প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইডকলের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে অর্থায়ন ও কারিগরি সুবিধাদি প্রদান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি,  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীন ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানে ইডকল চেয়ারম্যান ও ইআরডি সচিব ইকবাল মাহমুদ সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রী সোলার হোম সিস্টেম ও বায়োগ্যাস প্লান্টের প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন।  এর আগে তিনি উপজেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বর্তমান সরকারের গত তিন বছরে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতির খোঁজ-খবর নেন। বৈঠকে তিনি জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
লক্ষ্মীপুরের জনসভায় সরকারের উদ্দেশে খালেদা
তত্ত্বাবধায়ক দেবেন না হয় বিদায় নিতে হবে
আবুল কালাম আজাদ, লক্ষীপুর থেকে
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বল এখন আপনাদের কোর্টে। তাই দায়িত্বও আপনাদের। যদি আমাদের দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করা হয়, পরবর্তীতে এমন কর্মসূচি দেবো তাতে হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেবেন-না হয় বিদায় নিতে হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় দেয়া প্রধান অতিথির বক্তৃতার শুরুতেই তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো অবস্থাতেই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। তাই কোনো অবস্থাতেই আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। তা তত্ত্বাবধায়ক নামে হোক বা অন্য কোনো নামে হোক। বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে খালেদা জিয়া জনসভা মঞ্চে উঠলে নেতা-কর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়। বিকেল পাঁচটার কিছু আগে বক্তব্য শুরু করেন বিএনপি প্রধান। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে দেশের চলমান রাজনীতি ও সমসাময়িক অন্যান্য ইস্যুতেও কথা বলেন বিএনপি প্রধান। প্রতি জেলায় আওয়ামী লীগের কম করে হলেও একজন করে গডফাদার আছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করে সন্ত্রাসে। এ কারণেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য জেলায় জেলায় একজন করে গডফাদার তারা পোষে। খালেদা জিয়া বলেন, এ লক্ষ্মীপুরেও তাদের একজন গডফাদার আছে। তার নাম তাহের। সে বিএনপি নেতা এডভোকেট নুরুল ইসলামকে ১৭ টুকরা করেছিল। সে হত্যাকাণ্ডের বিচারে তার দুই ছেলের সাজা হয়েছিল। বর্তমান সরকার এসে সে সাজা মওকুফ করে দিয়েছে। এখন তারা দ্বিগুন উৎসাহে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের পূর্বঘোষিত ২৯ জানুয়ারির গণমিছিলে আওয়ামী লীগের পেটোয়া ও পুলিশ বাহিনী বেপরোয়া গুলি চালিয়ে দুই কর্মীকে হত্যা করেছে। সরকার সে হত্যাকাণ্ডের বিচার তো করেইনি, উল্টা বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিয়েছে। তিনি বলেন, খুনিরা দলীয় লোক বলে তাদের বিচার করেনি। কিন্তু এ এলাকার জনগণ এ কথা ভুলে যাবে না। তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়। এ সরকারের আমলে এর বিচার না হলেও আমরা ক্ষমতায় গেলে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করব। গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ১১টায় রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তার গাড়িবহর রওনা হয়। তিনি লক্ষ্মীপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর এটিই লক্ষ্মীপুরে বিরোধীদলীয় নেতার প্রথম জনসভা। এ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা জেলা সদরে আসতে শুরু করেন। দুপুর আড়াইটায় জেলা বিএনপির সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে শুরু হয় সভার কার্যক্রম। এক পর্যায়ে স্কুলের মাঠ যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জনসভার মঞ্চে উঠে খালেদা জিয়া গণমিছিলে নিহত আবুল কাশেম ও রুবেল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। ২৯ জানুয়ারির গণমিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ও আহতদের দেখতেই বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার এই লক্ষ্মীপুর আসা। ওইদিন লক্ষ্মীপুরে বিএনপির গণমিছিলে পুলিশের গুলিতে ২ কর্মী নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে। খালেদা জিয়ার বক্তব্য যাতে সবাই শুনতে পারে- সেজন্য মাঠের ভেতরে ও বাইরে বহু সংখ্যক মাইক বসানো হয়। লক্ষ্মীপুরে সদর ছাড়াও রামগঞ্জ, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি, বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকেও বাস-ট্রাক করে নেতা-কর্মীরা আসেন জনসভায় যোগ দিতে। খালেদা জিয়ার জনসভা উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর শহরের মূল সড়ক তোরণ ও ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে। এছাড়া জনসভাস্থলের আশপাশের এলাকা সাজানো হয়েছে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তাদের বড় ছেলে তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার দিয়ে। জনসভাস্থলের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে স্কুল মাঠের আশপাশে। অন্যান্যের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মইন খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সাধারণ সম্পাদ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, সাংসদ এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজাম, নাজিম উদ্দিন আহমেদ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।


মহাসমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি
ইকরাম-উদ দৌলা
