Year-20 # Issue-19 # 23 June 2013

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়ছে ধান-চালের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে ধান-চালের দাম। কিন্তু উৎপাদক কৃষক দাম বৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে না। বাড়তি লাভ চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ও মজুদদারের পকেটে। অভিযোগ রয়েছে, কৃষকের গোলার ধান শেষ হওয়ার পর পরই অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটই কারসাজির মাধ্যমে ধান-চালের দাম বাড়াতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বোরো ধানের দাম বেড়েছে মণপ্রতি আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ টাকা। একইভাবে বাড়ছে চালসহ অন্যান্য খাদ্যশস্যের দামও। এেেত্র ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অজুহাত দেখাচ্ছে বাজারের ধানের সঙ্কটকে। আর ধান সঙ্কটে বাড়ছে চালের দামও। তাছাড়া সরকারিভাবে বোরো ধান সংগ্রহ শুরু হওয়ায় এবং ধান শুকিয়ে যাওয়ায়ও দাম বেড়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরেই ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে ধান-চালের দাম। অথচ ধান-চালের দাম বাড়তে থাকলেও সরকারিভাবে কোনো তদারকির উদ্যোগ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে ধান উৎপাদক কৃষকরা অধিকাংশই ুদ্র ও প্রান্তিক। এজন্য ধান উৎপাদনের মৌসুম শুরুতেই তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ধানচাষ করে। আর ধান ওঠার সাথে সাথেই ঋণদাতারা দেনা পরিশোধ চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ফলে বাঁধ্য হয়েই কৃষকরা দেনা শোধের ল্েয কম দামে ধান বিক্রি করতে বাঁধ্য হয়। কিন্তু ঋণের ভারে জর্জরিত ধান উৎপাদক কৃষকরা বাজারে ধান বিক্রি করতে গিয়ে আশানুরূপ দাম পায়নি। বরং অধিকাংশ েেত্রই তাদেরকে লোকসানেই উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে হয়েছে। এদেশে এ ঘটনা নতুন নয়। প্রতি বছরই একই ঘটনা ঘটছে। ফলে ুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে একদিকে যেমন লোকসান গুনতে হচ্ছে, অন্যদিকে ধানের ন্যায্য দাম থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ার কারণ হিসেবে কৃষকরা সঠিক সময়ে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ না করাকে দায়ি করছে। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছে করেই খাদ্য বিভাগ কৃষকদের স্বার্থে ধান কাটার পর পরই কৃষকদের কাছ থেকে এক ছটাক ধানও কেনে না। অথচ এসময়ে ধান কেনা হলে লাভবান হতো কৃষক। কিন্তু কৃষকের গোলা ধান শেষ হওয়ার পর সরকারি কর্তৃপ ধান কেনার ঘোষণা দেয়। সেসময় ঋণ পরিশোধের তাগিদে ধান বিক্রি করে কৃষকের গোলা হয়ে পড়ে শূন্য। কৃষকদের ধান চলে যায় মজুদদারের গুদামে। পরবর্তীতে ধানের দাম বাড়ায় কৃষকের ঘাম ঝরানো ও কষ্টের টাকায় উৎপাদিত ধানের মুনাফা চলে যায় ফড়িয়া ও মজুদদারের পকেটে। তখন প্রান্তিক কৃষকদেরই হাটবাজার থেকে সরকারি ধার্য করার দামের চেয়ে বেশি দামে ধান-চাল কিনতে হয়। এ অপতৎপরতার সাথে চাতাল মালিকরাও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র জানায়, ধান-চালের বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আগে কম দামে ধান কিনে রেখে যখন কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে পড়ে তখনই কৌশলে ধান-চালের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লুটে নিচ্ছে। সরকার সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে অবগত থাকলেও বাস্তবে কার্যকর কোনো পদপে গ্রহণে আগ্রহী নয়। শুধু তাই নয়, বাজারে ধান-চালের দাম বাড়ার আগে কম দামে কিনে রাখা ধান-চালের দাম বাড়িয়েও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মোটা অংকের মুনাফা লুটছেন। বর্তমানে মিলাররা বাজার ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে চালের দামও বাড়িয়ে চলেছে। সূত্র আরো জানায়, বাজার ধানের দাম বাড়ার কারণেই বাড়ছে চালের দামও। তাছাড়া বোরো ধান কাটার শুরুতে বৃষ্টি ও ভেজা ধান হওয়ায় ওই সময় চালকলের মালিকরা ধান কিনতে আগ্রহ দেখায়নি। তখন ধানের দামও কম ছিল। এখন আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় চালকলের মালিকরা সরকারিভাবে খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। চুক্তির চাল সরবরাহের জন্য তারা বেশি দামে ধান কিনতেও পিছপা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, বোরো মৌসুমের শুরুর দিকে কৃষকের ধান ভেজা হওয়ায় তা সরকারের পে কেনা সম্ভব হয়নি। এখন আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় ধানের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি সরকারিভাবেও বোরো ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। আর সরকার ধান-চাল মূলত মিলারদের কাছ থেকেই কিনে থাকে। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা ধান-চালের বাড়তি মুনাফার সুবিধা থেকে কিছুটা বঞ্চিত হয়। তবে যেসব কৃষক উৎপাদিত ধান ধরে রাখতে সম হয়েছেন তারা এখন বাড়তি দাম পাচ্ছে।
কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গঠনের উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থবির দেশে অর্থনৈতিক জোন গঠনের উদ্যোগ। সরকারের এ উদ্যোগ এখনো কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। অথচ বর্তমান সরকার মতাসীন হওয়ার পর পরই দেশের ৭টি স্থানে বিশেসায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এেেত্র খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। বরং ৫টি স্থানে এলাকা চিহ্নিত করার মধ্যেই এ উদ্যোগের সীমিত হয়ে রয়েছে। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা নেই। ফলে উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। অথচ দেশে শিল্প-কারখানার কমপ্লায়েন্স ইস্যু রা করে অগ্রসরমান শিল্প প্রতিষ্ঠায় অর্থনৈতিক জোট গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ঘোষিত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিল্পের বিকাশ ও রাজধানীকেন্দ্রিক শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণের ল্েয ৭টি অর্থনৈতিক জোন গঠনের প্রাথমিক উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। এজন্য ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন, ২০১০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। একই সাথে ৭টি অর্থনৈতিক জোনের মধ্যে ৫টি জোন গড়ে তোলার জন্য এলাকাও চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তারপরই থমকে গেছে এ কার্যক্রম। কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি আগামী অর্থবছরের বাজেটেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। এমনকি এজন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতেও (এডিপি) কোনো প্রকল্প গ্রহণ বা মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বরাদ্দ রাখা হয়নি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপরে গভর্নিং বোর্ড ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম সভায় বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের ল্েয ৫টি স্থান নির্বাচন করে। এগুলো হচ্ছেÑ চট্টগ্রামের মিরসরাই ও আনোয়ারা, সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু সংলগ্ন স্থান, মৌলভীবাজারের শেরপুর ও বাগেরহাটের মংলায় ২ বছরের মধ্যে এসব অঞ্চল স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময়েও এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ দেশের ব্যবসায়ী মহলের মতে, দেশের উন্নয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরি। সেখানে শিল্পের অগ্রগতির জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহও নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়া বিকল্প নেই। কিন্তু বাজেটে শিল্পনগরী বা বিশেসায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে বরাদ্দ না থাকায় তা এদেশের শিল্পায়নের েেত্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তাছাড়া দেশে শিল্পায়নের বর্তমান অবকাঠামোগত সঙ্কটের বিবেচনায় আরো আগেই বিশেসায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং খাতভিত্তিক শিল্পপার্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিলেও আশানুরূপ হয়নি বাস্তব অগ্রগতি নেই।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে দেশের ৮টি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) প্লট না থাকায় নতুন অর্থনেতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তাছাড়া ইপিজেডগুলোতে শতভাগ রফতানিমুখী নয় এমন স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জায়গা দেয়া হয় না। একই সাথে নতুন শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠায় ভূমি সঙ্কটের কারণেও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের জোরালো দাবি রয়েছে। কিন্তু তারপরও সরকার নতুন করে ইপিজেড স্থাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যায়ক্রমে ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সুযোগ তৈরি করা। আর এসব অঞ্চলে প্রতি বছর আড়াই বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ হবে।

আজ আওয়ামী লীগের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আজ ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এদিনে প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।
পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আÍপ্রকাশ ঘটলেও পরে শুধু আওয়ামী লীগ নাম নিয়ে অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে বিকাশ লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি। ১৯৪৯ সালের এদিনে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক এবং শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপসহীন সংগ্রামণ্ডলড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যখন শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠনে ব্যস্ত, তখনই ঘাতকরা ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে তাঁকে হত্যা করে। নির্যাতন আর নিপীড়নের মাধ্যমে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয় জনগণের সংগঠন আওয়ামী লীগকে।
এ অবস্থায় ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে আবারো ঘুরে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগ। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন।
দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ মতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি। কর্মসূচি : সূর্যোদয় ণে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭ টা বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীকৃতীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা উন্মুক্ত ও বেলুন উড়ানো। এদিকে ৬৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলে বিকেলে গণর‌্যালি করবে আওয়ামী লীগ। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের পাদদেশ থেকে বিকেল সাড়ে ৩ টা র‌্যালিটি শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হবে।
শাসকরা গণমাধ্যমকে হাতিয়ার করছে
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবসার কারণে এরসঙ্গে জড়িতরা স্বাভাবিকভাবেই শাসক গোষ্ঠীর প্রতি দুর্বল থাকে। গণমাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে করার কারণে একে সরকারের পে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। এ অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে অধিকার আয়োজিত ‘সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ১/১১’র সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন সরকার তাদের মতা চাপিয়ে দিয়ে সংবাদ পত্রের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে আঘাত এসেছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদূর রহমানের ওপর। তাকে দুইবার গ্রেফতার এবং পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, তথ্য মানুষকে সুনিশ্চিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সংগঠিত হতে সাহায্য করে। রাজনীতিতে বৃহত্তর মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করে গণমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম তরানি¦ত করে। যা কোন সরকারই পছন্দ করছেন না। সংবাদ মাধ্যমই যেহেতু মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয় তাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ মাধ্যমই যেন সরকারের প্রথম প্রতিপ। বক্তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, শাসক গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে তথ্য জানার অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। যার প্রভাব পড়ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর।
অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়- ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ১২ জন সাংবাদিক তাদের পেশগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৬২৯ জন। এছাড়া লাঞ্ছিত হয়েছেন ২৩৬ জন। আক্রমণের শিকার ৮৩ ও গ্রেফতার হয়েছেন ১৩ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন ৩ জন। হুমকির শিকার ২৮৯ এবং ৯১ জন বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১০৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তাই সংবাদ পত্রের স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামকে জোড়দার করার বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বিএনপির উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, কলামিস্ট ও নাগরিক অধিকার রা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ফরহাদ মাজহার, আয়োজক সংগঠনের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান, ট্রেজারার রুহুল আমিন ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পিরোজপুর জেলায় ১৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিতে
পিরোজপুর প্রতিনিধি :
পিরোজপুর জেলার ৭ উপজেলায় দেড় শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় ভবনের অধিকাংশের ছাদ, দেয়াল, বীম, কলামে বড় বড় ফাটল ধরেছে। পলেস্তর খসে পড়েছে প্রায় সব ভবনেরই। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি প্রতিদিন কাস করছে অন্তত ৩০ হাজার শিশু ছাত্র ও কয়েক শ’ শিক। পিরোজপুর সদরের কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাখালী ইউনিয়নের কৈবর্ত্যখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিকদারমল্লিক ইউনিয়নের পাঁচপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাজিরপুর উপজেলার চৌঠাঁইমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক বিদ্যালয় এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
নাজিরপুর উপজেলার গিলাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাস করছে ৩ শতাধিক ছাত্র। এ বিদ্যালয় ভবনটি এতই জরাজির্ণ যে কাস চলাকালেও এর ছাদ থেকে পলেস্তর খসে পড়ে। গত ৯ জুন কাস চলাকালে ছাদের পলেস্তর খসে পড়ে ১১ জন ছাত্র ও ২ জন শিক আহত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন যেকোন মুহূর্তে ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক অমূল্য কুমার হালদার জানান, অন্য কোন ভবন না থাকায় বাঁধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাস করাতে হচ্ছে। তিনি জানান বার বার কর্তৃপরে নিকট আবেদন করেও কোন ফল হয়নি। এ ব্যাপার উপজেলা শিা কর্মকর্তা জানান ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। ভবনটি সংস্কারেরও উপযোগী নয়। এটি ভেঙে ফেলতে হবে। বিষয়টি জেলা কর্তৃপকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পিরোজপুর সদর উপজেরার কৈবর্ত্যখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এতই ঝূঁকিপূর্ণ যে মাঝে মধ্যে ছাত্রদেরকে নিয়ে শিকরা খোলা আকাশের নিচে কাস করান। এ বিদ্যালয় ভবনটি ১৯৪৯ সালে নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে পাকা ভবনটির ছাদসহ পুরো অবকাঠামোই ধংশের দ্বার প্রান্তে। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ থেকে পানি পড়ে। এতে বিদ্যালয়ের জরুরি কাগজপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এ ভবনটি যেকোন সময়ে ভেঙে পড়ে জীবন হানির মত মারাÍক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক মোঃ আতিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের ১৪৭ জন শিার্থীকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। বিদ্যালয়ে কাস করাকালে প্রতিনিয়ত ভীতির মধ্যে থাকেন কখন কি ঘটে যায়। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিা কর্মকর্তা মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন জানান, জেলায় ১৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে নাজিরপুর ও মঠবাড়িয়া উপজেলায়। তিনি জানান ভবনগুলো মেরামত ও পুণঃ নির্মাণের জন্য কর্তৃপরে কাছে লেখা হয়েছে।
আজকের সঞ্চয়, আগামী দিনের ভবিষ্যত
কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : আজকের সঞ্চয়, আগামী দিরে ভবিষ্যত। স্কুল ব্যাংকিং একাউন্টস নামে ছাত্রছাত্রীদের জন্য সঞ্চয়ী হিসাব খোলার উদ্যোগ নিয়েছে সোনালী ব্যাংক। ৭ থেকে ১৭ বছরের যে কোন ছাত্রছাত্রী তার অভিভাবকের সাথে যৌথভাবে এ হিসাব খুলতে পারবে এবং যে কোন পরিমাণ টাকা জমা করতে পারবে। সরকার তথা ব্যাংকের নেয়া উদ্যোগ এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত গড়ার ল্েয কাপ্তাই সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুলে সঞ্চয়ী হয়ে আগামী দিনের ভবিষ্যত গড়ে তোলার ব্যাপারে আগ্রহী করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি কাপ্তাই শহীদ তিতুমির একাডিমীতে এ উপলে কাপ্তাই সোনালী ব্যাংক কর্তৃক শিা কর্মকর্তা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক-শিকিাদের নিয়ে এক আলোচনা সভা করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা শিা কর্মকর্তা একেএম রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী শিা কর্মকর্তা মোঃ ইদ্রিছ, সোনালী ব্যাংক চন্দ্রঘোনা শাখার এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা প্রিয়ব্রত বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কাজী মোশাররফ হোসেন, ডা. আহমদ নবী, প্রধান শিক ইউসুপ, আশুতোষ দাশ, মোঃ হারুন। অনুষ্ঠানে কাপ্তাই ৪ নং ইউনিয়নের আওতাধীন সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক-শিকিাগণ উপস্থিত ছিলেন। ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সের ছাত্রছাত্রীদের ”স্কুল ব্যাংকিং একাউন্টস” সম্পর্কে ব্যাংক কর্মকর্তাগণ বিস্তারিত তুলে ধরেন। সহজে এ হিসাব খোলার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে তারা জানান। এমনকি বিদ্যালয়ে গিয়ে হিসাব খোলা ও সঞ্চয় সংগ্রহ করা হবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া কাপ্তাই নতুন বাজারে ব্যাংকের আরো একটি শাখা অফিস খোলা হবে বলেও ব্যাং কর্মকর্তা নিশ্চিত করে। হিসাব খোলার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের উৎসাহিত করার জন্য শিকদের প্রতি ব্যাংক কর্মকর্তাগণ অনুরোধ করেন। অন্যান্য বক্তাগণ বলেন শিশুদের এ সঞ্চয় তাদের আগামীদিনের লেখাপড়ার যোগান হয়ে দাড়াবে। তাই সরকারের তথা সোনালী ব্যাংকের নেয়া এ পদপেকে বাস্তবে রুপ দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঞ্চয়ী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী করে ােলার জন্য শিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। চৌধুরীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক আশুতো দাশ জানান, এরই মধ্যে তার বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী এ হিসাব খুলেছে। এমনকি ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কোন কোন হিসাবে ইতোমধ্যে জমা হয়েছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন