Year-18 # Issue-31 # 18 September 2011

দুর্গন্ধ ও রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিপন্ন পরিবেশ 
বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে হাজারিবাগ
হাসান মাহমুদ রিপন
হাজারিবাগে চামড়া শিল্পের জৈব পদার্থের  পচন, সালফাইড গ্যাস ছড়ানোর দুর্গন্ধে বসবাসের অযোগ্য হয়ে আছে পুরো এলাকা। ক্ষতিকর কেমিক্যালের দূষণে অহরহ দূষিত হচ্ছে এখানকার অধিবাসীরা। এ খাত থেকে বছরে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার  বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হলেও এ শিল্পে জড়িত শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। ট্যানারীতে কর্মরত শ্রমিকদের  কোনো মজুরি কাঠামো নেই। নেই স্বাস্থ্যরক্ষার সুবিধা। নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ শিল্পের শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লেদার ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. সেকেন্দার মিয়া এ ব্যাপারে বলেন, এ খাত থেকে বছরে প্রায় ৩শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হলেও সরকারের এদিকে নজর নেই। দীর্ঘদিন  যাবত ঝুলে আঝে হাজারীবাগ ট্যানারী শিল্পের স্থানান্তর প্রক্রিয়া। এখনো ওই এলাকায় স্থাপন করা হয়নি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। রফতানিকারক, ম্যানুফ্যাকচারার্সসহ অন্যান্য এসোসিয়েশনকে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়নি। শ্রমিকদের জন্য কোনো আবাসিক কোয়ার্টার নির্মিত হয়নি।
জানা গেছে, ট্যানারীর মালিকরা দুই একজন ছাড়া কেউই বিষাক্ত দুর্গন্ধযুক্ত এ এলাকায় থাকেন না। হাজারীবাগ এলাকায় চামড়ার বর্জ্য সিদ্ধ করে দেশে মাছ ও মুরগির খাবার হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। পোল্ট্রি সায়েন্স ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা জানান, এসব কেমিক্যাল সমৃদ্ধ ভূষি থেকে তৈরি  করা খাবার মাছ ও মুরগি থেকে সরাসরি চলে যাচ্ছে মানবদেহে। এতে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্ক, কিডনি, লিভারসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে।
ট্যানারী ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক মো. আকতার হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, ১৯৫৬ সালে মাত্র ২০টি ট্যানারী দিয়ে শুরু হয় এই এলাকার চামড়া ব্যবসা। বর্তমানে এখানে ট্যানারীর সংখ্যা ২০৬ টি। তবে হাজারীবাগে সরকারি রেজিস্ট্রারভুক্ত ট্যানারীর সংখ্যা প্রায় ১৬০ টি। দেশের প্রায় ৯০ ভাগ চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয় এখান থেকে। মৌসুমে অর্থাৎ কুরবানি ঈদে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৪শ’ টন চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়। তবে অন্য সময়ে তা করা হয় ২৫০ টন। তিনি বলেন, ট্যানারীতে কর্মরত শ্রমিক টেকনেশিয়ানদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে গ্লাভস, গামবুট, মাস্ক, সাউন্ড প্রটেক্টর ব্যবহার প্রথার যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো স্বাস্থ্যরক্ষার সুবিধাও। জৈব পদার্থের  পচন, সালফাইড গ্যাস ছড়ানোর দুর্গন্ধে ও ক্ষতিকর কেমিক্যালের দূষণের কথাও তিনি স্বীকার করেন। ট্যানারীতে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো ব্যাপারে ট্যানারী ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক বলেন ট্যানারী শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কোনো মজুরি কাঠামো নেই। শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে প্রতিদিন দেয়া হয় ৬০ টাকা। আর ঠিকাদারের মাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদের দেয়া হয় ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। মাসিক মজুরি হিসেবে পাচ্ছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।
পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ট্যানারী বর্জ্য পরিবেশের জন্য মারাত্মক  ক্ষতিকর। এ কারণে এই শিল্প কারখানাগুলোকে রেড লিস্টেড  করা হয়েছে। হাজারীবাগে এ ধরনের ট্যানারীর সংখ্যা ১শ’ ৫৮টি। এ ব্যাপারে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান জানান, রাজধানীর পরিবেশসহ বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন ২০ বছর ধরে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারী অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলন করছে। দ্রুততম  সময়ে এটা করা না হলে পরিবেশ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ৩০ অক্টোবর
নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী, আগামী ৩০ অক্টোবর রোববার ভোটগ্রহণ, ২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। ৪ এবং ৫ অক্টোবর মনোনয়ন বাছাই। ১২ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল  দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শাসুল হুদা এ তফশীল ঘোষণা করেন। এসময় অপর দুই নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন ও নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী এ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় উপ-নির্বাচন কমিশনার বিশ্বাস লুৎফর রহমানকে। এছাড়া নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে আরো ৯ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ৫ মে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করার পর নির্দিষ্ট ১৮০ দিনের মধ্যেই এ নির্বাচন সম্পন্ন করার তফশীল দেয়া হলো। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩ হাজার ৯৬ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৬১০ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১৬৩টি, ভোট কক্ষ ১২১৭টি। মোট ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ৩ হাজার ৮১৪ জন। এর মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার ১৬৩ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ১২১৭ জন, পোলিং অফিসার ২ হাজার ৪৩৪ জন।
তফশীল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. শামসুল হুদা বলেন, নবগঠিত দেশের সপ্তম সিটি করপোরেশনের যাত্রা সুন্দর করতে যথা সময়েই নির্বাচন দেয়া হচ্ছে। যাতে যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর এবার ভোট গণনার সময় যাতে বিশৃঙ্খলা না হয় সেই জন্য প্রার্থীর নির্ধারিত নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট অথবা প্রার্থী ব্যতীত গণনা স্থানে কাউকেই অবস্থান করতে দেয়া হবে না। সে যত বড় নেতাই হোক না কেন। কমিশন আইনের বাইরে কোনো কিছু ঘটতে দেবে না। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া তফশীল ঘোষণার পর এ এলাকায় বহিরাগত অবস্থান করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সেনাবাহিনী মোতায়েন করার বিষয়ে তিনি বলেন, সেনা বাহিনী মোতায়েন করার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া কথায় কথায় সেনাবাহিনী নামানো গণতন্ত্রের জন্য ভাল দিক নয় বলেও উল্লেখ করেন সিইসি।
প্রার্থীদের এক মঞ্চে এনে সংলাপ করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বিবিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এবার অভিযোগকারিকেও সতর্কতার সঙ্গে অভিযোগ করতে হবে। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে উল্টো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  
ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী, মেয়র প্রার্থী হতে হলে অবশ্যই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ভোটার হতে হবে। কাউন্সিলর প্রার্থী হতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ভোটার হতে হবে। এক ওয়ার্ডে ভোটার হয়ে অন্য ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার সুযোগ এবার নেই। এবার কোনো প্রার্থী জনসভা, মিছিল, মিটিং করতে পারবেন না। তবে পথসভা করতে পারবেন। প্রার্থীদের সাদাকালো প্রতিটি পোস্টারের নিচে পোস্টারের সংখ্যা, প্রেসের ঠিকানা, প্রকাশকের নাম দেয়া বাধ্যতামূলক। এবারই প্রথম প্রার্থীরা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে। তবে এ খাতে ব্যয়ের হিসাব নির্বাচনী ব্যয়ের সঙ্গে যোগ হবে। পোলিং এজেন্টদের বিষয়ে এ নির্বাচনে সর্বোচ্চ কড়াকড়ি আরোপ করেছে কমিশন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার নয় এমন কাউকে পোলিং এজেন্ট করা যাবে না। নির্বাচনের একদিন আগে পোলিং এজেন্টদের দুই কপি ছবি এবং নামের তালিকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। ভোট গ্রহণের দিন প্রতিটি পোলিং এজেন্টের আর্মব্যান্ড এবং জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে। এই ব্যান্ড সরবরাহ করবে কমিশন। যেসব সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যানার, রঙ্গিন পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এখনও শোভা পাচ্ছে তা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রোববার মধ্য রাতের মধ্যেই সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময়ের পর এসব প্রচারণা চোখে পড়লে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে ২০ হাজার টাকা এবং কাউন্সিলর পদে ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী ২০ থেকে ১০ হাজার টাকা জামানত জমা দিতে হবে। নগদ টাকায় কোনো জামানত এবার নেয়া হবে না। পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে এ টাকা জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় হলফনামা করে ৭টি শর্ত পূরণ, ব্যয় উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্নের কপি জমা দিতে হবে প্রার্থীদের। মনোনয়ন ফরম এবার বেশ বড় হওয়ায় তা যথাযথভাবে পূরণে জটিলতায় পড়বে প্রার্থীরা। এ কারণে রিটার্নিং অফিসারের কাছে গিয়ে যথাযথভাবে মনোনয়ন ফরম পূরণে একটি হেল্পডেস্ক খোলা হচ্ছে। মনোনয়ন ফরমে কোনো ভুল হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব রাখতে মনোনয়ন দাখিলের পূর্বে প্রার্থীকে অবশ্যই যে কোনো তফসিলী ব্যাংকে নতুন হিসাব খুলতে হবে। যার নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচনী ব্যয় সম্পর্কে বিধিমালায় বলা হয়েছে, মেয়র প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা এবং কাউন্সিলরের জন্য ১ লাখ টাকা (১৫ হাজার ভোটারের জন্য) আবার এর বেশি ভোটারের জন্য ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার প্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ৯টি ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। বাকি ১৮টি ওয়ার্ডে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করা হবে। এবারই প্রথম প্রার্থীদের ভোটার লিস্টের সিডি সংগ্রহ করতে অবশ্যই পে-ওয়ার্ডারের মাধ্যমে ৫০০ টাকা জমা করতে হবে। 
নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে গোটা সিটি করপোরেশন এলাকা। এবার প্রথম বারের মতো ভোটগ্রহণের দিন ইভিএম ব্যবহার করা কেন্দ্র ব্যতীত ২৫টি কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। এছাড়া এবারই প্রথম প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব প্রতি সাত দিন অন্তর অন্তর বিশেষ মনিটরিং টিমের কাছে জমা দিতে হবে। বিশেষ মনিটরিং টিম প্রতিদিন প্রার্থীদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে। হিসাবে কোনো অংশে গরমিল বা অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করবে বিশেষ মনিটরিং টিম। নির্বাচন শেষে সকল প্রার্থীকেই ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যেই নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করতে হবে। নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হচ্ছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে ১ জন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে মোট ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবে। ‘সামারি ট্রায়ালের’ মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটরা যে কোনো অনিয়মে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারবেন। এছাড়াও থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার সদস্য। এ নির্বাচনেও পর্যাপ্তসংখ্যক কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হবে। যে কোনো নির্বাচনী অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যবেক্ষকরা সহকারী রিটার্নিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার বা কমিশনকে অবহিত করবেন। ইসির প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তারা নিজস্ব পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাবেন। প্রাথমিকভাবে এ নির্বাচনের ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে নারায়ণগঞ্জ, বন্দর কদম রসুল এবং সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন করে সরকার। ২৩ জুন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
রাজধানীর বিজয়নগর-কাকরাইল রণক্ষেত্র, আহত শতাধিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর কাকরাইল, বিজয় নগরে জামায়াতের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর কাকরাইলের আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের সামনে বিকেল পৌনে চারটার সময় জামায়াতের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সোমবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল। বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিকেলে এ সংঘর্ষ বাধে।
পল্টন থানার ওসি শহিদুল হকসহ সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশ, জামায়ত কর্মী, সাধারণ পথচারীসহ প্রায় শতাধিক আহত হয়েছে। আহতের মধ্যে মাইটিভির ক্যামেরাম্যান সাব্বির আহমেদসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা রয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নূর মোহাম্মদ (২০) আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সে একজন শিবির কর্মী বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, গুলিস্তান মতিঝিলগামী যানবহনগুলো তোপখানা রোড হয়ে চলাচল শুরু করেছে। কিন্তু ফার্মগেটগামী গাড়িগুলো তোপখানা রোডের আটকে আছে। এছাড়া শাহবাগ মোড়ে কয়েকশ গাড়ির গ্লাস ভাঙা পাওয়া গেছে। এছাড়া জামায়াত কর্মীরা সাংবাদিকদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে। বিভিন্ন চ্যানেলের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় দেড় শতাধিক টিয়ারসেল নিক্ষেপ।
প্রধান বিচারপতির বাড়ির সামনে আইল্যান্ড ভাংচুর করা হয়েছে। সেখানে প্রচুর ডিবি পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এর আগে জামায়াত ইসলামী একটি মিছিল বের করলে পুলিশ এতে বাধা দেয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ লাঠি চার্জ ও টিয়ারগ্যাস সেল ছুড়ে মারে। পুরো এলাকায় থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আতঙ্কে লোকজন বাইরে বের হতে পারছে না। জামায়ত কর্মীরা কমপক্ষে ২০টি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুরো এলাকা ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে। পুলিশ বিভিন্ন গলির মুখে ঢুকে পরেছে। তবে এর মধ্যে পুলিশের দুটি বড় গাড়ি রয়েছে। পল্টন থেকে কাকরাইল এবং কাকরইল থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত জামায়াতের হাজার হাজার কর্মীরা মিছিল করছে। কিন্তু শুধু পল্টন মোড় ও কাকরাইলে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।  জামায়ত কর্মীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে মিছিল করছে। এছাড়া তারা রাস্তার গাড়ি ও দোকানপাট ভাংচুর করছে। পুলিশ ধাওয়া করে জামায়াত কর্মীদের কাকরাইল মসজিদের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।  বিভিন্ন গলিতে জামায়াত কর্মীরা অবস্থান নিয়ে পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছুড়ছে। কাকরাইল থেকে শান্তিনগর, মৎস ভবন, মালিবাগ, মৌচাক, আরামবাগ এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরেছে। বেশ কয়েকজন জামায়ত কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
 জাবির প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ৮-১৩ অক্টোবর
জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ øাতক পরীক্ষার বিস্তারিত সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষা শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ১৭  অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণ বশত তা ১৩ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ৮ অক্টোবর ক ইউনিট (গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ), ৯ অক্টোবর ঘ ইউনিট (জীববিজ্ঞান অনুষদ), ১০ অক্টোবর ঙ ইউনিট (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ), ১১ অক্টোবর যথাক্রমে খ ইউনিট (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) ও ছ ইউনিট (ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি), ১২ অক্টোবর যথাক্রমে চ ইউনিট (ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন-আইবিএ জেইউ) ও জ ইউনিট (আইন অনুষদ) এবং ১৩ অক্টোবর গ ইউনিট (কলা ও মানবিকী অনুষদ) এর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পাঁচ শিফটে বিকাল ৫টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় ১ ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। একটি পরীক্ষা শেষে আরেকটি শিফটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে ৩০ মিনিট ব্যবধান রাখা হবে। পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা প্রতি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েব সাইট (িি.ি ঔঁহরা.বফঁ/ধফসরংংরড়হ.ঢ়যঢ়) থেকে পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যাবে। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগের দিন সংশ্লিষ্ট প্রতি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আসন বণ্টনের তথ্য ডীন অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েব সাইট থেকে পাওয়া যাবে।

মাগুরছড়াবাসী ১৪ বছরেও পায়নি ক্ষতিপূরণ
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত মাগুরছড়া গ্যাসকূপের ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়নি ১৪ বছরেও। ১৯৯৭ সনের ১৪ জুন মাগুরছড়া গ্যাসকূপে ঘটেছিল মারাত্মক এক বিস্ফোরণ। সেদিন নিঝুম বন-পাহাড়ের মাঝে হঠাৎ মধ্যরাতে যেন রক্তিম আলোয় ভরে উঠেছিল রাতের আকাশ। বিকট এক আওয়াজে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে মাগুরছড়া গ্যাসকূপে। মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। মুহূর্তেই দিশেহারা হয়ে যায় বন-পাহাড়ের আশপাশ এলাকার মানুষসহ বন্য প্রাণী। আগুনের লেলিহান শিখা যেন মুহূর্তেই শেষ করে দিয়েছে বিশাল এলাকার ঘরবাড়ি ও জীব বৈচিত্র্য।  যে যেভাবে পেরেছে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টায় পালিয়েছে। ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই এ অঞ্চলের বৃহৎ এলাকাজুড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি পেলে এখানে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা-গবেষণাসহ ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২৫০ হেক্টর আয়তনের এই জাতীয় উদ্যানের জরিপ করা হয়। জরিপের তথ্য অনুয়ায়ী, এখানে বিরাজমান ছিল ২৬০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪২ প্রজাতির পাখি এবং ১০ প্রজাতির সরিসৃপসহ আরো অনেক ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদকুল, যা নিমিষেই নিঃশেষ হয়ে গেছে একটি মাত্র স্ফুলিঙ্গে। এছাড়া বিস্ফোরণের ফলে চা-বাগান, বনাঞ্চল, বিদ্যুৎলাইন, রেলপথ, গ্যাস পাইপলাইন, গ্যাসকূপ,  মৌলভীবাজার স্ট্রাক্চার, গ্যাস রিজার্ভ, পরিবেশ, প্রতিবেশ, ভূমিস্থ পানি সম্পদ, রাস্তাসহ এলাকার প্রাণীকুল ও উদ্ভিদকুল  মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বছর ঘুরেই আসে ১৪ জুন। আর তার সঙ্গে স্মৃতিতে ভেসে ওঠে ভয়াবহ সেই বিস্ফোরণের লেলিহান শিখা। কাল পরিক্রমা পেরিয়ে ১৪ জুন আজ ১৪ বছর অতিবাহিত করেছে। সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী যারা, আজও গা শিওরে উঠে তাদের। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পার্শ^বর্তী মাগুরছড়ায় গ্যাসকূপ খননের কাজে নিয়োজিত ছিল বহুজাতিক তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি অক্সিডেন্টাল। ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন তারিখে অক্সিডেন্টালের খামখেয়ালির কারণেই ঘটে এই বিস্ফোরণ।
মাগুরছড়ায় এই ভয়াবহ গ্যাসকূপ বিস্ফোরণের পর পরই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিটি ১ মাসের মধ্যে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে বিশাল এক তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করে। পরবর্তীতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ, ক্ষতিপূরণ পাওয়া ও বিতরণের বিষয়ে একটি সাব-কমিটি গঠন করে। এতে দুর্ঘটনার জন্য  অক্সিডেন্টালের ব্যর্থতার কারণ প্রকাশ করা হয়।
চট্টগ্রামে ভাংচুরের পর জামায়াত- শিবিরের ২৬ কর্মী আটক
নগরীর মুরাদুপর এলাকায় সোমবার বিকেলে জামায়াত-শিবির কর্মীদের নির্বিচারে গাড়ি ভাংচুরের পর সেখান থেকে ২৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পাঁচলাইশ থানার কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক তসলিমা বেগম এ তথ্য জািনয়েছেন। 
এদিকে শিবির কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত সিএমপির পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল মান্নানকে নগরীর প্রবর্তক মোড়ের সিএসসিআর ক্লিনিক ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার বিকেলে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ২৫টির মতো গাড়ি ভাংুচর করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। পুলিশ জামায়াত-শিবির কর্মীদের মিছিল করতে নিষেধ করলে বিনা উস্কানিতে তারা এ ভাংচুর চালায় বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে হাতে গোনা মাত্র দু’জন পুলিশ থাকায় তারা ভাংচুরের কোন বাধা দিতে পারেনি।
এসময় এসি আব্দুল মান্নানসহ দুই পুলিশ আহত হয়েছেন।
ভাংচুরের পর মুরাদপুর থেকে ষোলশহর ২ নম্বর  গেইট পর্যন্ত লাঠি হাতে মিছিল করে প্রায় দেড় হাজার জামায়াত-শিবির কর্মী। এ সময় ওই এলাকায় প্রায় আধঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আতংকে দোনকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। ভাংচুরের আকস্মিকতায় সিএনজি আরোহী কয়েকজন যাত্রীকে ভয়ে  কাঁদতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্র ঘোষিত  কর্মসূচির অংশ হিসাবে যুদ্বাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেওয়ানবাজারে জামায়াত-শিবিরের কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিল সংগঠনটি। কিন্তু সেখানে কোন কর্মসসূচি পালন না করে বিকেল থেকে  নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে মুরাদপুরে বিপুল সংখ্যক জামায়াত-শিবির কর্মী জড়ো হয়। সেখান থেকে বিকেল পৌনে ৫টায় মিছিল শুরুর আগে পুলিশ বাধা দিলে তারা নির্বিচারে গাড়ি ভাংচুর শুরু করে।
মাধবকুন্ড এক্সপ্রেস চালুর দাবি
হাসনাইন সাজ্জাদী