সরকার বিরোধী চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১২ মার্চ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে সমাবেশের মাঠ চেয়ে আবেদনও করা হয়েছে। তবে কোনটি না পেলে শেষ পর্যন্ত নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই করা হবে। জানাগেছে, এক বন্দর নগরীখ্যাত বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকেই ৫লাখ নেতাকর্মী আর সমর্থক আনা হবে। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে জনসংযোগ শুরু করে দিয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী বিএনপির ৭৫টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটও এ নিয়ে কাজ করছে। দলের সর্বস্তরে যে কোনো মূল্যে ১০ লক্ষাধিক লোক সমাগমের জন্য বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ দিন বিশাল সমাবেশে অংশ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন। যার মধ্যে মানব প্রাচীর, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি থাকবে। তবে এর আগে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলনের মাধ্যমে জনভিত্তি গড়তে চায় বিএনপির প্রধান। এ জন্য বিএনপি নির্ধারিত ৩ টি জনসভার মধ্যে একটি ইতোমধ্যে বেগম জিয়া চাঁদপুরে সম্পন্ন করেছেন। আজ যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর। আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারি দু’দিনের সফরে যাবেন লালমনিরহাট। জানাগেছে, মহাসমাবেশ সফলে জেষ্ঠ্য নেতাদের দায়িত্বে প্রায় অর্ধশত সাংগঠনিক টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। যারা সার্বক্ষণিক এ নিয়ে পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করছেন। জেষ্ঠ্য নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে ঢাকা চলো কর্মসূচিকে সফল করতে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক ও সংশ্লিষ্ট জেলায় সফর করছেন। আর কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকাতেও বিএনপির গুলশান কার্যালয়, নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। চারদলীয় জোটের শরিক দল ও অন্যান্য সমমনা দলগুলোও প্রতিদিনই বিএনপির সঙ্গে সমন্বয় করে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি জোরদার করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ঢাকা চলো কর্মসূচি সফলের উদ্দেশ্যে যৌথসভা করেছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কবৃন্দ, ঢাকা মহানগর বিএনপির অধীনস্থ প্রত্যেক থানা এবং ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ ও সাবেক কাউন্সিলরবৃন্দকে সরকারের সব ধরনের হুমকি উপেক্ষা করে মহাসমাবেশকে স্মরণকালের বৃহত্তর সমাবেশে পরিণত করতে জোর দেয়া হয়েছে। এদিকে ঢাকা চলো কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। অন্যদিকে সমাবেশের প্রচারণা চালাতে দেশের সব মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করে দেয়ালে পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়েছে। সূত্র জানায়, গত ৯ ফেব্র“য়ারি চারদলের ঢাকা চলো কর্মসূচি সফল করতে ৪৫টি সাংগঠনিক টিম গঠন করেছে বিএনপি। এর মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সিলেট জেলা ও মহানগরের দায়িত্বে, ঢাকা জেলা ও মহানগরের দায়িত্বে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে.জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান রাজশাহী জেলা ও মহানগরের দায়িত্বে, তরিকুল ইসলাম খুলনা জেলা, খুলনা মহানগর ও বাগেরহাট, এমকে আনোয়ার চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ, বি.জে (অব.) আসম হান্নান শাহ রংপুর, কুড়িগ্রাম, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার নোয়াখালী, মির্জা আব্বাস বরিশাল মহানগর, দক্ষিণ ও উত্তর, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যশোর, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ফরিদপুর, ড. আবদুল মঈন খান শেরপুর, ময়মনসিংহ দক্ষিণ ও উত্তর এবং নজরুল ইসলাম খান গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা টিমের দায়িত্বে রয়েছেন। সহ-সভাপতিদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান টাঙ্গাইল ও দিনাজপুর, এম মোরশেদ খান রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান, শমসের মবিন চৌধুরী হবিগঞ্জ, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মাদারীপুর, রাজিয়া ফয়েজ নড়াইল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী জামালপুর ও ভোলা, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন গাজীপুর, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর এবং সেলিমা রহমানকে ঝালকাঠী, পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাদের মধ্যে হারুন আল রশিদ মৌলভিবাজার, ডা.এজেডএম জাহিদ হোসেন সুনামগঞ্জ, ইনাম আহমেদ চৌধুরী নীলফামারী ও সৈয়দপুর, মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন লালমনিরহাট, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বগুড়া ও পাবনা, ফজলুর রহমান পটল নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, শামসুজ্জামান দুদু নাটোর, ঝিনাইদহ, ড. ওসমান ফারুক মেহেরপুর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মাগুরা, অধ্যাপক আবদুল মান্নান নেত্রকোনা, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর কিশোরগঞ্জ, আবদুল মান্নান মুন্সীগঞ্জ, খন্দকার মাহবুব হোসেন বরগুনা, মে. জে. (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী খাগড়াছড়ি এবং আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনী জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে মিজানুর রহমান মিনু পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রিজভী আহমেদ সাতক্ষীরা, আমানউল্লাহ আমান মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, সালাউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, মোহাম্মদ শাহজাহান কক্সবাজার, বরকতউল্লাহ বুলু চাঁদপুর এবং ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন লক্ষ্মীপুর জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। এসব এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ১২ মার্চ ঢাকায় পাল্টা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়ায় সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকলেও আপাতত ১২ মার্চই মহাসমাবেশ করার সার্বিক প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। তবে কোন কারণে ২৯ জানুয়ারির গণমিছিলের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি হলে সে ক্ষেত্রে তারা ১২ মার্চের পর সুবিধাজনক সময়ে এ কর্মসূচি পালনের মানসিক প্রস্তুতিও রাখছে। বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহল মনে করছে হার্ডলাইনে গিয়ে সরকারি দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একই দিনে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে গেলে আবার দেশে এক-এগারো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আবারও রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় পড়তে পারেন। তাই ধৈর্য ধারণ করে ধীরে ধীরে আন্দোলন করে এ সরকারকে ফাঁদে ফেলার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে বিএনপির উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ সময়কে বলেন, ১২ মার্চের মহাসমাবেশ হবে সর্বকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ। চট্টগ্রাম থেকেই ৫লাখ লোক আনা হবে এ সমাবেশে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন বলেন, এ সমাবেশ থেকেই সরকারকে হুঁশিয়ারি দেয়া হবে, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে ফল ভালো হবে না। আর কোনো প্রকার বাধা দিয়ে সমাবেশ ভণ্ডুল করার চেষ্টা করা হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের এ কর্মসূচিতে শরিক দলগুলো ছাড়াও সমমনা ও ইসলামী দলগুলো অংশ নেবে। এ সমাবেশ থেকেই সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা হবে। আর শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে বাধা দিলে তার পরিণতি খুব খারাপ হবে।

মুক্তিযুদ্ধকে ‘সিভিল ওয়ার’ বলে মন্তব্য
দ্য টাইমসের নতি স্বীকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করার পর ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত তা সংশোধন করে স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসেবে সংশোধন করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্য টাইমস’। টাইমস এর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ ফেব্র“য়ারি প্রকাশিত ‘সানডে টাইমস’ পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্রের স্পেকট্রাম নামক বিভাগে প্রকাশিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবির ক্যাপশন বর্ণনা করতে গিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত একজন স্বামী কলেরা আক্রান্ত তার স্ত্রীকে কোলে নিয়ে তিন মাইল পথ পায়ে হেঁটে হাসপাতাল যাচ্ছেন- ‘ক্যাজিওলটিজ অব ওয়ার’ শিরোনামে প্রকাশিত এই ছবিটির ক্যাপশনে মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাযুদ্ধের স্থলে ‘গৃহযুদ্ধ’ উল্লেখ করা হলে ব্রিটেনে বসবাসরত তরুণ ব্রিটিশ বাঙালিদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ফটোগ্রাফার ডন ম্যাককুলিনের তোলা এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবিটি ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দ্যা টাইমস এ প্রকাশিত হয়েছিল। টাইমস এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ ফেব্র“য়ারি দ্য সানডে টাইমস এ প্রকাশিত ক্রোড়পত্রের ম্যাগাজিনে অন্য আরও কিছু ঐতিহাসিক ছবির সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের এই ছবিটিও প্রকাশ করা হয়।
ক্রোড়পত্রের এই বিশেষ ম্যাগাজিনটি পাঠকদের মধ্যে ‘পেছন ফিরে দেখার’ ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করলেও বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ আখ্যায়িত করায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে তরুণ ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মাঝে। ব্রিটেনে বসবাসরত তরুণ ব্লগার নিঝুম মজুমদার ফেইস বুকের মাধ্যমে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এই ইতিহাস বিকৃতির প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর অনেকেই টাইমস-এর কাছে তাদের প্রতিবাদ পাঠাতে থাকেন। নিঝুম নিজেও একটি কড়া প্রতিবাদ পাঠান দ্য টাইমস-এ। শেষ পর্যন্ত টাইমস কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করে। ১০ ফেব্র“য়ারি নিঝুমের প্রতিবাদ পত্রের উত্তর দেন টাইমস-এর লেটার এডিটর পেরিন জান মোহামেদ। নিঝুমকে তিনি লিখেন, ‘আমাদের স্পেকট্রাম ম্যাগাজিনের ছবি ক্যাপশনের বিষয়ে আপনার পাঠানো নোটের জন্যে ধন্যবাদ। আসলে গৃহযুদ্ধের স্থলে স্বাধীনতা যুদ্ধ শব্দটি ব্যবহারই ছিল উপযুক্ত। এই যুদ্ধের ফলেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জš§ হয়েছিল’। বিষয়টি নজরে আনার জন্যে নিঝুমকে ধন্যবাদ জানিয়ে টাইমস কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘আমরা এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, সাচি গ্যালারিতে অনুষ্ঠিতব্য টাইমস-এর এক্সিবিশনেই এটি আমরা সংশোধন করে নেবো’। এছাড়া নিঝুমের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও যারা এ বিষয়ে প্রতিবাদ পাঠিয়েছিলেন তাদেরও অনেকে টাইমস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একই নিশ্চয়তা পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঢালিউডের নতুন সেনসেশন আইরিন
বিনোদন ডেস্ক
‘তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না’, রবির এই সিরিজ বিজ্ঞাপনটি এখন সব চ্যানেলেই প্রচারিত হচ্ছে। এই বিজ্ঞাপনটির মাধ্যমে আইরিন এখন হয়ে উঠেছে সবার প্রিয় মুখ। র‌্যাম্প মডেল হিসেবেই অবশ্য তিনি বেশি পরিচিত। অভিনয় করছেন টিভিনাটকেও। এবার তার অভিষেক হচ্ছে চলচ্চিত্রে। অনেকদিন ধরেই ঢালিউডে চলছে শিল্পী সংকট। হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া নির্ভর করার মতো নায়ক-নায়িকার বড় অভাব। শিল্পী সংকটের এই সময়ে ঢালিউডের নতুন সম্ভাবনা হয়ে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন র‌্যাম্প মডেল আইরিন। মোহাম্মদ আলী পারভেজ পরিচালিত ‘প্রিয়তমা তুমি দাঁড়ি, আমি কমা’ ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় তিনি পদার্পন করতে যাচ্ছেন। এ ছবিতে আইরিন অভিনয় করছেন সুপার হিরো-হিরোইন প্রতিযোগিতার বিজয়ী নিলয়ের বিপরীতে। এতে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করছেন বাপ্পারাজ।ayreen-fronnt চলচ্চিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে আইরিন বাংলানিউজকে বললেন, পারফর্মিং মিডিয়ার সেরা প্লাটফর্ম হলো ফিল্ম। অভিনয় শুরুর পর থেকেই স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্রে কাজ করার। কিন্তু ব্যাটে-বলে মিলছিল না। ‘প্রিয়তমা তুমি দাঁড়ি, আমি কমা’ ছবিটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর আমি এর স্ক্রিপ্ট পড়ে মুগ্ধ হই। আমার চরিত্রটিও বেশ ভালো লেগে যায়। সংশয় ছিল পরিবারিক সম্মতি নিয়ে। আমার আগ্রহকে পরিবার উপেক্ষা করে নি। পারিবারিত সম্মতি নিয়েই ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য আমি চুক্তিবদ্ধ হই। সাড়া জাগানো ইভেন্ট ‘ইউ গট দ্য লুক’-এর ২০০৮ সালের আয়োজনে নেহাত শখে ছবি পাঠিয়েছিলেন আইরিন। ডাক পাবেন এরকম আত্মবিশ্বাস ছিল, কিন্তু ইভেন্টের বেস্ট স্মাইল খেতাব যে জিতে নিবেন তা ছিল ধারণার বাইরে। ওয়াইজিটিএল ইভেন্টের গ্রুমিং সেশনে ক্যাটওয়াকে তালিম নেন আইরিন। খেতাব বিজয়ের পরপরই প্রথম মিরর ব্রাইডাল শোর মধ্য দিয়ে কমার্শিয়াল র‌্যাম্পিংয়ে হাতেখড়ি হয় তার। দেশের আলোচিত তিন কোরিওগ্রাফার টুম্পা, জিয়া আর লুনার অনুপ্রেরণায় র‌্যাম্প মডেল হিসেবে আইরিন ক্যারিয়ার শুরু করেন। বাটেক্সপো, বিজেএমই, বেক্সিফেব্রিক্স, এনডিআই সহ দেশের বড় বড় সব আয়োজকের শোতেই পারফর্ম করেছেন । আকর্ষণীয় অভিব্যক্তি আর দেহবল্লরী তাকে করে তুলেছে এ সময়ের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন র‌্যাম্প মডেল।  শুধু র‌্যাম্প মডেলিংয়েই নয়, বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে পারফর্ম করেও আইরিন সুপরিচিত হয়ে উঠেছেন। আকতার ফার্নিচার, প্রাণ লাভক্যান্ডি, রবি আর কোয়ালিটি আইসক্রীমের টিভিসিতে আইরিনকে এখন নিয়মিতই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখা যাচ্ছে। আগামীতে তাকে আরো কিছু নামকরা ব্র্যা-ের বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে। অভিনয়ে আইরিনের হাতেখড়ি আলোচিত নির্মাতা আশুতোষ সুজনের ধারাবাহিক নাটক ‘ম্যানপাওয়ার’- এর মধ্য দিয়ে ২০১০-এর মাঝামাঝি সময়ে। এরপর আইরিন অভিনয় করেন আলোচিত অভিনেত্রী ও নির্মাতা আফসানা মিমির ‘পৌষ-ফাগুনের পালা’ এর গ্রাম্য মেয়ে স্বর্ণলতার চরিত্রে। গজেন্দ্রকুমার মিত্রের ‘ত্রয়ী’ উপন্যাস কলকাতার কাছেই, উপকণ্ঠে ও পৌষ ফাগুনের পালা অবলম্বনে নির্মিত এই ধারাবাহিক নাটকটির প্রেক্ষাপট ষাটের দশক। ঐ সময়ের এক গ্রাম্য কিশোরীর চরিত্রে আইরিনের হৃদয়ছোঁয়া অভিনয় দর্শকদের নজর কেড়েছে। কে বলবে, এই মেয়েটিই র‌্যাম্পের এই সময়ের সেনসেশন! এছাড়াও এবি সোহেলের ‘অনুভবে ভালোবাসা’ ও আহমেদ সুস্ময়ের ‘ভালোবাসা ও একটি কাল্পনিক কাহিনী’ নাটকে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়।ayreen_in বর্তমানে আইরিন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতির মধ্যে আছেন বলে বাংলানিউজকে জানান। তিনি আরো জানালেন, ‘প্রিয়তমা তুমি দাঁড়ি, আমি কমা’ ছবিটির ছশুটিং শুরু হচ্ছে চলতি মাসের ২৯ তারিখ। এদিন সিলেটে শুটিং শুরু হয়ে টানা চলবে এপ্রিলের ১৫ তারিখ পর্যন্ত। রোমান্টিক থ্রিলার নির্ভর এ ছবিতে তাকে দেখা যাবে শহুরে এলিট শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া তরুণীর ভূমিকায়। নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করে আইরিন বর্তমানে আহসানুলস্নাহ ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ পড়ছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। চলচ্চিত্রে আইরিন নিয়মিত হবেন কিনা জানতে চাইলে বললেন, নিয়মিত কাজ করার প্রত্যাশা নিয়েই চলচ্চিত্রে এসেছি। এখানে স্থায়ী হওয়াটা নির্ভর করছে দর্শকদের উপর। দর্শকেরা যদি চান, অবশ্যই আমি চলচ্চিত্রে আমাকে নিয়মিত দেখা যাবে।

অপরাহ উইনফ্রে : পিতৃ-পরিচয়হীন সফল নারী
বিনোদন ডেস্ক
বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী নারী অপরাহ উইনফ্রে। মাত্র নয় বছর বয়সে যে কিশোরী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং এই নির্যাতন সইতে না পেরে একপযার্য়ে বস্তি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কে জানত এই কিশোরীই একদিন সারা বিশ্বে সফল নারীর দৃষ্টান্তে পরিণত হবেন! অপরাহ উইনফ্রে নিজেও কি জানতেন সে কথা? টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশ্বের একশ জন সর্বোচ্চ প্রভাবশালী মানুষের তালিকায় অপরাহ উইনফ্রে একমাত্র ব্যক্তি যিনি টানা আটবার নির্বাচিত হয়েছেন, যেখানে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও হিলারি কিনটন নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র পাঁচবার। আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও অপরাহ উইনফ্রেকে আমেরিকার সম্ভাব্য সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী বলে মনে করেন। অন্যদিকে, সিএনএন এবং টাইম ডট কম অপরাহকে বিশ্বের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মতাবান নারী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এত ক্ষমতা আর এত প্রভাব কিসের জোরে? কী আছে এই নারীর মাঝে? আছে তার নাম এবং সেই নামেই তৈরি একটি টক শো। বুঝতেই পারছেন, দি অপরাহ উইনফ্রে শো-র কথাই বলছি যা আমেরিকার টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত শো হিসেবে গণ্য। খুব শিগগিরই এটি পূর্ণ করতে যাচ্ছে ২৫ বছর। অপরাহ উইনফ্রে মূলত এই শোটির প্রযোজক এবং উপস্থাপক হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত। ২৫ জুলাই ২০০৭ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দি অপরাহ উইনফ্রে শো-এর উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রে আমেরিকার সবচেয়ে দামি উপস্থাপক এবং আয় করেন বছরে প্রায় ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনিই বিশ্বের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ বিলিওনিয়ার। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই তিনি মিলিওনিয়ার হয়ে যান এবং ৪১ বছর বয়সে তার মোট সম্পদের পরিমান দাঁড়ায় ৩৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অপরাহ উইনফ্রে তার নিজের সম্পাদনায়  ‘ও’  ম্যাগাজিন প্রকাশের পর পরই তিনি একজন শক্তিমান সাহিত্য সমালোচক হিসেবে পরিচিতি পান। তার আরেকটি পরিচয় হলো তিনি একজন একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে প্রাপ্ত অভিনেত্রী। এছাড়া অপরাহ রেডিও নামে তার একটি রেডিও চ্যানেলও রয়েছে। একটি গবেষণায় প্রকাশ পায় যে,  আমেরিকায় ২০০৮-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পে তিনি এক মিলিয়নেরও বেশি সমর্থন আদায় করেন। এমনকি বারাক ওবামা এবং হিলারি কিনটনের জনপ্রিয়তায় যে পার্থক্য, তার কারণ হিসেবে বারাক ওবামার পে অপরাহ উইনফ্রের প্রচারকেই দায়ী করা হয়। অপরাহর জন্ম ১৯৫৪ সালের ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ রাজ্য মিসিসিপির এক কুমারী মায়ের ঘরে। বাবা ছিলেন নরসুন্দর এবং মা গৃহপরিচারিকা। প্রথম থেকেই তার বাবা-মা আলাদা ছিল। ফলে তার শৈশব ছিল দারিদ্র্য ও যন্ত্রণাপূর্ণ। অন্যদিকে মাত্র নয় বছর বয়সেই নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার হন তিনি। আর মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন, জন্মের কিছুদিন পর যে শিশুটি মারা যায়। স্কুলে পড়াকালে টেনিসি রাজ্যের স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনে চাকরি পেয়ে যান সান্ধ্যকালীন খবরের উপস্থাপিকা হিসেবে।  পরে তার উপস্থিত বক্তব্যে পারদর্শিতা দেখে দিবাকালীন টক শো এ এম শিকাগো উপস্থাপন করতে দেওয়া হয়। শিকাগোর এই তৃতীয় সারির টক শো যখন অপরাহর হাত ধরে প্রথম সারিতে জায়গা করে নেয়, তখনই অপরাহ নিজের প্রডাকশন কোম্পানি খুললেন এবং আন্তর্জাতিক প্রচারে চুক্তিবদ্ধ হলেন। শিকাগোর সেই এ এম শিকাগোই বর্তমানের দি অপরাহ উইনফ্রে শো। কৃষ্ণাঙ্গ এই আমেরিকান আফ্রিকান নারীকে স্পিরিচুয়াল আইকন মনে করা হয়। একটিমাত্র সন্তান জন্মের পরপরই মরে যাওয়ায় তিনি আর কখনও মা হবার কথা ভাবেননি। তারপরও তার প্রায় দুই শতাধিক সন্তান। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই! অপরাহ উইনফ্রে লিডারশিপ একাডেমি ফর গার্লস-এর এতিম শিশুদের তিনি তার সন্তানের মতই দেখেন এবং তাদের দেখাশোনার দায়িত্বে তিনি প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে ১৯৯৮ সালে তিনি অপরাহ’স এনজেল নেটওয়ার্ক নামে একটি দাতব্য সংস্থা গড়ে তোলেন, যা প্রায় ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জোগাড় করেছিল। অপরাহ ব্যক্তিগতভাবে ৩০৩ মিলিয়ন ডলার এই প্রতিষ্ঠানে দান করেন। ২০০৫ সালে বিজনেস উইক তাকে আমেরিকার শীর্ষ ৫০ জন সর্বোচ্চ দাতাদের একজন বলে তালিকাভুক্ত করে। আর এই তালিকায় তার অবস্থান ছিল ৩২তম।
প্রায় সব দিক থেকেই সফল এই নারীর রোমান্টিক কাহিনীগুলো মোটেও সুখকর নয়। কোনো সম্পর্কই দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। কখনও প্রেমিকের মনোযোগ ছিল তো অপরাহর মনোযোগ ছিল না। আবার কখনও অপরাহর মনোযোগ ছিল তো তার প্রেমিকের মনোযোগ ছিল না। তাতে অপরাহর কোনো আপে নেই । বরং এই ঘটনাগুলোই পরবর্তীকালে তাকে সফল হতে সাহায্য করেছে বলে তিনি মনে করেন। অপরাহর এই বর্ণাঢ্য কর্মজীবন নিয়ে অনেক আলোচনা যেমন হয়েছে, তেমনি সমালোচনাও কম নয়। এতো কিছুর পরেও আনন্দের বিষয় হলো, বিশ্বের ১৪০টি দেশে তার অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়েছে। আর আমেরিকাতেই তার অনুষ্ঠান দেখেছেন এমন লোকের সংখ্যা প্রায় ৩০ মিলিয়ন মানুষ যাদের অধিকাংশই নারী।  অপরাহ উইনফ্রে শো-এর এখন পর্যন্ত  প্রায় ৫০০০ পর্ব প্রচারিত হয়েছে। এই শোটি ২৫ বছর পূর্ণ করে ২০১১ সালে। পরবর্তীতে তিনি এই অনুষ্ঠানটি আর না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। ৫৭ বছর বয়সী অপরাহ উইনফ্রে বর্তমানে তার নতুন টক শো ‘নেক্সট চাপ্টার‘ নির্মাণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। 
নারী স্বাধীনতার নামে অনেককে পিছিয়ে যেতে দেখছি: মুনমুন আহমেদ
প্রীতি ওয়ারেছা
আমাদের দেশের মূলধারার নৃত্যের প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পী ও শিক্ষ মুনমুন আহমেদ। অসাধারণ নান্দনিক চিন্তাভাবনা ও সৌন্দর্য্যরে অধিকারী এই শিল্পী তার নৃত্যশৈলীর মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। আপাদমস্তক একজন নাচের মানুষ তিনি। অবশ্য মাঝেমধ্যে তাকে অভিনয় করতেও দেখা যায়। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এই গুণী শিল্পীর মুখোমুখি হয় বাংলানিউজ।
বাংলানিউজ : শুরুতে নাচের কথা শুনতে চাই, নাচে যুক্ত হলেন কী করে?
মুনমুন আহমেদ : আমার মা ভীষণ সংস্কৃতি মনা একজন মানুষ ছিলেন। দুই ভাইয়ের পর আমি যখন মায়ের গর্ভে তখন আমার মা খুব প্রত্যাশা করেছিলেন একটা মেয়ের জন্য। আমি হওয়ার পর মা যেন তার সমস্ত ইচ্ছের প্রতিফলন আমার ভেতরে দেখতে উঠে পড়ে লাগলেন। যখন মাত্র হাঁটা শিখলাম তখন আমাকে মা আজিমপুর লেডিস ক্লাবে নাচ শেখার জন্যে ভর্তি করে দিলেন। তারপর একটু একটু করে যখন বড় হলাম তখন বিভিন নাচের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। প্রতিটা প্রতিযোগিতাতেই প্রথম হয়ে ফিরতাম। এভাবেই আগ্রহটা তীব্রভাবে মনের ভেতরে তৈরি হয়েছিল। একসময় অনুভব করলাম নাচটা ভাল করে শেখা দরকার। তখন দুবছরের স্কলারশীপ নিয়ে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত ‘ ভারতীয় কলাকেন্দ্র’তে চলে যাই। সেখানে নাচের গুরু রাজকুমার শর্মা এবং রামমোহন মহারাজের কাছে নাচের তালিম নেই। এরপর ‘দিল্লি’ কত্থক কেন্দ্র’ নামক প্রতিষ্ঠানে পন্ডিত বিরজু মহারাজের কাছে ৫ বছরের তালিম নিয়ে দেশে ফিরে আসি। এরপর থেকে নাচ নিয়েই আছি।

বাংলানিউজ : একজন নারী হিসেবে নাচকে পেশা হিসাবে নিতে কি কি সমস্যার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে?
মুনমুন আহমেদ : আমি এখন যেমন, আগে কিন্তু তেমনটি ছিলাম না। এখন সামাজিক অনেক বিষয়াদি নিয়ে ভাবি, তখন ভাবতাম না। আগে মানুষ আমাকে নিয়ে কি ভাবছে, সেটাকে কখনোই পাত্তা দিতাম না। আমি আমার মত চলেছি। আমি ঐ সময়েই বাইসাইকেল, মটর সাইকেল চালিয়েছি, অনুষ্ঠান শেষ করে অনেক রাতে বাসায় ফিরেছি। মেয়ে বলে হয়ত আমার পরিবার সিকুউরিটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হত, কিন্তু বিষয়টিকে খারাপ চোখে দেখতো না। আমি অনেক স্বাধীনভাবে বড় হয়েছি। পরিবারের উদার মানসিকতা দেখে বড় হয়েছি তাই সামাজিক অনেক কিছু নিয়ে নিজের ভেতরে কখনোই হীনমন্যতা টের পাইনি। বড় হওবয়র পর হোস্টেলে থাকাকালীন সময়ে আমি দেখেছি হোস্টেলে মেয়েরা যদি রাত করে ফিরত তখন মানুষেরা কেমন যেন চোখ করে তাকাতো। খারাপ মেয়ে বলে ধারণা করত। আমার পারিপার্শ্বিক কারণে এগুলোর প্রভাব আমার জীবনে পড়েনি, কিন্তু বেশিরভাগ মেয়ের জীবনেই কিন্তু এটা অনেক কিছু।
বাংলানিউজ : যুগের পরিবর্তনে অনেক অগ্রসর এখনকার মেয়েরা। প্রজন্মের ব্যবধানে বর্তমান সময়ে কি ধরণের সমস্যা টের পান?
মুনমুন আহমেদ : এখন সবার ভেতরে যত বেশি স্বাধীনতা কাজ করছে ঠিক ততটাই সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়তে দেখছি আচার আচরণে, রুচিবোধে এবং মননশীলতার দিক দিয়ে। নারী স্বাধীনতার নামে অনেকেকে পিছিয়ে যেতে দেখছি। এখন অভিভাবকেরা মেয়েদের নাচ শিখাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু ক্লাস সিক্স খুব বেশি হলে ক্লাস এইটে উঠার পর তারা সেটা বন্ধ করে দিচ্ছেন। বিভিন্নরকম সামাজিক উদ্বিগ্নতা থেকেই তারা মেয়েদের বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছেন। এছাড়াও মেয়েদের মধ্যে পোশাকের স্টাইল এবং চালচলন জনিত রুচিবোধের অভাববোধ এখন খুব করে চোখে পড়ে। তারা ওয়েস্টার্ন পোশাক হরহামেশা পড়ছে। কিন্তু পোশাকটা ঠিক কোথায় মানানসই সেটা বিবেচনা না করেই পড়ছে। কথাবার্তার ক্ষেত্রেও তাই। বাংলা কথা বলছে কিন্তু বলছে ওয়েস্টার্ন সুরে। স্বাধীনতার যেমন সঠিক মানে জানা উচিত, তেমনি এর সঠিক ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করি।
বাংলানিউজ : কখনো কি মনে হয়েছে ‘ঐ জিনিসটা’ যদি পেতাম তাহলে আরো অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারতাম?
মুনমুন আহমেদ : আমার এটা কখনোই মনে হয়নি। তখনকার দিনে অনেক সামাজিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও আমার পরিবার আমাকে সীমাহীন স্বাধীনতা দিয়েছে। এখন অনেক মেয়েকেই দেখি বাবাকে না বলে নাচ শিখতে আসে। তারা ভয় পায় এই ভেবে যে বাবা যদি জানতে পারে তাহলে নাচ বন্ধ করে দেবে। আমি নিজে সেটা কখনো অনুভব করিনি। নাচের ওপর স্কলারশীপ নিয়ে যখন বাইরে গেছি তখনো তারা সেটা অনুমোদন করেছেন। আমার কোন অপ্রাপ্তি নেই।

বাংলানিউজ : পেশাক্ষেত্রে কি এমন কোন প্রাপ্তি আছে যেটা শুধুমাত্র মেয়ে হওয়ার জন্যেই পেয়েছেন?
মুনমুন আহমেদ : এটা সত্যি যে আমাদের দেশে নৃত্যশিল্পী অধিকাংশই মেয়ে। সবক্ষেত্রেই তাদেরই প্রাধান্য। এই পেশায় আমি নিজে সবসময় যোগ্যতা দিয়ে আমার প্রাপ্য অর্জনের চেষ্টা করেছি। মিডিয়াতে অনেক সময় খেয়াল করেছি সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে থাকে পৃষ্ঠপোষকের ধৃষ্টতামূলক অনেক দাবি। আমি সেই সুযোগগুলোকে প্রচন্ড সৎসাহসের সাথে মাড়িয়ে চলে আসতে পারি। কারণ আমি মনে করি আমার শিক্ষার দ্বারা আমি নিজেই অনেক বেশি সমৃদ্ধ। কোন রকম অনৈতিক সুযোগ নেওয়ার কোন প্রয়োজন আমার নাই। কিন্তু সবাই তা পারে না। মিডিয়ার এই বিষয়টা মেয়েদের অনেক ভুগিয়ে থাকে।
বাংলানিউজ : শুধু নাচ নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে এখনকার মেয়েদের কোন গুণটি আয়ত্ত করতে হবে?
মুনমুন আহমেদ : প্রচুর চর্চা করতে হবে। চর্চার বিকল্প আর কিছু নেই। অল্পতেই পরিচিতি পাওয়ার লোভ সংবরণ করতে হবে। শিক্ষার ভীত মজবুত করতে হবে। সর্বোপরি এগিয়ে যেতে হবে সাহসিকতার সাথে।
বাংলানিউজ : প্রতিষ্ঠিত অনেক শিল্পী বলে থাকেন নৃত্যশিল্পকে আমাদের দেশে পেশা হিসাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নাই। এটা কি ঠিক?
মুনমুন আহমেদ : খুবই সত্যি কথা। সরকারীভাবে শিল্পকলায় বছরে দুচারটা নাচের প্রোগ্রাম হয়। প্রতি প্রোগ্রাম শেষে দুহাজার টাকার চেক ধরিয়ে দেন আয়োজকগণ। সেই টাকায় কি কারো সংসার চলে! সরকারী কিংবা বেসরকারী কোন টিভি চ্যানেলেই নাচের কোন মানসম্মত অনুষ্ঠান হয়না। নাচকে কেন্দ্র করে কোন সুন্দর পরিকল্পনা কারো মধ্যে নেই। একটা নাচকে পরিপূর্ণরুপে দাঁড় করাতে দরকার নৃত্যের নানারকম অনুসঙ্গ। সবকিছু মিলিয়ে নৃত্যকলা একটি ব্যয়বহুল মাধ্যম। অনুষ্ঠানে পারফর্মেন্সের জন্য কোন আয়োজকই সে অর্থে পারিশ্রমিক দেন না। আমি নিজেও এটিকে উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম হিসাবে নিতে পারিনি। অন্য খাত থেকে উপার্জন করে এখানে ঢালছি আর এভাবেই নাচকে টিকিয়ে রেখেছি। শুধু ভালবাসার কারণে, শ্রদ্ধার কারণে এই শিল্পের সাথে এখনো জড়িয়ে আছি।
বাংলানিউজ : আগামীতে নৃত্যশিল্পের কেমন সম্ভাবনা টের পান?
মুনমুন আহমেদ : আগামীতে শুধু কেন এখনো অনেক সম্ভবনা আছে। তবে সঠিক পৃষ্টপোষকতা দরকার এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে। এই খাতকে সবাই নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে। এভাবে চলতে থাকলে এটি একসময় ধংস হয়ে যাবে। আমরা প্রায়শ দেখি বেসরকারী টিভি চ্যানেল গুলোতে নাচের অনুষ্ঠান করা হয় মডেলদের নিয়ে। কোন রকম নাচের বেজ তাদের নেই। শুধু টানাহেঁচড়া জাতীয় শরীরি প্রদর্শন। এসব নাচ দেখে আমাদের অভিভাবকদের মধ্যেও এই শিল্পের প্রতি নোংরা ধারণা তৈরি হচ্ছে।  নাচের বডি টিউনিং না জেনে , কিভাবে দাঁড়াতে হয় তা না জেনে , ক্লাসিক বেজ না জেনে সবাই দেখি নাচ করে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন চ্যানেলে। এসব দেখে মানুষ এই শিল্পের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হচ্ছে। প্রোপার নাচের শিল্পীদের দ্বারা অনুষ্ঠান তৈরি করতে হবে।
বাংলানিউজ : এমন কোন কষ্টের স্মৃতি আছে কি যা শুধু মেয়ে বলেই আপনার সাথে ঘটেছে?
মুনমুন আহমেদ : অনেক ঘটেছে এবং এখনো প্রতিনিয়তই ঘটে। আমি অনেক কিছু পছন্দ করার পরও করতে পারিনা হয়ত শুধু মেয়ে বলেই। কে কি ভাবছে সেটা হয়ত তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুনা তারপরেও যখন দেখি আপনজন সেটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তুা করছে তখন মনের বিরুদ্ধে হলেও সেকাজ করতে পারিনা। আমি সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করি, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। হঠাৎ কোন কোন দিন মনে হয় দুরের কোন বাস ধরে কোথাও চলে যেতে। দু-তিন দিন পর হয়ত ফিরে আসব। মনের বিরুদ্ধে যেতে হয়।  সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করি কিন্তু অনেক কারণেই একা একা গিয়ে দেখা সম্ভব হয়ে উঠেনা। এগুলো মাঝেমাঝে কষ্ট দেয়। জবাবদিহিতার একটা বিষয় মনের ভেতর থেকেই যায়।
তানভীর তারেকের কম্পোজিশনে গাইলেন কৈলাশ খের
বিনোদন প্রতিবেদক
‘বুকের ভেতর সারাবেলা, তোমার আরাধনা, কখনও করিনা হিসেব, পাবো কি পাবো না’, এই গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে অভিষেক হল তানভীর তারেকের। গেল সপ্তাহে মুম্বাইয়ের ব্রাদার্স স্টুডিওতে তানভীর তারেকের কম্পোজিশনে গানটিতে কণ্ঠ দেন কৈলাশ খের। অনন্য মামুনের পরিচালনায় বিরাজ ফিল্মসের ব্যানারে ‘কাছে এসে ভালোবেসো’ চলচ্চিত্রের টাইটেল সং এটি।
কৈলাশ খেরের কন্ঠে প্রথম প্লেব্যাক প্রসঙ্গে তানভীর তারেক বলেন,‘এটা তো নিঃসন্দেহে আমার ক্যারিয়ারের জন্য বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট। অডিওতে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা থেকেই এবারে ফিল্মে কাজ শুরু করা। ইচ্ছা বা স্বপ্ন ছিল অনেকদিনের। কিন্তু ভাল একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। এই চলচ্চিত্রের আরো তিনটি গান করছি, কিন্তু আমার প্রথম প্লেব্যাক কম্পোজিশনে ভয়েস দিলেন কৈলাশ খের প্রথম। যা আমার নিজের জন্য অনেক বড় একটা সুখের সংবাদ। গানটি আমার নিজের স্টুডিও সেলিব্রিটি সাউন্ডল্যাব এ প্রায় ১০ দিন ধরে কম্পোজিশন করেছি। আশা করি শ্রোতাদের ভাল লাগবে।’ গানটি প্রসঙ্গে অনন্য মামুন বলেন,‘অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছে দেশে এত শিল্পী থাকতে কেন কৈলাশ খের, সেই প্রশ্নের উত্তরেই বলি, ছবিটি যেহেতু দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে বাংলাদেশ ও কলকাতায় রিলিজ দেয়া হবে, সেই কারনেই দুই দেশের শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা। আর তানভীর তারেকের কম্পোজিশন আমার বরাবরই ভাল লাগে। সেদিক দিয়ে গানটিতে ভিন্নতা আনার জন্যই নতুন একজন কম্পোজারকে আমরা সুযোগ দিলাম। গানটি একেবারে সুফি-রক ধারার এই গানটি তৈরি হয়েছে। আশা করি সব ধরনের শ্রোতার গানটি ভাল লাগবে।’ বিরাজ ফিল্মস সূত্রে জানা গেছে, কৈলাশ খেরের গানটি সহ পুরো অ্যালবামের অডিও ট্র্র্যাক রিলিজ হবে এবছরের বন্ধু দিবস উপলক্ষে আগস্টে। উল্লেখ্য, গেল বছর সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে সেরা সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে পুরস্কৃত হন তানভীর তারেক। চলচ্চিত্রে এবছর অভিষেক হলেও সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে বাজারে তার সুরে ২২টি অ্যালবাম রয়েছে। যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল শিল্পী গান গেয়েছেন।
হুইটনি হিউস্টনের নীরব প্রেম ফাঁস!
প্রীতি ওয়ারেছা
হলিউড মিউজিক ডিভা হুইটনি হিউস্টন। সান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে হুইটনির দীর্ঘদিনের গোপন প্রেমের কথা। ট্র্যাজিক হুইটনি হিউস্টনের সাথে প্রয়াত পপসিঙ্গার মাইকেল জ্যাকসনের ভাই জারমেইন জ্যাকসনের মধ্যে একটি নিবিড় স্নিগ্ধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল । ব্যক্তিগত জীবনে তখন জারমেইন জ্যাকসন ছিলেন একজন বিবাহিত পুরুষ। মাইকেল জ্যাকসন থেকে শুরু করে তাদের দুজনেরই খুব কাছের জনেরা জানতেন এই সম্পর্কের কথা। তবে জারমেইন বিবাহিত হওয়ায় কেউই বিষয়টাকে প্রকাশ্যে অনুমোদন করেননি। পপজুটি হুইটনি-জারমেইন দুজনেই ভীষনভাবে চেয়েছিলেন বিয়ে করে একে অন্যের হতে। হুইটনির মৃত্যুর পর জারমেইনকে ভীষনরকম বিষাদগ্রস্থ ও বিমর্ষ হয়ে পড়তে দেখা যায়। যার কারণে এই পপতারকা নিউজার্সিতে অনুষ্ঠিত হুইটনির শেষকৃর্ত্যরে অনুষ্ঠানেও যোগ দিতে পারেননি। হুইটনি হিউস্টন তার সুপারহিট গান ‘অল মাই লাভ সেভিং ফর ইউ’ গানটিতে তাদের দুজনের গোপন প্রেমের নান্দনিক অভিব্যক্তিরই প্রকাশ ঘটিয়েছেন বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি তার মিউজিক ভিডিওতে হুইটনি এমন একজনকে দিয়ে পারফর্ম করিয়েছেন যিনি দেখতে একদম জারমেইনের মত। জারমেইনের স্ত্রীর কারণে গোপন প্রেম নিয়ে ভীষন লুকোচুরি করেছেন এই প্রেমিকযুগল। সময়ের ব্যবধানে একসময় তাদের সম্পর্কের গাঢ়তা অস্তমিত হয়ে এসেছিল কিন্তু মানসিকভাবে তারা দুজনে নিজেদের হাত কখনো ছাড়েননি। ১৯৬৩ সালের ৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করা পপ সিঙ্গার হুইটনি হিউস্টন গত ১১ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৮ বছর বয়সে হোটেলরুমে বাথটাবের পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্নর কন্ঠী এই গায়িকা একাধারে একজন অভিনেত্রী ও মডেল সেইসাথে সিনেমা প্রযোজনা, রেকর্ড প্রযোজনা, গান রচনা এবং আরো বহুবিধ গুনে গুণান্বিত একজন শিল্পী ছিলেন। আর সবার মত অকাল প্রয়াত এই শিল্পীর জীবনেও ছিল নানা গোপনীয় বিষয়। হুইটনির প্রয়ানের সাথে সাথে গোপনেই চলে গেল গোপন সেই প্রেম।
শুরু হচ্ছে ‘নাচো বাংলাদেশ নাচো’
বিনোদন প্রতিবেদক

স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গ্রাম টেলিমিডিয়া’র যৌথ আয়োজনে আজ থেকে বাংলাভিশনে শুরু হতে যাচ্ছে নাচ বিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘ম্যাঙ্গোলি নাচো বাংলাদেশ নাচো’। মূল বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ, অভিনেত্রী মেহের অফরোজ শাওন এবং চিত্রনায়ক ফেরদৌস। প্রাথমিক পর্যায়ে বিচারক হিসেবে থাকবেন নৃত্যাঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। ‘নাচের প্রতি আমাদের ছেলে মেয়েদের আগ্রহ আরো বাড়ানোর জন্যই ম্যাঙ্গোলি নাচো বাংলাদেশ নাচো’ বললেন বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান শামীম শাহেদ। ‘প্রায় পনেরো হাজারের বেশি ছেলেমেয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাদের আগ্রহ এবং অংশগ্রহণ সবার ভালো লাগবে।’ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবান বিভিন্ন নৃত্যশিল্পীদের বাছাই করে বাছাই পর্বগুলো নিয়ে শুরু হচ্ছে এই ডান্স রিয়েলিটি শো। বাছাই পর্বগুলোতে উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন তানিয়া হোসাইন। শাহানূর খান রিপনের পরিচালনায় প্রতিযোগিতার প্রথম বিজয়ী পাবেন ৫ লক্ষ নগদ টাকার সঙ্গে একটি সোনার মুকুট। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবেন ৩ লক্ষ নগদ টাকার সঙ্গে একটি সোনার মুকুট। তৃতীয় বিজয়ী পাবেন ১ লক্ষ নগদ টাকা এবং ৪র্থ ও ৫ম স্থান অধিকারী দু’জন পাবেন ২৫ হাজার টাকা করে। ৬ মার্চ থেকে প্রতি মঙ্গল ও বুধবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাভিশনে প্রচারিত হবে ‘ম্যাঙ্গোলি নাচো বাংলাদেশ নাচো’।