Year-20 # Issue-10 # 21 April 2013

সময় এখন মৌ’র


সময় এখন মৌ’র
শৈল্পিক ও সাবলীল অভিনয়ের সুবাদে তাহমিনা সুলতানা মৌ এখন টিভি পর্দার জনপ্রিয় মুখ। শুধু অভিনয়ই নয়, মডেলিং আর নাচেও তাঁর অর্জন ঈর্ষণীয়।
বর্তমান সময়ে ছোট পর্দায় তার অভিনীত ‘জননী’, ‘মায়া’, ‘অলসপুর’, ‘দুই টাকার বাহাদুরী’ নাটকগুলো প্রচার হচ্ছে।
এছাড়া, আরও বেশ কিছু ধারাবাহিক নাটকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘চোরচোর’ নাটকের মাধ্যমে সর্বপ্রথম টিভি নাটকে নাম লেখান মৌ। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৩-এই লম্বা সময়ের অভিনয় জীবনের অর্জন-বিয়োজন নিয়ে খোলামেলা গল্প হলো বাংলানিউজের সঙ্গে।

অভিনয়, না মডেলিংয়ের মাধ্যমে মিডিয়ায় যাত্রা-এমন প্রশ্নে শুরু হয় গল্প। মৌ বললেন, “শুরুটা  ছিল ১৯৯৯ সালে স্টারশিপ ও  ‘আশিক টেক্সটাইল’ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এর নির্মাতা ছিলেন আফজাল হোসেন। এরপর একই বছরে ফারুকীর পরিচালনায় ‘চোর চোর’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে প্রবেশ।”

টিভি নাটকে অভিনয়ের পর মঞ্চে অভিনয় শুরু। ২০০২ সালের দিকে নাট্যদল ‘নাট্যচক্র’-এ যোগ দিয়ে মঞ্চে কাজ শুরু করেন মৌ। পরবর্তী সময়ে ‘সুবচন’ নাট্যদল ও শেষে ‘বটতলা’ থিয়েটারের হয়ে নিয়মিত কাজ শুরু করেন। বটতলা থিয়েটারের ‘ধামাইল’ ও ‘খনা’ নাটকের নিয়মিত মঞ্চকর্মী হিসেবে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত নেই এই অভিনেত্রী। কারণ হিসেবে বললেন, “সত্যি বলতে আমি সবসময় থিয়েটারকে ভালোবেসে কাজ করেছি। এখন সংসার এবং টিভি নাটকের শুটিংয়ের ব্যস্ততায় দিন কেটে যায়। চাইলেও থিয়েটারে সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে মঞ্চে ফ্রিল্যান্স কাজ করতে চাই এখনও।” সর্বশেষ আহমেদ কিসলুর ‘গুড নাইট কয়েল’ ও অনিমেষ আইচ নির্মিত ‘ইস্টার্ন হাউজিং’-এর বিজ্ঞাপনচিত্র দু’টি তাঁর ক্যারিয়ারে যোগ করে নতুন মাত্রা। টিভি নাটকে মৌ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন ‘শান্তকুটির’, ‘জ্যোৎস্না, তৃণার গল্প’ ও ‘গুলশান এভিনিউ’ নাটকগুলোর মাধ্যমে। মৌ’র বাবা প্রয়াত এস এম হুমায়ুনও একজন সফল অভিনেতা ছিলেন। এ ছাড়া বোন ও ভগ্নিপতি (শাবনাজ-নাঈম) চলচ্চিত্রের ঈর্ষণীয় সফল জুটি ছিলেন। মা আঞ্জুমান নাহার সবসময় অভিনয়ের জন্য অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছেন। ২০০১ সালে মা-বাবার ছোট মেয়ে মৌ বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। স্বামী মনিরুল আলম পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বর্তমানে বেশ কিছু ধারবাহিক নাটকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন মৌ। ‘জননী’ ডেইলী সোপের পাশাপাশি বদরুল আনাম সৌদের পরিচালনায় ‘এলেবেলে’, শামীম জামানের ‘তিন তালা তিন চাবি’, অরণ্য আনোয়ারের ‘কর্তাকাহিনী’ এবং আল হাজেনের ‘সুপারস্টার’সহ বেশ কিছু নতুন নাটকের কাজে মগ্ন আছেন। এ নাটকগুলোতে তাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দেখা যাবে। চরিত্রগুলো নিয়ে মৌ বলেন, “আমি সব সময় যে কোন কাজে হাত দেবার আগে গল্পের দিকে নজর দেই। সুপারস্টার নাটকে ফজলুর রহমান বাবু’র বৌ এর চরিত্রে অভিনয় করেছি। যেখানে বাবু একজন প্রযোজক, আর আমি তার গৃহবধু হওয়া সত্ত্বেও অনেকটা তাকে সন্দেহ করে নায়িকা হতে চাই। এছাড়া ‘কর্তাকাহিনী’তে জাহিদ হাসানের সঙ্গে একজন মাফিয়া ডনের ডান হাত হয়ে অভিনয় করেছি। প্রত্যেকটা নাটকে দর্শকরা আমাকে ভিন্নরপে দেখতে পাবেন।” একজন শিল্পীর চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার। এ প্রসঙ্গে মৌ বলেন, “আমি যে সময়টায় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। সে সময়টা ছিল অশ্লীলতায় ঘেরা। তাছাড়া, তেমন ভালো গল্পও হাতে পাইনি। তবে নাচ-গানের মত বাণিজ্যিক ছবিতে কাজের ইচ্ছে নেই। অফ ট্র্যাকের কোন গল্প হলে অবশ্যই চলচ্চিত্রে অভিনয় করব।”

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে সাফল্যের ডায়েরিতে লেখা হয়েছে অনেক গল্প। সাফল্যের ডায়েরি ভারি করার ক্ষেত্রে কার অবদান বেশি এমনটি জানতে চাইলে মৌ বলেন, “নাচ, মডেলিং এবং অভিনয় সবকিছুর জন্য শামিম আরা নীপা ও শিবলী মুহম্মদ’র অবদান সবচেয়ে বেশি। ১৯৯৩ এর দিকে তারা আমাকে একদম ফ্রি নাচ শিখিয়েছেন এবং তাদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বলতে গেলেই তাদের জন্যই আমি আজকের মৌ।”