এশিয়ান হাইওয়ের অংশ এবং ট্রানজিটের আওতায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ টি চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি একনেকের বৈঠকে এ বিষয়ে ঐক্যমত্য করেছেন সরকার। গত জুন মাসে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে একটি তদন্তকারী দল সিলেট ও কুলাউড়া জংশন ঘুরে গেছেন। ঐদিন সিলেট বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ কুলাউড়া জংশনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ চালু ছাড়াও সিলেট বিভাগে উন্নতমানের বগি ও কুলাউড়া জংশনের আসন সংখ্যা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার দাবি ছিল এ বন্ধন কর্মসূচীর অন্যতম দাবি। বিএনপি নেতা এডভোকেট আবেদ রাজা এ মানববন্ধন কর্মসূচীর উদ্যোক্তা ও সিলেট বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের তিনি কেন্দ্রীয় সভাপতি। রেলপথে লস দেখিয়ে এক দশকের বেশী আগে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সাথে রেলের জমি  লীজ ও স্থাবর সম্পদের হরিলুট করা হয়। রেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ হরিলুটের বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ নেয় বলে অভিযোগ আছে। গত একনেকের সভায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের খবরে এলাকায় খুশির জোয়ার বইছে। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ চালুর জন্য বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি ও ঢাকা-শাহবাজপুর লাইনে আন্তঃনগর ট্রেন মাধবকুন্ড এক্সপ্রেস চালুর দাবিদার লেখক গবেষক হাসনাইন সাজ্জাদী বলেন, ঢাকা-শাহবাজপুর লাইনটি চালু হলে বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য এটি একটি লাভজনক রুট হবে এবং জন চলাচলে অনেক অসুবিধা দূর হবে। এ লাইন বন্ধ থাকাসহ সিলেট-ঢাকা রুটে ট্রেনের সংখ্যা কম থাকার কারণে আন্তঃনগর বাস মালিকরা ইচ্ছেমত ভাড়া নিয়ে জনগনের সাথে প্রতারণা করছে। জনগণের স্বার্থেই উক্ত রুট চালু ও মাধবকুন্ড এক্সপ্রেস চালু আবশ্যক। এ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবার পর প্রথম প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনকারী সংগঠন সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের সেক্রেটারী ওয়েছুর রহমান চৌধুরী বলেন, জন চলাচলের প্রধান মাধ্যম রেলপথকে সব সময়ই একটি মহল অলাভজনক দেখিয়ে আন্তঃনগর বাস মালিকদের স্বার্থরক্ষা করে আসছে। কুলাউড়া-শাহবাজপুর লাইনকে অলাভজনক দেখানোর জন্য তারাই বিনা টিকেটে যাত্রী বহন করে তারা লাভ কমিয়ে দিয়েছে। বাস মালিকদের থেকে তারা পয়সা খেয়ে রেল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করে চলেছে। ট্রানজিটের আওতায় এ রেলপথ (কুলাউড়া-শাহবাজপুর) চালু হলে সিলেট বিভাগের পূর্বাঞ্চলই নয়, আসামের সাথে ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারিত হবে। তাতে উপকৃত হবে গোটা দেশ। মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে সিলেট বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট আবেদ রাজা এ প্রতিনিধিকে বলেন, সিলেট অঞ্চলে রেলের বগি কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইঞ্জিন সংকট দেখিয়ে সময়মত ট্রেন চলাচলে বিঘেœর সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি স্টেশনে আসন সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য রুটের চেয়ে এ রুটে ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। তারপরও বলা হচ্ছে সরকার রেলপথকে সম্প্রসারিত ও লাভজনক করতে চায়। এটা হাস্যকর ব্যাপার ছাড়া আর কিছু নয়। সরকার যদি রেলের বিরাজমান সমস্যার সমাধান না করে তবে বৃহত্তর কর্মসূচী দিয়ে সরকারকে বাধ্য করা হবে ঢাকা-সিলেট রুটের বিরাজমান সমস্যার সমাধান করতে। এ ব্যাপারে মরহুম জননেতা আব্দুল জব্বার এমপি’র সুযোগ্য কৃতি সন্তান, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জব্বার যুব স্মৃতি সংসদের সভাপতি আ স ম কামরুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে বলেন, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনটি চালু হলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। ঢাকাস্থ বৃহত্তর সিলেটবাসীর সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু বলেন কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ চালু বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দাবি। সরকার এ দাবি পূরণে টালবাহানা করলে এর পরিনাম ভয়াবহ হবে। তিনি জন চলাচলে বিরাজমান দূর্গতি দূর করতে এ রুট চালু সহ এ পথে লেখক গবেষক হাসনাইন সাজ্জাদীর মাধবকুন্ড এক্সপ্রেস চালুর দাবির প্রতিও সমর্থন ব্যক্ত করেন। তাতে ঢাকা সিলেটের মধ্যে জন-পরিবহনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শাহবাজপুরের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকাস্থ সিলেটবাসীর জনপ্রিয় নেতা নাজমুল ইসলাম লাকী বলেন, সড়কপথে নানা বিপত্তি এ বিপত্তির একমাত্র প্রতিকার রেলপথ। কিন্তু রেলের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে রেলপথকে লাভজনক করা যাচ্ছে না। সরকারের উচিত অ্যাকশন টিম গঠন করে মূল সমস্যা ও ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা। ঢাকা থেকে সরাসরি শাহবাজপুর রেল লাইনে লেখক গবেষক হাসনাইন সাজ্জাদীর প্রস্তাবিত ‘মাধবকু  এক্সপ্রেস’ চালু পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ জনতার প্রাণের দাবি। এ দাবিকে যত শিগগির সম্ভব সরকার পূরণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। উল্লেখ্য, মাধবকুন্ড বাংলাদেশের অন্যতম নয়নাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র। শীত মৌসুমে দেশী-বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক মাধবকুন্ডে বেড়াতে আসেন। কিন্তু কুলাউড়া-শাহবাজপুর রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা পরিবহন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হন। এ রুটে সরাসরি ঢাকা থেকে ট্রেন চালু হলে দেশী-বিদেশী পর্যটকসহ পূর্বাঞ্চলীয় লাখ লাখ জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে।
বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি
যে কোনো সময়ে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প
মাসুদুর রহমান স্বপন
আবারো যে কোনো সময়েই ঘটে যেতে পারে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ভেতর ও বাইরের মোট ১২টি উৎস থেকে বাংলাদেশ ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয় সারা দেশে (ইউএসজিএস-এর মতে ঢাকায় ৪ মাত্রা)। এতে বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০ জন আহত হয়। রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ভবনে ফাটল দেখা যায়। হেলে পড়ে কয়েকটি ভবন। গত রোববার সন্ধ্যায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর মধ্যরাতে হেলে পড়েছে রাজধানীর সূত্রাপুরের একটি চারতলা ভবন। গতকাল সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা এ তথ্য জানান। গতকাল সকালে সূত্রাপুরের কাগজী টোলা লেনে ১৭/২ ওয়াল্টার রোডে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি পাশেই নির্মাণাধীন একটি পাঁচতলা ভবনের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দুটি ভবনেই কয়েকটি ফাটল ধরেছে। হেলে পড়ার পরপরই ভবনটির বিভিন্ন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন।
এদিকে বৈজ্ঞানিক হিসাব অনুযায়ী, পূর্ববর্তী প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের ‘টাইম গ্যাপ’কে (সময়ের দূরত্ব) বিবেচনায় রেখে সরকারের নীতি-নির্ধারক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক হয়ে উঠেছেন। এ অবস্থায় সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০০৭ সালে জাপানের একটি ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে ‘ভূমিকম্প জোন ম্যাপিং’ কার্যক্রম চালায়। তাদের সঙ্গে বুয়েট, আর্থ-কোয়াক সোসাইটি এবং সরকারের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরও কাজ করে। রিপোর্টটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে সরকার।   
ভূতত্ত্ববিদরা জানান, ভারতীয়, ইউরেশীয় এবং মিয়ানমার এই তিনটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের ত্রিমুখী সংঘর্ষ এলাকায় (সিনট্যাক্স জোন) বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক অবস্থান। যে কারণে বাংলাদেশের ভেতর ও বাইরে অসংখ্য ভূ-চ্যুতি (ফাটল) রয়েছে। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, দেশের ভেতর ও বাইরের মোট ১২টি উৎস থেকে বাংলাদেশ ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে দেশের বাইরে তিনটি ও দেশের ভেতরে ৯টি রয়েছে। তিনি জানান, সাধারণত প্রতি ১১০-১৩০ বছর পরপর বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটে। ভূকম্পনের জন্য শক্তি সঞ্চার করতে ভূ-অভ্যন্তরে সাধারণত এই সময় লাগে। দেশের বাইরে আসামে সর্বশেষ ১৯৫০ সালে ৮ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর আগে ১৯৩৪ সালে বিহার ও নেপালের সীমান্ত এলাকায় যে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল, তার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৩। ১৮৫৮ সালে ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের মান্দালয়। আর দেশের ভেতরে ডাউকি ফাটলের কারণে ১৮৯৭ সালে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে ভারত ও বাংলাদেশের ১৫৪২ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ঢাকার ১০ জনসহ বাংলাদেশের মোট ৫৪২ জন রয়েছে। এর আগে ১৮৬৯ সালে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার এবং ১৮৮৫ সালে মধুপুর/বগুড়া ফাটলে ৭ মাত্রা, ১৯৩০ সালে আসামের ধুবরি ফাটলে ৭ দশমিক ১ ভূমিকম্প হয়। ১৮৮৫ সালের ভূমিকম্পেই পদ্মা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। ড. আনসারী বলেন, এই পাঁচটির মধ্যে তিনটিরই শতবর্ষ পার হয়েছে। একটির শতবর্ষ কাছাকাছি এবং আরেকটির ৮০ বছর পর হয়েছে। এই পাঁচটি ছাড়া আরও চারটি পয়েন্টে ভূমিকম্প উৎপত্তি হতে পারে। সেগুলো হচ্ছেÑ রাজশাহীর তানোর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এবং রাঙ্গামাটির বরকল। ইতোমধ্যে এই পয়েন্টের প্রত্যেকটিতে ভূমিকম্প হয়েছে। ৫ জুলাই তানোরে ৪ দশমিক ১ মাত্রার এবং ২৭ জুলাই রাতে হালুয়াঘাটে ৪ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ২০০৩ সালে হয়েছে রাঙ্গামাটিতে।   
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাধারণত বড় বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়। বিগত দশ বছরে প্রায় ৩শ’ ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে। এগুলোকে তিনি পূর্বাভাস হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, সরকারের উচিত হবে সেই আসন্ন বড় বিপদের প্রস্তুতি নেয়া।    দেশের বাইরের উৎস থেকে ভূমিকম্পের কারণে দেশের বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট অঞ্চল, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এলাকা আক্রান্ত হতে পারে বলে মনে করেন ড. আনসারী। রাঙ্গামাটির ফাটলে ভূমিকম্প হলে ঢাকা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হবে।

বৃষ্টি ও ভূমিধসে উদ্ধারকাজ ব্যাহত
ভূমিকম্পে ভারত নেপাল ও তিব্বতে নিহত ৫৪

ডেস্ক রিপোর্ট
গত রোববারের ৬ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভারত, নেপাল ও তিব্বত মিলে অন্তত ৫৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। ভারতে নিহত হয় ৪২ জন, নেপালে পাঁচজন এবং তিব্বতে ৭ জন। ভারতের সিকিমে দুই সেনাসদস্যসহ ৩৫ জন নিহত এবং আহত হয় অনেকে। বিহারে দুজন ও পশ্চিবঙ্গে ৫ জন নিহত হয়। নেপালে পাঁচজনের তিনজন মারা যায় রাজধানী কাঠমান্ডুতে।
প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে হিমালয় পাদদেশের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা ব্যহত হচ্ছে। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে সিকিমের শানগ্রিলা এলাকায় ধ্বংসস্তুপ থেকে হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। তারা প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পাহাড়ি দুর্গম গ্রামগুলোতে উদ্ধার অভিযান চালানোর চেষ্টা করছে। ঘন মেঘের কারণে দূর্গত এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে হেলিকপ্টারও যেতে পারছে না। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত কিছু কিছু এলাকা পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত হিমালয়ের উচ্চতম এলাকাগুলোতে হওয়ায় সেখানে পৌঁছনো কঠিন হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়বে।
সিকিমের অনেক এলাকায় ভারতীয় সেনারা উদ্ধার কাজ চালালেও অনেক এলাকায় পর্বতের মাঝের রাস্তা ভূমিধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবারের আগে দূর্গত স্থানগুলোতে উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। নয়াদিল্লিতে জাতিসংঘের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের এক কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি বেশ খারাপ। আমার ধারণা, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। সিকিমের গ্যাংটক শহরের এক বাসিন্দা পাওয়ান থাপা জানান লোকজন এখনো আতঙ্কগ্রস্ত। আতঙ্কে সারা রাত তারা বাড়ির বাইরে কাটান বলে জানান তিনি। গত চরদিন ধরে সিকিমের এ অংশে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। রাত্রে তাপমাত্রা আরো নেমে যায়।

গ্যাংটক ও আশপাশের এলাকাগুলোতে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালত বন্ধ আছে। গ্যাংটকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হলেও আশপাশের এলাকগুলো এখনো বিদ্যুৎহীন। টেলিযোগাযোগও স্বাভাবিক হয়নি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংকে ফোন করে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জরুরি বৈঠক ডাকতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মনমোহন।
কাঠমান্ডুতে নিহতদের তিনজন মারা যান লাইনচাউরে যুক্তরাজ্য দূতাবাসের দেয়াল ভেঙে পড়ে। নিহতদের দুজন একই পরিবারের (বাবা ও মেয়ে)। এ ঘটনায় আহত হন একজন। বাকি দুজন মারা যান নেপালের পূর্বাঞ্চলে শরণ মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায়। স্থানটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি। কাঠমান্ডুতে অন্তত ২৭ জন আহত হয়। ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ছেড়ে হুড়োহুড়ি করে বেরুনোর সময় তারা আহত হন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন