নিউজ ডেস্ক
হায় হায় কোম্পানি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তা ও কর্ণধারদের ওপর নজরদারিসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ করেছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি গোয়েন্দা সংস্থা। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অর্থ পাচার, প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে এসব অভিযোগের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানির সব ধরনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সরকারের তত্ত্বাবধানে নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ সাত পরিচালকের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কোম্পানিটির প্রতারণা ও জালিয়াতির খবর প্রকাশের পর এর কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইল এলাকার বিভিন্ন অফিসে গত কয়েকদিন ধরে ডেসটিনির কর্মীদের আনাগোনা কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন জেলার অফিসগুলোতেও একই চিত্র। কোম্পানির প্রতারক কর্মীদের এখন অনেকটা ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। কথিত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিটির অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) নির্দেশে সমবায় অধিদফতর থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পৃথকভাবে এসব কমিটি গঠন করা হয়। সমবায় অধিদফতরের অতিরিক্ত নিবন্ধক (প্রশাসন) অমিয় কুমার চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ঢাকা জেলা সমবায় অফিসার গালিব খান, যুগ্ম-সমবায় নিবন্ধক খন্দকার সিরাজুল ইসলাম, উপ-নিবন্ধক ভবেশ মিত্র ও মেট্রোপলিটন সমবায় অফিসার মোঃ শহিদুজ্জামান। সমবায় অধিদফতরের কমিটিকে সব অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে, দুদক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন— দুদক উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিক। মঙ্গলবার দুদক কমিশনার এম বদিউজ্জামান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ডেসটিনির অর্থ পাচারসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য গঠিত কমিটিকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলেই সমবায় অধিদফতর, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেসটিনির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মঙ্গলবার একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা ডেসটিনি গ্রুপের মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের ৮টি বিষয় নিয়ে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে একটি সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির ওই প্রতিবেদনে ডেসটিনির সঙ্গে জড়িত প্রায় সব কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়। কর্মকর্তারা হলেন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চ্যোরম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন, সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ গোফরানুল হক, পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ সাঈদ উর রহমান, পরিচালক (ক্রয়) মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, পরিচালক (প্রশাসন) সাকিবুজ্জামন। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে যে ৮টি বিষয়ের ওপর তদন্ত করা হয়েছে সে সম্পর্কে বেশ কিছু বর্ণনা রয়েছে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই আমানত সংগ্রহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি লাখ লাখ গ্রাহককে মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা করে আমানত নিয়ে ১২ বছর পর ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, যা ব্যাংকিং কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি ছাড়া এ ধরনের আমানত সংগ্রহ করা বেআইনি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না থেকেও শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা নিয়মবহির্ভূত ও অন্যায়। সমবায় অধিদফতরে নিবন্ধিত হওয়ার কারণে সমবায় অধিদফতরের আইন অনুযায়ী সদস্যদের মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে অর্থ তুলে ব্যবসা করা যায় বলা হলেও প্রকৃত অর্থে তারা অর্থ তুলেছে সদস্যদের মাধ্যমে সমবায় অধিদফতরের আইন দেখিয়ে। কিন্তু সমবায় অধিদফতরের আইন অনুযায়ী ওই অর্থ যে ব্যবসায় লগ্নিকৃত হবে সেখানকার প্রশাসনিক ও তদারকিতে সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত না করে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো পরিচালনা ও তদারকি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের সব জামানত ও পুঁজি ৪০ লাখ সদস্যের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। অথচ সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ দিয়ে কোম্পানির সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জমিজমা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও হাতেগোনা কয়েকজনের নামে ক্রয় করা হয়েছে। এটা সদস্যদের সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ হাজার টাকা করে একটি গাছ ক্রয় করে ১২ বছর পর গাছের পরিবর্তে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে বলে প্রতিষ্ঠানটি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। মূলত তারা যতজন ব্যক্তির কাছ থেকে গাছ লাগানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছে সেই পরিমাণ গাছ তারা লাগায়নি। বনায়নও করেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরকার থেকে অন্য ব্যক্তির নামে লিজকৃত জমিতে লাগানো কিছু গাছ তারা তাদের বলে প্রচার করে জনসাধারণকে ধোঁকা দিয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন জেলায় গাছ লাগানোর নামে জমি ক্রয় করে তারা তাদের ডেসটিনি ডেভেলপার কোম্পানির কাজে লাগাচ্ছে। গাছ লাগানোর কথা বলে মূলত তারা আমানত সংগ্রহ করেছে। সাধারণভাবে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের পদ্ধতিগত আইন এড়ানোর জন্য এটি ছিল তাদের এক ধরনের কৌশল। গাছ বা গাছের শিকড় আমদানির নামেও চরম ধোঁকাবাজি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা সদস্যদের বিভিন্ন ভুল তথ্য প্রদান করে প্রতারিত করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা জাপান ও চীন থেকে আমদানিকৃত ‘পাওলিনিয়া’ গাছের শিকড় আমদানি করে সদস্যদের মধ্যে বিক্রয় করে। ওই শিকড় ক্রেতাকে বলা হয়, প্রতিদিন গাছটি এক ইঞ্চি করে বাড়বে। ৬ বছরে একটি গাছ প্রায় ১৮৩ থেকে ১৮৫ ফুট লম্বা হবে। বিক্রি করে তিনি পাবেন দেড় লাখ টাকারও বেশি। এ গাছ আগুনে পোড়ে না এমনকি ঘুণেও ধরে না। এটি তাদের প্রতারণার আরেকটি কৌশল। প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষকে সদস্য হওয়ার শর্তে ফেলে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত অত্যন্ত নিম্নমানের দ্রব্যাদি অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে বিক্রয় করছে। অস্বাভাবিকভাবে বর্ধিত ওই মূল্য থেকে আবার কমিশন বের করছে। এভাবে শুভংকরের ফাঁকির মাধ্যমে জনসাধারণকে আয়ের পথে এনে বেকার সমস্যা দূর করেছে বললেও প্রকৃত অর্থে তারা সদস্যদের নিয়মের জালে ফেলে নিম্নমানের দ্রব্য কিনতে বাধ্য করেছে। অন্যদিকে একজনের কাছ থেকে দ্রব্যের বিনিময়ে অর্থ অকারণে বর্ধিতহারে গ্রহণ করে অন্যজনকে দিয়ে বেকার সমস্যা দূর করার কথা বলে তাদের মুনাফা তুলে নিচ্ছে। প্রতিবেদনের শেষভাগে মতামত অংশে বলা হয়েছে, ডেসটিনির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭০ লাখ ব্যক্তি ও তাদের আমানতের ভাগ্য জড়িত থাকায় তাদের বিষয়ে এখনই ভাবতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ, বাণিজ্যিক ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন, প্রতিষ্ঠিত ও নির্ভরযোগ্য একাধিক চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম, দুদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কার্যক্রম তাদের সংগৃহীত আমানত ও স্থাবর সম্পত্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। তার আগ পর্যন্ত ডেসটিনি ও তার সব অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ সাত পরিচালকের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে সহযোগী ১০ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডির কাছে পাঠানো আলাদা চিঠিতে সন্দেহভাজন পরিচালকদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এনবিআরে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডেসটিনি গ্রুপের আয়-ব্যয়ের যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজস্ব বোর্ড। এরই মধ্যে ডেসটিনি গ্রুপের আয়কর ফাইল তলব করা হয়েছে। সমবায় সমিতির আইনে ডেসটিনি গ্রুপের বেআইনি কর সুবিধার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।
ঢাবির ৪৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি
প্রযুক্তি ও গবেষণাকে মানুষের
কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম নিবিড় ও সম্প্রসারণ করতে হবে। গবেষণার ফলাফল দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাদপিঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম জাতি গভীর আগ্রহ সহকারে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তাই এখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা সার্বজনীন। তবে মত প্রকাশ প্রক্রিয়া যাতে কোনোভাবেই সহিংস আকার ধারণ না করে, তা নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও পরমত সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ছাত্র সমাজ জাতির চালিকাশক্তি, জাতির আশা-আকাক্সক্ষা এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার অবলম্বন। স্বাধীনতার ইতিহাসে ছাত্র সমাজের রয়েছে গৌরবময় অবদান। তারা ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বিপুল অবদান রেখেছেন। তাদের আন্দোলন ও আত্মত্যাগের পথ বেয়েই অর্জিত হয়েছে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। এর মধ্যদিয়ে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাদৃপ্ত মানুষের সম্মিলন ঘটে এবং আগামী দিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সুদৃঢ় অঙ্গীকারে অনুপ্রাণিত করে। নবীন গ্র্যাজুয়েটরা এ সত্য হƒদয়ে ধারণ করে এ সমাবর্তন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় জীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যথাযথ অবদান রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সমাবর্তনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাসচিব প্যাস্টেল ল্যামিকে ডক্টর অব লজ সম্মাননা ডিগ্রি প্রদান করা হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে কার্জন হল থেকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা। সমাবর্তনে অংশ নিতে আসা স্নাতকদের পদচারণায় সকাল থেকেই মুখর হয়ে উঠে গোটা ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথগুলোতে বসানো হয় তোরণ। জিমনেসিয়াম মাঠজুড়ে বিশাল সামিয়ানা। বেলুন, ফেস্টুনসহ বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল সমাবর্তনস্থল। নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবারের সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভাগ ও ইনস্টিটিউট ছাড়াও এর অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটের ১৬ হাজার ৬৭৩ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, ১০০ জনকে পিএইচডি এবং ৫৩ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেয়া হবে। এছাড়া মেধাবী ফলাফলের স্বীকৃতি হিসাবে ৪১ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে ৪৩টি স্বর্ণপদক। উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সকালে বলেন, শিক্ষার্থী ও অতিথিসহ প্রায় ২০ হাজার লোকসমাগম হচ্ছে সমাবর্তনে। স্নাতক ও অতিথিদের উপস্থিতির দিক দিয়ে এবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হচ্ছে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্র“য়ারি প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৪৫তম সমাবর্তন হয়েছিল ২০০৯ সালে।
হায় হায় কোম্পানি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তা ও কর্ণধারদের ওপর নজরদারিসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ করেছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি গোয়েন্দা সংস্থা। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অর্থ পাচার, প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে এসব অভিযোগের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানির সব ধরনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সরকারের তত্ত্বাবধানে নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ সাত পরিচালকের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কোম্পানিটির প্রতারণা ও জালিয়াতির খবর প্রকাশের পর এর কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইল এলাকার বিভিন্ন অফিসে গত কয়েকদিন ধরে ডেসটিনির কর্মীদের আনাগোনা কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন জেলার অফিসগুলোতেও একই চিত্র। কোম্পানির প্রতারক কর্মীদের এখন অনেকটা ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। কথিত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিটির অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) নির্দেশে সমবায় অধিদফতর থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পৃথকভাবে এসব কমিটি গঠন করা হয়। সমবায় অধিদফতরের অতিরিক্ত নিবন্ধক (প্রশাসন) অমিয় কুমার চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ঢাকা জেলা সমবায় অফিসার গালিব খান, যুগ্ম-সমবায় নিবন্ধক খন্দকার সিরাজুল ইসলাম, উপ-নিবন্ধক ভবেশ মিত্র ও মেট্রোপলিটন সমবায় অফিসার মোঃ শহিদুজ্জামান। সমবায় অধিদফতরের কমিটিকে সব অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে, দুদক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন— দুদক উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিক। মঙ্গলবার দুদক কমিশনার এম বদিউজ্জামান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ডেসটিনির অর্থ পাচারসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য গঠিত কমিটিকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলেই সমবায় অধিদফতর, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেসটিনির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মঙ্গলবার একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা ডেসটিনি গ্রুপের মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের ৮টি বিষয় নিয়ে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে একটি সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির ওই প্রতিবেদনে ডেসটিনির সঙ্গে জড়িত প্রায় সব কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়। কর্মকর্তারা হলেন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চ্যোরম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন, সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ গোফরানুল হক, পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ সাঈদ উর রহমান, পরিচালক (ক্রয়) মেজবাহ উদ্দিন স্বপন, পরিচালক (প্রশাসন) সাকিবুজ্জামন। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে যে ৮টি বিষয়ের ওপর তদন্ত করা হয়েছে সে সম্পর্কে বেশ কিছু বর্ণনা রয়েছে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই আমানত সংগ্রহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি লাখ লাখ গ্রাহককে মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা করে আমানত নিয়ে ১২ বছর পর ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, যা ব্যাংকিং কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি ছাড়া এ ধরনের আমানত সংগ্রহ করা বেআইনি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না থেকেও শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা নিয়মবহির্ভূত ও অন্যায়। সমবায় অধিদফতরে নিবন্ধিত হওয়ার কারণে সমবায় অধিদফতরের আইন অনুযায়ী সদস্যদের মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে অর্থ তুলে ব্যবসা করা যায় বলা হলেও প্রকৃত অর্থে তারা অর্থ তুলেছে সদস্যদের মাধ্যমে সমবায় অধিদফতরের আইন দেখিয়ে। কিন্তু সমবায় অধিদফতরের আইন অনুযায়ী ওই অর্থ যে ব্যবসায় লগ্নিকৃত হবে সেখানকার প্রশাসনিক ও তদারকিতে সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত না করে প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো পরিচালনা ও তদারকি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের সব জামানত ও পুঁজি ৪০ লাখ সদস্যের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। অথচ সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ দিয়ে কোম্পানির সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জমিজমা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও হাতেগোনা কয়েকজনের নামে ক্রয় করা হয়েছে। এটা সদস্যদের সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ হাজার টাকা করে একটি গাছ ক্রয় করে ১২ বছর পর গাছের পরিবর্তে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে বলে প্রতিষ্ঠানটি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। মূলত তারা যতজন ব্যক্তির কাছ থেকে গাছ লাগানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছে সেই পরিমাণ গাছ তারা লাগায়নি। বনায়নও করেনি। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরকার থেকে অন্য ব্যক্তির নামে লিজকৃত জমিতে লাগানো কিছু গাছ তারা তাদের বলে প্রচার করে জনসাধারণকে ধোঁকা দিয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন জেলায় গাছ লাগানোর নামে জমি ক্রয় করে তারা তাদের ডেসটিনি ডেভেলপার কোম্পানির কাজে লাগাচ্ছে। গাছ লাগানোর কথা বলে মূলত তারা আমানত সংগ্রহ করেছে। সাধারণভাবে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের পদ্ধতিগত আইন এড়ানোর জন্য এটি ছিল তাদের এক ধরনের কৌশল। গাছ বা গাছের শিকড় আমদানির নামেও চরম ধোঁকাবাজি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা সদস্যদের বিভিন্ন ভুল তথ্য প্রদান করে প্রতারিত করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা জাপান ও চীন থেকে আমদানিকৃত ‘পাওলিনিয়া’ গাছের শিকড় আমদানি করে সদস্যদের মধ্যে বিক্রয় করে। ওই শিকড় ক্রেতাকে বলা হয়, প্রতিদিন গাছটি এক ইঞ্চি করে বাড়বে। ৬ বছরে একটি গাছ প্রায় ১৮৩ থেকে ১৮৫ ফুট লম্বা হবে। বিক্রি করে তিনি পাবেন দেড় লাখ টাকারও বেশি। এ গাছ আগুনে পোড়ে না এমনকি ঘুণেও ধরে না। এটি তাদের প্রতারণার আরেকটি কৌশল। প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষকে সদস্য হওয়ার শর্তে ফেলে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত অত্যন্ত নিম্নমানের দ্রব্যাদি অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে বিক্রয় করছে। অস্বাভাবিকভাবে বর্ধিত ওই মূল্য থেকে আবার কমিশন বের করছে। এভাবে শুভংকরের ফাঁকির মাধ্যমে জনসাধারণকে আয়ের পথে এনে বেকার সমস্যা দূর করেছে বললেও প্রকৃত অর্থে তারা সদস্যদের নিয়মের জালে ফেলে নিম্নমানের দ্রব্য কিনতে বাধ্য করেছে। অন্যদিকে একজনের কাছ থেকে দ্রব্যের বিনিময়ে অর্থ অকারণে বর্ধিতহারে গ্রহণ করে অন্যজনকে দিয়ে বেকার সমস্যা দূর করার কথা বলে তাদের মুনাফা তুলে নিচ্ছে। প্রতিবেদনের শেষভাগে মতামত অংশে বলা হয়েছে, ডেসটিনির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭০ লাখ ব্যক্তি ও তাদের আমানতের ভাগ্য জড়িত থাকায় তাদের বিষয়ে এখনই ভাবতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ, বাণিজ্যিক ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন, প্রতিষ্ঠিত ও নির্ভরযোগ্য একাধিক চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম, দুদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কার্যক্রম তাদের সংগৃহীত আমানত ও স্থাবর সম্পত্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। তার আগ পর্যন্ত ডেসটিনি ও তার সব অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন। অন্যদিকে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যানসহ সাত পরিচালকের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে সহযোগী ১০ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডির কাছে পাঠানো আলাদা চিঠিতে সন্দেহভাজন পরিচালকদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এনবিআরে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডেসটিনি গ্রুপের আয়-ব্যয়ের যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজস্ব বোর্ড। এরই মধ্যে ডেসটিনি গ্রুপের আয়কর ফাইল তলব করা হয়েছে। সমবায় সমিতির আইনে ডেসটিনি গ্রুপের বেআইনি কর সুবিধার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।
ঢাবির ৪৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি
প্রযুক্তি ও গবেষণাকে মানুষের
কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম নিবিড় ও সম্প্রসারণ করতে হবে। গবেষণার ফলাফল দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পাদপিঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম জাতি গভীর আগ্রহ সহকারে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তাই এখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা সার্বজনীন। তবে মত প্রকাশ প্রক্রিয়া যাতে কোনোভাবেই সহিংস আকার ধারণ না করে, তা নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও পরমত সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ছাত্র সমাজ জাতির চালিকাশক্তি, জাতির আশা-আকাক্সক্ষা এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার অবলম্বন। স্বাধীনতার ইতিহাসে ছাত্র সমাজের রয়েছে গৌরবময় অবদান। তারা ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বিপুল অবদান রেখেছেন। তাদের আন্দোলন ও আত্মত্যাগের পথ বেয়েই অর্জিত হয়েছে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। এর মধ্যদিয়ে জ্ঞান ও প্রজ্ঞাদৃপ্ত মানুষের সম্মিলন ঘটে এবং আগামী দিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সুদৃঢ় অঙ্গীকারে অনুপ্রাণিত করে। নবীন গ্র্যাজুয়েটরা এ সত্য হƒদয়ে ধারণ করে এ সমাবর্তন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় জীবনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যথাযথ অবদান রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সমাবর্তনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাসচিব প্যাস্টেল ল্যামিকে ডক্টর অব লজ সম্মাননা ডিগ্রি প্রদান করা হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে কার্জন হল থেকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা। সমাবর্তনে অংশ নিতে আসা স্নাতকদের পদচারণায় সকাল থেকেই মুখর হয়ে উঠে গোটা ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথগুলোতে বসানো হয় তোরণ। জিমনেসিয়াম মাঠজুড়ে বিশাল সামিয়ানা। বেলুন, ফেস্টুনসহ বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল সমাবর্তনস্থল। নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবারের সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভাগ ও ইনস্টিটিউট ছাড়াও এর অধিভুক্ত কলেজ ও ইনস্টিটিউটের ১৬ হাজার ৬৭৩ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, ১০০ জনকে পিএইচডি এবং ৫৩ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেয়া হবে। এছাড়া মেধাবী ফলাফলের স্বীকৃতি হিসাবে ৪১ জন শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে ৪৩টি স্বর্ণপদক। উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সকালে বলেন, শিক্ষার্থী ও অতিথিসহ প্রায় ২০ হাজার লোকসমাগম হচ্ছে সমাবর্তনে। স্নাতক ও অতিথিদের উপস্থিতির দিক দিয়ে এবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হচ্ছে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্র“য়ারি প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৪৫তম সমাবর্তন হয়েছিল ২০০৯ সালে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির নেতৃত্বে আগামী ১১ ও ২৫ এপ্রিল সারাদেশের উপজেলা-জেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে চারদলীয় জোট ও সমমনা দলগুলো। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১১ এপ্রিল এবং হত্যা-গুম-খুন ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে ২৫ এপ্রিল বিক্ষোভ করবে বিরোধীদল। তবে গত দু’-তিন দিন ধরে দলীয় পরিমণ্ডলে ৪ এপ্রিল হরতাল দেয়া হচ্ছে বলে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো সে বিষয়ে কিছুই বলেননি ফখরুল। এদিকে বিরোধীদলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকেল তিনটা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। কাকরাইল মোড় থেকে বিজয়নগর মোড় পর্যন্ত তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না যেন। যানচলাচলও বন্ধ হয়ে যায় নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায়।
গত ১২ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে নানান প্রতিবন্ধকতা তৈরির প্রতিবাদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে ২৯ মার্চ দেশব্যাপী যে হরতাল ঘোষণা করা হয়েছিল তারই পরিবর্তিত কর্মসূচি হিসেবে বিএনপি এ বিক্ষোভ পালন করে। বিকেল তিনটার পর ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সমাবেশে পালাক্রমে বিএনপি, চারদলীয় জোট ও সমমনা দলগুলোর নেতারা বক্তৃতা করেন। একে একে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এটিএম মাকসুদ, ঢাকা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নগর জাগপা সভাপতি আসাদুজ্জামান সম্রাট প্রমুখ।
গত ১২ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে নানান প্রতিবন্ধকতা তৈরির প্রতিবাদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে ২৯ মার্চ দেশব্যাপী যে হরতাল ঘোষণা করা হয়েছিল তারই পরিবর্তিত কর্মসূচি হিসেবে বিএনপি এ বিক্ষোভ পালন করে। বিকেল তিনটার পর ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সমাবেশে পালাক্রমে বিএনপি, চারদলীয় জোট ও সমমনা দলগুলোর নেতারা বক্তৃতা করেন। একে একে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এটিএম মাকসুদ, ঢাকা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নগর জাগপা সভাপতি আসাদুজ্জামান সম্রাট প্রমুখ।
সুশীল বাবুদের সরকার দেশের প্রয়োজন বুঝবে না: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উচ্চ মার্গের সুশীল বাবুদের সরকার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের কী প্রয়োজন- তা উড়ে এসে জুড়ে বসা দল জানবে না। গতকাল শনিবার গণভবনে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউই এ দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝবে না।
সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পক্ষে যুক্তি দিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বরাবরই অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখার কথা উল্লেখ করেছিল। দেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের উৎপাদন না বাড়ানোয় বিগত সরকারগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চমার্গের ব্যক্তিরা ক্ষমতায় থেকেও একটু বিদ্যুৎ বাড়াতে পারেনি। তারা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে দেশে আতংক সৃষ্টি করলো। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করলো। মুরগি মারা থেকে শুরু করে সব কিছুই করলো তারা। শত বছরের পুরনো বাজার ভাঙলো। সব অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ করলো। সাগরে তেল-গ্যাসের ব্লক নির্ধারণ নিয়েও চার দলীয় জোট সরকারের ও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উচ্চ মার্গের সুশীল বাবুদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারও এর ধারাবাহিকতা রাখলো। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাকি আছে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ। এর রায় হবে ২০১৪ সালে। জনগণ যদি আবার আমাদের ভোট দেয়। তাহলে, আমরা রায় আমাদের পক্ষে আনবো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমরা কয়েকটি কঠিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমরা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একতাবদ্ধ থাকলে কেউ পেরে ওঠে না। গোলাম আযমও নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে পারেনি। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরোধীদলের আসনে বসানোয় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের মনমানসিকতা বুঝতে হবে। এখন তারা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বাঁচাতে চাইছে। কী কারণে বাঁচাতে চাইছে- তা খালিজ টাইমসেই বেড়িয়েছে। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। চলতি মাসের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের পত্রিকা খালিজ টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিল। অবশ্য বিএনপি এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে বলেছে- ওই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন। কোনো দল বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা মত বিনিময় অনুষ্ঠানে বলেন, যারা পরাজিত শক্তির কাছ থেকে টাকা নেয়, পরাজিত শক্তির এজেন্ট হিসাবে কাজ করে- তাদের দিয়ে দেশের মানুষের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব না। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, তখনকার সাংসদ শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টার এবং সাবেক সাংসদ মমতাজউদ্দিনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা যাতে না থাকে- সেজন্য তারা (বিএনপি-জামায়াত) সারাদেশে হত্যা শুরু করেছিল। বিরোধী দল নিজেদের লোককে ‘গুম করছে’ বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। টানা ৭৮ দিন অনুপস্থিতির পর বিএনপির সংসদে ফেরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদস্য পদ ও বেতন-ভাতা রক্ষার জন্যই তারা সংসদে এসেছিলেন। গত ১৮ মার্চ বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দলীয় সাংসদরা অধিবেশনে যোগ দেয়ার পর বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এক সাংসদের বক্তব্যে আধিবেশনে হাতাহাতির উপক্রম হয়। বিএনপির সেই সাংসদের বক্তব্য ও আচরণের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা মত বিনিময় সভায় বলেন, এতো অশ্লীল ভাষায় একজন মহিলা কথা বলতে পারে- সেটা ভাবাই যায় না। গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, কাজী জাফর উল্যাহ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ ও দীপু মনি, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সাবেক সেনা প্রধানকে এম শফিউল্লাহ। নারায়ণগঞ্জ জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ছাড়াও জেলার চারজন সাংসদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী এবং আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উচ্চ মার্গের সুশীল বাবুদের সরকার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের কী প্রয়োজন- তা উড়ে এসে জুড়ে বসা দল জানবে না। গতকাল শনিবার গণভবনে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউই এ দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝবে না।
সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পক্ষে যুক্তি দিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বরাবরই অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখার কথা উল্লেখ করেছিল। দেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের উৎপাদন না বাড়ানোয় বিগত সরকারগুলোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চমার্গের ব্যক্তিরা ক্ষমতায় থেকেও একটু বিদ্যুৎ বাড়াতে পারেনি। তারা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে দেশে আতংক সৃষ্টি করলো। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করলো। মুরগি মারা থেকে শুরু করে সব কিছুই করলো তারা। শত বছরের পুরনো বাজার ভাঙলো। সব অদ্ভুত অদ্ভুত কাজ করলো। সাগরে তেল-গ্যাসের ব্লক নির্ধারণ নিয়েও চার দলীয় জোট সরকারের ও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উচ্চ মার্গের সুশীল বাবুদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারও এর ধারাবাহিকতা রাখলো। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাকি আছে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ। এর রায় হবে ২০১৪ সালে। জনগণ যদি আবার আমাদের ভোট দেয়। তাহলে, আমরা রায় আমাদের পক্ষে আনবো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমরা কয়েকটি কঠিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমরা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একতাবদ্ধ থাকলে কেউ পেরে ওঠে না। গোলাম আযমও নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে পারেনি। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরোধীদলের আসনে বসানোয় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের মনমানসিকতা বুঝতে হবে। এখন তারা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বাঁচাতে চাইছে। কী কারণে বাঁচাতে চাইছে- তা খালিজ টাইমসেই বেড়িয়েছে। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। চলতি মাসের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের পত্রিকা খালিজ টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিল। অবশ্য বিএনপি এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে বলেছে- ওই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন। কোনো দল বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা মত বিনিময় অনুষ্ঠানে বলেন, যারা পরাজিত শক্তির কাছ থেকে টাকা নেয়, পরাজিত শক্তির এজেন্ট হিসাবে কাজ করে- তাদের দিয়ে দেশের মানুষের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব না। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, তখনকার সাংসদ শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টার এবং সাবেক সাংসদ মমতাজউদ্দিনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা যাতে না থাকে- সেজন্য তারা (বিএনপি-জামায়াত) সারাদেশে হত্যা শুরু করেছিল। বিরোধী দল নিজেদের লোককে ‘গুম করছে’ বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। টানা ৭৮ দিন অনুপস্থিতির পর বিএনপির সংসদে ফেরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সদস্য পদ ও বেতন-ভাতা রক্ষার জন্যই তারা সংসদে এসেছিলেন। গত ১৮ মার্চ বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দলীয় সাংসদরা অধিবেশনে যোগ দেয়ার পর বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এক সাংসদের বক্তব্যে আধিবেশনে হাতাহাতির উপক্রম হয়। বিএনপির সেই সাংসদের বক্তব্য ও আচরণের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা মত বিনিময় সভায় বলেন, এতো অশ্লীল ভাষায় একজন মহিলা কথা বলতে পারে- সেটা ভাবাই যায় না। গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, কাজী জাফর উল্যাহ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ ও দীপু মনি, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সাবেক সেনা প্রধানকে এম শফিউল্লাহ। নারায়ণগঞ্জ জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ছাড়াও জেলার চারজন সাংসদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী এবং আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
গ্যাস সমস্যায় সংকটে শিল্পখাত
সিদ্দিকুর রহমান
গ্যাস সমস্যার কারণে চলতি বছর দেশের শিল্পখাতে সংকট আরো বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে চলতি বছর গ্যাস সমস্যার কারণে দেশে ৩০ শতাংশ শিল্প-উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সমস্যার কারণে দেশের রি-রোলিং মিলগুলোতে উৎপাদন প্রায় ৬০ শতাংশ কম হচ্ছে। গার্মেন্ট খাতে উৎপাদন কম হচ্ছে ২০ শতাংশের বেশি। গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চলতি অর্থবছরে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ না হওয়ার আশংকা রয়েছে। গত অর্থবছরে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। শিল্প মন্ত্রণালয় ও এফবিসিসিআই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং এন্ড স্টিল মিলস এসোসিয়েশন সূত্রে বলা হয়েছে, দেশে যেসব স্টিল ও রি-রোলিং মিল রয়েছে তাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮০ লাখ টন। কিন্তু গ্যাস সমস্যার কারণে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৪০ শতাংশ। বিকেএমইএ ও বিজেএমইএ সূত্রে বলা হয়েছে, গ্যাস এবং সেইসাথে বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে তাদের উৎপাদনও ২০ শতাংশের বেশি ব্যাহত হচ্ছে। তবে দেশে গ্যাস সমস্যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সার শিল্প। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুরো উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সচল রাখার জন্য ইউরিয়া সারের কাঁচামাল গ্যাস বেশি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সরবারহ করার কারণে সার উৎপাদন মারাÍভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সচল রাখার জন্য বিদ্যুতের পিক সিজনে কর্ণফুলি সার কারখানার উৎপাদন সাধারণত বন্ধ রাখা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে ইউরিয়ার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সংকট না থাকলে এবার দেশে ১৫ লাখ টন ইউরিয়া উৎপাদন করা যেতো। বর্তমানে ১১ লাখ টনের মতো ইউরিয়া উৎপাদন হয়। দেশে ইউরিয়ার চাহিদা হচ্ছে ২৮ লাখ ৩১ হাজার টন। ঘাটতি মেটাতে ১৬ লাখ টনের বেশি ইউরিয়া আমদানি করতে হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্রে বলা হয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রণে মোট ৮টি সার কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কারখানায় ইউরিয়া সার কারখানা। বিসিআইসি’র এই ৬টি ইউরিয়া সার কারখানার মধ্যে বর্তমানে আশুগঞ্জ, পলাশ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা উৎপাদনে রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (আইসিসিবি) সূত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শিল্প প্রবৃদ্ধির জন্য জ্বালানীর প্রধান উৎস হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। গ্যাস সমস্যার কারণে শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ২৫০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২০০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এফবিসিসিআই’র জয়েন্ট সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান মুকুল বলেছেন, গ্যাস সংকটের কারণে দেশে শিল্প উৎপাদন কি পরিমানে ব্যাহত হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে সঠিক হিসাব জানার জন্য এফবিসিসিআই’র সদস্যদের কাছে সার্কুলার পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে হিসাব আছে তা ধারণা ভিত্তিক। তিনি বলেন, সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন অনেক ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই প্রস্তাবনা প্রণয়ন করে সরকারের কাছে পেশ করেছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে বলা হয়েছে, দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানীর ৭৫ ভাগ পূরণ করে গ্যাস। এ যাবৎ আবিস্কৃত মোট গ্যাস ক্ষেত্রের সংখ্যা ২৩টি। এসব গ্যাস ক্ষেত্র সমূহের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমান ২৮ দশমিক ৮৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং প্রাথমিক উত্তোলনযোগ্য মজুদের পরিমান ২০ দশমিক ৬০৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে তা বাদ দিলে প্রায় ১১ দশমিক ৮০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নীট মজুদ রয়েছে। বর্তমানে দেশে ১৭টি গ্যাসক্ষেত্রের ৭৯টি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- তিতাস (১৪টি কূপ), বাখরাবাদ (৪টি কূপ), হবিগঞ্জ (৯টি কূপ), রশিদপুর (৫টি কূপ), কৈলাশটিলা (৬টি কূপ), সিলেট (১টি কূপ), নরসিংদী (২টি কূপ), সালদানদী (২টি কূপ), সাঙ্গু (৬টি কূপ), জালালাবাদ (৪টি কূপ), মৌলভীবাজার (৪টি কূপ), বিবিয়ানা (১২টি কূপ), বিয়ানীবাজার (২টি কূপ), ফেঞ্চুগঞ্জ (২টি কূপ), ফেনী (১টি কূপ), বাঙ্গুরা (৪টি কূপ) এবং শাহবাজপুর (১টি কূপ)। ২০১১-১২ অর্থবছরে গ্যাসের চাহিদা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩২৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঘনফুট, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৬৪ বিলিয়ন ঘনফুট, সার উৎপাদনে ৯৪ বিলিয়ন ঘনফুট, শিল্পে ১৮৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট, বাণিজ্যিক কাজে ১০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট, গৃহাস্থলী কাজে ১১১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ঘনফুট, চা বাগানে ১ বিলিয়ন ঘনফুট, সিএনজি খাতে ৫১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ঘনফুট, সিস্টেম লস ২০ বিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে গ্যাসের মোট চাহিদা হবে ৯৬২ বিলিয়ন ঘনফুট। চলতি অর্থবছরে গ্যাসের মোট চাহিদা হচ্ছে ৮৭২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট। বছরে গ্যাসের চাহিদা প্রতিবছর বাড়ছে। এ কারণে আগামী ৩ বছরের মধ্যে গ্যাস সংকটের সুরাহা হওয়ার সমভাবনা কম। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর বক্তব্য- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আরো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। এসব বিনিয়োগ এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এ খাতের উন্নয়নে সরকার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে হাত দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় গত ৩ বছরে গ্যাসের উৎপাদন দৈনিক ৩শ’ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিদ্দিকুর রহমান
গ্যাস সমস্যার কারণে চলতি বছর দেশের শিল্পখাতে সংকট আরো বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে চলতি বছর গ্যাস সমস্যার কারণে দেশে ৩০ শতাংশ শিল্প-উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সমস্যার কারণে দেশের রি-রোলিং মিলগুলোতে উৎপাদন প্রায় ৬০ শতাংশ কম হচ্ছে। গার্মেন্ট খাতে উৎপাদন কম হচ্ছে ২০ শতাংশের বেশি। গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চলতি অর্থবছরে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ না হওয়ার আশংকা রয়েছে। গত অর্থবছরে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। শিল্প মন্ত্রণালয় ও এফবিসিসিআই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং এন্ড স্টিল মিলস এসোসিয়েশন সূত্রে বলা হয়েছে, দেশে যেসব স্টিল ও রি-রোলিং মিল রয়েছে তাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮০ লাখ টন। কিন্তু গ্যাস সমস্যার কারণে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৪০ শতাংশ। বিকেএমইএ ও বিজেএমইএ সূত্রে বলা হয়েছে, গ্যাস এবং সেইসাথে বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে তাদের উৎপাদনও ২০ শতাংশের বেশি ব্যাহত হচ্ছে। তবে দেশে গ্যাস সমস্যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সার শিল্প। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুরো উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সচল রাখার জন্য ইউরিয়া সারের কাঁচামাল গ্যাস বেশি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সরবারহ করার কারণে সার উৎপাদন মারাÍভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সচল রাখার জন্য বিদ্যুতের পিক সিজনে কর্ণফুলি সার কারখানার উৎপাদন সাধারণত বন্ধ রাখা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে ইউরিয়ার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সংকট না থাকলে এবার দেশে ১৫ লাখ টন ইউরিয়া উৎপাদন করা যেতো। বর্তমানে ১১ লাখ টনের মতো ইউরিয়া উৎপাদন হয়। দেশে ইউরিয়ার চাহিদা হচ্ছে ২৮ লাখ ৩১ হাজার টন। ঘাটতি মেটাতে ১৬ লাখ টনের বেশি ইউরিয়া আমদানি করতে হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্রে বলা হয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রণে মোট ৮টি সার কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কারখানায় ইউরিয়া সার কারখানা। বিসিআইসি’র এই ৬টি ইউরিয়া সার কারখানার মধ্যে বর্তমানে আশুগঞ্জ, পলাশ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা উৎপাদনে রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (আইসিসিবি) সূত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শিল্প প্রবৃদ্ধির জন্য জ্বালানীর প্রধান উৎস হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। গ্যাস সমস্যার কারণে শিল্পের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ২৫০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২০০০ মিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এফবিসিসিআই’র জয়েন্ট সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান মুকুল বলেছেন, গ্যাস সংকটের কারণে দেশে শিল্প উৎপাদন কি পরিমানে ব্যাহত হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে সঠিক হিসাব জানার জন্য এফবিসিসিআই’র সদস্যদের কাছে সার্কুলার পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত যে হিসাব আছে তা ধারণা ভিত্তিক। তিনি বলেন, সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন অনেক ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই প্রস্তাবনা প্রণয়ন করে সরকারের কাছে পেশ করেছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে বলা হয়েছে, দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানীর ৭৫ ভাগ পূরণ করে গ্যাস। এ যাবৎ আবিস্কৃত মোট গ্যাস ক্ষেত্রের সংখ্যা ২৩টি। এসব গ্যাস ক্ষেত্র সমূহের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমান ২৮ দশমিক ৮৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং প্রাথমিক উত্তোলনযোগ্য মজুদের পরিমান ২০ দশমিক ৬০৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে তা বাদ দিলে প্রায় ১১ দশমিক ৮০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নীট মজুদ রয়েছে। বর্তমানে দেশে ১৭টি গ্যাসক্ষেত্রের ৭৯টি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- তিতাস (১৪টি কূপ), বাখরাবাদ (৪টি কূপ), হবিগঞ্জ (৯টি কূপ), রশিদপুর (৫টি কূপ), কৈলাশটিলা (৬টি কূপ), সিলেট (১টি কূপ), নরসিংদী (২টি কূপ), সালদানদী (২টি কূপ), সাঙ্গু (৬টি কূপ), জালালাবাদ (৪টি কূপ), মৌলভীবাজার (৪টি কূপ), বিবিয়ানা (১২টি কূপ), বিয়ানীবাজার (২টি কূপ), ফেঞ্চুগঞ্জ (২টি কূপ), ফেনী (১টি কূপ), বাঙ্গুরা (৪টি কূপ) এবং শাহবাজপুর (১টি কূপ)। ২০১১-১২ অর্থবছরে গ্যাসের চাহিদা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩২৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঘনফুট, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৬৪ বিলিয়ন ঘনফুট, সার উৎপাদনে ৯৪ বিলিয়ন ঘনফুট, শিল্পে ১৮৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট, বাণিজ্যিক কাজে ১০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট, গৃহাস্থলী কাজে ১১১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ঘনফুট, চা বাগানে ১ বিলিয়ন ঘনফুট, সিএনজি খাতে ৫১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ঘনফুট, সিস্টেম লস ২০ বিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে গ্যাসের মোট চাহিদা হবে ৯৬২ বিলিয়ন ঘনফুট। চলতি অর্থবছরে গ্যাসের মোট চাহিদা হচ্ছে ৮৭২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘনফুট। বছরে গ্যাসের চাহিদা প্রতিবছর বাড়ছে। এ কারণে আগামী ৩ বছরের মধ্যে গ্যাস সংকটের সুরাহা হওয়ার সমভাবনা কম। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর বক্তব্য- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আরো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। এসব বিনিয়োগ এলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এ খাতের উন্নয়নে সরকার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে হাত দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় গত ৩ বছরে গ্যাসের উৎপাদন দৈনিক ৩শ’ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘পাপমুক্তির’ øানে লাখো মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে শুরু হয়ে গেল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র মহাষ্টমী øানোৎসব। তিথি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৮টা ১৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ডে øানের লগ্ন শুরু হয়। পুণ্যার্থীরা ফুল, বেলপাতা, ধান-দুর্বা, ডাব ও আমের পাতাসহ বিভিন্ন উপাচার নিয়ে মন্ত্র পড়ে শুরু করেন পাপমুক্তির øান। শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড পর্যন্ত অষ্টমী øানের লগ্ন ছিল।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই পুণ্যার্থীদের ঢল নামে লাঙ্গলবন্দে। মুখরিত হয়ে ওঠে লাঙ্গলবন্দের দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা। গতকাল সকালেও বাস-মিনিবাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকায় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা øানোৎসবে আসেন। উৎসব উদযাপন কমিটি আশা করছে, এবার দুই লাখের বেশি পুণ্যার্থী এই øানে অংশ নেন। লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী øানোৎসব উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা বলেন, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা ও তিব্বত থেকেও বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী উৎসবে এসেছেন। উদযাপন কমিটির কর্মকর্তারা জানান, রাজঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, জয়কালী ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, বড় দেবেশ্বরী ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদী ঘাট, বাসনকালি ঘাট, জগদ্ববন্ধু ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মাকরী সাধুর ঘাট ও ললিত সাধুর ঘাট- এই ১৪টি ঘাটে এবার øান চলে পুণ্যার্থীদের। হিমালয় থেকে লাঙ্গলবন্দ: হিন্দু পুরাণ মতে, মহামুনি জš§দগ্নির আদেশে পুত্র পরশুরাম মা রেনুকাকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। মাকে হত্যার শাস্তি হিসাবে কুঠার তার হাতেই লেগে থাকে। অনেক তপস্যা আর হিমালয়ে ব্রহ্মপুত্রের জলে øান করার পর পরশুরামের পাপ মুক্ত হয়। হাত থেকে খসে পড়ে কুঠার। এরপর ব্রহ্মপুত্রের সেই পবিত্র জল মর্ত্যরে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পরশুরাম তার কুঠারটিকে লাঙ্গলের মতো করে টানতে টানতে পর্বত থেকে ব্রহ্মপুত্রের ধারা নিয়ে আসেন সমভূমিতে। অনেক দিন পর নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে এসে থামে তার লাঙ্গলরূপী কুঠার। ওই এলাকার নাম হয় লাঙ্গলবন্দ।
নতুন কৌশলে বাংলাদেশ ব্যাংক
মো. রেজাউর রহিম
দেশের ব্যাংকিং খাতের কার্যক্রম তদারকিতে কৌশলগত পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের সার্বিক অবস্থা তদারকি শুরু করা হচ্ছে। এজন্য ডেস্কে অফসাইট এবং মাঠ পর্যায়ে অনসাইট উভয় পরিদর্শনের ক্ষেত্রে সুপারভিশন আরো উন্নত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নজরদারির অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ের সুপারভাইজারদের মাধ্যমে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সে আলোকে ব্যাংকিং সুপারভিশনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছে। জানা গেছে, এ সভায় ব্যাংকিং সুপারভিশনের বিষয়গুলোকে আরো সমন্বিত করা এবং সুপারভিশনের একটি নতুন কাঠামো তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ কাঠামোর আওতায় ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত ঝুঁকি এবং ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সুশাসন ও নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া- বিশেষ করে এসব ঝুঁকি মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। গত ২০১১ সালে জাতীয় ভাবে ঢাকায় এবং পরবর্তীতে সম্প্রতি চট্টগ্রামে একটি হল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাগুলোতে এব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের সুপারভাইজারদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের আঞ্চলিক অফিসগুলোতেও এ সভা করা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম সুপারভিশনের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ঋণ ঝুঁকি, তারল্য ঝুঁকি, বাজার ঝুঁকি, পরিচালন ঝুঁকিসহ সকল ধরনের ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ এবং তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এসবের গভীরতা নির্ণয় ও ঝুঁকি প্রশমনের জন্যে কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন এবং ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশন কার্যকর এবং সুনিপুণভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্র“ডেন্সিয়াল রেগুলেশনগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ‘ব্যাসেল কোর প্রিন্সিপ্যাল ফর ইফেক্টিভ ব্যাংকিং সুপারভিশন’ (বিএসবিসি) পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর আর্থিক সুস্থতা এবং স্থিতিশীলতায় মূলধন পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এজন্য ব্যাসেল-২ নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং আগামীতে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ব্যাসেল-২ নীতিমালা মোতাবেক ব্যাংকগুলোকে তাদের ঝুঁকিভিত্তিক স¤পদের ১০ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ব্যাংকগুলো এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ ১১.৩৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণে সক্ষম হয়েছে। তিনি জানান, ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের হার বর্তমানে সর্বনিু (৬.১২ শতাংশ) পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে গত এক বছরে ব্যাংকিং খাতে আমানত প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ এবং ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ব্যাংকিং খাতে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৯৪৬ কোটি টাকা। অপরদিকে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৬৫০ কোটি টাকা। তারল্য পরিস্থিতিও এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। এছাড়া বর্তমানে আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজারে কলমানি সুদের ভারিত গড় হার ১১.৯০ শতাংশ এবং বৈদেশিক মুদ্রাবাজারেও স্থিতিশীলতা রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তারল্যের গতিধারা পরিমাপ ও ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদারেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ব্যয় ৩ হাজার কোটি টাকা
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উতক্ষেপণে চুক্তি স্বাক্ষরিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালের (এসপিআই) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গত বৃহস্পতিবার বিটিআরসি কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ এবং এসপিআইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্র“শ ক্রেসেলসকি। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা এবং বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিটিআরসি সূত্রে বলা হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআই এর কাঠামো তৈরি, গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবস্থাপনা, বাজার মূল্যায়ন, স্যাটেলাইট বাজারজাতকরণ এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সব প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআইকে দিতে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। বিটিআরসি এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে কক্ষপথের ১০২ ডিগ্রি পূর্বে স্লট চেয়েছে। তবে বিটিআরসির এই স্লট আবেদনে আপত্তি জানিয়েছে ১৮টি দেশ। এসপিআই এসব দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে এর সমাধান করবে। বিটিআরসি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে পরামর্শক চেয়ে দরপত্র আহ্বান করলে প্রায় ৩৩টি প্রতিষ্ঠান এক্সপেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) জমা দেয়। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার সাতটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত দর প্রতিযোগিতায় মনোনীত করা হয়। তাদের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত প্রস্তাব যাচাইয়ের পর ওই সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এসপিআইকে নির্বাচিত করা হয়। এরপর এসপিআইকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি মন্ত্রিসভার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদনসহ সব প্রক্রিয়া শেষ হয়।
উল্লেখ্য, দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ, টেলিফোন, রেডিও বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গুণতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু করতে পারলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হবে না, সেই সঙ্গে অব্যবহƒত অংশ নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রচুর অর্থ আয় করা যাবে।
মৌলিক চাহিদা পূরণের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে
অনিশ্চিত জীবন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ছিটমহলবাসীকে
মাসুদুর রহমান স্বপন
দেশ বিভাগের পর সৃষ্টি হওয়া ছিটমহলগুলোর মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অতীতের সরকারগুলো সমস্যাগুলোর সমাধান না করায় সমস্যার পাহাড় কেবল বড়ই হয়েছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান করে নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন এসব ছিটমহলের মানুষ। বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে ভারতের ১১১টি এবং সীমান্তের ওপারে ভারতের জলপাইগুড়ি ও কুচবিহার জেলায় বাংলাদেশের ৫৩টি ছিটমহলের অবস্থান। এসকল ছিটমহলে একটিও পাকা রাস্তা নেই। একটি পাকা ঘর চোখে পড়ে না, স্কুল ও হাসপাতাল নেই। খোলা মাঠে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। গোসল করে খোলা আকাশের নিচে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, পানিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষের সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোথাও। প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় মারাÍক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এসব মানুষ। তবে সম্প্রতি ছিটমহলবাসী তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার আদায়ে ব্যাকুল ছিটমহলবাসী মহান স্বাধীনতা দিবসে পঞ্চগড় জেলাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের হাজার হাজার বাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। এসব ছিটমহলের অধিবাসী ছিটমহলগুলোকে বাংলাদেশী হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছে। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ছিটমহলের চেয়ারম্যানরা ছিটমহলের প্রত্যেকটি বাড়িতে সকাল থেকে বাংলাদেশী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দেশভাগের পর থেকেই অনিশ্চিত জীবন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৬৪ ছিটমহলের হাজার হাজার মানুষকে। যুগযুগ ধরে রাষ্ট্রীয়, প্রশাসনিক ও নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষের নূন্যতম মৌলিক চাহিদা পূরণের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দুই দেশের সিদ্ধান্তহীনতা এসব মানুষের সমস্যার পাহাড় কেবল বৃদ্ধি করেই চলেছে। আইনি জটিলতায় উন্নয়ন সংস্থাগুলো ছিটমহলগুলোতে ঢুকতে পারে না। ফলে মানবসম্পদ উন্নয়ন বা জীবনমান উন্নয়নের কোন কর্মসূচিও নেই এখানে। ছিটমহলগুলোর শিশুদের অধিকাংশই লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আর যারা লেখাপড়া করে তারা লুকিয়ে বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে যাতায়ত করে। মিথ্যে ঠিকানা ব্যবহার করে তাদের স্কুলে ভর্তি হতে হয়। কিন্তু একটা পর্যায়ে ধরা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় তাদের লেখাপড়া। আর ফাঁকি দিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করলেও নাগরিকত্বের প্রশ্নে তারা পারছেনা কোন সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে। ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে দু’দেশের ছিটমহলবাসীরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। ১২ মার্চ দিনহাটায় অনশন শুরু করেন ছিটমহলের ৮ জনসহ পশ্চিমবঙ্গ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহ-সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত। অনশনকারী ছিটমহলের বাসীন্দাদের প্রত্যেকের গড় বয়স ৬৫ থেকে ৭৫ বছর। এর মধ্যে ৮ জন ১৯ মার্চ গুরুতর অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা ড. রক্তিম দাশ বলেন, ‘প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তারা অনশন করে যাচ্ছেন। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। তিনি আরো বলেন, একই অবস্থা বাংলাদেশেও। সেখানেও ৩০ জন অনশন করছেন। আমরা ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি পরবর্তীতে মনমোহন-হাসিনা চুক্তির আলোকে এর সমাধান চাই। এটা মানবধিকারের প্রশ্ন। অহেতুক একটা মহল থেকে জমির ইস্যু তোলা হচ্ছে। জমি যদি সরকারের হয়, তাহলে মানুষও তো সরকারের। তাহলে তাদের দায় কেন নেওয়া হবে না’।
কলকাতার একটি সূত্র জানায়, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ফোরাম। বুধবার কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে তারা এই সংহতি জ্ঞাপন করেন। এদিনের এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিপলস ফোরামের ভারতীয় অংশের সম্পাদক মানিক সমাজদার, পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি সত্যব্রত চৌধুরী, সহ-সভাপতি দীলিপ রায়, ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা ড. রক্তিম দাশ প্রমুখ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এদিন, বাংলাদেশে অবস্থিত পুঁটিমারি ছিটমহল ও কোচবিহারের দিনহাটা শহরের সংহতি ময়দানে ছিটমহল বিনিময়েরর দাবিতে আমরণ অনশনরত আন্দোলনকারীদের প্রতি সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য আবেদন করা হয়। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহল বালাপাড়া-কোটভাজিনি এলাকার বাসিন্দারা বাংলাদেশ সময়কে জানান, দিন দুপুরে এখানে খুনোখুনি হলেও বিচারের কোন ব্যবস্থা নেই। কোন ঘটনা ঘটলে বিচার-শালিসে বসলেও বিচারের রায় কেউ মানেন। ফলে প্রতিটি ছিটমহলে ইউনিয়ন পরিষদের আদলে নাগরিক কমিটি গড়ে উঠলেও তা খুব বেশি কার্যকর নয় । এদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসনের সূত্র উদ্ধৃত করে কলকাতা থেকে বিবিসি সংবাদদাতা জানিয়েছেন ভারতের কোচবিহারে বাংলাদেশের ছিটমহলগুলোতে গত সপ্তাহে অনশনরত আটজনকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’দেশের ছিটমহলবাসীরা এখনও বলছেনÑ দাবি আদায়ে তাদের এই অনশন আমরণ, কিন্তু ছিটমহল বিনিময় বাস্তবায়নে ভারত সরকার কতটা উদ্যোগী? সীমান্তের ওপারের নানা সূত্রে জানা গেছে, একাধিক বিষয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের ওপরে চটে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থায় নতুন একটি সমস্যা আর তৈরি করতে চাইছে না কংগ্রেস। তবে তিস্তা চুক্তির মতো এই প্রোটোকলও বাস্তবায়িত হতে দেবেন নাÑ এমন কোনো কথা কিন্তু প্রকাশ্যে বলেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। চলতি অধিবেশনে আগামী এক মাসের মধ্যেই প্রোটোকলটি সংসদে পেশ করা হবে বলে কংগ্রেসেরই একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে।
ছিটমহলগুলো দুই দেশের অধীন হলেও সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রা ব্যবস্থা সেখানে চালু নেই। আয়তনের ক্ষেত্রে ছোট্ট ছোট্ট হওয়ায় তাদের বাজার ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ বা ভারতীয় হাট বাজারগুলোই তাদের ভরসা। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের কৃষি নিয়ে। কৃষিই ছিটমহলের মানুষের জীবীকার প্রধান উৎস্য হলেও রাষ্ট্রের পক্ষে বীজ-সার-ডিজেলের সহায়তা পায়না তারা। সংগ্রহ করতে হয় চুরি করে। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা স্বীকার করেন, জেলা পর্যায়ে সরকার যে বীজ সার ডিজেল বরাদ্দ দেয়, তাই চোরাই পথে যায় ছিটমহলগুলোতে। জেলা কৃষি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা যখন চাহিদাপত্র তৈরী করি তখন ছিটমহলগুলো হিসেবে ধরা হয়না। অথচ জেলা পর্যায়ে পাওয়া বরাদ্দ থেকে বীজ-সার ডিজেল যায় ছিটমহলগুলোতে।
বিশ্বব্যাপী অনুন্নত দেশগুলোতে জীবনমান উন্নয়নে জাতীয়, আন্তর্জাতিক, স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও কাজ করলেও ছিটমহলগুলোতে এসব সংস্থার কোন কার্যক্রম নেই। উন্নয়ন গবেষক আলাউদ্দিন আলী বলেন, আর্ন্তজাতিক আইন অমান্য করে এসব অঞ্চলে উন্নয়ন কর্মীরা ঢুকতে পারে না। এ বিষয়টি নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন। ভৌগলিকভাবে সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোর অভ্যন্তরে ছিটমহলগুলোর অবস্থান। কিন্তু এ নিয়ে কোন ভূমিকাই পালন করতে পারেনা জেলা, উপজেলা, পুলিশ, স্বাস্থ্যসহ সরকারের কোন বিভাগ। সংশ্লিষ্ট প্রশাসকরা জানান, রাষ্ট্রীয়ভাবে উভয়দেশের উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যা সমাধানের কোন এখতিয়ার জেলা প্রশানের নেই। এমনকি কোন দূর্যোগ-দুর্বিপাকেও তাদের সহযোগিতার সামান্য সুযোগটিও নেই।
নাগরিক অধিকার প্রয়োগের প্রাথমিক যোগ্যতা হলো নিজ এলাকায় ভোটার হওয়া। ছিটমহলগুলোর বাসিন্দাদের ভোটার হবার দাবি দীর্ঘ দিনের। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশের ৫৩টি ছিটমহলের অধিবাসীকে ভোটার করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেবার কুড়িগ্রাম সীমান্তের ওপারে ৮টি ছিটমহলের অধিবাসীকে ভোটার করার পর সে প্রক্রিয়া থমকে যায়। বাংলাদেশের ভেতরের ১১১টি ছিটমহল নিয়ে কখনই ভাবেনি উভয় দেশ। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের চতুর্থ ধাপে ছিটমহলের বাসিন্দাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তামক চাষ নিরুৎসাহিতকরণের উদ্যোগ মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন নেই
এইচআর সাগর
তামাক চাষ নিরুৎসাহিতকরণের উদ্যোগ কোন কাজে আসছে না। মাটি ও ফসলের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষ বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জানা সত্ত্বেও বেশি লাভের আশায় তামাক চাষ করছেন কিছু এলাকার চাষী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবার অন্তত ১৫ জেলায় ৪৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। তবে বেসরকারি সংস্থার হিসেবে, তামাক চাষের পরিমান এর চেয়ে অনেক বেশি। জনস্বাস্থ্য ও জমির জন্য ক্ষতিকারক তামাক চাষ বন্ধে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। অবশ্য কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাপক প্রচারণাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়েছে অধিদফতর। তবে মাঠ পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন নেই
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসানুল হক পান্না বলেন, ‘তামাক চাষ থেকে চাষীদের বিরত রাখতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা ও করণীয় প্রদান করা হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করা হলে অনেক চাষী নিজ থেকে তামাক চাষ থেকে সরে আসবেন। তিনি আরও বলেন, তামাকের জমিতে উন্নত জাতের ফসল চাষ করে সমান আয় হলে কৃষক নিজে থেকেই এ চাষ বন্ধ করে দেবেন। আমরা সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি’।
মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, চলতি মৌসুমে ৪৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু লালমনিরহাট জেলায় ৫ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। এসব জমিতে আগে আলুসহ অন্যান্য ফসলের চাষ হতো। এছাড়াও নীলফামারি জেলায় ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর, মেহেরপুরে ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ২ হাজার হেক্টর, মানিকগঞ্জে ১ হাজার ২৬৬ হেক্টর, খাগড়াছড়িতে ৬৮০ হেক্টর, বান্দরবানে ৩ হাজার ১৯০ হেক্টর, চট্টগ্রামে ৩৮ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ৭৩০ হেক্টর, ঝিনাইদহে ১ হাজার ২১৫ হেক্টর, রাঙামাটিতে ২৭৫ হেক্টর, রংপুরে ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর, টাঙ্গাইলে ৯৫ হেক্টর, কক্সবাজারে ১ হাজার ৫৫ হেক্টর ও দিনাজপুরে ৩১ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পদস্থ কৃষি কর্মকর্তা জানান, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তারা চাষ এলাকাও পরিবর্তন করছেন। আগে কম জনবসতিপূর্ণ পাহাড়ী এলাকায় তামাক চাষ বেশি হতো। এখন লোকালয়ে তামাক চাষ শুরু হয়েছে। তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেন, আগে পার্বত্য তিন জেলা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে তামাক চাষ বেশি হতো। এখন লালমনিরহাট ও নীলফামারির মতো কৃষি এলাকায় তামাক চাষ হচ্ছে। এমনকি ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলাতেও তামাক চাষ হচ্ছে।
এদিকে কৃষি অধিদফতরের সম্প্রতি জারি করা এক চিঠিতে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বলা হয়েছে- তামাক গাছের শিকড় মাটির গভীর থেকে খাদ্য গ্রহণের ফলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে, তামাক চাষে অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তামাক চাষের ফলে তামাক থেকে উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎপাদিত তামাক পাতা শুকিয়ে তা দিয়ে তামাকজাত পণ্য তৈরি করা হয়। তামাক পাতা শুকাতে প্রয়োজন হয় বড় আকারের বিশেষ ধরনের চুল্লি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০০ কেজি কাঁচা তামাক পাতা শুকাতে বিপুল পরিমাণ কাঠ পোড়াতে হয়। এগুলো পোড়ানোর সময় নির্গত ধোঁয়ায় মারাÍকভাবে দূষিত হয় পরিবেশ। এ সময় এর আশপাশ দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর কার্বনসহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাস দূষিত ও গরম করে বায়ুমণ্ডলকে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর যে পরিমাণ গাছ কাটা হয় তার প্রায় এক চতুর্থাংশই পোড়ানো বা ব্যবহার করা হয় কেবল তামাক পাতা শুকানোর জন্য।
তামাক চাষ বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলেও কৃষকের নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর। গত ২০ ফেব্র“য়ারি মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তামাক চাষের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাষীদের বিকল্প লাভজনক ফসল চাষের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক তামাক চাষের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব ও উচ্চ মূল্যের ফসল চাষের দিকে ঝুঁকতে হবে সকলকে। তামাক চাষের পরিবর্তে মৌসুমী ফসল চাষের ব্যবস্থা নেয়া, উচ্চ মূল্যের ফসলের চাষ বাড়ানো, পরিবর্তিত আবহাওয়ায় সম্ভাবনাময় শস্য বিন্যাসের পরিবর্তন আনা, তামাকের পরিবর্তে দানা জাতীয় ফসল যেমন গম, ভূট্টা, কাউন ও চিনার চাষ করা, তামাক চাষ এলাকায় সাথী ফসলসহ আখ, আলু, গাজর, টমেটো চাষ করা, ডাল জাতীয় ফসল মুগ, মশুর ও খেসারী এবং তেল জাতীয় ফসল সরিষা, তিল ও তিসির চাষ করা এবং বিভিন্ন ফুল ও সবজির চাষ করা যেতে পারে।
তামাক চাষ বন্ধে জনসচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। সেগুলো হচ্ছে-রেডিও ও টিভিতে জারি ও সারিগান প্রচার, স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্কানুষ্ঠান করা, দেয়ালে দেয়ালে তামাকের কুপ্রভাব প্রচার করা, বাজারে-বন্দরে তামাকের বিরুদ্ধে নাটক-নাটিকা মঞ্চায়ন, লিফলেট ও পোষ্টার সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে বিতরণ করা, ধুমপান বিরোধী আইনকে কার্যকর করার ব্যাপারে জোর পদক্ষেপ নেয়া ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের ফিলার তৈরি করে জনাকীর্ণ স্থানে প্রচার করা। তবে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিদফতর থেকে এধরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন নেই। অধিদফতর কিংবা কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে এ সংক্রান্ত কেবল চিঠি-সার্কুলার জারি করেই দায়িত্ব শেষ করছে। পর্যাপ্ত উপকরণ না পাওয়া ও কৃষি কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে এ বিষয়ে এখনো তেমন কোনো প্রচারণামূলক কর্মসূচি কার্যকর করা হয়নি। তদারকিরও কোনো নজির নেই।
৩০ লাখ মানুষ পান করছে দূষিত পানি, ওয়াসার দাবি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে
রাজধানীর পানি সংকট তীব্র
সিদ্দিকুর রহমান
রাজধানীতে চলতি মার্চের মধ্যেই পানি সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তার মধ্যে সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্টের সরবরাহকৃত পানি পান করার অযোগ্য। রাজধানিতে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫০ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ করছে ২০৮ কোটি লিটার।
ওয়াসা সূত্রে বলা হয়েছে, এপ্রিল-মে-জুনে পানি সমস্যা আরো তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। মার্চের শুরু থেকে লোড শেডিং, লো-ভোল্টেজ বেড়ে যাওয়ায় ওয়াসার পানির পাম্পগুলো ঠিকভাবে পানি উত্তোলন করতে পারছে না। অপরদিকে গ্রাহক পর্যায়ে মোটরগুলোও ঠিকভাবে পানি টেনে পারছে না পানির রিজার্ভ ট্যাংক ভরতে। এমনিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতের দিনের চেয়ে পানির ব্যবহার ৩৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিন্তু পানির উৎপাদন শীতের দিনের চেয়ে ৫ শতাংশও বাড়েনি। এ অবস্থায় এখন রাজধানীর ৫০ শতাংশ মানুষ রয়েছে পানির সংকটে। এদিকে, রাজধানীর পূর্বাঞ্চালের ৩০ লাখের বেশি মানুষ প্রতিনিয়ত পান করে চলেছেন পানের অনুপযোগী সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্টের পানি। ওয়াসার সরবরাহকৃত এ পানি কাপড়ধোয়া পানির মতো কালচে ও ঘোলাটে এবং সেই সাথে দুর্গন্ধময়। ফুটালে এ পানিতে সাবানের মতো ফেনা জমে। ডেকচিতে অতিরিক্ত ময়লা-তলানি জমে। ফুটানোর পরও পানি কালচে ও দুর্গন্ধময় থেকে যায়। এ ধরণের পানি পান করে চলেছেন মালিবাগ, খিলগাও, বাসাবো, শাহজানপুর, কদমতলা, আহমদবাগ, মুগদা, মান্ডা, কমলাপুর, গোপীবাগ, গোলাপবাগ, ধলপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ৩০ লাখের বেশি মানুষ। পানের অযোগ্য এ দূষিত পানি পান করে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ডায়রিয়াসহ নানা ধরণের পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা রয়েছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। ওয়াসা ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের পানির সরবরাহের বড় অংশ আসে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার থেকে। এখানে শোধন করা হয় ডেমরা খালের পঁচা-দুর্গন্ধুক্ত প্রায় শোধন অযোগ্য সারফেস ওয়াটার। এ পানি শোধনাগারে শোধন করার পরও এর কালচেভাব দূর হয় না, দূর হয়না দুর্গন্ধ। এ পানিই সরবরাহ করা হয় এ অঞ্চলে। বর্ষাকালে ডেমরা খালের পানির দূষণের পরিমান কম থাকে। তাই সে সময়ে সরবরাহকৃত পানিতে দুর্গন্ধ থাকে না। কিন্তু দুর্গন্ধ শুরু হয় শীতকাল থেকে। মার্চ থেকে এ দুর্গন্ধ প্রকটরূপ নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এ অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল পরিবারগুলো পান করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত পানি কিনে থাকেন। কিন্তু সাধারণ পরিবার, নিু আয়ের মানুষ ও বস্তিবাসীদের সামর্থ নেই বোতলজাত পানি কেনার। তারা বাধ্য হয়ে পান অযোগ্য দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করছেন। ৫৭ কদমতলা নিবাসী গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমি ‘বাংলাদেশ সময়’-কে বলেন, ‘এখন ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি এত বেশি পরিমানে কালচে-ঘোলাটে ও দুর্গন্ধুক্ত যে, এ পানিতে হাত-মুখ ধুঁতেও ঘেন্না লাগে। তারপরও বাধ্য হয়ে এ পানিতে রান্না-বান্নার কাজ করতে হয়। এ পানি পান করে পরিবারের সদস্যদের পেটের পীড়া লেগে থাকায় এখন সবুজবাগ বৌদ্ধ মন্দির থেকে পানের জন্য ডিপ টিউবলের পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বাসাবো বালুর মাঠ সংলগ্ন চায়ের দোকানীরা বলেন, ‘ওয়াসার পানি দিয়ে চা জ্বাল দেয়া যায় না। পানিতে গুড়া সাবান গোলা পানির মতো ফেনা হয়। তাই চা তৈরির জন্য ডিপ টিউবলের পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে’।
এদিকে, ঢাকা ওয়াসা সূত্রে বলা হয়েছে, বর্ষা মৌসুম না আসা পর্যন্ত সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের পানির গুণগত মানের উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ প্রেক্ষাপটে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে, আগামীতে মেঘনা থেকে পানি এনে ট্রিটমেন্ট করা।
ঢাকা ওয়াসা বলছে, রাজধানীতে এখন প্রতিদিন পানির চাহিদা হচ্ছে ২১০ থেকে ২১৫ কোটি লিটার। কিন্তু বাস্তবে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫০ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ করছে ২০৮ কোটি লিটার। আবার ওয়াসার সরবরাহকৃত এ পানির মধ্যে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশই হচ্ছে সিস্টেম লস। কোনভাবেই এখন ঢাকা ওয়াসা পানির বর্ধিত চাহিদা মেটাতে পারছে না। সিস্টেম লস কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে খুবই শ্লথ গতিতে। বছরে সিস্টেম লস ২ শতাংশ হারেও কমছে না। চাহিদার বিপরীতে কম পানি উৎপাদন ও সরবরাহ এবং সেই সাথে পানির বড় ধরণের সিস্টেম লসের কারণে রাজধানীর পানি সংকট বাড়ছে। বিশেষত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানির চাহিদা বেশি থাকায় সে সময় পানি সংকট আরো তীব্র হয়ে ওঠে।
পানি সরবরাহ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৗশলী তাকসিম এ খান বলেন, বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা ৬০২টি গভীর নলকূপ ও ৪টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে দৈনিক ২১০ থেকে ২১৫ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে ২১০ থেকে থেকে ২১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২০৮ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা হচ্ছে। পানির চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে ঢাকা ওয়সা পানি উৎপাদন বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু সরবরাহের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। গত বছরের ১ ফেব্র“য়ারি থেকে চলতি বছরের ২৯ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৩০টি নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে এবং ৫৮টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন ও ১০টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা অর্থাৎ পানির পাম্পগুলো চালু রাখার উদ্দেশ্যে ২শ’টি স্থায়ী জেনারেটর কেনা হয়েছে। পানি জীবাণুমুক্ত করার লক্ষ্যে ক্লোরিনেশন করে সরবরাহ করার জন্য সম্প্রতি ১শ’টি পানির পাম্পে ক্লোরিনেশন সেট স্থাপন করা হয়েছে। গত ১ বছরে ৫৬.৬ কিলোমিটার নতুন পানির লাইন স্থাপন এবং ৪৪. ৮০ কিলোমিটার পানির লাইন পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১১টি ভিজিলেন্স টিম তৎপর রয়েছে। গত ৩ বছরে ঢাকা ওয়াসার সিস্টেম লস ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বৈশাখ রাঙাতে এলো ন্যান্সির ‘রঙ’
ফাহিম ফয়সাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে শুরু হয়ে গেল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র মহাষ্টমী øানোৎসব। তিথি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৮টা ১৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ডে øানের লগ্ন শুরু হয়। পুণ্যার্থীরা ফুল, বেলপাতা, ধান-দুর্বা, ডাব ও আমের পাতাসহ বিভিন্ন উপাচার নিয়ে মন্ত্র পড়ে শুরু করেন পাপমুক্তির øান। শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড পর্যন্ত অষ্টমী øানের লগ্ন ছিল।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই পুণ্যার্থীদের ঢল নামে লাঙ্গলবন্দে। মুখরিত হয়ে ওঠে লাঙ্গলবন্দের দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা। গতকাল সকালেও বাস-মিনিবাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকায় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা øানোৎসবে আসেন। উৎসব উদযাপন কমিটি আশা করছে, এবার দুই লাখের বেশি পুণ্যার্থী এই øানে অংশ নেন। লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী øানোৎসব উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা বলেন, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা ও তিব্বত থেকেও বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী উৎসবে এসেছেন। উদযাপন কমিটির কর্মকর্তারা জানান, রাজঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, জয়কালী ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, বড় দেবেশ্বরী ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদী ঘাট, বাসনকালি ঘাট, জগদ্ববন্ধু ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মাকরী সাধুর ঘাট ও ললিত সাধুর ঘাট- এই ১৪টি ঘাটে এবার øান চলে পুণ্যার্থীদের। হিমালয় থেকে লাঙ্গলবন্দ: হিন্দু পুরাণ মতে, মহামুনি জš§দগ্নির আদেশে পুত্র পরশুরাম মা রেনুকাকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। মাকে হত্যার শাস্তি হিসাবে কুঠার তার হাতেই লেগে থাকে। অনেক তপস্যা আর হিমালয়ে ব্রহ্মপুত্রের জলে øান করার পর পরশুরামের পাপ মুক্ত হয়। হাত থেকে খসে পড়ে কুঠার। এরপর ব্রহ্মপুত্রের সেই পবিত্র জল মর্ত্যরে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পরশুরাম তার কুঠারটিকে লাঙ্গলের মতো করে টানতে টানতে পর্বত থেকে ব্রহ্মপুত্রের ধারা নিয়ে আসেন সমভূমিতে। অনেক দিন পর নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে এসে থামে তার লাঙ্গলরূপী কুঠার। ওই এলাকার নাম হয় লাঙ্গলবন্দ।
নতুন কৌশলে বাংলাদেশ ব্যাংক
মো. রেজাউর রহিম
দেশের ব্যাংকিং খাতের কার্যক্রম তদারকিতে কৌশলগত পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের সার্বিক অবস্থা তদারকি শুরু করা হচ্ছে। এজন্য ডেস্কে অফসাইট এবং মাঠ পর্যায়ে অনসাইট উভয় পরিদর্শনের ক্ষেত্রে সুপারভিশন আরো উন্নত করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নজরদারির অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ের সুপারভাইজারদের মাধ্যমে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সে আলোকে ব্যাংকিং সুপারভিশনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছে। জানা গেছে, এ সভায় ব্যাংকিং সুপারভিশনের বিষয়গুলোকে আরো সমন্বিত করা এবং সুপারভিশনের একটি নতুন কাঠামো তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ কাঠামোর আওতায় ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত ঝুঁকি এবং ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সুশাসন ও নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া- বিশেষ করে এসব ঝুঁকি মোকাবেলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। গত ২০১১ সালে জাতীয় ভাবে ঢাকায় এবং পরবর্তীতে সম্প্রতি চট্টগ্রামে একটি হল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাগুলোতে এব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের সুপারভাইজারদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের আঞ্চলিক অফিসগুলোতেও এ সভা করা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। এছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম সুপারভিশনের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে, ঋণ ঝুঁকি, তারল্য ঝুঁকি, বাজার ঝুঁকি, পরিচালন ঝুঁকিসহ সকল ধরনের ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ এবং তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এসবের গভীরতা নির্ণয় ও ঝুঁকি প্রশমনের জন্যে কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন এবং ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশন কার্যকর এবং সুনিপুণভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্র“ডেন্সিয়াল রেগুলেশনগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ‘ব্যাসেল কোর প্রিন্সিপ্যাল ফর ইফেক্টিভ ব্যাংকিং সুপারভিশন’ (বিএসবিসি) পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর আর্থিক সুস্থতা এবং স্থিতিশীলতায় মূলধন পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এজন্য ব্যাসেল-২ নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং আগামীতে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ব্যাসেল-২ নীতিমালা মোতাবেক ব্যাংকগুলোকে তাদের ঝুঁকিভিত্তিক স¤পদের ১০ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ব্যাংকগুলো এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ ১১.৩৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণে সক্ষম হয়েছে। তিনি জানান, ব্যাংকিং খাতে খেলাপী ঋণের হার বর্তমানে সর্বনিু (৬.১২ শতাংশ) পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে গত এক বছরে ব্যাংকিং খাতে আমানত প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ এবং ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ শতাংশ। জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ব্যাংকিং খাতে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৯৪৬ কোটি টাকা। অপরদিকে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৬৫০ কোটি টাকা। তারল্য পরিস্থিতিও এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। এছাড়া বর্তমানে আন্ত:ব্যাংক মুদ্রাবাজারে কলমানি সুদের ভারিত গড় হার ১১.৯০ শতাংশ এবং বৈদেশিক মুদ্রাবাজারেও স্থিতিশীলতা রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তারল্যের গতিধারা পরিমাপ ও ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদারেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
ব্যয় ৩ হাজার কোটি টাকা
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উতক্ষেপণে চুক্তি স্বাক্ষরিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালের (এসপিআই) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গত বৃহস্পতিবার বিটিআরসি কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ এবং এসপিআইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্র“শ ক্রেসেলসকি। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা এবং বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিটিআরসি সূত্রে বলা হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআই এর কাঠামো তৈরি, গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবস্থাপনা, বাজার মূল্যায়ন, স্যাটেলাইট বাজারজাতকরণ এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সব প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআইকে দিতে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। বিটিআরসি এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে কক্ষপথের ১০২ ডিগ্রি পূর্বে স্লট চেয়েছে। তবে বিটিআরসির এই স্লট আবেদনে আপত্তি জানিয়েছে ১৮টি দেশ। এসপিআই এসব দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে এর সমাধান করবে। বিটিআরসি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে পরামর্শক চেয়ে দরপত্র আহ্বান করলে প্রায় ৩৩টি প্রতিষ্ঠান এক্সপেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) জমা দেয়। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স ও ইন্দোনেশিয়ার সাতটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত দর প্রতিযোগিতায় মনোনীত করা হয়। তাদের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত প্রস্তাব যাচাইয়ের পর ওই সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এসপিআইকে নির্বাচিত করা হয়। এরপর এসপিআইকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি মন্ত্রিসভার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদনসহ সব প্রক্রিয়া শেষ হয়।
উল্লেখ্য, দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ, টেলিফোন, রেডিও বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গুণতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু করতে পারলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হবে না, সেই সঙ্গে অব্যবহƒত অংশ নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রচুর অর্থ আয় করা যাবে।
মৌলিক চাহিদা পূরণের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে
অনিশ্চিত জীবন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ছিটমহলবাসীকে
মাসুদুর রহমান স্বপন
দেশ বিভাগের পর সৃষ্টি হওয়া ছিটমহলগুলোর মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অতীতের সরকারগুলো সমস্যাগুলোর সমাধান না করায় সমস্যার পাহাড় কেবল বড়ই হয়েছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান করে নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন এসব ছিটমহলের মানুষ। বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে ভারতের ১১১টি এবং সীমান্তের ওপারে ভারতের জলপাইগুড়ি ও কুচবিহার জেলায় বাংলাদেশের ৫৩টি ছিটমহলের অবস্থান। এসকল ছিটমহলে একটিও পাকা রাস্তা নেই। একটি পাকা ঘর চোখে পড়ে না, স্কুল ও হাসপাতাল নেই। খোলা মাঠে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। গোসল করে খোলা আকাশের নিচে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, পানিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষের সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোথাও। প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় মারাÍক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এসব মানুষ। তবে সম্প্রতি ছিটমহলবাসী তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার আদায়ে ব্যাকুল ছিটমহলবাসী মহান স্বাধীনতা দিবসে পঞ্চগড় জেলাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের হাজার হাজার বাড়িতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। এসব ছিটমহলের অধিবাসী ছিটমহলগুলোকে বাংলাদেশী হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছে। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ছিটমহলের চেয়ারম্যানরা ছিটমহলের প্রত্যেকটি বাড়িতে সকাল থেকে বাংলাদেশী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দেশভাগের পর থেকেই অনিশ্চিত জীবন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৬৪ ছিটমহলের হাজার হাজার মানুষকে। যুগযুগ ধরে রাষ্ট্রীয়, প্রশাসনিক ও নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষের নূন্যতম মৌলিক চাহিদা পূরণের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দুই দেশের সিদ্ধান্তহীনতা এসব মানুষের সমস্যার পাহাড় কেবল বৃদ্ধি করেই চলেছে। আইনি জটিলতায় উন্নয়ন সংস্থাগুলো ছিটমহলগুলোতে ঢুকতে পারে না। ফলে মানবসম্পদ উন্নয়ন বা জীবনমান উন্নয়নের কোন কর্মসূচিও নেই এখানে। ছিটমহলগুলোর শিশুদের অধিকাংশই লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আর যারা লেখাপড়া করে তারা লুকিয়ে বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে যাতায়ত করে। মিথ্যে ঠিকানা ব্যবহার করে তাদের স্কুলে ভর্তি হতে হয়। কিন্তু একটা পর্যায়ে ধরা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় তাদের লেখাপড়া। আর ফাঁকি দিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করলেও নাগরিকত্বের প্রশ্নে তারা পারছেনা কোন সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে। ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে দু’দেশের ছিটমহলবাসীরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। ১২ মার্চ দিনহাটায় অনশন শুরু করেন ছিটমহলের ৮ জনসহ পশ্চিমবঙ্গ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহ-সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত। অনশনকারী ছিটমহলের বাসীন্দাদের প্রত্যেকের গড় বয়স ৬৫ থেকে ৭৫ বছর। এর মধ্যে ৮ জন ১৯ মার্চ গুরুতর অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা ড. রক্তিম দাশ বলেন, ‘প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তারা অনশন করে যাচ্ছেন। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। তিনি আরো বলেন, একই অবস্থা বাংলাদেশেও। সেখানেও ৩০ জন অনশন করছেন। আমরা ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি পরবর্তীতে মনমোহন-হাসিনা চুক্তির আলোকে এর সমাধান চাই। এটা মানবধিকারের প্রশ্ন। অহেতুক একটা মহল থেকে জমির ইস্যু তোলা হচ্ছে। জমি যদি সরকারের হয়, তাহলে মানুষও তো সরকারের। তাহলে তাদের দায় কেন নেওয়া হবে না’।
কলকাতার একটি সূত্র জানায়, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ফোরাম। বুধবার কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে তারা এই সংহতি জ্ঞাপন করেন। এদিনের এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিপলস ফোরামের ভারতীয় অংশের সম্পাদক মানিক সমাজদার, পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি সত্যব্রত চৌধুরী, সহ-সভাপতি দীলিপ রায়, ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা ড. রক্তিম দাশ প্রমুখ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এদিন, বাংলাদেশে অবস্থিত পুঁটিমারি ছিটমহল ও কোচবিহারের দিনহাটা শহরের সংহতি ময়দানে ছিটমহল বিনিময়েরর দাবিতে আমরণ অনশনরত আন্দোলনকারীদের প্রতি সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য আবেদন করা হয়। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহল বালাপাড়া-কোটভাজিনি এলাকার বাসিন্দারা বাংলাদেশ সময়কে জানান, দিন দুপুরে এখানে খুনোখুনি হলেও বিচারের কোন ব্যবস্থা নেই। কোন ঘটনা ঘটলে বিচার-শালিসে বসলেও বিচারের রায় কেউ মানেন। ফলে প্রতিটি ছিটমহলে ইউনিয়ন পরিষদের আদলে নাগরিক কমিটি গড়ে উঠলেও তা খুব বেশি কার্যকর নয় । এদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসনের সূত্র উদ্ধৃত করে কলকাতা থেকে বিবিসি সংবাদদাতা জানিয়েছেন ভারতের কোচবিহারে বাংলাদেশের ছিটমহলগুলোতে গত সপ্তাহে অনশনরত আটজনকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’দেশের ছিটমহলবাসীরা এখনও বলছেনÑ দাবি আদায়ে তাদের এই অনশন আমরণ, কিন্তু ছিটমহল বিনিময় বাস্তবায়নে ভারত সরকার কতটা উদ্যোগী? সীমান্তের ওপারের নানা সূত্রে জানা গেছে, একাধিক বিষয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের ওপরে চটে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থায় নতুন একটি সমস্যা আর তৈরি করতে চাইছে না কংগ্রেস। তবে তিস্তা চুক্তির মতো এই প্রোটোকলও বাস্তবায়িত হতে দেবেন নাÑ এমন কোনো কথা কিন্তু প্রকাশ্যে বলেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। চলতি অধিবেশনে আগামী এক মাসের মধ্যেই প্রোটোকলটি সংসদে পেশ করা হবে বলে কংগ্রেসেরই একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে।
ছিটমহলগুলো দুই দেশের অধীন হলেও সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রা ব্যবস্থা সেখানে চালু নেই। আয়তনের ক্ষেত্রে ছোট্ট ছোট্ট হওয়ায় তাদের বাজার ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ বা ভারতীয় হাট বাজারগুলোই তাদের ভরসা। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের কৃষি নিয়ে। কৃষিই ছিটমহলের মানুষের জীবীকার প্রধান উৎস্য হলেও রাষ্ট্রের পক্ষে বীজ-সার-ডিজেলের সহায়তা পায়না তারা। সংগ্রহ করতে হয় চুরি করে। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা স্বীকার করেন, জেলা পর্যায়ে সরকার যে বীজ সার ডিজেল বরাদ্দ দেয়, তাই চোরাই পথে যায় ছিটমহলগুলোতে। জেলা কৃষি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা যখন চাহিদাপত্র তৈরী করি তখন ছিটমহলগুলো হিসেবে ধরা হয়না। অথচ জেলা পর্যায়ে পাওয়া বরাদ্দ থেকে বীজ-সার ডিজেল যায় ছিটমহলগুলোতে।
বিশ্বব্যাপী অনুন্নত দেশগুলোতে জীবনমান উন্নয়নে জাতীয়, আন্তর্জাতিক, স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও কাজ করলেও ছিটমহলগুলোতে এসব সংস্থার কোন কার্যক্রম নেই। উন্নয়ন গবেষক আলাউদ্দিন আলী বলেন, আর্ন্তজাতিক আইন অমান্য করে এসব অঞ্চলে উন্নয়ন কর্মীরা ঢুকতে পারে না। এ বিষয়টি নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন। ভৌগলিকভাবে সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোর অভ্যন্তরে ছিটমহলগুলোর অবস্থান। কিন্তু এ নিয়ে কোন ভূমিকাই পালন করতে পারেনা জেলা, উপজেলা, পুলিশ, স্বাস্থ্যসহ সরকারের কোন বিভাগ। সংশ্লিষ্ট প্রশাসকরা জানান, রাষ্ট্রীয়ভাবে উভয়দেশের উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যা সমাধানের কোন এখতিয়ার জেলা প্রশানের নেই। এমনকি কোন দূর্যোগ-দুর্বিপাকেও তাদের সহযোগিতার সামান্য সুযোগটিও নেই।
নাগরিক অধিকার প্রয়োগের প্রাথমিক যোগ্যতা হলো নিজ এলাকায় ভোটার হওয়া। ছিটমহলগুলোর বাসিন্দাদের ভোটার হবার দাবি দীর্ঘ দিনের। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশের ৫৩টি ছিটমহলের অধিবাসীকে ভোটার করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেবার কুড়িগ্রাম সীমান্তের ওপারে ৮টি ছিটমহলের অধিবাসীকে ভোটার করার পর সে প্রক্রিয়া থমকে যায়। বাংলাদেশের ভেতরের ১১১টি ছিটমহল নিয়ে কখনই ভাবেনি উভয় দেশ। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের চতুর্থ ধাপে ছিটমহলের বাসিন্দাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তামক চাষ নিরুৎসাহিতকরণের উদ্যোগ মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন নেই
এইচআর সাগর
তামাক চাষ নিরুৎসাহিতকরণের উদ্যোগ কোন কাজে আসছে না। মাটি ও ফসলের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাষ বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জানা সত্ত্বেও বেশি লাভের আশায় তামাক চাষ করছেন কিছু এলাকার চাষী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবার অন্তত ১৫ জেলায় ৪৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। তবে বেসরকারি সংস্থার হিসেবে, তামাক চাষের পরিমান এর চেয়ে অনেক বেশি। জনস্বাস্থ্য ও জমির জন্য ক্ষতিকারক তামাক চাষ বন্ধে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। অবশ্য কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাপক প্রচারণাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়েছে অধিদফতর। তবে মাঠ পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন নেই
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসানুল হক পান্না বলেন, ‘তামাক চাষ থেকে চাষীদের বিরত রাখতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা ও করণীয় প্রদান করা হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করা হলে অনেক চাষী নিজ থেকে তামাক চাষ থেকে সরে আসবেন। তিনি আরও বলেন, তামাকের জমিতে উন্নত জাতের ফসল চাষ করে সমান আয় হলে কৃষক নিজে থেকেই এ চাষ বন্ধ করে দেবেন। আমরা সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি’।
মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ি, চলতি মৌসুমে ৪৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু লালমনিরহাট জেলায় ৫ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। এসব জমিতে আগে আলুসহ অন্যান্য ফসলের চাষ হতো। এছাড়াও নীলফামারি জেলায় ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর, মেহেরপুরে ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ২ হাজার হেক্টর, মানিকগঞ্জে ১ হাজার ২৬৬ হেক্টর, খাগড়াছড়িতে ৬৮০ হেক্টর, বান্দরবানে ৩ হাজার ১৯০ হেক্টর, চট্টগ্রামে ৩৮ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ৭৩০ হেক্টর, ঝিনাইদহে ১ হাজার ২১৫ হেক্টর, রাঙামাটিতে ২৭৫ হেক্টর, রংপুরে ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর, টাঙ্গাইলে ৯৫ হেক্টর, কক্সবাজারে ১ হাজার ৫৫ হেক্টর ও দিনাজপুরে ৩১ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পদস্থ কৃষি কর্মকর্তা জানান, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তারা চাষ এলাকাও পরিবর্তন করছেন। আগে কম জনবসতিপূর্ণ পাহাড়ী এলাকায় তামাক চাষ বেশি হতো। এখন লোকালয়ে তামাক চাষ শুরু হয়েছে। তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেন, আগে পার্বত্য তিন জেলা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে তামাক চাষ বেশি হতো। এখন লালমনিরহাট ও নীলফামারির মতো কৃষি এলাকায় তামাক চাষ হচ্ছে। এমনকি ঢাকার পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলাতেও তামাক চাষ হচ্ছে।
এদিকে কৃষি অধিদফতরের সম্প্রতি জারি করা এক চিঠিতে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বলা হয়েছে- তামাক গাছের শিকড় মাটির গভীর থেকে খাদ্য গ্রহণের ফলে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে, তামাক চাষে অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তামাক চাষের ফলে তামাক থেকে উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎপাদিত তামাক পাতা শুকিয়ে তা দিয়ে তামাকজাত পণ্য তৈরি করা হয়। তামাক পাতা শুকাতে প্রয়োজন হয় বড় আকারের বিশেষ ধরনের চুল্লি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০০ কেজি কাঁচা তামাক পাতা শুকাতে বিপুল পরিমাণ কাঠ পোড়াতে হয়। এগুলো পোড়ানোর সময় নির্গত ধোঁয়ায় মারাÍকভাবে দূষিত হয় পরিবেশ। এ সময় এর আশপাশ দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর কার্বনসহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাস দূষিত ও গরম করে বায়ুমণ্ডলকে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর যে পরিমাণ গাছ কাটা হয় তার প্রায় এক চতুর্থাংশই পোড়ানো বা ব্যবহার করা হয় কেবল তামাক পাতা শুকানোর জন্য।
তামাক চাষ বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলেও কৃষকের নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর। গত ২০ ফেব্র“য়ারি মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তামাক চাষের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাষীদের বিকল্প লাভজনক ফসল চাষের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক তামাক চাষের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব ও উচ্চ মূল্যের ফসল চাষের দিকে ঝুঁকতে হবে সকলকে। তামাক চাষের পরিবর্তে মৌসুমী ফসল চাষের ব্যবস্থা নেয়া, উচ্চ মূল্যের ফসলের চাষ বাড়ানো, পরিবর্তিত আবহাওয়ায় সম্ভাবনাময় শস্য বিন্যাসের পরিবর্তন আনা, তামাকের পরিবর্তে দানা জাতীয় ফসল যেমন গম, ভূট্টা, কাউন ও চিনার চাষ করা, তামাক চাষ এলাকায় সাথী ফসলসহ আখ, আলু, গাজর, টমেটো চাষ করা, ডাল জাতীয় ফসল মুগ, মশুর ও খেসারী এবং তেল জাতীয় ফসল সরিষা, তিল ও তিসির চাষ করা এবং বিভিন্ন ফুল ও সবজির চাষ করা যেতে পারে।
তামাক চাষ বন্ধে জনসচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। সেগুলো হচ্ছে-রেডিও ও টিভিতে জারি ও সারিগান প্রচার, স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্কানুষ্ঠান করা, দেয়ালে দেয়ালে তামাকের কুপ্রভাব প্রচার করা, বাজারে-বন্দরে তামাকের বিরুদ্ধে নাটক-নাটিকা মঞ্চায়ন, লিফলেট ও পোষ্টার সর্বস্তরের জনসাধারণের মধ্যে বিতরণ করা, ধুমপান বিরোধী আইনকে কার্যকর করার ব্যাপারে জোর পদক্ষেপ নেয়া ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের ফিলার তৈরি করে জনাকীর্ণ স্থানে প্রচার করা। তবে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিদফতর থেকে এধরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন নেই। অধিদফতর কিংবা কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে এ সংক্রান্ত কেবল চিঠি-সার্কুলার জারি করেই দায়িত্ব শেষ করছে। পর্যাপ্ত উপকরণ না পাওয়া ও কৃষি কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে এ বিষয়ে এখনো তেমন কোনো প্রচারণামূলক কর্মসূচি কার্যকর করা হয়নি। তদারকিরও কোনো নজির নেই।
৩০ লাখ মানুষ পান করছে দূষিত পানি, ওয়াসার দাবি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে
রাজধানীর পানি সংকট তীব্র
সিদ্দিকুর রহমান
রাজধানীতে চলতি মার্চের মধ্যেই পানি সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তার মধ্যে সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্টের সরবরাহকৃত পানি পান করার অযোগ্য। রাজধানিতে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫০ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ করছে ২০৮ কোটি লিটার।
ওয়াসা সূত্রে বলা হয়েছে, এপ্রিল-মে-জুনে পানি সমস্যা আরো তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। মার্চের শুরু থেকে লোড শেডিং, লো-ভোল্টেজ বেড়ে যাওয়ায় ওয়াসার পানির পাম্পগুলো ঠিকভাবে পানি উত্তোলন করতে পারছে না। অপরদিকে গ্রাহক পর্যায়ে মোটরগুলোও ঠিকভাবে পানি টেনে পারছে না পানির রিজার্ভ ট্যাংক ভরতে। এমনিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতের দিনের চেয়ে পানির ব্যবহার ৩৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিন্তু পানির উৎপাদন শীতের দিনের চেয়ে ৫ শতাংশও বাড়েনি। এ অবস্থায় এখন রাজধানীর ৫০ শতাংশ মানুষ রয়েছে পানির সংকটে। এদিকে, রাজধানীর পূর্বাঞ্চালের ৩০ লাখের বেশি মানুষ প্রতিনিয়ত পান করে চলেছেন পানের অনুপযোগী সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্টের পানি। ওয়াসার সরবরাহকৃত এ পানি কাপড়ধোয়া পানির মতো কালচে ও ঘোলাটে এবং সেই সাথে দুর্গন্ধময়। ফুটালে এ পানিতে সাবানের মতো ফেনা জমে। ডেকচিতে অতিরিক্ত ময়লা-তলানি জমে। ফুটানোর পরও পানি কালচে ও দুর্গন্ধময় থেকে যায়। এ ধরণের পানি পান করে চলেছেন মালিবাগ, খিলগাও, বাসাবো, শাহজানপুর, কদমতলা, আহমদবাগ, মুগদা, মান্ডা, কমলাপুর, গোপীবাগ, গোলাপবাগ, ধলপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ৩০ লাখের বেশি মানুষ। পানের অযোগ্য এ দূষিত পানি পান করে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ডায়রিয়াসহ নানা ধরণের পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা রয়েছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। ওয়াসা ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের পানির সরবরাহের বড় অংশ আসে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার থেকে। এখানে শোধন করা হয় ডেমরা খালের পঁচা-দুর্গন্ধুক্ত প্রায় শোধন অযোগ্য সারফেস ওয়াটার। এ পানি শোধনাগারে শোধন করার পরও এর কালচেভাব দূর হয় না, দূর হয়না দুর্গন্ধ। এ পানিই সরবরাহ করা হয় এ অঞ্চলে। বর্ষাকালে ডেমরা খালের পানির দূষণের পরিমান কম থাকে। তাই সে সময়ে সরবরাহকৃত পানিতে দুর্গন্ধ থাকে না। কিন্তু দুর্গন্ধ শুরু হয় শীতকাল থেকে। মার্চ থেকে এ দুর্গন্ধ প্রকটরূপ নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এ অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল পরিবারগুলো পান করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত পানি কিনে থাকেন। কিন্তু সাধারণ পরিবার, নিু আয়ের মানুষ ও বস্তিবাসীদের সামর্থ নেই বোতলজাত পানি কেনার। তারা বাধ্য হয়ে পান অযোগ্য দুর্গন্ধযুক্ত পানি পান করছেন। ৫৭ কদমতলা নিবাসী গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমি ‘বাংলাদেশ সময়’-কে বলেন, ‘এখন ওয়াসার সরবরাহকৃত পানি এত বেশি পরিমানে কালচে-ঘোলাটে ও দুর্গন্ধুক্ত যে, এ পানিতে হাত-মুখ ধুঁতেও ঘেন্না লাগে। তারপরও বাধ্য হয়ে এ পানিতে রান্না-বান্নার কাজ করতে হয়। এ পানি পান করে পরিবারের সদস্যদের পেটের পীড়া লেগে থাকায় এখন সবুজবাগ বৌদ্ধ মন্দির থেকে পানের জন্য ডিপ টিউবলের পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বাসাবো বালুর মাঠ সংলগ্ন চায়ের দোকানীরা বলেন, ‘ওয়াসার পানি দিয়ে চা জ্বাল দেয়া যায় না। পানিতে গুড়া সাবান গোলা পানির মতো ফেনা হয়। তাই চা তৈরির জন্য ডিপ টিউবলের পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে’।
এদিকে, ঢাকা ওয়াসা সূত্রে বলা হয়েছে, বর্ষা মৌসুম না আসা পর্যন্ত সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের পানির গুণগত মানের উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ প্রেক্ষাপটে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে, আগামীতে মেঘনা থেকে পানি এনে ট্রিটমেন্ট করা।
ঢাকা ওয়াসা বলছে, রাজধানীতে এখন প্রতিদিন পানির চাহিদা হচ্ছে ২১০ থেকে ২১৫ কোটি লিটার। কিন্তু বাস্তবে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ২৫০ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ করছে ২০৮ কোটি লিটার। আবার ওয়াসার সরবরাহকৃত এ পানির মধ্যে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশই হচ্ছে সিস্টেম লস। কোনভাবেই এখন ঢাকা ওয়াসা পানির বর্ধিত চাহিদা মেটাতে পারছে না। সিস্টেম লস কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে খুবই শ্লথ গতিতে। বছরে সিস্টেম লস ২ শতাংশ হারেও কমছে না। চাহিদার বিপরীতে কম পানি উৎপাদন ও সরবরাহ এবং সেই সাথে পানির বড় ধরণের সিস্টেম লসের কারণে রাজধানীর পানি সংকট বাড়ছে। বিশেষত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানির চাহিদা বেশি থাকায় সে সময় পানি সংকট আরো তীব্র হয়ে ওঠে।
পানি সরবরাহ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৗশলী তাকসিম এ খান বলেন, বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা ৬০২টি গভীর নলকূপ ও ৪টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে দৈনিক ২১০ থেকে ২১৫ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে ২১০ থেকে থেকে ২১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২০৮ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা হচ্ছে। পানির চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে ঢাকা ওয়সা পানি উৎপাদন বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু সরবরাহের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। গত বছরের ১ ফেব্র“য়ারি থেকে চলতি বছরের ২৯ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৩০টি নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে এবং ৫৮টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন ও ১০টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা অর্থাৎ পানির পাম্পগুলো চালু রাখার উদ্দেশ্যে ২শ’টি স্থায়ী জেনারেটর কেনা হয়েছে। পানি জীবাণুমুক্ত করার লক্ষ্যে ক্লোরিনেশন করে সরবরাহ করার জন্য সম্প্রতি ১শ’টি পানির পাম্পে ক্লোরিনেশন সেট স্থাপন করা হয়েছে। গত ১ বছরে ৫৬.৬ কিলোমিটার নতুন পানির লাইন স্থাপন এবং ৪৪. ৮০ কিলোমিটার পানির লাইন পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১১টি ভিজিলেন্স টিম তৎপর রয়েছে। গত ৩ বছরে ঢাকা ওয়াসার সিস্টেম লস ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
ফাহিম ফয়সাল
সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ন্যান্সির গান এখন মানুষের মুখে মুখে। ব্যক্তি জীবনে তিনি যতোটা সাধারণ, তার কণ্ঠের কারুকাজ আর গায়কী ঠিক ততোটাই অসাধারণ। প্লেব্যাক আর স্টেজ প্রোগ্রাম নিয়ে তুমুল ব্যস্ত এই গায়িকাকে অডিওতে খুঁজে পাওয়া যায় না তেমন। সেই ২০০৯ সালের বৈশাখে বের হয়েছিল ন্যান্সির প্রথম একক অ্যালবাম ‘ভালোবাসা অধরা’। দীর্ঘ ৩ বছর পর গত ৪ এপ্রিল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পেলো ন্যান্সির দ্বিতীয় একক অডিও অ্যালবাম ‘রঙ’। ন্যান্সির ‘রঙ’ অ্যালবামটির প্রকাশনা উপলক্ষে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত শল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, হাবিব ওয়াহিদ, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ডেডলাইন মিউজিকের সিইও তানভীর চৌধুরী ও গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ। এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বাংলালিংক মিউজিক স্টেশনের মাধ্যমে অ্যালবামটি মুক্তি পায়। ন্যান্সি এবারের অ্যালবামটির সবগুলো গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় করেছেন হাবিব। দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘রঙ’-এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচনের পর কথা হয় নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির সঙ্গে। নিজের গান, ব্যক্তি জীবন ও নানা বিষয় নিয়ে ন্যান্সি কথা বলেন বাংলানিউজের সঙ্গে। বাংলালিংক মিউজিক স্টেশনের মাধ্যমে ‘রঙ’ বাজারে আসে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এবার এটি সিডি আকারে অডিও বাজারে রিলিজ পেয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অ্যালবাম রিলিজ দেওয়া প্রসঙ্গে ন্যান্সি বলেন, ‘আজকাল প্রতিষ্ঠিত প্রায় সব শিল্পীর অ্যালবাম শুরুতে মোবাইল ফোনে রিলিজ পায়। পরবর্তীতে এটি সিডি আকারে বাজারে আসে। দেশীয় সঙ্গীতকে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য মোবাইল ফোন গুলোর এগিয়ে আসা সত্যিই খুব প্রশংসনীয়। বাংলালিংকের মিউজিক স্টেশনে আমার দ্বিতীয় একক অ্যালবামটি প্রথমে রিলিজ পায়। মিউজিক স্টেশনে রিলিজের পর অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। তবে আমাদের দেশে এখনও শ্রোতারা সিডিতেই গান শুনতেই অভ্যস্ত। তাই শ্রোতাদের মধ্যে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, সিডি আকারে অ্যালবামটি কবে বাজারে আসবে ? আর মিউজিক স্টেশনে অ্যালবাম প্রকাশের পর মনে এক ধরনের অতৃপ্তিও ছিল; কারণ সবশ্রেণীর শ্রোতারা চাইলেই আমার গান শুনতে পারতেন না। সিডি ফরম্যাটে অ্যালবামটি রিলিজ পাওয়ায় এটি এখন শ্রোতাদের কাছে পৌছে গেছে।
আপনাকে হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গেই বেশী কাজ করতে দেখা যায়, এর কারন কি ?
উত্তরে ন্যান্সি হাসলেন। বললেন, ‘আসলে হাবিব ভাইয়ের সাথে কাজ করতেই আমি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তিনি আমার কণ্ঠ আর গায়কী খুব ভালো বোঝেন, পাশাপাশি উনার করা সুরও আমি স্বাচ্ছন্দে রপ্ত করতে পারি। তার সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা খুব ভালো। শ্রোতারাও আমাদের দু’জনের গানকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেন। এটাও বড় একটি বিষয়। তাছাড়া হাবিব ভাই এদেশের মানুষের মন কি চায় তা বুঝতে পরে। আর তিনি অসম্ভব মেধাবী একজন মিউজিশিয়ান।’ প্রথম অ্যালবামের পর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘রঙ’ প্রকাশ করতে বেশ সময় নিলেন, এর কারণ কি? ‘আসলে অ্যালবাম করি করি করেও করা হয়ে উঠে না। আর শ্রোতাদের ভালো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য নিজেও এবার ইচ্ছে করে একটু বেশি সময় নিয়েছি। অবশ্য এ অ্যালবামটি হাবিব ভাইয়ের সহযোগিতা ছাড়া কোনভাবেই এতো দ্রুত বের করা সম্ভব হতো না।’ অনেকদিন পর ভক্তরা আপনার কাছ থেকে নতুন অ্যালবাম পাচ্ছেন, এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন ? এ প্রশ্নের জবাবে ন্যান্সি বললেন, ‘যদিও গত রোজার ঈদে আমার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম মুক্তি পাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠে নি। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এবছর আমার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘রঙ’ সবার হাতে তুলে দিতে পারার আনন্দ সত্যি অন্য রকম।’ অ্যালবামের নাম ‘রঙ’ রাখা প্রসঙ্গে ন্যান্সি বললেন, ‘সামনে আসছে পহেলা বৈশাখ। বংলা নববর্ষের প্রথম দিন। বাঙালীর এই প্রাণের উৎসবের দিনটিতে সর্বত্রই রঙ-এর ব্যাপক ছড়াছড়ি থাকে। নতুন বছরে রঙে রঙে আমাদের সবার জীবনকে রাঙিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই ‘রঙ’ নামটি বেছে নেওয়া। স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ততার কথা জানতে চাইলে ন্যান্সি বলেন, ‘বর্তমানে স্টেজ প্রোগ্রামে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সবাই শুধু কমার্শিয়াল গান শুনতে চায়। এর মধ্যে আবার অধিকাংশই হতে হবে হিপহপ গান। অথচ একটা মেলোডিয়াস গান যে মানুষের মনে অনেক দিন স্থায়ী হয়, তা অনেকেই বুঝতে চান না। এটা আমদের সকলেরই বোঝা উচিত। স্টেজ শোতে সব ধরনের শিল্পীকেই সবধরনের গান পরিবেশনের সুযোগ দেওয়া উচিত।যার গানে শুধু মিউজিক শোনা যায়, আর গানের কথার কোনো অর্থ নেই এবং তার গানটি যদি হিপহপ হয় তাহলেই স্টেজ শোতে তিনি হিট। এটা ঠিক নয়। এ ধরনের অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত’।
আপনার প্রায় সবগানই মেলোডিয়াস। ভবিষ্যতে অন্য ধরনের গান গাওয়ার ইচ্ছা আছে কি? জবাবে ন্যান্সি বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় নজরুল সঙ্গীত শিখেছি। নজরুলসঙ্গীতের বেশকিছু অনুষ্ঠানও করছি। আমি এখন সব ধরনের গান করি। ভবিষ্যতে যদি অন্য ধরনের সুরে ভালো কাজের সুযোগ পাই, তাহলে তা অবশ্যই করবো।
শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে বলা হলে ন্যান্সি বললেন, শ্রোতাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ আসল সিডি কিনে শুনুন। অডিও শিল্পের অবস্থা এখন মোটেও ভালো নয়। আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, এই শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখুন। পাইরেসি হতে বিরত থাকুন। ‘রঙ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় গায়ক ফেরদৌস ওয়াহিদ। ন্যান্সির গান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ন্যান্সি অনেক ভালো গায়। অসম্ভব সুরেলা তার গানের গলা। এ অ্যালবামেও সে তার যোগ্যতার প্রমান রেখেছে। সবগুলো গানই আমার ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ডুয়েট গানগুলো খুব ভালো হয়েছে।’ অ্যালবামটির সবগুলো গানের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হাবিব সম্পর্কে ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘হাবিব তার কাজের মধ্য দিয়ে ১২টি স্বরের তারতম্য শ্রোতাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছে। যার ফল এরই মধ্যে শ্রোতারা পেতে শুরু করেছেন। আশা করি হাবিব আগামীতে আরও ভালো কাজ শ্রোতাদের উপহার দিবে।’
‘রঙ’ অ্যালবাম প্রসঙ্গে হাবিব বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি আমার সবটুকু মিউজিক সেন্স ব্যবহার করে এ অ্যালবামের সুর ও কম্পোজিশনের কাজগুলো শেষ করতে। জানিনা কতটুকু পেরেছি। আশাকরি শ্রোতারা অ্যালবামটি ভালোভাবে গ্রহণ করবেন। তাহলেই আমি স্বার্থক হব।’
ন্যান্সির ‘রঙ’ অ্যালবামে মোট গান রয়েছে নয়টি। নয়টি গান নয় রকমের। এর মধ্যে রয়েছে- ফোক, সুফী, বর্ষা, মায়াজালের গান, ভালোবাসা, আকাঙ্খা ও উপমা ভিত্তিক গান। গানগুলো হচ্ছে- ‘বিরহী পূর্ণিমা’, ‘ঝরা পাতা’, ‘মেঘ মাদল’, ‘বন্ধুর লাগিয়া’, ‘ডুবেছি’, ঝর্ণা পাহাড় নদী’, ‘পাশে তুমি নেই’, ‘ইচ্ছে’ ও ‘মায়া’। পাঁচটি গানের কথা লিখেছেন চিরকুট ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল সুমী। অন্য গানগুলো লিখেছেন- সুস্মিতা বিশ্বাস, মাহবুব মহসিন ও মোজাম্মেল। অ্যালবামের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি একটি গানে ন্যান্সির সাথে দ্বৈতভাবে কন্ঠ দিয়েছেন হাবিব ওয়াহিদ। ‘ঝরা পাতা’ ও ‘ডুবেছি’ শিরোনামের এই গান দু’টোতে যথাক্রমে ন্যান্সির সঙ্গে কন্ঠ দিয়েছেন হাবিব ও মিঠুন। অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ডেডলাইন মিউজিক’র ব্যানারে ন্যান্সির দ্বিতীয় অডিও অ্যালবাম ‘রঙ’ বাজারে এসেছে।
উত্তরে ন্যান্সি হাসলেন। বললেন, ‘আসলে হাবিব ভাইয়ের সাথে কাজ করতেই আমি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তিনি আমার কণ্ঠ আর গায়কী খুব ভালো বোঝেন, পাশাপাশি উনার করা সুরও আমি স্বাচ্ছন্দে রপ্ত করতে পারি। তার সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা খুব ভালো। শ্রোতারাও আমাদের দু’জনের গানকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেন। এটাও বড় একটি বিষয়। তাছাড়া হাবিব ভাই এদেশের মানুষের মন কি চায় তা বুঝতে পরে। আর তিনি অসম্ভব মেধাবী একজন মিউজিশিয়ান।’ প্রথম অ্যালবামের পর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘রঙ’ প্রকাশ করতে বেশ সময় নিলেন, এর কারণ কি? ‘আসলে অ্যালবাম করি করি করেও করা হয়ে উঠে না। আর শ্রোতাদের ভালো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য নিজেও এবার ইচ্ছে করে একটু বেশি সময় নিয়েছি। অবশ্য এ অ্যালবামটি হাবিব ভাইয়ের সহযোগিতা ছাড়া কোনভাবেই এতো দ্রুত বের করা সম্ভব হতো না।’ অনেকদিন পর ভক্তরা আপনার কাছ থেকে নতুন অ্যালবাম পাচ্ছেন, এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন ? এ প্রশ্নের জবাবে ন্যান্সি বললেন, ‘যদিও গত রোজার ঈদে আমার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম মুক্তি পাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠে নি। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এবছর আমার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘রঙ’ সবার হাতে তুলে দিতে পারার আনন্দ সত্যি অন্য রকম।’ অ্যালবামের নাম ‘রঙ’ রাখা প্রসঙ্গে ন্যান্সি বললেন, ‘সামনে আসছে পহেলা বৈশাখ। বংলা নববর্ষের প্রথম দিন। বাঙালীর এই প্রাণের উৎসবের দিনটিতে সর্বত্রই রঙ-এর ব্যাপক ছড়াছড়ি থাকে। নতুন বছরে রঙে রঙে আমাদের সবার জীবনকে রাঙিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই ‘রঙ’ নামটি বেছে নেওয়া। স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ততার কথা জানতে চাইলে ন্যান্সি বলেন, ‘বর্তমানে স্টেজ প্রোগ্রামে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সবাই শুধু কমার্শিয়াল গান শুনতে চায়। এর মধ্যে আবার অধিকাংশই হতে হবে হিপহপ গান। অথচ একটা মেলোডিয়াস গান যে মানুষের মনে অনেক দিন স্থায়ী হয়, তা অনেকেই বুঝতে চান না। এটা আমদের সকলেরই বোঝা উচিত। স্টেজ শোতে সব ধরনের শিল্পীকেই সবধরনের গান পরিবেশনের সুযোগ দেওয়া উচিত।যার গানে শুধু মিউজিক শোনা যায়, আর গানের কথার কোনো অর্থ নেই এবং তার গানটি যদি হিপহপ হয় তাহলেই স্টেজ শোতে তিনি হিট। এটা ঠিক নয়। এ ধরনের অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত’।
আপনার প্রায় সবগানই মেলোডিয়াস। ভবিষ্যতে অন্য ধরনের গান গাওয়ার ইচ্ছা আছে কি? জবাবে ন্যান্সি বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় নজরুল সঙ্গীত শিখেছি। নজরুলসঙ্গীতের বেশকিছু অনুষ্ঠানও করছি। আমি এখন সব ধরনের গান করি। ভবিষ্যতে যদি অন্য ধরনের সুরে ভালো কাজের সুযোগ পাই, তাহলে তা অবশ্যই করবো।
শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে বলা হলে ন্যান্সি বললেন, শ্রোতাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ আসল সিডি কিনে শুনুন। অডিও শিল্পের অবস্থা এখন মোটেও ভালো নয়। আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, এই শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখুন। পাইরেসি হতে বিরত থাকুন। ‘রঙ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় গায়ক ফেরদৌস ওয়াহিদ। ন্যান্সির গান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ন্যান্সি অনেক ভালো গায়। অসম্ভব সুরেলা তার গানের গলা। এ অ্যালবামেও সে তার যোগ্যতার প্রমান রেখেছে। সবগুলো গানই আমার ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ডুয়েট গানগুলো খুব ভালো হয়েছে।’ অ্যালবামটির সবগুলো গানের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হাবিব সম্পর্কে ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‘হাবিব তার কাজের মধ্য দিয়ে ১২টি স্বরের তারতম্য শ্রোতাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছে। যার ফল এরই মধ্যে শ্রোতারা পেতে শুরু করেছেন। আশা করি হাবিব আগামীতে আরও ভালো কাজ শ্রোতাদের উপহার দিবে।’
‘রঙ’ অ্যালবাম প্রসঙ্গে হাবিব বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছি আমার সবটুকু মিউজিক সেন্স ব্যবহার করে এ অ্যালবামের সুর ও কম্পোজিশনের কাজগুলো শেষ করতে। জানিনা কতটুকু পেরেছি। আশাকরি শ্রোতারা অ্যালবামটি ভালোভাবে গ্রহণ করবেন। তাহলেই আমি স্বার্থক হব।’
ন্যান্সির ‘রঙ’ অ্যালবামে মোট গান রয়েছে নয়টি। নয়টি গান নয় রকমের। এর মধ্যে রয়েছে- ফোক, সুফী, বর্ষা, মায়াজালের গান, ভালোবাসা, আকাঙ্খা ও উপমা ভিত্তিক গান। গানগুলো হচ্ছে- ‘বিরহী পূর্ণিমা’, ‘ঝরা পাতা’, ‘মেঘ মাদল’, ‘বন্ধুর লাগিয়া’, ‘ডুবেছি’, ঝর্ণা পাহাড় নদী’, ‘পাশে তুমি নেই’, ‘ইচ্ছে’ ও ‘মায়া’। পাঁচটি গানের কথা লিখেছেন চিরকুট ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল সুমী। অন্য গানগুলো লিখেছেন- সুস্মিতা বিশ্বাস, মাহবুব মহসিন ও মোজাম্মেল। অ্যালবামের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি একটি গানে ন্যান্সির সাথে দ্বৈতভাবে কন্ঠ দিয়েছেন হাবিব ওয়াহিদ। ‘ঝরা পাতা’ ও ‘ডুবেছি’ শিরোনামের এই গান দু’টোতে যথাক্রমে ন্যান্সির সঙ্গে কন্ঠ দিয়েছেন হাবিব ও মিঠুন। অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ডেডলাইন মিউজিক’র ব্যানারে ন্যান্সির দ্বিতীয় অডিও অ্যালবাম ‘রঙ’ বাজারে এসেছে।
প্রীতি ওয়ারেছা
এবারের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আলোচিত কানাডিয়ান মডেল জেন্না তালাকোভা আইনি লড়াইয়ে জিতে গেছেন। আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছে। পুরুষ থেকে নারী হয়েও জেন্না সুযোগ পাচ্ছেন মিস ইউনিভার্স হওয়ার। এবারের প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত লড়াইয়ের আগেই মিস কানাডা খেতাবধারী জেন্না আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন। তার এই আলোচনায় উঠে আসার কারণ হল লিঙ্গ পরিবর্তন। কাডাডিয়ান এই সুন্দরী জন্মগতভাবে পুরুষ লিঙ্গের একজন মানুষ হয়েই পৃথিবীতে এসেছিলেন। চার বছর আগে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করে নিজেকে নারীতে রূপান্তরিত করেন। ২৩ বছর বয়সী মিস জেন্না তালাকোভাকে গত মাসের শেষের দিকে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ‘প্রতিযোগীকে অবশ্যই জন্মসূত্রে নারী লিঙ্গধারী হতে হবে’ এই বলে প্রতিযোগিতার প্রধান আয়োজক ডোনাল্ড ট্রাম্প শর্ত আরোপ করে জেনাকে প্রতিযোগিতা থেকে ছাঁটাই করা হয়। কিন্তু নিষিদ্ধ হওয়ার আগেই স্নিগ্ধ সৌন্দর্য্যরে অধিকারী ও প্রতিভাময়ী জেনা ৬৫ জন প্রতিযোগীর মাঝ থেকে মিস ইউনিভার্সের ফাইনালিস্টে ওঠার গৌরব অর্জন করেন। আগামী ১৯ মে টরোন্টোতে প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হবে। এতদূর আসার পর হঠাৎ তার বিরুদ্ধে নেওয়া এই হঠকারী সিদ্ধান্তে যারপর নাই শোকাহত হয়েছেন কানাডার ভ্যাঙ্কুলারে জন্মগ্রহণকারী সুন্দরী জেন্না। লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হয়ে জেন্না শেষ পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। জেন্না তালাকোভা তার আইনজ্ঞ গ্লোরিয়া অলরেডকে নিয়ে আইনি তৎপরতা চালান। মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার আয়োজক ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশাল এই আয়োজনে ফেরার শর্ত হিসাবে জুড়ে দেন, ‘যদি জেন্না তানাকোভা আইনগতভাবে কানাডার বৈধ লিঙ্গ স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হন, তবেই তিনি প্রতিযোগিতায় ফিরতে পারবেন’। আয়োজকের ছুঁড়ে দেওয়া ঢিলকে বুমেরাং হিসাবে দেখাতে জেন্না এবং তার আইনজীবি গ্লোরিয়া। আদালতে গ্লোরিয়া প্রমাণ করেন আইনগতভাবে বার্থ সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সবকিছুতেই জেন্না একজন প্রকৃত নারী। গতকাল ৩ এপ্রিল জেন্না প্রতিযোগিতায় ফেরার রায় পান। আইনি লড়াইয়ে সফল হয়ে ভীষণ উল্লাসিত জেনা তালাকোভা এখন স্বপ্ন দেখেন প্রতিযোগিতার সেরা মুকুটটি অধিকার করার। ভ্যাঙ্কুভার সুন্দরী মডেল জেন্না তালাকোভা ১৯ নভেম্বর ২০১০ সালে থাইল্যান্ডের পাতায়াতে অনুষ্ঠিত মিস টিফানি ইউনিভার্স প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়েছিলেন। প্রায় ১৫ টি দেশের পরিবর্তিত লিঙ্গের নারী প্রতিযোগীদের নিয়ে মিস টিফানি ইউনিভার্স প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
অনন্যা আশরাফ
বলিউড দাবাঙ গার্ল সোনাক্ষি সিনহা এবার বলিউডের প্রাক্তন নায়িকা মন্দাকিনীর চরিত্রে অভিনয় করবেন। বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত আর কারিনা কাপুরকে বাদ দিয়ে বালাজি মোশন পিকচারের প্রযোজনায় ‘ওয়ানস আপুন ইন টাইম’ ছবির সিক্যুয়েলের মন্দাকিনীর চরিত্রের জন্যে চুড়ান্ত হয়েছেন সোনাক্ষি সিনহা। ‘ওয়ানস আপুন এ টাইম ইন মুম্বাই টু ’ ছবির প্রডাকশন হাউজের এক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ছবিতে কিছুটা অন্তরঙ্গ দৃশ্য থাকায় দাউদ ইব্রাহিমের গার্লফ্রেন্ডের চরিত্রে অভিনয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন সোনাক্ষি। পরিচালক পরে সেই দৃশ্যগুলো ছবির স্ক্রিপ্ট থেকে বাদ দিলে সোনাক্ষি সম্মতি জানান।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহিমের চরিত্রের উপর ভিত্তি করে পরিচালক মিলন লুথারিয়া নির্মাণ করছেন ‘ওয়ানস আপুন এ টাইম ইন মুম্বাই’ ছবির সিক্যুয়েল। প্রথম ছবিতে ডন চরিত্রে অজয়কে দেবগন থাকলেও এবারের ছবিতে ডনের চরিত্রে অভিনয় করবেন বলিউড খিলাড়ি অক্ষয় কুমার। অন্যদিকে মন্দাকিনীর চরিত্রটির দায়িত্ব দিয়েছেন সোনাক্ষির হাতে। ‘সোয়েব’ নামের চরিত্রে অভিনয় করবেন অক্ষয় কুমার। আর ‘ইয়াসমিন’ নামের চরিত্রে দেখা যাবে সোনাক্ষিকে। এ ছবিতে অক্ষয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আরো দেখা যাবে বলিউড ইয়ংক্রেজ ইমরান খানকে। অক্ষয়-সোনাক্ষি জুটির তৃতীয় ছবি হবে ‘ওয়ানস আপুন এ টাইম ইন মুম্বাই টু’। এর আগে শিরিশ কুন্দারের পরিচালনার ‘জোকার’ ও প্রভু দেবার ‘রওডি রাথোদ’ ছবিতে জুটি বেধে অভিনয় করেছেন তারা। যদিও ছবি দুইটি এখনো মুক্তির অপেক্ষায় আছে।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহিমের চরিত্রের উপর ভিত্তি করে পরিচালক মিলন লুথারিয়া নির্মাণ করছেন ‘ওয়ানস আপুন এ টাইম ইন মুম্বাই’ ছবির সিক্যুয়েল। প্রথম ছবিতে ডন চরিত্রে অজয়কে দেবগন থাকলেও এবারের ছবিতে ডনের চরিত্রে অভিনয় করবেন বলিউড খিলাড়ি অক্ষয় কুমার। অন্যদিকে মন্দাকিনীর চরিত্রটির দায়িত্ব দিয়েছেন সোনাক্ষির হাতে। ‘সোয়েব’ নামের চরিত্রে অভিনয় করবেন অক্ষয় কুমার। আর ‘ইয়াসমিন’ নামের চরিত্রে দেখা যাবে সোনাক্ষিকে। এ ছবিতে অক্ষয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আরো দেখা যাবে বলিউড ইয়ংক্রেজ ইমরান খানকে। অক্ষয়-সোনাক্ষি জুটির তৃতীয় ছবি হবে ‘ওয়ানস আপুন এ টাইম ইন মুম্বাই টু’। এর আগে শিরিশ কুন্দারের পরিচালনার ‘জোকার’ ও প্রভু দেবার ‘রওডি রাথোদ’ ছবিতে জুটি বেধে অভিনয় করেছেন তারা। যদিও ছবি দুইটি এখনো মুক্তির অপেক্ষায় আছে।
বিনোদন প্রতিবেদক
তরুণ প্রজন্মের হার্টথ্রুব গায়ক বালাম। গায়কীতে স্বতন্ত্র আঙ্গিক তৈরির মাধ্যমে পান সুপরিচিতি। টানা দুই বছর ধরে নতুন কোন অ্যালবামে নেই বালাম। শুধু গানেই নয়, বিয়ে-সংসার-সন্তানের বাবা হওয়ার পর কেন যেন মিডিয়া থেকে নিজেকে খানিকটা আড়াল করে রেখেছেন। আসন্ন বৈশাখে আড়াল ভেঙে বেরিয়ে আসছেন তিনি। বালামের দীর্ঘ প্রতিক্ষীত চতুর্থ একক অ্যালবামটি মুক্তি পাচ্ছে এবারের বাংলা নববর্ষে। ২০০৭-এ বালাম ১, ২০০৮-এ বালাম ২ আর ২০১০ সালে বালাম ৩। বালামের প্রথম দুটি একক অ্যালবাম অডিও বাজারে ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখলেও তৃতীয় অ্যালবামটি মোটেও আলোড়ন তুলতে পারে নি। দুই বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিলো বালামের ৩য় একক অ্যালবাম এরপর থেকে অডিও বাজারে তার দেখা নেই। মাঝে মধ্যে কিছু স্টেজ প্রোগ্রাম ও টিভি শোতে তাকে দেখা গেছে । কিন্তু অডিও বাজারে বালাম ছিলেন একবারেই অনুস্থিত। তৃতীয় অ্যালবামের ব্যবসায়িক ব্যর্থতার কারণেই সম্ভবত বালাম চতুর্থ অ্যালবামটি প্রকাশের জন্য যথেষ্ট সময় নিয়েছেন। গত রোজার ঈদে বালামের চতুর্থ একক অ্যালবামটি বের হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। পরে বালাম জানিয়েছিলেন, কোরবানি ঈদে অ্যালবামটি রিলিজ দেবেন। রহস্যময় কারণে তখনও তাকে অ্যালবামটি মুক্তি দিতে দেখা যায়নি। যদিও এ সময় বালাম বলেছেন অ্যালবামটির কাজ তিনি প্রায় শেষ করে এনেছেন। গেল ভালোবাস দিবসের আগে আগে বেশ জোরেশোরে শোনা গেছে, রিলিজ পাচ্ছে ‘বালাম-৪’। নাহ, হতাশ হতে হয়েছে ভক্তদের। অবশেষে বালামের নতুন একক অ্যালবামটি বের হতে যাচ্ছে এবারের পহেলা বৈশাখে। এবার আর দিন পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বালাম। আগের সব কটি অ্যালবামেই পপধারার গান বেশি করেছিলেন বালাম। এবার তা থেকে খানিকটা সরে এসেছেন। নানা স্বাদের গান করেছেন। অ্যালবামে গান থাকছে আটটি। চমক হিসেবে বোনাস ট্র্যাকও থাকছে। সব গানেরই কথা লিখেছেন জাহিদ পিন্টু। আগের অ্যালবামগুলো ডিজিটাল সাউন্ড বেইজড হলেও এবার বালাম অ্যাকুয়েস্টিক সাউন্ডের উপর বেশি নির্ভর করেছেন বলে জানান। রোমান্টিক, সেডিস্ট, মেলোডিয়াস গানের পাশাপাশি বালাম তার চতুর্থ অ্যালবামে সুফি ধাঁচের একটি গান করেছেন। কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি অ্যালবামের সবক’টি গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন বালাম নিজেই। অ্যালবামটি প্রসঙ্গে বালাম বললেন, শ্রোতারা এবার অন্য বালামকে পাবেন। একেবারে অন্য রকম কিছু গান করেছি। জোর দিয়েছি অ্যাকুয়েস্টিকস মিউজিকের প্রতি। আমি জানি, শ্রোতারা আমার কাছে কি চান। তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই বৈচিত্র্যময় গান দিয়ে আমার চতুর্থ একক অ্যালবামটি সাজানোর চেষ্টা করেছি। একটি সুফি ধাঁচের গান থাকছে এ অ্যালবামটিতে। এই গানটি গেয়ে আমি নিজেই বেশ আনন্দ পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমার প্রথম এককে ‘দমে দমে’ শীর্ষক একটি সুফি ধাঁচের গান করেছিলাম। গানটির জন্য ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। হঠাৎ মনে হলো এ অ্যালবামে সুফি ধাঁচের একটি গান রাখলে মন্দ হয় না। অন্য অ্যালবামগুলোতে তো প্রেমের গানই করেছি বেশি। নতুন অ্যালবামে বৈচিত্র্য আনতেই এ গানটি করা। গানটির মাধ্যমে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করার চেষ্টা করেছি। আশা করি গানটি শ্রোতাদের পছন্দ হবে। অ্যালবামটি প্রকাশের জন্য এতো লম্বা সময় নেওয়ার কারণ জানাতে চাইলে বালাম বললেন, ইচ্ছে করেই যথেষ্ট সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে অ্যালবামটির কাজ শেষ করেছি। এ অ্যালবামের গানগুলোর কম্পোজিশনে অ্যাকুয়েস্টিক মিউজিক ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিটাল মিউজিকের চেয়ে অ্যাকুয়েস্টিকে কাজ করলে অনেক বেশি সময় লাগে। তাছাড়া পারিবারিক আর ব্যক্তিগত ব্যস্ততার পাশাপাশি এ সময়টায় বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সবশেষে বালাম বললেন, কেবল জনপ্রিয়তা পাওয়ার মোহে নয়, ভালো গান দিয়েই অ্যালবামটি সাজাতে চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ‘বালাম-৪’ এর বৈচিত্রময় গান অবশ্যই আমার গানের ভক্তদের নতুনত্বে স্বাদ দিবে। সবমিলিয়ে আমি অ্যালবামটি নিয়ে খুবই আশাবাদী।
গৌরির আক্রমণে নাজেহাল প্রিয়াঙ্কার পাশে বন্ধুরা
অনন্যা আশরাফশাহরুখ-প্রিয়াঙ্কার প্রেমের গুঞ্জনের আবেশ এখনো ছড়িয়ে আছে বলিউড ফিল্মডোমে। কিছুদিন পরপর প্রিয়াঙ্কার দিকে আক্রমণের তীর ছোঁড়েন শাহরুখের স্ত্রী গৌরি খান। এতে নিভু নিভু আগুনে ঘি ঢালার মতোই শাহরুখ-প্রিয়াঙ্কার রোমান্সের গুঞ্জন আরো চাঙ্গ হয়ে উঠে। গৌরির আক্রমনে প্রিয়াঙ্কা নীরব থাকলেও বিষয়টি মেনে নিতে পারেন নি প্রিয়াঙ্কার ঘনিষ্ঠবন্ধুরা। সম্প্রতি তারা প্রিয়াঙ্কার প্রতি গৌরির বিষদাগারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বলিউড বাদশা শাহরুখের সঙ্গে প্রেমের খেসারতটা খুব বেশি দিতে হচ্ছে প্রিয়াঙ্কাকে। কোন পার্টিতে গৌরির মুখোমুখি হলেই তীর্যক কথা শুনতে হচ্ছে। কখনো কখনো অনেকের সামনে প্রিয়াঙ্কাকে গৌরি অপমানও করেছেন। কিন্তু বেচারি প্রিয়াঙ্কা বরাবরই চুপ থেকেছেন, অনেক সময় পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। সম্প্রতি এমনই এক পার্টিতে আবারও মুখোমুখি হন গৌরি-প্রিয়াঙ্কা। সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না গৌরি। বন্ধু করন জোহরকে সঙ্গে নিয়ে প্রিয়াংকার উদ্দেশে কটূক্তি করলেন গৌরি।
কটূক্তির জবাবে প্রিয়াঙ্কা বরাবরের মত এবারও চুপ ছিলেন। কিন্তু চুপ থাকেননি প্রিয়াঙ্কার পাশে থাকা ঘনিষ্ঠবন্ধুরা। এ সময় প্রিয়াঙ্কার এক ঘনিষ্ঠবন্ধু প্রতিবাদী কন্ঠে গৌরিকে বলেন, কোনো মেয়ে যদি স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তবে তা অবশ্যই চার দেয়ালের আড়ালে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা মিটিয়ে নেয়া উচিত। নিজের দূর্বলতার জন্যে অন্যকে আঘাত করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। অন্যদিক থেকে প্রিয়াঙ্কার আরেক ঘনিষ্ঠবন্ধু বলে উঠেন, ‘প্রিয়াঙ্কার যখন নয় বছর বয়স তখন থেকেই দেখেছি শাহরুখকে শ্রদ্ধা করতে। কিন্তু এখন তার নাম শুনলেই আঁতকে উঠেন প্রিয়াঙ্কা। আমরা সাক্ষী, প্রিয়াংকা শাহরুখের সঙ্গে এখন কতোটা দুরত্ব বজায় রাখে। কাজের প্রয়োজনেই কেবল তারা কথা বলে। আশা করছি, শিগগিই প্রিয়াংকা ও শাহরুখকে নিয়ে এ ধরনের গুঞ্জনের অবসান ঘটবে। শাহরুখ-প্রিয়াঙ্কার রোমান্সের গুঞ্জন ছড়াবার পর থেকে বলিউড ইন্ডাষ্ট্রিসহ সবাই কেবল তাদের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন। বেশি দোষারোপ করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে। শাহরুখকেও এ বিষয়ে কথা শুনতে হয়েছে, তবে অপমানের ভাগটা বেশি সয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। এই প্রথম প্রিয়াঙ্কার হয়ে কেউ প্রতিবাদ জানালেন। ঘনিষ্ঠবন্ধুদের এ প্রতিবাদ প্রিয়াঙ্কাকেও এই গুঞ্জনের বিরুদ্ধে লড়তে সাহস জোগাবে।
রূপকথার পরী মিম
বিনোদন প্রতিবেদক
অনন্যা আশরাফ
কো-স্টারদের সঙ্গে বলিউড বডিগার্ড সালমান খানের সুসম্পর্কের কথা সবারই জানা। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সালমানের খুব ভালো বন্ধুও হয়ে উঠেন। সালমানের সে বন্ধুদের একজন হলেন বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা। বন্ধুত্বের প্রতিদান দিতে সালমান বরাবরি প্রস্তুত থাকেন সবসময়। আর এবার প্রীতির প্রযোজনায় প্রথম ছবি ‘ইশক ইন প্যারিস’-এ অভিনয় করে বন্ধুত্বের প্রতিদান দিলেন সালমান। সালমান খানের হোম প্রডাকশনের ছবি ‘ম্যান অর মিসেস খান্না’তে তার প্রস্তাবে ‘হ্যাপেনিং’ নামে একটি আইটেম গানে নেচেছিলেন প্রীতি জিনতা। সে সময়ের কথা মনে রেখেই সালমান এখন বন্ধু প্রীতির প্রথম ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেলেন। ‘দাবাঙ টু’ ছবিটি নিয়ে এখন ভীষন ব্যস্ত সালমান। এ ব্যস্ততার মধ্যেও বন্ধুর কথা রাখতে ‘ইশক ইন প্যারিস’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যে সময় বের করবেন তিনি।‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’ ছবির শুটিংয়ে বন্ধুত্ব হয় সালমান ও প্রীতির। বন্ধুত্বের গভীরতার কথা প্রকাশ করে সম্প্রতি এক পত্রিকার সাক্ষাতকারে প্রীতি বলেন, সালমান এমন একজন বন্ধু যাকে সবসময় পাশে পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, ইশক ইন প্যারিস’ ছবিতে সালমান অভিনয়ে রাজী হয়েছেন। যদিও ছবিতে তার উপস্থিতি খুব অল্প সময়ের জন্যে কিন্তু তা ছবির জন্যে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। সালমান খানের ‘ ম্যান অর মিসেস খান্না ’ ছবিতে প্রথম ক্যারিয়ার শুরু করা প্রেম সোনি পরিচালনা করছেন প্রীতির প্রযোজনায় ‘ইশক ইন প্যারিস’ ছবিটি। প্রথম প্রযোজনার এ ছবি নিয়ে প্রীতি খুব আশাবাদী।
প্রয়োগ ফিল্ম সিটি’র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহরুখ
বিনোদন ডেস্ক
পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বলিউড কিং খান শাহরুখের ভালোবাসাটা বরাবরই খুব বেশি। কিছুদিন আগে মমতা ব্যানার্জীর আহবানে পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন শাহরুখ। এবার সেখানকার মেদিনীপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত ‘প্রয়োগ ফিল্ম সিটি’ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হয়ে শাহরুখ তার ভালোবাসার প্রমান দিলেন আবারও। পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় জঙ্গলমহলের চন্দ্রকোনা এলাকায় আরাবাড়ী সংরক্ষিত বনে প্রকৃতির কোলে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা ‘প্রয়োগ ফিল্ম সিটি’এর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এপ্রিলের ১৫ তারিখ। সেখানে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শাহরুখ। নিজের তারকা খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে কলকাতাকে উপস্থাপন করতে বেশ ভালোই লাগে তার। প্রয়োগ ফিল্ম সিটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বসেডর হতে পেরে শাহরুখ তার ভীষন আনন্দের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন ভারতের পিটিআই-এর একটি রিপোর্টে। গেল বছর নভেম্বরে কলকাতা ফিল্ম ফ্যাষ্টিভালের ১৭ তম আয়োজনে শাহরুখকে কলকাতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হবার প্রস্তাব দেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। পরবর্তীতে তার আহবানে সাড়া দিয়ে কলকাতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হন শাহরুখ । এছাড়াও আইপিএল-এর ‘কলকাতার নাইটস রাইডারস’ দলটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে প্রথম পশ্চিমবঙ্গের প্রতি তার ভালোবাসা প্রকাশ করেন শাহরুখ। কলকাতা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার দূরত্বে ১৬৫ কিলোমিটার পশ্চিমে চন্দ্রকোনা সড়কে গড়ে তোলা এই ফিল্ম সিটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়তনের ফিল্ম প্রসেসিং জোন। ১১ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ২ হাজার ৭০০ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটি। সেট বা স্টুডিও থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রশিল্পের সবকিছুই থাকছে সমন্বিত এই ফিল্ম সিটিতে এর অবস্থান।
প্রয়োগ ফিল্ম সিটি’র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহরুখ
বিনোদন ডেস্ক
অনন্যা আশরাফ
চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত সাইফ-কারিনার বিয়ের অপেক্ষায় যখন বিশ্ববাসী ঠিক তখন আবারো বিয়ের তারিখ পেছানোর ঘোষনা দিলেন বলিউড ছোটে নবাব সাইফ আলী খান। গার্লফ্রেন্ড কারিনাকে বিয়ে করার চাইতে পরিবারের দায়িত্বই এখন তার মাথায় ভর করেছে। আর তাই ছোট বোন সোহা আলী খানের বিয়ের পরই নিজেদের বিয়ের কথা ভাববেন সাইফ-কারিনা।‘এজেন্ট বিনোদ’ ছবি মুক্তির পর সাইফ-কারিনা পরিবার থেকে তাদের বিয়ের তারিখ ঘোষনা দেবার কথা ছিল। ভক্তরাও সে ঘোষনার অপেক্ষায় ছিল। অনেকে ধারণা করেছিলেন , ২৩ মার্চ ছবিটি মুক্তি পেলে আর দেরী না করবেননা সাইফ-কারিনা। ১লা এপ্রিলেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিবেন তারা। কিন্তু ছবি মুক্তির পর আবারো ঘুরে গেল সবকিছু। ছোটে নবাবের মাথায় চেপে বসলো পরিবারের দায়িত্ব পালন করেই নিজের বিয়ের কথা ভাববেন তিনি। আর তাই এ বছরের শেষে নভেম্বরের দিকে ছোট বোন সোহা আলী খানকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তুলে দিতে চান তার বয়ফ্রেন্ড কুনাল খেমুর হাতে। পতৌদির পরিবার থেকে ইতিমধ্যেই সোহা-কুনালের বিয়ের তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনার ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। গেল বছর সেপ্টেম্বরে বাবা নবাব পতৌদির মৃত্যুর পর নবাবের পাগড়ি পরানো হয় ছোটে নবাব সাইফ আলী খানকে। সে সঙ্গে পরিবারের সব দায়িত্বও ঘাড়ে এসে পরে তার। আর সে দায়িত্বশীলতার কথা ভেবেই ছোট বোনকে আগে বিয়ে দিতে চান তিনি। এমনকি ছোটে নবাব সিদ্ধান্তও নিয়েছেন, বাবা নবাব পতৌদির মৃত্যু একবছর পূর্তি না হওয়া পযর্ন্ত তাদের পরিবারে বিয়ের সানাই বাজবেনা। তাই সোহা-কুনালের বিয়ের সময়টাও ঠিক করা হয়েছে বছরের শেষে নভেম্বরে। অন্যদিকে বলিউড অভিনেতা কুনাল খেমুও এক সাক্ষাতকারের বলেছিলেন, সাইফ-কারিনার বিয়ের অপেক্ষায় থেমে থাকবেনা আমাদের বিয়ে। তারা দুজনই খুব ব্যস্ত সময় কাটান। কাজের অবসর বের করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা কবে নাগাদ তারা করবেন তা নিশ্চিত না। আর আমি সোহার সঙ্গে আমার বিয়েটা শিগগিই সারতে চাই। সাইফ-কারিনার বিয়ে নিয়ে যেমন ভক্তদের তাড়া তেমনি সোহা-কুনালের বিয়ে নিয়েও তাড়ায় আছেন তাদের পরিবার। সাইফ-কারিনা যে বিয়ে হবার কথা ছিল বছরের শুরুতে তা হয়তবা এ বছরের শেষেও সম্ভব হবেনা কিনা তা অনিশ্চয়তায় রয়ে গেল। তাই আলোচিত এ বিয়ে দেখতে আরো অনেকটা সময় অপেক্ষায় থাকতে হবে ভক্তদের।
প্রথম চলচ্চিত্র দিবসে পুরস্কৃত ২০১০ সালের বিজয়ীরা
বিনোদন প্রতিবেদকদেশীয় চলচ্চিত্রের চলমান ক্রান্তিলগ্নে প্রতিবছরের ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ঘোষণা এবং প্রথম চলচ্চিত্র দিবসে ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান উদ্দীপনা তৈরি করেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস মঙ্গলবার ৩ এপ্রিল বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্যসচিব হেদায়েতউল্লা¬হ আল মামুন স্বাগত বক্তব্য দেন। পুরস্কার প্রদানের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শুভেচ্ছ বক্তব্যে বলেন, ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল প্রাদেশিক আইন পরিষদে তৎকালীন শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রম মন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান উত্থাপিত ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা’ বিলটি পাশ হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এফডিসি। ঐতিহাসিক এ দিনটিকে এ বছর থেকে আমরা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছি। প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসে ২০১০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা তুলে দিতে পারায় আমি আনন্দিত। তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমাদের একটি প্রতিশ্র“তি আছে। সেই প্রতিশ্র“তি পূরণের লক্ষেই চলচ্চিত্রকে শিগগিরই শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে সরকার। আমরা সাফল্য পেয়েছি ক্রিকেটে, নারীর ক্ষমতায়নে ও দারিদ্র্য বিমোচনে। শিশু ও মাতৃমৃত্যুও হার অনেক কমিয়ে এনেছি। সমূদ্র জয় করেছি। জলবায়ুর পরিবর্তনের নেতিবাচাক প্রভাব মোকাবেলা আমরা আমাদের সামর্থ্য বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে পেরেছি । আমার বিশ্বাস, আমাদের চলচ্চিত্রও বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। ২০১০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ২৫ জন শিল্পী ও কলাকুশলী। এ ছাড়াও চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বিশেষ অবদানের জন্য অভিনেতা আনোয়ার হোসেনকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলেন দেন। ২০১০ সালের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কৃত হয়েছে ‘গহীনে শব্দ’। প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। একই চলচ্চিত্রের জন্য খালিদ মাহমুদ মিঠু পান শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার। ‘ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে শাকিব খান পুরস্কৃত হয়েছেন। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন পূর্ণিমা, ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। ‘জীবন মরণের সাথী’ ছবিতে আলমগীর শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেতা এবং ‘ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য রোমানা শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কার পান। ‘ভালবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ছবির ‘বুকেরই ভিতরে যতন’ গানটির জন্য এসআই টুটুল শ্রেষ্ঠ গায়ক, একই ছবির ‘ভালবেসেই সবার সাথে ’ গানের জন্য শাম্মী আক্তার শ্রেষ্ঠ গায়িকা এবং শেখ সাদী খান শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’ ছবিতে ‘রূপালী রাত নেমেছে’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার গ্রহণ করেন কবীর বকুল। ‘অবুঝ বউ’ চলচ্চিত্রের জন্য সুজেয় শ্যাম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ও ‘মোঘল-এ-আজম’ ছবির জন্য ইমদাদুল হক খোকন শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালকের পুরস্কার পান।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রে মিজু আহমেদ, কৌতুক চরিত্রে আফজাল শরীফ, শিশু শিল্পী প্রার্থনা ফার্দিন দিঘী, কাহিনীকার জাকির হোসেন রাজু, চিত্রনাট্যকার নারগিস আক্তার, সংলাপ রচয়িতা জাকির হোসেন রাজু, চিত্রগ্রাহক হাসান আহমেদ, শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম, সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলু, শিল্প নির্দেশক মহিউদ্দিন ফারুক, মেকাপম্যান আব্দুর রহমান এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় বিবি রাসেল পুরস্কার পান। তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যসচিব হেদায়েতউল্লা¬হ আল মামুন । অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল তারকাশিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রে মিজু আহমেদ, কৌতুক চরিত্রে আফজাল শরীফ, শিশু শিল্পী প্রার্থনা ফার্দিন দিঘী, কাহিনীকার জাকির হোসেন রাজু, চিত্রনাট্যকার নারগিস আক্তার, সংলাপ রচয়িতা জাকির হোসেন রাজু, চিত্রগ্রাহক হাসান আহমেদ, শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম, সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলু, শিল্প নির্দেশক মহিউদ্দিন ফারুক, মেকাপম্যান আব্দুর রহমান এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় বিবি রাসেল পুরস্কার পান। তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যসচিব হেদায়েতউল্লা¬হ আল মামুন । অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল তারকাশিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সবাইকে চমকে দিয়েছিল ইউটিউবে ফাঁস হওয়া শ্রীলঙ্কার পরিচালক বিমুক্তি জয়সুন্দরের `ছত্রাক` (বাংলা ভার্সান`টির নাম `মাশরুম`) ছবির ৩০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ। যেখানে সম্পূর্ণ নগ্ন শরীরে দেখা গিয়েছিল টলিউডের পাওলি দামকে। গোটা দেশ তালপাড় করেছিলেন পাওলি। গত ২৪ মার্চ আবারও আলোড়ন তোলেন পাওলি। বিবেক অগ্নিহোত্রীর `হেট স্টোরি`র টিজারে আবারও নিজেকে মেলে ধরলেন পাওলি। এই ছবিতে বিবসনা শরীরে শয্যাদৃশ্যে অভিনয় করেছেন পাওলি ও তার সহ-অভিনেতা গুলশান দ্বিবেদী। বিক্রম ভাট প্রযোজিত `হেট স্টোরি` দিয়েই বলিউডে পা রাখতে চলেছেন পাওলি। `মাধবীলতা`র ইমেজ থেকে বেরিয়ে পাওলি এখানে একজন `হাই সোসাইটি কল গার্ল।` পারিবারিক চাপে বাধ্য হয়ে দেহব্যবসা বেছে নেওয়া মেয়েদের অসহায়তা বহুবার দেখানো হয়েছে ভারতীয় ছবিতে। কিন্তু হেট স্টোরি’র পাওলি এদের থেকে অনেকটাই আলাদা। বাধ্য হয়ে দেহ ব্যবসায় আসতে হলেও শরীরকে সে ব্যবহার করে লড়াইয়ের অন্যতম অস্ত্র হিসেবে। যেখানে শরীর তার অসহায়তা নয়, বরং প্রতিশোধ নেওয়ার হাতিয়ার। রাগ, দুঃখ, প্রতিহিংসা ব্যক্ত করার একমাত্র মাধ্যম। শহরের সবথেকে বড় বারবণিতা হয়ে ওঠার মধ্য দিয়েই যে চরিতার্থ করতে চায় তার প্রতিশোধ স্পৃহা। পাওলির কাজে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বিবেক। পর্দায় পাওলির আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি, সাহসী সংলাপ আর শয্যাদৃশ্যের সতৃপ্ত শিত্কার প্রশংসা কুড়িয়েছে বিক্রমেরও। পুরো ইউনিটের উপস্থিতিতে পাওলির নিরাবরণ শুটিং, প্রমাণ করেছে তার পেশাদারিত্ব। বলিউডে পা রাখার আগেই বিবেক এই `ডাস্কি বিউটি`কে তুলনা করতেও শুরু করেছেন কাজলের সঙ্গে। উন্মুক্ত যৌনতা আর সাহসী সংলাপ দিয়ে ছবি তৈরি করলেও ভারতের মতো দেশে সেন্সর বোর্ডের বেড়া টপকে ছবির রিলিজ নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন প্রযোজক।
আমিরকে নিয়ে আইসিসির শিক্ষা ভিডিও
স্পোর্টস ডেস্ক
লন্ডন: স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত হওয়ার পর উলট-পালট হয়ে গেছে মোহাম্মদ আমিরের জীবন। এ অপরাধে শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধই হননি; কারাভোগও করেছেন তিনি। সবকিছু অকপটে স্বীকার করে অনুতপ্ত এই ১৯ বছর বয়সী ক্রিকেটার ফের অপেক্ষায় আছে জাতীয় দলে ফেরার। ঠিক সে মুহূর্তে ক্রিকেটে দুর্নীতি ঠেকাতে দারুণ উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন এবং সিকিউরিটি ইউনিট (এসিএসইউ)। তাকে নিয়ে পাঁচ মিনিটের শিক্ষা ভিডিও চিত্র তৈরি করেছে সংস্থাটি। এই ভিডিও চিত্রে ১৯ বছর বয়সী এই পাকিস্তানি ক্রিকেটারের স্পট-ফিক্সিংয়ে জড়ানোর ঘটনা শুরু করে কাতারে শুনানির সময় আইসিসিকে মিথ্যা বলে বিব্রত বোধ করা এবং তিন মাস লন্ডনের কারাগারে কাটানোর যন্ত্রণার কথা উঠে এসেছে। আমির বলেন,‘লর্ডস টেস্টে আমি ছয়টি উইকেট পেয়েছিলাম। তবে কয়েক ঘণ্টা পর পাল্টে গেছে সবকিছু। দুটি নো বলের জন্য ধ্বংস করে দিয়েছে আমাকে।’ লর্ড টেস্টে নো বল করা প্রসঙ্গে, ‘কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার বাজে কাজটি করতে চাপ দিয়েছিলো। এটা করতে চাইনি। একসময় আমি ছিলাম সেরা বোলার এবং এরপরই সবাই আমাকে প্রতারক হিসেবে জানলো। এমন কষ্টের কথা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না।’ স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারি প্রমাণিত হওয়ায় ছয় মাসের জেল দিয়েছিলো লন্ডনের ক্রাউন কোর্ট। ভিডিও চিত্রে বিষয়টি নিয়ে তরুণ পেসার বলেন, ‘যখন পুলিশ হাতকড়া পড়ালো তখন কেঁদে ছিলাম। আমি ভাবছি আর কোনদিনই ক্রিকেট খেলতে পারবো না।’ ভালো ব্যবহারের জন্য তিন মাস আগেই জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। জেলের জীবন প্রসঙ্গে এবং ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে এখানে বলেন, ‘জেল প্রত্যেকের জন্যই একটি বাজে জায়গা। আমি যা করেছি, এমন ভুল আর কেউই করবেন না। আমি একজন বোকা। আমি তখন কাউকেই বিষয়টি বলিনি কারণ আমার যথেষ্ট সাহস ছিলো না। কেউ যদি আপনাদের এমন প্রস্তাব দেয় তাহলে সরাসরি আইসিসিকে জনিয়ে দিবেন এবং তারা আপনাদের সাহায্য করবে।’ স্পট ফিক্সিংয়ে জড়ানোর জন্য পাকিস্তানের অন্য দুই ক্রিকেটার সালমান বাটকে আড়াই বছর ও মোহাম্মদ আসিফকে ১ বছরের জেল দেন আদালত।
আমিরকে নিয়ে আইসিসির শিক্ষা ভিডিও
স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
সাকিব আল হাসান তখন বৈদ্যুতিক আলোর নিচে ইডেন গার্ডেনে কলকাতা নাইটরাইডার্সের অনুশীলনে। একজনকে মাধ্যম করে যোগাযোগের চেষ্টাও বৃথা গেলো। জানা হলো না দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে তার খেলার সম্ভাবনা কতটা। ভারতের সংবাদপত্র ঘেটে যা একটু তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেলো তাতে সাকিবের পক্ষে যায় খুব সামান্য। এনডিটিভি ছাড়া কেউ স্বীকারই করতে চায়নি সাকিব এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিন অলরাউন্ডার। এতে অবশ্য কিছু যায় আসে না। কলকাতা নাইটরাইডার্সের ম্যানেজমেন্ট প্রয়োজন মনে করলে সাকিবকে খেলাবেনই।
যদিও ভারতীয় সাংবাদিকদের সম্ভাব্য একাদশে বাংলাদেশের ক্রিকেটারের জায়গা হয়নি। কিন্তু সাকিব তো বলে গিয়েছিলেন তিনি সবগুলো ম্যাচে খেলতে চান। প্রথম ম্যাচে বসে থাকলে ভেস্তে যাবে তার স্বপ্ন। আরে তিনি না খেললে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ। ঘুণাক্ষরেও তারা ভাবছে না টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের শীর্ষ অলরাউন্ডারকে খেলাবেন না। খেলতেও তো পারেন। এজন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে একাদশ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত। আরে সাকিব ছাড়া ট্রেভর বেলিসের একাদশ হয় কি করে? তারচেয়ে বড় তারকা নিশ্চয়ই ইউসুফ পাঠান না। ব্রাড হজ, ম্যাককালাম, জ্যাক ক্যালিস ও ব্রেট লি’দের সঙ্গে সাকিবও একাদশে ঢুকে যেতে পারেন।
মেসির রেকর্ড, সেমিফাইনালে বার্সা
স্পোর্টস ডেস্ক
যদিও ভারতীয় সাংবাদিকদের সম্ভাব্য একাদশে বাংলাদেশের ক্রিকেটারের জায়গা হয়নি। কিন্তু সাকিব তো বলে গিয়েছিলেন তিনি সবগুলো ম্যাচে খেলতে চান। প্রথম ম্যাচে বসে থাকলে ভেস্তে যাবে তার স্বপ্ন। আরে তিনি না খেললে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাবে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ। ঘুণাক্ষরেও তারা ভাবছে না টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের শীর্ষ অলরাউন্ডারকে খেলাবেন না। খেলতেও তো পারেন। এজন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে একাদশ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত। আরে সাকিব ছাড়া ট্রেভর বেলিসের একাদশ হয় কি করে? তারচেয়ে বড় তারকা নিশ্চয়ই ইউসুফ পাঠান না। ব্রাড হজ, ম্যাককালাম, জ্যাক ক্যালিস ও ব্রেট লি’দের সঙ্গে সাকিবও একাদশে ঢুকে যেতে পারেন।
স্পোর্টস ডেস্ক
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে ইতালির ক্লাব এসি মিলানের সঙ্গে ড্র করলেই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। এমন পরিস্থিতিতে মিলানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা পঞ্চম বারের মতো সেমিফাইনালে উঠার রেকর্ড গড়েছে কাতালানরা।
ন্যু কাম্পের এই ম্যাচে জোড়া গোল করে বার্সা তারকা লিওনেল মেসি গড়েছেন আরেকটি রেকর্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সাবেক মিলান ফরোয়ার্ড হোসে আলতাফিনির এক মৌসুমের সর্বোচ্চ ১৪ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এছাড়া সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ৫১ গোলের রেকর্ড মেসির দখলে। অবশ্য তার আগে রয়েছেন রাউল (৭১ গোল) ও রুড ফন নিস্টলরয় (৫৪ গোল)। গত সপ্তাহে মিলানের মাঠে প্রথম লেগে গোলশূন্য ড্র করার পর ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে উঠার শঙ্কা নিয়ে মাঠে নামে গার্দিওলার শিষ্যরা। এ ম্যাচে ড্র করলেও সেমিফাইনালের টিকিট পাবে মিলান। এমন অবস্থায় খেলার শুরুতেই বলের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সা। অপরদিকে মিলান কোচ মেসিমিলানো কৌশল নেন শক্ত রক্ষণদুর্গ বানিয়ে পাল্টা-আক্রমণ হানার। পাঁচ মিনিটেই পাল্টা-আক্রমণ থেকে গোল পেতে পারতো বার্সা শিবির। এক্ষেত্রে মেসির শট দারুণভাবে রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক ক্রিশ্চিয়ান আবিয়াত্তি।
স্বাগতিকরা ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় মেসির স্পট কিক থেকে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে মিলান ডিফেন্ডার লুকা অ্যান্তোনিনির অবৈধ ট্যাকলের জন্য পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। যদিও ৩২ মিনিটে ইব্রাহিমোভিচের দুর্দান্ত পাস থেকে মিলানকে (১-১) সমতায় ফেরান অ্যান্তোনিও নোসেরিনো। সেমিফাইনালে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় সমতা ধরে রাখতে পারেনি মিলান। ৪২ মিনিটে আবারও পেনাল্টির মাশুল গুনতে হয় সফরকারীদের। স্পট কিক থেকে এবারও জালে বল জড়ান মেসি। বিরতির পর বার্সা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা মেসির বানিয়ে দেওয়া বল থেকে ব্যবধান বাড়ান (৩-১)। এরপর গোলের দেখা পায়নি কোনও পক্ষ। যদিও বেশ কয়েকটি সুযোগ হাত ছাড়া করে উভয় দল। ৬০ মনিটে বার্সা গোলরক্ষক ভালদেসকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি রবিনহো। এক্ষেত্রে চমৎকার দক্ষতায় মিলানকে গোল বঞ্চিত করেন ভালদেস। ৬৮ মিনিটে মেসির বানিয়ে দেওয়া বলে গোল করতে ব্যর্থ হন থিয়াগো আলকান্তারা। এছাড়া খেলার পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে মিলান গোল রক্ষককে একা পেয়েও আরেকবার বার্সাকে এগিয়ে দিতে পারেননি আদ্রিয়ানো। তাই ৩-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদেরকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অপর ম্যাচে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ ২-০ গোলে ফ্রান্সের অলিম্পিকে মার্শেইকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে।
ন্যু কাম্পের এই ম্যাচে জোড়া গোল করে বার্সা তারকা লিওনেল মেসি গড়েছেন আরেকটি রেকর্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সাবেক মিলান ফরোয়ার্ড হোসে আলতাফিনির এক মৌসুমের সর্বোচ্চ ১৪ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এছাড়া সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ৫১ গোলের রেকর্ড মেসির দখলে। অবশ্য তার আগে রয়েছেন রাউল (৭১ গোল) ও রুড ফন নিস্টলরয় (৫৪ গোল)। গত সপ্তাহে মিলানের মাঠে প্রথম লেগে গোলশূন্য ড্র করার পর ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে উঠার শঙ্কা নিয়ে মাঠে নামে গার্দিওলার শিষ্যরা। এ ম্যাচে ড্র করলেও সেমিফাইনালের টিকিট পাবে মিলান। এমন অবস্থায় খেলার শুরুতেই বলের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সা। অপরদিকে মিলান কোচ মেসিমিলানো কৌশল নেন শক্ত রক্ষণদুর্গ বানিয়ে পাল্টা-আক্রমণ হানার। পাঁচ মিনিটেই পাল্টা-আক্রমণ থেকে গোল পেতে পারতো বার্সা শিবির। এক্ষেত্রে মেসির শট দারুণভাবে রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক ক্রিশ্চিয়ান আবিয়াত্তি।
স্বাগতিকরা ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় মেসির স্পট কিক থেকে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে মিলান ডিফেন্ডার লুকা অ্যান্তোনিনির অবৈধ ট্যাকলের জন্য পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। যদিও ৩২ মিনিটে ইব্রাহিমোভিচের দুর্দান্ত পাস থেকে মিলানকে (১-১) সমতায় ফেরান অ্যান্তোনিও নোসেরিনো। সেমিফাইনালে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় সমতা ধরে রাখতে পারেনি মিলান। ৪২ মিনিটে আবারও পেনাল্টির মাশুল গুনতে হয় সফরকারীদের। স্পট কিক থেকে এবারও জালে বল জড়ান মেসি। বিরতির পর বার্সা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা মেসির বানিয়ে দেওয়া বল থেকে ব্যবধান বাড়ান (৩-১)। এরপর গোলের দেখা পায়নি কোনও পক্ষ। যদিও বেশ কয়েকটি সুযোগ হাত ছাড়া করে উভয় দল। ৬০ মনিটে বার্সা গোলরক্ষক ভালদেসকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি রবিনহো। এক্ষেত্রে চমৎকার দক্ষতায় মিলানকে গোল বঞ্চিত করেন ভালদেস। ৬৮ মিনিটে মেসির বানিয়ে দেওয়া বলে গোল করতে ব্যর্থ হন থিয়াগো আলকান্তারা। এছাড়া খেলার পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে মিলান গোল রক্ষককে একা পেয়েও আরেকবার বার্সাকে এগিয়ে দিতে পারেননি আদ্রিয়ানো। তাই ৩-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদেরকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অপর ম্যাচে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ ২-০ গোলে ফ্রান্সের অলিম্পিকে মার্শেইকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে।
পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ইব্রাহিমোভিচের
স্পোর্টস ডেস্ক
বার্সেলোনা: উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন এসি মিলানের ফরোয়ার্ড ইব্রাহিমোভিচ। বলেছেন, ‘এখন বুঝতে পারছি বার্সেলোনার মাঠ ন্যু কাম্প সফরের পর কেন হতাশ হন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হোসে মরিনহো’। উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় ১-১ গোলে সমতার পর পেনাল্টি পায় বার্সা। স্পট কিক থেকে গোল করে পেপ গার্দিওলার দলকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। মূলত এই পেনাল্টির নির্দেশকে সঠিক বলে মেনে নিতে পারছেন না সুইডিশ ফরোয়ার্ড ইব্রাহিমোভিচ। তার মতে, খেলা হচ্ছে না অথচ আলেসান্দ্রো নেস্তার বিরুদ্ধে সার্জিও বুস্কেটের শার্ট ধরে টান দেওয়ার অভিযোগে বার্সার পক্ষে পেনাল্টির নির্দেশ দিলেন রেফারি বোজান কুইপার্স। রেফারির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বার্সার সাবেক ফরোয়ার্ড ইব্রাহিমোভিচ বলেন, ‘তিনি (রেফারি) কিভাবে এই রকম পেনাল্টির নির্দেশ দিলেন? যদি রেফারি পেনাল্টি দেন তবে দেওয়া উচিৎ ছিলো আমার (ইব্রাহিমোভিচ) পক্ষে। এটা খুবই লজ্জার। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, যখন বল নিয়ে খেলা হচ্ছে না তখন পেনাল্টির নির্দেশ দিতে পারেন রেফারি।’ ইতালির ক্লাব এসি মিলানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে পঞ্চম বারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা।
দুই লাখ মাইলফলকে অজের
সাব্বিন হাসান
এবারও বাংলা নববর্ষে এইচপির ইমেজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং গ্রুপ (আইপিজি) শুরু করেছে ‘এ নববর্ষে মেতে উঠুন এইচপির সঙ্গে নতুন আনন্দে’ উৎসব।
১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবে নির্বাচিত এইচপি প্রিন্টার এবং আসল এইচপি প্রিন্ট কার্ট্রজি ক্রয়ের সঙ্গে ক্রেতারা পাবেন নিশ্চিত সব আকর্ষণীয় পুরস্কার। এ উৎসব ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এ উৎসবের সময় ক্রেতারা এইচপি পণ্য কিনলেই পাবেন এইচপির লোগো সম্বলিত কে-ক্রাফটের এক্সক্লুসিভ ফতুয়া, পোলো শার্ট, গ্লাস, পানির বোতল, নোটপ্যাড, আগোরা ভাউচার কিংবা আকর্ষণীয় এইচপি ম্যাজিক মগ। এ সব উপহার পেতে নির্বাচিত পণ্যের বাক্সের গায়ের উৎসব স্টিকারটি দেখে নিতে হবে। প্রিন্টারের ক্ষেত্রে শুধু ক্রয়-রশিদ দেখিয়ে নিকটস্থ নির্ধারিত রিডেম্পশন সেন্টার থেকে উপহার সংগ্রহ করা যাবে। এদিকে প্রিন্ট কার্টিজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে উপহার সংগ্রহ করতে উৎসব স্টিকার কেটে নিতে হবে। এরপর কুপন সংগ্রহ করে এইচপি অনুমোদিত রিডেম্পশন সেন্টারে জমা দিতে হবে। সারাদেশের মোট ৪২টি রিডেম্পশন সেন্টার থেকে ক্রেতারা তাদের উপহার সংগ্রহ করতে পারবেন। এ ছাড়াও উৎসবের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে নিকটস্থ এইচপি ডিলার, রিসেলার ও রিডেম্পশন সেন্টারে। হ্যালো: ০১৭৩০০ ১৩৮২৬।
১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবে নির্বাচিত এইচপি প্রিন্টার এবং আসল এইচপি প্রিন্ট কার্ট্রজি ক্রয়ের সঙ্গে ক্রেতারা পাবেন নিশ্চিত সব আকর্ষণীয় পুরস্কার। এ উৎসব ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এ উৎসবের সময় ক্রেতারা এইচপি পণ্য কিনলেই পাবেন এইচপির লোগো সম্বলিত কে-ক্রাফটের এক্সক্লুসিভ ফতুয়া, পোলো শার্ট, গ্লাস, পানির বোতল, নোটপ্যাড, আগোরা ভাউচার কিংবা আকর্ষণীয় এইচপি ম্যাজিক মগ। এ সব উপহার পেতে নির্বাচিত পণ্যের বাক্সের গায়ের উৎসব স্টিকারটি দেখে নিতে হবে। প্রিন্টারের ক্ষেত্রে শুধু ক্রয়-রশিদ দেখিয়ে নিকটস্থ নির্ধারিত রিডেম্পশন সেন্টার থেকে উপহার সংগ্রহ করা যাবে। এদিকে প্রিন্ট কার্টিজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে উপহার সংগ্রহ করতে উৎসব স্টিকার কেটে নিতে হবে। এরপর কুপন সংগ্রহ করে এইচপি অনুমোদিত রিডেম্পশন সেন্টারে জমা দিতে হবে। সারাদেশের মোট ৪২টি রিডেম্পশন সেন্টার থেকে ক্রেতারা তাদের উপহার সংগ্রহ করতে পারবেন। এ ছাড়াও উৎসবের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে নিকটস্থ এইচপি ডিলার, রিসেলার ও রিডেম্পশন সেন্টারে। হ্যালো: ০১৭৩০০ ১৩৮২৬।
সাব্বিন হাসান
এখন থেকে ‘অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম’ সুবিধার মাধ্যমে এয়ারটেল মোবাইল গ্রাহকেরা তাদের পছন্দের গানের সমাহার থেকে নিজেই বেছে নিতে পারবেন মাই টিউনস। বিশ্বের অন্যতম প্রধান টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল বাংলাদেশের মোবাইল গ্রাহকদের জন্য এনেছে ‘অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম’ সেবা।
এ অভিনব সেবার মাধ্যমে দেশের ৬০ লাখেরও বেশি এয়ারটেল গ্রাহক পছন্দের গানের সমাহার থেকে একাধিক গান তাদের মাই টিউনস হিসেবে বেছে নিতে পারবেন। অন্যদের পছন্দের কলার টিউনস একই গান বারবার শোনার ক্লান্তি দূর করতেই এয়ারটেল এ অভিনব সেবা চালু করেছে। এ উপলক্ষে এয়ারটেল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ক্রিস টবিক জানান, এয়ারটেল প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের মোবাইল ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করছে। অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবার প্রচলন এ প্রচেষ্টার একটি অংশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রাহকেরা তাদের আউটগোয়িং কলের মাই টিউনস নিজের পছন্দ অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত গান উপভোগ করতে পারবেন। এ নতুন অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবার মাধ্যমে এয়ারটেল মোবাইল গ্রাহকেরা তাদের মাই টিউনস সার্ভিস নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। এ ছাড়াও আউটগোয়িং কলের সময় পছন্দের ক্যাটাগরির পাঁচটি গান উপভোগ করতে পারবেন। এয়ারটেল গ্রাহকেরা হাবিব, আইয়ুব বাচ্চু, বাপ্পা মজুমদার, আসিফ এবং মাইকেল জ্যাকসনের মতো পছন্দের শিল্পী ছাড়াও জনপ্রিয় গানের বিশাল সমাহার থেকে প্রতি সপ্তাহে নতুন পাঁচটি করে গান পাবেন মাত্র ১০ টাকা (ভ্যাট ব্যতীত) চার্জের বিনিময়ে (সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য)। অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবা গ্রহণে এয়ারটেলের গ্রাহকদের এসএমএস করতে হবে ‘এমটি (স্পেস) প্রোমোআইডি’ লিখে ৩১২৩ নম্বরে। যেমন হাবিবের গান সেট করতে চাইলে এয়ারটেলের গ্রাহকদের এসএমএস করতে হবে ‘এমটি (স্পেস) ০১২৩৪৮’ লিখে ৩১২৩ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। এ সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে (*১২১*২*১#) কল করলে তথ্য পাওয়া যাবে।
এ অভিনব সেবার মাধ্যমে দেশের ৬০ লাখেরও বেশি এয়ারটেল গ্রাহক পছন্দের গানের সমাহার থেকে একাধিক গান তাদের মাই টিউনস হিসেবে বেছে নিতে পারবেন। অন্যদের পছন্দের কলার টিউনস একই গান বারবার শোনার ক্লান্তি দূর করতেই এয়ারটেল এ অভিনব সেবা চালু করেছে। এ উপলক্ষে এয়ারটেল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ক্রিস টবিক জানান, এয়ারটেল প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের মোবাইল ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করছে। অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবার প্রচলন এ প্রচেষ্টার একটি অংশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রাহকেরা তাদের আউটগোয়িং কলের মাই টিউনস নিজের পছন্দ অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত গান উপভোগ করতে পারবেন। এ নতুন অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবার মাধ্যমে এয়ারটেল মোবাইল গ্রাহকেরা তাদের মাই টিউনস সার্ভিস নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। এ ছাড়াও আউটগোয়িং কলের সময় পছন্দের ক্যাটাগরির পাঁচটি গান উপভোগ করতে পারবেন। এয়ারটেল গ্রাহকেরা হাবিব, আইয়ুব বাচ্চু, বাপ্পা মজুমদার, আসিফ এবং মাইকেল জ্যাকসনের মতো পছন্দের শিল্পী ছাড়াও জনপ্রিয় গানের বিশাল সমাহার থেকে প্রতি সপ্তাহে নতুন পাঁচটি করে গান পাবেন মাত্র ১০ টাকা (ভ্যাট ব্যতীত) চার্জের বিনিময়ে (সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য)। অপারেটর ডিফাইন্ড অ্যালবাম সেবা গ্রহণে এয়ারটেলের গ্রাহকদের এসএমএস করতে হবে ‘এমটি (স্পেস) প্রোমোআইডি’ লিখে ৩১২৩ নম্বরে। যেমন হাবিবের গান সেট করতে চাইলে এয়ারটেলের গ্রাহকদের এসএমএস করতে হবে ‘এমটি (স্পেস) ০১২৩৪৮’ লিখে ৩১২৩ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। এ সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে (*১২১*২*১#) কল করলে তথ্য পাওয়া যাবে।
সাইদ আরমান
অবশেষে বিতর্কিত কর্মকর্তা ফজলুর রহমানকে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার থেকে তিনি দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। এবি ব্যাংকের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার দায়িত্ব পালন শুরুর কথা নিশ্চিত করা হয়। এর আগে তিনি ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে হলে তাকে কমপক্ষে ১৫ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে এ খাতে ফজলুর রহমানের সাড়ে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইব্রাহীম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ারবাজার ধ্বসের জন্য দায়ী শীর্ষস্থানীয়দের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিলো, সেখানে ফজলুর রহমানের নাম রয়েছে। এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকে এমডি নিয়োগের বিষয়ে কিছুটা নেতিবাচক ছিলো। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশও তাকে এমডি করার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটির পক্ষ থেকে প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে মৌখিকভাবে কথা বলা হয়। সেখান থেকে ইতিবাচক সংকেত নিয়ে গত ২৯ মার্চ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে তা চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিনি এই ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এমডি ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলবো না। কোনো কিছু জানার থাকলে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলুন। আমার কাছে যা জানতে চান, চেয়ারম্যানই তার উত্তর দেবেন।’ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে জানান, `নতুন এমডির ব্যাংকিং পেশা ১৫ বছর হয়নি মর্মে যে তথ্য তা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আইন ও বিধান মেনেই এ নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।` কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে আবেদন এসেছে, সেখানে ফজলুর রহমানের অভিজ্ঞতা ১৫ বছর দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে এ খাতে তার সাড়ে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর মধ্যে এবি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন নয় বছর সাত মাস, আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান জিএসপি ফাইন্যান্সে কর্মরত ছিলেন এক বছর ১০ মাস। জিএসপি ফাইন্যান্সের পর তিনি কন্টিনেন্টাল হাসপাতালে ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের আগস্ট পর্যন্ত কর্মরত থাকেন। এবি ব্যাংকে ডিএমডি পদে দায়িত্ব পালন করা পর্যন্ত ফজলুর রহমান বিনিয়োগ ব্যাংকিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। শেয়ার বাজারের ধসের জন্য যে কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাতে এবি ব্যাংকও রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের অন্যতম বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক। শেয়ারবাজার উত্থানের সময় ব্যাংকটির বিনিয়োগ ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ছিলেন ফজলুর রহমান। শেয়ারবাজারের উত্থান-পতনে ফজলুর রহমানের বড় ধরনের ভূমিকা ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা উপেক্ষা করে তিনি শেয়ারবাজারে ব্যাংকটির বিনিয়োগ বাড়িয়েছিলেন। তাতে ব্যাংকটির সাময়িক মুনাফা বাড়লেও গত বছর আশঙ্কাজনক হারে মুনাফা কমেছে। ২০১০ সালে যেখানে ব্যাংকটির ৩৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়েছিলো। ২০১১ সালে তা কমে ১৩৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ার বাজারের মন্দার কারণে গত অর্থবছরে আমাদের মুনাফা কমেছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে হলে তাকে কমপক্ষে ১৫ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে এ খাতে ফজলুর রহমানের সাড়ে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইব্রাহীম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ারবাজার ধ্বসের জন্য দায়ী শীর্ষস্থানীয়দের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিলো, সেখানে ফজলুর রহমানের নাম রয়েছে। এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাকে এমডি নিয়োগের বিষয়ে কিছুটা নেতিবাচক ছিলো। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশও তাকে এমডি করার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটির পক্ষ থেকে প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে মৌখিকভাবে কথা বলা হয়। সেখান থেকে ইতিবাচক সংকেত নিয়ে গত ২৯ মার্চ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে তা চূড়ান্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিনি এই ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এমডি ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলবো না। কোনো কিছু জানার থাকলে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলুন। আমার কাছে যা জানতে চান, চেয়ারম্যানই তার উত্তর দেবেন।’ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে জানান, `নতুন এমডির ব্যাংকিং পেশা ১৫ বছর হয়নি মর্মে যে তথ্য তা ঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আইন ও বিধান মেনেই এ নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।` কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে আবেদন এসেছে, সেখানে ফজলুর রহমানের অভিজ্ঞতা ১৫ বছর দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে এ খাতে তার সাড়ে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর মধ্যে এবি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন নয় বছর সাত মাস, আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান জিএসপি ফাইন্যান্সে কর্মরত ছিলেন এক বছর ১০ মাস। জিএসপি ফাইন্যান্সের পর তিনি কন্টিনেন্টাল হাসপাতালে ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের আগস্ট পর্যন্ত কর্মরত থাকেন। এবি ব্যাংকে ডিএমডি পদে দায়িত্ব পালন করা পর্যন্ত ফজলুর রহমান বিনিয়োগ ব্যাংকিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। শেয়ার বাজারের ধসের জন্য যে কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাতে এবি ব্যাংকও রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের অন্যতম বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক। শেয়ারবাজার উত্থানের সময় ব্যাংকটির বিনিয়োগ ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান ছিলেন ফজলুর রহমান। শেয়ারবাজারের উত্থান-পতনে ফজলুর রহমানের বড় ধরনের ভূমিকা ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা উপেক্ষা করে তিনি শেয়ারবাজারে ব্যাংকটির বিনিয়োগ বাড়িয়েছিলেন। তাতে ব্যাংকটির সাময়িক মুনাফা বাড়লেও গত বছর আশঙ্কাজনক হারে মুনাফা কমেছে। ২০১০ সালে যেখানে ব্যাংকটির ৩৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়েছিলো। ২০১১ সালে তা কমে ১৩৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ার বাজারের মন্দার কারণে গত অর্থবছরে আমাদের মুনাফা কমেছে।’