Year-19 # Issue-18 # 17 June 2012

 বেনাপোল বন্দরে শুল্ক ফাঁকির মহোসব
বেনাপোল প্রতিনিধি
দেশের সর্ববৃহত স্থলবন্দর বেনাপোলে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে পণ্য আমদানির মহোৎসব চলছে। গত ১১ মাসে বেনাপোল বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা ২শ ৪৬টি পণ্য চালান আটক করেছেন শুল্ক কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে জানান, ১শ মার্কিন ডলারের পণ্য আন্ডার ইন-ভয়েসে এদেশে আসতে লাগে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার। এভাবে পিএসআই (প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন) সনদ ছাড়া বছরে হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে মাত্র শত কোটি টাকা মূল্য ঘোষণা দিয়ে। এতে সরকার বছরে কয়েকশ কোটি টাকার শুল্ক হারাচ্ছে। বিদেশি সরবরাহকারীদের আন্ডার ইন-ভয়েসে আনা পণ্যের প্রকৃত মূল্য পরিশোধে অর্থ পাচার হচ্ছে হুণ্ডির মাধ্যমে। আর এ সবই ঘটছে বাধ্যতামূলক পিএসআই সনদ ছাড়া পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে। এদিকে, আমদানি নীতি আদেশের শর্তের অজুহাতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষও সামান্য জরিমানার মাধ্যমে অবৈধভাবে পণ্য আমদানিকে বৈধতা দিয়ে যাচ্ছে। এতে অবৈধভাবে পণ্য আমদানি দিন দিন বেড়েই চলেছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ত্রুটিপূর্ণ আইন বা এসআরও সংশোধনের উদ্যোগ না নেওয়ায় এভাবে বছরের পর বছর সরকারের শুল্ক ফাঁকি ও হুণ্ডির মহোৎসব চলছে। শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশে নামমাত্র মূল্য ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আসছে বাংলাদেশে। এ অনিয়মের ব্যাপারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়া সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে তা প্রতিকারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবৈধ আয়ের একটি বড় উৎস নন-পিএসআই আমদানি পণ্য চালান। সিআরএফ ছাড়াই বছরে গড়ে ১৫ হাজারেরও বেশি চালান এভাবে আমদানি হচ্ছে আন্ডার ইন-ভয়েসে। প্রতিটি চালান থেকে যদি গড়ে ৫ হাজার টাকা করেও ঘুষ বা কমিশন আদায় করা হয়, তাহলে বছরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপরি-আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এত লোভনীয় আয়ের উৎস যাতে বন্ধ না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তারা সব সময়ই এসব অসাধু আমদানিকারকের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া ২০১১-১২ অর্থ বছরে ঢাকা মহানগর কাস্টমস গোয়েন্দা ও রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে বেনাপোল বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা ২শ ৪৬টি পণ্য চালান আটক করে কাস্টমস শুল্ক কর্মকর্তারা। এ সময় আটক পণ্য চালান থেকে ৩২ কোটি ২৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায়ও করা হয়। গত বছরে মোট ২শ ১৮টি শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটে। এ সময় জরিমানা বাবদ শুল্ক আদায় করা হয় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এসব পণ্য চালান অধিকাংশই ঢাকা মহানগর কাস্টমস গোয়েন্দা ও রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে আটক করা হয়। এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আবুল কালাম আযাদ শুক্রবার  বাংলানিউজকে জানান, আমদানি পণ্যের দেখভালের দায়িত্ব শুধু বন্দর কর্তৃপক্ষের। সঠিকভাবে ব্যবসায়ীরা শুল্ক দিচ্ছেন কি না সেটা দেখার দায়িত্ব কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মাসুদ সাদিক বাংলানিউজকে জানান, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তবে আগের তুলনায় শুল্ক ফাঁকি অনেকাংশে কমেছে বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের বিশিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ও ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, আমদানি পণ্যের ওপর প্রতি বছরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেশি মাত্রায় শুল্ককর নির্ধারণ করেন, যার কারণে আমদানি পণ্য পাচার ও আন্ডার ইন-ভয়েসিংয়ে কোটি কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। যে সব পণ্য সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছেন এ ধরনের পণ্যের ওপর শুল্ককর কমানো হলে শুল্ক ফাঁকি অনেকাংশে কমবে বলে জানান তিনি।
গাজপ্রমের সঙ্গে কূপ খনন চুক্তি অসম্পূর্ণ: সংসদীয় কমিটি
পার্লামেন্ট করেসপন্ডেন্ট

রাশিয়ার গাজপ্রমের সঙ্গে বাংলাদেশের গ্যাসকূপ খননের চুক্তিটি অসম্পূর্ণ বলে মনে করছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। ওই চুক্তিতে গ্যাস উত্তোলনের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি বলে জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি। রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কমিটি মনে করে, গ্যাস উত্তোলনের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ কিভাবে ক্ষতিপূরণ পাবে সে বিষয়ে বলা হয়নি। কমিটি আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবে। উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল ১০টি গ্যাসকূপের খনন কাজের জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গাজপ্রমের সঙ্গে দুটি চুক্তি করে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ এর আওতায় এ চুক্তি করা হয়। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ``রাশিয়ার সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তাতে গ্যাসক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটলে কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।  দুর্ঘটনায় ক্ষতি হলে বাংলাদেশ কিভাবে ক্ষতিপূরণ পাবে তা বলা হয়নি। এ কারণে চুক্তিটি অসম্পূর্ণ। অতীতেও এসব ক্ষেত্রে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।`` তিনি বলেন, ``বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।`` কমিটির সদস্য ও বিএনপির এমপি মাহবুব উদ্দিন খোকন গাজপ্রমের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি কমিটিতে উপস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। যদিও তা নাকচ করে দিয়েছেন কমিটির সভাপতি। এদিকে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম যাতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, ``কমিটি জেলা পর্যায়ে এলপিজি বিতরণে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে কমিটি করার জন্য বলেছে। কমিটি বেসরকারি এলপিজি’র দাম এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন যেন ঠিক করে দেয় সে সুপারিশ করেছে।``
জ্বালানি উপদেষ্টার সাংবিধানিক এখতিয়ার নেই
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীর এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কমিটির সদস্য ও বিএনপির এমপি মাহবুব উদ্দিন খোকন। ``কুইক রেন্টালের সমালোচনাকারীরা রাষ্টদ্রোহী``---জ্বালানি উপদেষ্টার এহেন মন্তব্যের জন্য কমিটিতে নিন্দা প্রস্তাব আনার প্রস্তাব দেন তিনি। প্রস্তাব গ্রহণ না হওয়ায় তিনি বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। এ বিষয়ে খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ``জ্বালানি উপদেষ্টার সাংবিধানিক কোনো এখতিয়ার নেই। তিনি এ ধরণের কথা বলতে পারেন না।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে গোপনে পরামর্শ দেবেন, জনসমক্ষে নয়। কিন্তু তিনি গ্যাসের লাইন দেওয়ার কমিটির প্রধান উপদেষ্টা। এটা ঠিক নয়।`` তিনি বলেন, ``সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রণালয় পরিচালনায় উপদেষ্টার কোনো ভূমিকা নেই। তিনি পারেন না।`` কমিটি সদস্য ইসরাফিল আলম, নিলুফার জাফর উল্লাহ, ওমর ফারুক চৌধুরী, শেখ ফজলে নূর তাপস ও মাহবুব উদ্দিন খোকন বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তাপস কুমার রায়, জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু তাহের, বিপিসি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক, পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান ডঃ হোসেন মনসুরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি
১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে জড়িতদের বিচার চান ড. কামাল
সিনিয়র ইকোনমিক করেসপন্ডেন্ট
 শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বিচার দাবি করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। শনিবার রাজধানীর লেকসোর হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনা শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “তিন বছর হয়ে গেলো, কারা সেই ক্ষমতাধর, যাদের ধরা যায় না? কেন এখন পর্যন্ত কোন মামলা হলো না? কোন বিষয় তুললে বলা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহী। শেয়ারবাজার থেকে যারা অর্থ লুটপাট করেছেন তারা কি?”
ড. কামাল বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী ক্ষমতাহীন হতে পারেন। কিন্তু জনগণ ক্ষমতাহীন নয়। আমাদের নাম বলুন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। রাষ্ট্রের চেয়ে ক্ষমতাধর কেউ হতে পারে না। আমরা পাকিস্তানিদের হারিয়েছি।’ সাবেক মন্ত্রী এম সাইদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী একে খন্দকার। এছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ ও  ব্যবসায়ীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বাজেট নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
কামাল হোসেন বলেন, “যারা শেয়ার বাজার থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেছে তারা দেশের শত্রু। আগে পাকিস্তানিদের দ্বারা নির্যাতিত হতাম। এখন দেশের মানুষ নির্যাতন করছে।” ড. কামাল প্রশ্ন করেন, “শেয়ার বাজারের ডিমিউটুয়ালাইজেশন কেন হচ্ছে না? আর্থিক রিপোর্টিং কেন আগামী বছর? কেন এবছর নয়?” দেশের আইনের শাসনের প্রসঙ্গ তুলে ড. কামাল বলেন, “এক দেশে দুই রকম আইন থাকতে পারে না। দল করলে তারা আইনের উর্ধ্বে থাকবেন। আর অন্যদের জন্য আরেক রকম হবে কেন?”
তিনি বলেন, “আইনের শাসন নিশ্চিত করবেন আদালত। কিন্তু সেখানে প্রশ্ন উঠছে। বিচারক নিয়োগ থেকে নানা ক্ষেত্রে অনিয়ম হচ্ছে। এটা মানা যায় না।”  অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “অর্থমন্ত্রী দুষ্টু বাজার বলে একে ছেড়ে দিতে পারেন না। গত এক বছর ধরে ঝামেলা চলছে। এর পেছনে জড়িতদের বিচার করতে হবে।” আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির দায় থেকে এর নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কে বাদ দেওয়া যায় না।” তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন- এটা দুষ্ট বাজার। কিন্তু বাজার দুষ্ট হয় না। দুষ্ট লোকেরা বাজারে থাকলে বাজার দুষ্ট হয়। তখন নির্দেশনা দিয়েও উন্নতি হয় না। একটা দল এখানে কাজ করছে। যারা টাকা লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে।” কিছু লোক বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে এটা কখনো স্বাভাবিক হবে না উল্লেখ্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “কেলেংকারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। কেন তাদের নাম বলা যাবে না। বিচার করা যাবে না।”
কুইক রেন্টালের নামে নির্বাচনী বাজেট সংগ্রহ করেছে সরকার : নোমান
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

 কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে সরকার নির্বাচনী বাজেট সংগ্রহ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, “দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটের মহাৎসব চলছে। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। সরকার সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি আর জনবিচ্ছিন্নতার কারণে সরকারের মন্ত্রী এমপিদের মধ্যে গণরোষে পড়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।” শনিবার বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনে বিএনপি কার্যালয় চত্বরে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাবিবুন্নবী খান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক সরাফত আলী সপুর কারামুক্তির পর ফের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আবদুল্লাহ আল নোমান আরও বলেন, “ক্ষমতার মসনদ রক্ষা করার জন্য সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে গণহারে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করে সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণ বিএনপি নেতা-কর্মীদের কারাগার থেকে মুক্ত করে আনবে।” নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এস কে খোদা তোতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, সদস্য মাহবুবুর রহমান শামীম, নগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শামসুল আলম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম এ ছবুর, অ্যাডভোকেট আব্দুস ছাত্তার, নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন দিপ্তী ও নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল আলম রাসেল প্রমুখ। সভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 
আন্দোলনের কাছে সরকারের ষড়যন্ত্র টিকবে না: ফখরুল
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের আন্দোলনের কাছে সরকারের কোনো ষড়যন্ত্র টিকবে না। বিএনপি নেতৃত্বাধীন যে ১৮ দলীয় জোট রয়েছে তার পরিধি আরও বাড়বে। কারামুক্ত বিএনপি নেতৃবৃন্দদের নিয়ে শনিবার বেলা ১১টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বিরোধী দলের দাবি আদায়ের জন্য সরকারকে বারবার সময় দেওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আর তা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্ববধায়কসহ সব দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার বিরোধীদলীয় নেতাদের আটক করেছিল তা সফল হয়নি, জামিনে মুক্ত নেতাদের আবারও জেলগেট থেকে গ্রেফতার করা সম্পূর্ণ বেআইনী।’ গণতন্ত্রকে হত্যা করা সরকারের ইচ্ছা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। জনসমর্থন হারিয়ে সরকার এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে।
আমরা চাই গণতন্ত্র নিজের পথে চলুক।’ তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলীর মুক্তি এবং তত্ত্বাবধয়কসহ যে সব দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম সে বিষয়ে আরও জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’গাছ লাগায় আওয়ামী লীগ আরও ফল খায় বিএনপি--প্রধানমন্ত্রীর এমন কথা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হচ্ছে পুরোটাই উল্টো। আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি, দেশে কর্মসংস্থানসহ সব বিষয়েই ভালো ছিল।’ রোহিঙ্গাদের আশ্রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারের এবিষয়ে মানবিক আচরণ করা উচিত।’জিয়ার মাজার জিয়ারত করতে গেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. খন্দকর মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলম, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, সাংগঠনিক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
চীনের মনুষ্যবাহী নভোযানের সফল উক্ষেপণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চতুর্থবারের মতো মহাকাশে মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠালো চীন। এর মধ্য দিয়ে চীন ২০২০ সালের মধ্যে নিজেদের স্থায়ী মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে গেল বলে উল্লেখ করেছে রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া। সিনহুয়া জানিয়েছে, শনিবার গ্রিনিচ মান সময় ১০টা ৩৭ মিনিটে গোবি মরুভূমির প্রান্তসীমায় অবস্থিত জিউকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে শেনঝু-৯ মহাকাশযানটি তিয়াংগং মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ২০০৮ সাল থেকেই মনুষ্যবাহী রকেট উৎক্ষেপণ নিয়ে কাজ করছে চীন। সে বছরই তারা প্রথম মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠায়। চীনের মহাকাশ অভিযাত্রার প্রথম নভোচারী জিং হেইপেংয়ের নেতৃত্বে এ অভিযানে অংশ নিয়েছেন আরো দু’জন নভোচারী। অপর দু’জন হলেন লিউ ওয়াং এবং লিউ ইয়াং। এরা দু’জনেই মহাকাশে প্রথম অভিযাত্রী। এদিকে এ অভিযানে অংশ নিয়ে চীনের প্রথম নারী নভোচারী হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন লিউ ইয়াং। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির একজন যোদ্ধা বৈমানিক হিসেবে কাজ করতেন লিউ ওয়াং। ১৪ বছর চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নভোচারী দলে কাজ করার পর মহাকাশ যাত্রার এ সুযোগ পেলেন তিনি। চীনের মহাকাশ অভিযান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নভোচারীরা নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমণরত তিয়াংগং-১ মডিউলে কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিয়াংগং-১ স্পেস স্টেশন মডিউলটি কক্ষপথে স্থাপন করে চীন। নভোচারীদের বহনকারী লং মার্চ ২এফ রকেটটি আগামী দু’দিনের মধ্যে তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে ভিড়তে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। পৃথিবীতে ফেরার আগে নভোচারীরা সেখানে সপ্তাহখানেক অবস্থান করবেন। উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে চীনের মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান শেনঝু-৮ তিয়াংগং-১ এ সফলভাবে যুক্ত হয় এবং পৃথিবীতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। উচ্চগতির একটি কক্ষপথে দু’টি মহাকাশযান এভাবে যুক্ত করা চীনের জন্য বড় সফলতা। একে বলে মাস্টার ডকিং। আর এ প্রযুক্তি শুধু রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬০’এর দশকে সম্পন্ন করতে পেরেছে। প্রসঙ্গত, চলমান এ কর্মসূচিকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে বৈশ্বিক মর্যাদার এক বিশেষ প্রতীক হিসেবে দেখছে চীন। পশ্চিম বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে উন্নয়নের সাথে সাথে তারা মহাকাশ গবেষণায়ও প্রতিযোগিতায় নেমেছে। চীনের বর্তমান কর্মসূচির লক্ষ্য হলো মহাকাশে নিজস্ব স্পেস স্টেশন স্থাপন করা যেখানে একজন নভোচারী কয়েক মাস স্বচ্ছন্দে অবস্থান করতে পারবে। যেমনটি রাশিয়ার পুরনো মির বা বর্তমান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সম্ভব হয়।
 বিদ্যুত ঘাটতি সহনীয় এ বছর না আগামী বছর?
পার্লামেন্ট করেসপন্ডেন্টমাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বিদ্যুত ঘাটতি সহনীয় পর্যায় নিয়ে আসার সময় এক বছর বাড়িয়ে দিলেন বিদ্যুত, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক। গত ৩ জুন জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, ২০১২ সালেই বিদ্যুৎ ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। ওই দিন তাজুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুতের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে বিররণ দিয়ে বলেন, ‘পরিকল্পনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে আশা করা যায়, ২০১২ সালের শেষ দিকে বিদ্যুতে ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’ এদিকে আজ রোববার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে বিএনপির আব্দুল মোমিন তালুকদারের প্রশ্নের জবাবে একইভাবে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আশা করা যায় ২০১৩ সাল থেকে চাহিদার তুলানায় সরবরাহ যথেষ্ট হবে এবং লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’ প্রশ্নকর্তা জানতে চান, কুইক রেন্টালের মাধ্যমে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা সত্বেও লোডশেডিং না কমার কারণ কি? এদিকে সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবেও এনামুল হক একই উত্তর দেন। নূর আফরোজ আলীর প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, বাংলাদেশ সচিবালয়ের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দরপত্র কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এডিবির অর্থায়নে ছয়টি সিটি করপোরেশনে সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। হামিদুর রহমান আযাদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১০-১১ অর্থবছরের দেশে প্রায় ৮০৯ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্যাসের মজুদ রয়েছে ১৬ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। হোসেন মকবুল শাহরিয়ারের প্রশ্নের জবাবে সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্রভিত্তিক কোনো ভর্তুকি দেয় না। সার্বিক বিদ্যুৎ খাতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের বিদ্যুৎ খাতে এ ভর্তুকি ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এসএম আব্দুল মান্নানের প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক বলেন, বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের ঘাটতি আনুমানিক ৩১০ মিলিয়ন ঘনফুট। মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বছরের পর বছর ধরে বেশি দামে জ্বালানি তেল কিনে কম দামে বিক্রি করায় পুঞ্জিভূত লোকসানেরর পরিমান বাড়ছে। জ্বালানির দাম বাড়ানোর ফলে এ লোকসানের পরিমান হ্রাস পেয়েছে। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, গত তিন বছরে ৩৩৭টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপিত হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই লাখ তিন হাজার ৫’শ টি যানবাহন সিএনজিতে রূপান্তর করা হয়েছে। হারুনুর রশিদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ১৩২টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গ্যাস সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।  
শিশু অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ওবামার নতুন নীতি
আন্তর্জাতিক ডেস্


যুক্তরাষ্ট্রের শিশু অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওবামা প্রশাসন। যাদের বাবা-মা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করে এখনো বসবাস করছে তাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। ১৬ বছরের কম বয়সে বাবা-মার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাদের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল এবং বর্তমানে যাদের বয়স ৩০ বছরের নিচে এমন ব্যক্তিসহ স্কুল পড়ুয়া, হাইস্কুল স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং কোন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন ব্যক্তিদের এ নিয়মের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ওবামা এ নতুন নীতির ব্যাপারে বলেন, ‘এটা কোন সাধারণ ক্ষমা, দায়মুক্তি বা নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ করে দেওয়া নয়। আর এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থাও নয়। বরং যেটা সঠিক সেটাই করছে মার্কিন প্রশাসন।’ তবে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল রিপাবলিকান দল ওবামার এ নতুন নীতির তীব্র বিরোধিতা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ওবামা এ ধরনের পদক্ষেপ তরুণ প্রজন্ম এবং হিসপ্যানিক ভোটব্যাংক সুসংহত করার উদ্দেশ্যেই নিয়েছেন বলে বিশ্লেষকদের মত। মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী জ্যানেট নেপোলিটানো নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণার সময় বলেন, ‘এ আইন অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথেই প্রয়োগ করা উচিত। তবে কোন আইনই অন্ধভাবে প্রয়োগ করা ঠিক নয়। বরং বিদ্যমান পরিস্থিতিও বিবেচনা করতে হবে।’ উল্লেখ্য, আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। এ নতুন অভিবাসন নীতির ফলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে ভোটের সময় ওবামা কিছুটা সুবিধা পাবেন বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
 বন্ধের আশঙ্কায় মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনি
সেরাজুল ইসলাম সিরাজ
ঝুলে গেছে মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনি উন্নয়ন প্রস্তাব। শিগগিরই উন্নয়ন কমর্সূচি শুরু করা না গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে দেশের একমাত্র এ পাথর খনি। খনি সূত্র জানিয়েছে, পাঁচটি স্টোপ নিয়ে ২০০৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনে যায় মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, ৫টি স্টোপের পাথর ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফুরিয়ে যাবে। নতুন করে ৫টি স্টোপ উন্নয়নে কমপক্ষে ২ বছর সময় প্রয়োজন পড়বে। সে হিসেবে এখনই নতুন স্টোপ উন্নয়নের কাজ শুরু করা প্রয়োজন। আর তা করা না হলে, ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যাবে খনিটির উৎপাদন। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্টোপ তৈরি না হলে ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আরো ২ থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত পুরনো স্টোপ থেকেই পাথর পাওয়া যাবে। সময় ফুরিয়ে যায়নি, তবে দ্রুতই কাজ শুরু করা প্রয়োজন।” ২০১০ সালে প্রস্তাব জমা দেওয়ার পরও এতদিন কেন ঝুলে আছে সে প্রসঙ্গে সানোয়ার হোসেন চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে ভালো বলতে পারব না।” খনির একাধিক কমর্কর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, খনিটিতে পাথরের বিশাল মজুদ থাকলেও যেসব স্টোপ থেকে পাথর তুলে আনা হচ্ছে, এসব স্টোপের পাথর ২ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। নতুন স্টোপ থেকে পাথর উত্তোলনে যন্ত্রপাতি স্থাপন, রোডওয়ে নির্মাণ, খনি থেকে পাথর তুলে আনার ট্রেন লাইন বসানো, লোডিং ব্রিস্ট, ভেন্টিলেশন, পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। খনিটির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, মন্ত্রণালয় দীর্ঘ দিন ধরে প্রস্তাবটি ঝুলিয়ে রাখার পর পিপএস ( প্রিপিডিবিলিটি স্ট্যাডি) করতে বলে। তাদের সেই চাওয়া অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, শুরু থেকেই লাভের মুখ দেখতে না পারায় সরকারকে নতুন করে বিনিয়োগে ভাবতে হচ্ছে। তবে ওই সূত্রটি দাবি করেছে, মৌলিক কিছু বিষয়ে পরিবতর্ন আনা গেলেই মুনাফা নেওয়া সম্ভব। সূত্র মতে এক শিফটের পরিবর্তে তিন শিফটে উৎপাদন আর সরকারি বিভিন্ন কাজে এই খনির পাথর ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলেই মুনাফায় পাওয়া সম্ভব। এছাড়া প্রস্তাবিত পদ্মা সেতুকেন্দ্রীক বিশাল বাজার তৈরি হওয়ায় সমূহ সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়া খনিটি কোনো সময়েই মুনাফার দেখা পায়নি। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে লোকসান দিয়েছে ২৭ কোটি ২৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ ৬ হাজার টাকা, ২০১০-১১ অর্থ বছরে লোকসান দিয়েছে সর্বনিম্ন ৮ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। উৎপাদিত পাথরের মধ্যে প্রায় সোয় চার লাখ মে. টন পাথর অবিক্রিত পড়ে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবিক্রিত রয়েছে বড় পাথর (৮০ মিলিমিটারে র উর্ধ্বে) যা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইড বাঁধের দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় এবং ৫ মিলিমিটারের নিচে যা সিমেন্ট তৈরিতে বেশি ব্যবহার হয়। সূত্র জানিয়েছে, খনিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ করতে ২০১০ সালে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপজাল) জমা দেওয়া হয়। ৩৪০ কোটি টাকার ডিপিপি পেট্রোবাংলার বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়ে জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয় ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে বলেন, “খনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ডিপিপি অনুমোদন প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তোফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, খনি উন্নয়ন প্রস্তাব সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। যথাসময়ে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা চান না রোহিঙ্গারা আসুক
নুপা আলম, জেলা প্রতিনিধি

 মিয়ানমারে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করুক, তা চান না স্থানীয়রা। কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ পেশাজীবী মানুষ মনে করেন, মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জের ধরে নানা গুজব রটিয়ে একটি মহল বাংলাদেশে আবার রোহিঙ্গা অনুপ্রেবশের নানামুখি তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা মনে করে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করলে সীমান্ত এলাকা আরো বেশি অস্থির হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে এটা বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক। টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, “রোহিঙ্গা আমার দেশের জন্য বিপদ। দেশের সীমান্ত এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি, মাদক ব্যবসা, জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা অপরাধের জন্য দায়ি রোহিঙ্গারা। কিন্তু মিয়ানমারে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ফের বাংলাদেশে ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা নিয়ে আসতে কিছু এনজিও সংস্থাসহ জঙ্গি সংগঠন অপতৎপরতা শুরু করেছে।” তিনি বলেন, “মুসলিম এইড, এসিএফ, আরটিএম, রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসও, এআরএনওসহ আরও কয়েকটি সংস্থা উখিয়া ও টেকনাফে শরণার্থী ক্যাম্পে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা ক্যাম্পে প্ল্যাকার্ড দিয়ে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশে উদ্বুদ্ধ করছে।” তিনি জানান, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। অতীতে মাত্র ৫শ টাকায় একজন মানুষকে খুন করার প্রমাণ রয়েছে রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে। ফলে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার সুযোগ করে দিতে যে আহ্বান জানানো হচ্ছে, এটা দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়।
টেকনাফ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম ইউনুছ বাঙ্গালী বাংলানিউজকে বলেন, “দেশের সংস্কৃতি, আইনশৃঙ্খলা, দেশ প্রেম, লেখা-পড়া, শ্রমবাজার, বিদেশে জনশক্তি রপ্তানিসহ নানা বিষয়ের জন্য পুরোটাই হুমকি এসব রোহিঙ্গা। সে দেশের আভ্যন্তরীণ একটি বিষয় নিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।”  টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, “মানবতা রক্ষার প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিৎ নয়। এমনিতেই বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের নানামুখি তৎপরতার কারণে স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাপনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।” তিনি উল্টো বাংলাদেশে থাকা প্রায় চার লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়ে বলেন, “রোহিঙ্গা থাকলে নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে।”
উখিয়া উপজেলার স্থানীয় সংবাদকর্মী এম বশর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “রোহিঙ্গাদের নিয়ে কিছু এনজিও কাজ করে। ওইসব এনজিও কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মনে করেন, দেশে রোহিঙ্গা থাকলে তাদের চাকরি থাকবে, অন্যথায় তাদের চাকরি থাকবে না। ফলে নিজের চাকরির স্বার্থে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ওইসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী।” তিনি বলেন, “শুধু অতীতের অপরাধ বিশ্লেষণ করলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসুক, এটা কেউ চাইবে না।”
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও উখিয়ার হলিদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন চৌধুরী মিন্টু বাংলানিউজ বলেন, “মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাত ওই দেশের একটি অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ইতিমধ্যে ওই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশি-বিদেশি একটি চক্র রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢোকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।” এটা রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধ বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, “জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কক্সবাজারের ৯০ শতাংশ অপরাধ করানো হয় রোহিঙ্গাদের দিয়ে। এরা দেশের ভেতরে পাহাড় দখল, বৃক্ষ নিধন, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাচার, নারী ও শিশু পাচার, ডাকাতি-ছিনতাই করে সমস্য তৈরি করেছে। অপরদিকে ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে অপরাধ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে তারা।” কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, “ঢাকা ও বিদেশে বসে যারা মানবতার কথা বলা শুরু করেছেন,  তাদের একটি সপ্তাহের জন্য কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ানো জরুরি। রোহিঙ্গাপ্রীতির মানবতার কারণে মানবতার লুণ্ঠিত পরিস্থিতি নিয়ে বেঁচে আছে কক্সবাজারের মানুষ।” তিনি একজন রোহিঙ্গাকেও স্থান না দিয়ে বাংলাদেশে থাকা সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
চাকরি জাতীয়করণ না হলে কর্মবিরতির হুমকি বাপসার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাকরি জাতীয়করণ ও দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা না দেওয়া হলে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সেক্রেটারি সমিতি (বাপসা)। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাপসার সভাপতি সোহায়েলুর রহমান সোহেল এ ঘোষণা দেন। বাপসা ২ জুলাই একযোগে দেশের প্রত্যেক জেলা সদরের প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান। ২৩ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করবে। ৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট। এর পরেও সরকার যদি দাবি না মেনে নেয়। তাহলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বাপসা সভাপতি। তিনি আরো বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা বঞ্চিত। আমাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য বার বার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দিচ্ছি। আশা করছি আন্দোলনে নামার আগেই আমাদের দাবি মেনে নেবে সরকার।” সংবাদ সম্মেলনে বাপসার সভাপতি বলেন, “সারাদেশে ৪ হাজার ৫৩৯ জন ইউপি সচিব নিষ্ঠার সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে ইউনিয়ন পরিষদ আইনে ৮টি দপ্তরকে ইউনিয়ন পরিষদে ন্যস্ত করেছে। যে কারণে ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সমন্বয় কমিটিতে ইউপি সচিবদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। ওই কমিটিতে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ অনেক দ্বিতীয় শ্রেণীর অফিসার সদস্য হিসেবে থাকেন। এতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।” তিনি অবিলম্বে তাদের এই ন্যয্য দাবি মেনে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বাপসার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নির্বাহী সভাপতি ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, শেখ হাবিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ কবির বখসি তুহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল হক প্রমুখ।
বাড়ছে নারী বিসিএস কর্মকর্তা 
মাজেদুল নয়ন

বিসিএস ক্যাডারে নারী কর্মকর্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের অনুপাত এখনো অনেক কম হলেও সে সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসির ২০১১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সর্বশেষ ৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্ত নারীদের সংখ্যা বিগত পরীক্ষাগুলোর চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া সর্বশেষ ২০১২-১৩ অর্থবছরের জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদনেও সরকারের ২৫টি মন্ত্রণালয়ে নারী কর্মকর্তা বৃদ্ধির চিত্র পাওয়া যায়। গত ২৮ মে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত পিএসসির ২০১১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নারী নিয়োগপ্রাপ্তদের হার ২৬তম বিসিএস পরীক্ষায় ছিল সবচেয়ে বেশি। সে সময় ৩৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ (৩৬০ জন) নারী নিয়োগ পেয়েছিলেন। পুরুষ নিয়োগ পেয়েছিলেন ৬৬ দশমিক ১৩ শতাংশ (৭০৩ জন)। কিন্তু পরবর্তী ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের ফল ছিল হতাশাজনক। নারী নিয়োগ পায় মাত্র ২৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ (৮২২ জন) এবং পুরুষ ৭৪ দশমিক ৬২ শতাংশ (দুই হাজার ৪১৭ জন)। সর্বশেষ ৩টি (২৮ থেকে ৩০ তম) বিসিএস পরীক্ষায় দেখা যায়, আবারো নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বেড়েছে। 
সর্বশেষ গত ৩০তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে নারী ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, যা ২৯তম বিসিএস এর চাইতে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি। এর আগে ২৯তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্তদের ২৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ ছিল নারী। প্রসঙ্গত, বিসিএস ক্যাডারে নারীদের এগিয়ে আসতে সাহায্য করছে বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের ১০ শতাংশ কোটা। দেখা যায়, ২৭ থেকে ৩০তম, এ চারটি পরীক্ষায় মেধা তালিকা ছাড়াও নারী কোটায় ৮৯৭ জন নারী নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ৩২তম (বিশেষ) বিসিএস এর মাধ্যমে শুধু নারী কোটায় নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে ১৩০ জনকে।  বিসিএস পরীক্ষায় নারী নিয়োগপ্রাপ্তির হার বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর ও সংস্থাগুলোতে বিসিএস নারী কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের ‘জেন্ডার বাজেট প্রতিবদেন’এ দেখা যায় ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় ২০১১-১২ অর্থবছরে নারী কর্মকর্তা ১৭ দশমিক ৬ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৬৪। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবালয়ে নারী কর্মকর্তা বৃদ্ধির হার খুবই ভালো। এখানে এক অর্থ বছরের ব্যবধানে ৫ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা। তবে সকল ক্ষেত্র মিলিয়ে এ হার ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় ২০১১-১২ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় কার্যালয়ে বিসিএস কর্মকর্তা নারীর সংখা ৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২০ শতাংশ। তবে সব মিলিয়ে বাড়েনি। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক অর্থ বছরের ব্যবধানে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধির হার ৪৫ থেকে ৪৫ দশমিক ৬৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারী বিসিএস কর্মকর্তা বৃদ্ধির হার এক শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৮। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নারী ও পুরুষ কর্মকর্তা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরে ২৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১-১২ অর্থবছরে নারী কর্মকর্তা হয়েছে ২৯ শতাংশ।
তথ্যমন্ত্রণালয়ে এক অর্থবছরের ব্যবধানে নারী কর্মকর্তা ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় ২০১১-১২ অর্থবছরে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ দশমিক ৬৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৫।
৫ শতাংশ থেকে নারী কর্মকর্তা বৃদ্ধি পেয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এক অর্থবছরের ব্যবধানে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে ধারাবাহিকভাবেই প্রতি অর্থবছরে নারী কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিসিএস ক্যাডারে নারী কর্মকর্তা বৃদ্ধির ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “আসলে যে হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল, নারী কর্মকর্তা সে হারে বৃদ্ধি পায়নি। তবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যেগের কারণে সকল ক্ষেত্রেই নারীরা এখন অনেক এগিয়ে এসেছে।” তবে বিসিএস পরীক্ষায় নারীর সাফল্যের ধীর গতির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগেই মেয়েরা মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকে। পর্যাপ্ত সুযোগ থাকার পরও অনেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায় না। অথচ নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বিসিএস পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ ফ ম নেছার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, “নারী-পুরুষ সবাই মেধার ভিত্তিতে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন। এখানে বৈষম্যর কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি আরো জানান, অনগ্রসর হিসাবে সরকার নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু রেখেছে। ফলে নারীরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়ে রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে হুমকি দিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের পছন্দ মতো ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার  উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের হুমকি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে দেখা করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন। এসময় উপাচার্যের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটি ও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা অবিলম্বে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের হুমকি দিয়ে চলে যান। এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক নেতা বাংলানিউজকে জানান, এবছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগের তালিকায় যারা রয়েছেন, তাদের ১শ ৪৭ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রায় সবাই উপাচার্যের পছন্দের লোক।
তিনি জানান, শুধু তাই নয়, এই ১শ ৪৭ জন কর্মচারী নিয়োগের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায় ৩শ জন লোকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ কারণেই বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্য দপ্তরে গিয়ে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের  দাবি জানান। এপ্রসঙ্গে রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাব্লিউ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য তার পছন্দ মতো অনেক পরিবারেই চাকরির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। অথচ তিনি আমাদের লোকদেরকে চাকরি দেননি।’ তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের পিএস জালাল, রাব্বেল, ৩০নং ওয়ার্ড যুবলীগের শহিদুল ইসলাম, ২৬নং ওয়ার্ডের বাবু, খলিল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার কালুর পরিবারের প্রায় সব সদস্যকেই এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের এক শিক্ষক সাংবাদিকদের জানান, এই নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপউপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ উপাচার্যের পছন্দ মতো প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষ ও  পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন। এরকম কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সেলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বিএনপির আহ্বান
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

 মানবিক দিক বিবেচনা করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার বলেন, “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া মানবিক বিষয়।” বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য মানবিক মনে হয়নি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “তার বক্তব্য দেশের মানুষ ভালোভাবে নেননি।” পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যে মানবতার কোনো গন্ধ নেই বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি সব সময় বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তার প্রমাণ, ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় বিপদগ্রস্ত প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছিল।” গত ২৯ এপ্রিল হরতালের সময় দুটি মামলায় প্রায় মাসব্যাপী কারাভোগের পর বৃহস্পতিবার রাতে মুক্ত হন বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল। শুক্রবার উত্তরার নিজ বাসায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এদিকে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া মানবিক দিক বিবেচনা করে অস্থায়ীভাবে হলেও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরে জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। মিয়ানমারে সপ্তাহব্যাপী দাঙ্গা চলার মধ্যেই সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানালো বিএনপি। জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হবে না। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যেও কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানানো হয়। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, “ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে মিয়ানমার সরকার অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে বসবাসকারী বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা সংগঠনকে জামায়াত সশস্ত্র মদদ যোগাচ্ছে। মিয়ানমারে চলমান জাতিগত সংঘাতেও উস্কানি দিচ্ছে তারা।।”  “ মিয়ানমার সরকারের করা এ অভিযোগকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি, এ নিয়ে তদন্তও চলছে” জানিয়ে দীপু মনি আরো জানান, “রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ এটা করতে বাধ্য নয়।” “বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি” বলে একাধিকবার উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, “আমরা মনে করি এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের হস্তক্ষেপ করা সঙ্গত হবে না বা সংবিধান সম্মত হবে না।”
এদিকে শুক্রবার পররাষ্ট্রন্ত্রী ডা. দীপু মনি চাঁদপুরে বলেছেন, “বাংলাদেশে নথিভুক্ত ও অবৈধ রোহিঙ্গাদের মানাবিকতার দিক বিবেচনা করে বিভিন্নভাবে তাদের সহায়তা করা হচ্ছে। তাই বর্তমান রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না।” শুক্রবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর খাঁ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে টিন ও চেক বিতরণের সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে সে দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ওই দেশটি তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে।” তিনি জানান, “আটক রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে বিজিবি। তাদের কোনো ঝুঁকির মধ্যে আমরা ছেড়ে দেইনি। দাঙ্গার কারণে মিয়ানমার ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অব্যাহত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্প্রতি রাখাইন প্রদেশে দাঙ্গার পর রোহিঙ্গারা পুনরায় বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দুই দশক আগেও মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে ঢোকেন অন্তত সাড়ে ৪ লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে সে সব শরণার্থীদের চাপ সামলাতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এ বিষয়ে সংসদে দীপু মনি আরো জানান, “১৯৭৯, ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এর সংখ্যা ছিলো প্রায় আড়াই লাখ। ২০০৫ সালে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা করে কিছু রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর পর ২৮ হাজার রোহিঙ্গাকে নথিভুক্ত করা হয়। এরপর অবৈধভাবে কত অনুপ্রবেশ করেছে তা জানা নেই। বলা হয়ে থাকে, সংখ্যাটি তিন থেকে পাঁচ লাখ।” তিনি বলেন, “বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় অনেক রোহিঙ্গাই বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গেছেন। সেখানে তাদের বিভিন্ন রকম অপরাধের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও শ্রমবাজার নষ্ট হচ্ছে।” এদিকে এক সপ্তাহ আগে গত শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাখাইন-রোহিঙ্গা দাঙ্গা শুরুর পর বাংলাদেশে ঢুকতে রোহিঙ্গাদের চেষ্টা প্রতিহত করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
মন্দাজনিত ঋণের শ্রেণীমানের সময়সীমায় পরিবর্তন
সিনিয়র ইকোনমিক করেসপন্ডেন্ট
মন্দা বা ক্ষতিজনিত ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সময়সীমা তিন মাস কমিয়ে হিসাব করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হলে নিম্নমান, ৬ থেকে ৯ মাস হলে সন্দেহজনক এবং ৯ মাসের অধিক হলে মন্দা বা ক্ষতিজনিত শ্রেণীকৃত ঋণে পরিণত হবে। এছাড়া বিশেষ হিসাবের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের সময়সীমা তিন মাস থেকে ২ মাস করা হয়েছে। কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নির্দেশনা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ব্যাংকিং নীতি ও প্রবিধি বিভাগ থেকে এটি জারি করা হয়। সার্কুলারের মাধ্যমে, সব ধরনের ঋণের পুনঃতফসিলিকরণ এর মেয়াদ, সংখ্যা এবং এর জন্য কিছু শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এ নীতিমালায় কোন ঋণ সর্বোচ্চ ৩ বার পুনঃতফসিল করা যাবে। পুনঃতফসিলিকরণের পর নতুন ঋণ প্রদানের জন্য এবং অশ্রেণীকৃত ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিপালনীয় নির্দেশনা সুস্পষ্ট করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, নতুন নীতিমালায়, ব্যাংক-কোম্পানিসমূহ অশ্রেণীকৃত কোনো ঋণের সময়সীমা বা পরিশোধের সময় বারবার পরিবর্তন করতে পারবে না। তবে জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প এবং সার আমদানিকারকদের জন্য পুনঃতফসিলিকরণের কিছু শর্ত শিথিল করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, বিরূপ শ্রেণীকৃত ঋণ অশ্রেণীকৃত করার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্থগিত সুদ হিসাব ও পর্যাপ্ত উপযুক্ত জামানত থাকলে পূর্ববর্তী নীতিমালায় প্রভিশনের ভিত্তি শূণ্যে নামানো গেলেও নতুন নীতিমালায় প্রভিশনের ভিত্তির ন্যূনতম পরিমাণ মোট বকেয়ার ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।  
১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৭০ শতাংশ
মফিজুল সাদিক
চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৭০ শতাংশ। বৃহঃপতিবার শেরে-বাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়। জুলাই ২০১১ থেকে মে ২০১২ এই ১১ মাসে ১২৩১ প্রকল্পের বিপরীতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) মোট বরাদ্দ ছিল ৪১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মোট ব্যয় হয়েছে ২৮ লাখ ৫৫ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। সামনে আর বাকি আছে মাত্র ১ মাস আর বাস্তবায়নের জন্য এখন এডিপি বাস্তবায়নে টাকা বাকি আছে ১২ ল‍াখ ৫২ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। ১ মাসে কত টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়, তাই এখন দেখার বিষয়। তবে গত বছর এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৭২ শতাংশ। চলতি বছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১০টি বিভাগে ৮০ শতাংশ এর বেশি এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগে। ৫২ প্রকল্পের বিপরীতে এ বিভাগে বরাদ্দ ছিল ৭ লাখ ১৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৭ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে। ২০ প্রকল্পের বিপরীতে মোট বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৫ শতাংশ। খাদ্য বিভাগে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৮৪ ভাগ। ৫ প্রকল্পের বিপরীতে ২৫ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা বরদ্দ ছিল। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার ২১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১৩ প্রকল্পের বিপরীতে মোট বরাদ্দ ছিল ২৪৬ হাজার ৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ২০৪ হাজার ৩৮৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এই মন্ত্রণালয়ে এডিপির বাস্তবায়নের হার ৮৩ শতাংশ। তবে কিছু কিছু মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়নের হারের অবস্থা একেবারে নাজুক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার মাত্র ১১ শতাংশ। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মোট ৬ প্রকল্পের বিপরীতে মোট বরাদ্দ ৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে মোট ব্যয় হয়েছে মাত্র ৮১৪কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ৫ প্রকল্পের বিপরীতে মোট বরাদ্দ কৃত টাকা ১৭ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। যার এডিপি বাস্তবায়নের হার মাত্র ১৯ শতাংশ। তথ্য মন্ত্রণালয়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার মাত্র ৩৯ শতাংশ। ১৬ প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৮ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৩৭০ কোটি ৯৩ লাখ মাত্র।
রিহ্যাব মেলা: প্রতিদিন চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত
মনোয়ারুল ইসলাম


শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকেই রিহ্যাব সামার ফেয়ারে বেড়ে চলছে দর্শনার্থীর ভিড়। ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে দর্শকরা মেলায় আসতে শুরু করেছেন। মেলার সময়ও প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন বয়সী ও পেশার মানুষদের এ সমাগমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ মেলা মুখর হয়ে উঠেছে। এরইমধ্যে মেলায় দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ও দর্শনার্থীদের অনুরোধে আয়োজকরা মেলার সময় ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে দিয়েছেন। পূর্বে রাত ৮টায় মেলা সমাপ্ত করার কথা থাকলেও শুক্রবার থেকে তা রাত ৯টা করা হয়েছে। মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা কিউ কমিউনিকেশনসের চিফ অপারেশন অফিসার নকীব চৌধুরী জানান, ‘এখন থেকে মেলা প্রতিদিন এক ঘণ্টা বেশি সময় খোলা থাকবে। দর্শনার্থীরা সময় বাড়ানোর জন্য বারবার অনুরোধ করছেন। আমরা তাদের অনুরোধের কথা বিবেচনা করে এ সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।’ ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রবিউল হক মেলার সময় ১ ঘন্টা বাড়ানোর বিষয়ে বলেন, অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীদের অনুরোধে সময বাড়ানো হয়েছে। ক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। যানজটের কারণেও অনেকের মেলায় আসতে দেরি হয়। আশাকরি সময় বৃদ্ধির ফলে এর সুফল আসবে।
বিডিসি’র এপার্টমেন্টে আকর্ষণীয় ছাড়
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট


বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহ্যাব ফেয়ারে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (বিডিসি) এপার্টমেন্ট ক্রয়মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। বিডিসি’র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ( সেলস)হারুনুর রশিদ বাংলানিউকে বলেন, ‘‘মেলা উপলক্ষে আমাদের সবক’টি প্রকল্পের এপার্টমেন্টে ৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। বর্তমানে ঢাকায় আমাদের তিনটি প্রকল্প চলছে। এগুলো হচ্ছে শ্যামলীতে সোনালী স্বপ্ন-১, গুলশান ১ নম্বরে সোনালী স্বপ্ন-২ ও মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন নকশী কাঁথা। তিনটি প্রকল্পেই রয়েছে অত্যাধুনিক সুবিধা। বৃহৎ পার্কিং স্পেসও থাকছে এ প্রকল্পগুলোতে।’’ মেলার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার বিডিসি’র ১০০ নং স্টলে গিয়ে ক্রেতাদের সমাগম দেখা গেছে। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (বিডিসি) হলো বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের (বিডিজি)একটি কোম্পানি। স্টলের দায়িত্বে নিয়োজিত বিডিসি’র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘‘এবারের মেলায় গতবারের চেয়েও বেশি সাড়া মিলছে। দর্শকরা আমাদের স্টলে এপার্টমেন্টের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এটা সত্যিই ভালো লাগছে।’’ বিডিসি কর্তৃপক্ষ জানান, ‘‘আমরা সব মানুষদের কথা বিবেচনা করে আমাদের প্রকল্পগুলো হাতে নিয়ে থাকি। মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করে মতিঝিল ও শ্যামলীর প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে।’’ তারা আরো জানান, ‘‘ইতিমধ্যে বিডিসি’র শ্যামলীর প্রকল্প সোনালী স্বপ্ন-১ এর অধিকাংশ ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে গেছে। আকর্ষণীয় লোকেশনে হওয়ায় এ প্রকল্পের বাকি ফ্ল্যাটগুলোও বিক্রির প্রক্রিয়াধীন।’’
রূপায়নে চলছে আকর্ষণীয় অফার
মুনিফ আম্মার ও আবু তালহ
মেলায় ফ্ল্যাট বুকিং দিলেই কিচেন ক্যাবিনেট আর কমার্শিয়াল স্পেস বুকিংয়ে এয়ারকন্ডিশনারের আকর্ষণীয় অফার নিয়ে এসেছে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। ঢাকার বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় লোকেশনে রূপায়ন নির্মাণ করতে যাচ্ছে অ্যাপার্টমেন্ট ও বাণিজ্যিক ভবন। এর মধ্যে সিদ্ধেশ্বরীতে ৮৮ কাঠার জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে একটি সুদৃশ্য অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স ও উত্তরায় নির্মাণ করা হবে কমার্শিয়াল ভবন- উত্তরা সিটি। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহ্যাব ফেয়ারের দ্বিতীয় দিনে রূপায়নের ১৪ নং স্টলে প্রচুর দর্শনার্থীর আনাগোনা দেখা গেছে। রূপায়নের প্রকল্পগুলো সম্পর্কে তারা ধারণা নিচ্ছেন। কাউকে আবার তাদের পছন্দের ফ্ল্যাট অথবা কমার্শিয়াল স্পেসের বুকিং দিতেও দেখা যায়। রূপায়নের অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার রাকিব জানান, রূপায়ন বরাবরই কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য গ্রাহকরা সবসময় আমাদের পাশে থাকছেন। তিনি আরো জানান, সিদ্ধেশ্বরীতে রূপায়নের যে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে, সেটাকে লাক্সারিয়াস কনডোমনিয়াম করার পরিকল্পনা আছে।এছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, শান্তিনগর, পল্টন, ধানমন্ডিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমাদের প্রকল্পের কাজ চলছে। মেলায় রূপায়নের স্টলে ঘুরতে আসা মিরপুরের বাসিন্দা রেহানা পারভীন রিতা বলেন, ‘রূপায়ন সবসময়ই ভালো অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করে থাকে। আমার পরিচিত কয়েকজন রূপায়নের ফ্ল্যাটে থাকছেন। আমিও তাই রূপায়নে ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়ার কথা ভাবছি।’ কেবল ধনীদের জন্য নয়, মধ্যবিত্তদের কথা মাথায় রেখেও রূপায়নের কয়েকটি প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রাকিব। তিনি বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজারসহ দেশের বড় শহরগুলোতে বর্তমানে রূপায়নের ২৬টি প্রকল্পের কাজ একসঙ্গে চলছে। যার ফলে গ্রাহকদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি।’ মেলায় রূপায়ন হাউজিং তাদের সর্বোচ্চ টার্গেট পূরণে সক্ষম হবে বলে আশা করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তা ব্যক্তিরা।
ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী প্রণব মুখার্জি
নয়াদিল্লি করেসপন্ডেন্ট

 অবশেষে সব প্রতীক্ষার অবসান। ইউপিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির নাম ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
শুক্রবার বিকালে প্রণব মুখার্জির নাম ঘোষণা করে সোনিয়া গান্ধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে তাদের পদ প্রার্থীকে সমর্থন করতে আবেদন রাখেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের ৭ রেস কোর্স রোডের বাড়িতে বৈঠক ডাকেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও প্রণব মুখার্জি ছাড়াও জোট শরিকের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে প্রণবের নাম গৃহীত হয়। যদিও এদিন ইউপিএ বৈঠকে আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল গরহাজির ছিল। এদিকে শোনা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ায় আগামী ২৪ জুন অর্থমন্ত্রকের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন প্রণব মুখার্জি। মেক্সিকোর জি-২০ বৈঠক থেকে প্রধানমন্ত্রী ফিরে এলেই ২৫ জুন ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দেবেন তিনি। অন্যদিকে, সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছেন সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব। দলের মহাসচিব রামগোপাল যাদব বলেছেন, ইউপিএ-র প্রার্থী প্রণবকেই সমর্থন দেবে তার দল। সমাজবাদী পার্টি এই সমর্থনের পর মায়াবতী বিএসপি ও তাকে সমর্থন করবে বলবে জানিয়েছে। এই ঘোষণার পর বামদলগুলির পক্ষে সিপিএমের সাংসদ বৃন্দা কারাত বলেন, প্রণব মুখার্জিকে অভিনন্দন। ওনি ইউপিএর প্রার্থী হয়েছেন। আমরা ইউপিএতে নেই। ২১ জুন ৪ বামদল আলোচনা বসে ঠিক করবে তাদের সমর্থন। একটি সূত্র জানিয়েছে, বামেরা এখন যাই বলুক, তারা প্রণব মুখার্জিকেই সমর্থন করছে। কারণ ইতিমধ্যেই প্রণব সিপিএম নেতা বিমান বসু ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সমর্থন চেয়ে ফোন করেছেন। কারণ বামেদের ভোট এই নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে বেশি। আগামী ৫ বছরের জন্য এই প্রথম কোনো বঙ্গসন্তান দিল্লির রাইসিনা হিলসের বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে প্রায়।
মিসরের গণতান্ত্রিক উত্তরণ হুমকির মুখে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিসরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠানের ঠিক দু’দিন আগে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট মুসলিম ব্রাদারহুড নিয়ন্ত্রিত নবনির্বাচিত সংসদ অব্যশই ভেঙে দেওয়া উচিৎ- বলে রায় দিলেন। একই সঙ্গে সাবেক সামরিক শাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার রাজতৈনিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার পক্ষেও অবস্থান নিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের এ রায়ের ফলে জনগণের আপত্তি সত্ত্বেও ক্ষতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আহমেদ শফিকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথে আর কোনো বাধা থাকে না। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের এ রায়ের সঙ্গে আরেকটি বিষয় পরিষ্কার হলো- মিসরের নতুন সংবিধান যা লেখার প্রক্রিয়ায় আছে তাতে ক্ষমতাসীন সশস্ত্র বাহিনীর সুপ্রিম কাউন্সিল পূর্ণ প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাবে। এ কারণে গত বছরের রক্তাক্ত বিপ্লবের পর মিসরে আবার সামরিক শাসন ফিরে আসা অথবা পরোক্ষভাবে সেনা বাহিনীর প্রভাব প্রতিষ্ঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ রায় ঘোষণার পরই মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আল বেলতাগি তার ফেসবুক পাতায় সুপ্রিমকোর্টের রায়কে এবং ঘটনার ধারাবাহিকতাকে ‘পূর্ণ অভ্যুত্থান’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মুরসি সংসদ ভেঙে দিতে সুপ্রিমকোর্টের আদেশকে সামরিক অভ্যুত্থান বলতে চান নি। একটি মিসরীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি সামরিক বাহিনীকে ভালবাসি।’ তিনি বলেন, ‘আদালতের রায় আসলে ‘এখানে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা জনগণের বিরুদ্ধে খারাপ কিছু করার চেষ্টা করছেন বা পরিকল্পনা করেছেন’- এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছে।’ তবে ব্রাদারহুড সুপ্রিমকোর্টের রায়কে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছে। এ ব্যাপারে ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির নেতা বর্তমান সংসদের স্পিকার সাদ আল কাতাতানি বলেছেন, মিসরের অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধানে সংসদ ভেঙে দেওয়ার অধিকার বা ক্ষমতা কোনো কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তিকে দেওয়া হয়নি। এর আগে সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠনে সদস্য নির্বাচনে কোটা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কাউন্সিলের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় ব্রাদারহুডের। গণপরিষদে দুই তৃতীয়াংশ রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং এক তৃতীয়াংশ নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তারা। পরে অবশ্য আনুপাতিক হারে আসন বণ্টনের ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সামরিক কাউন্সিলকে চাপের মুখে ফেলে গণপরিষদ গঠন করার সিদ্ধান্তটি এখন সুপ্রিমকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ব্রাদারহুডের জন্য বুমেরাং হয়ে গেল বলে অনেকে মনে করছেন। মিসরের বিপ্লবী জনগণও সুপ্রিমকোর্টের আদেশকে মেনে নিতে পারছে না। তারা তারা একে প্রতিবিপ্লবী তৎপরতা বলেই মনে করছে। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পরই কয়েকশ’ মানুষ জড়ো হয়ে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে আহমেদ শফিককে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানায়। এদিন ফেব্রুয়ারি বিপ্লবে অংশ নেওয়া অনেকে বলেছেন, শফিক হচ্ছেন প্রতিবিপ্লবীদের অংশ। তিনি যদি এখন প্রেসিডেন্ট হন তাহলে তো তার মানে দাঁড়ায়- বিপ্লব হয়নি! মিসরের তরুণ রাজনীতি বিশ্লেষক ওয়াইসাম মোহাম্মদ বলছেন, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত স্বাধীন হওয়া এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনা বাহিনীর বেষ্টনিতে থাকাটা মোটেও ভাল লক্ষণ নয়। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিমকোর্টে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রায় শুনে মানুষ বিক্ষোভ শুরু করলে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও হয়েছে।
ড্রোন রফতানি করবে ভেনিজুয়েলা!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মনুষ্যবিহীন গোয়েন্দা বিমান বা ড্রোন তৈরি করেছে ভেনিজুয়েলা। প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ জানিয়েছেন, তার দেশ ইরান, রাশিয়া এবং চীনের সহায়তায় ড্রোন বানিয়েছে। খুব শিগগির ভেনিজুয়েলা এ ধরনের বিমান বাইরে রফতানি করাও শুরু করবে বলে জানান তিনি।
গত বুধবার সেনা বাহিনী ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে শ্যাভেজ বলেন, ‘আমরা তিনটি ড্রোন তৈরি করেছে। এ ধরনের বিমান আরো নির্মাণ করা হবে। তবে সামরিক কাজে নয় বরং বেসামরিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী করেই এগুলো বানানো হবে।’ এ ব্যাপারে ভেনিজুয়েলার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি কাভিমের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জুলিও মোরালেস জানিয়েছেন, পর্যবেক্ষণ টুল হিসেবে ডিজাইন করা হলেও এ বিমান কোনো অস্ত্র বহন করবে না। এটি একটানা ৯০ মিনিট আকাশে ভেসে থাকতে পারবে। তিন হাজার মিটার উচ্চতায় থেকে একশ’ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কার্যক্রম চালাতে পারবে এ বিমান। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সমালোচক শ্যাভেজ আর তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। পাকিস্তান এবং ইয়েমেনে মার্কিন ড্রোন ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। আর শ্যাভেজের বক্তব্যে সব সময় ইরানি প্রভাব খুঁজে ফেরে যুক্তরাষ্ট্র। তাই শ্যাভজের ড্রোন নির্মাণের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভেনিজুয়েলা আগেও বহু অতিরঞ্জিত দাবি করেছে, যেমনটি ইরান করে থাকে।’ তিনি বলেন, ‘ইরানের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক অবরোধ কারো দ্বারা ভাঙার ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। বিষয়টি আরো কতো দূর গড়ায় সে দিকে আমরা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি।’ ভেনিজুয়েলা যখন কোনো বিষয়ে সরব হয় তখন যুক্তরাষ্ট্র তাতে ইরানি সংশ্লিষ্ট খোঁজার চেষ্টা করে। আর এ কারণে ভেনিজুয়েলার দাবির ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে ইরানকেও টানা হচ্ছে। অবশ্য ড্রোন প্রকল্পে ইরানের সহায়তার কথা স্বীকার করেছে ভেনিজুয়েলা। একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ড্রোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবেই তৈরি ও সংযোজন করা হয়েছে। তবে এ কাজে যুক্ত প্রকৌশলীরা ইরান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ভেনিজুয়েলা সামরিক করাখানার দেওয়া তথ্য মতে, ড্রোন বিমানটির দৈর্ঘ্য চার মিটার আর প্রস্থ্য তিন মিটার। এটি আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় বিরামহীনভাবে স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করতে পারবে। এছাড়া রাতের বেলায় কাজ করতে সক্ষম করে গড়ে তুলতে সম্প্রতি এতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি কাভিম বর্তমানে রাশিয়ার সহায়তায় একে-১০৩ এর মতো বন্দুক, গ্রেনেড, বিস্ফোরক এবং পাইলট বিহীন বিমান তৈরি করছে। এছাড়া, সামরকি বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ ভেনিজুয়েলার সামরিক শক্তি বাড়াতে কয়েকটি দেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
কাতার বিশ্বকাপে বিন লাদেন পুত্র!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাতারে অনুষ্ঠেয় ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা উপলক্ষে চলমান বিপুল নির্মাণযজ্ঞে এবার অংশ নিতে যাচ্ছে আল কায়েদা প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ওসামা বিন লাদেনের পুত্রের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। স্পেনের বিখ্যাত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কপরোসা লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে বিন লাদেন পুত্র ওমর লাদেনের প্রতিষ্ঠান দোহায় নির্মিতব্য একটি মেট্রোরেল প্রকল্প নির্মাণের দরপত্রে অংশ নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। সম্প্রতি দুই কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বিসি গ্রুপ। এর ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক ওমর বিন লাদেনের মালিকানাধীন কোম্পানি কাতার বিন লাদেন গ্রুপ। কাতারের রাজধানী দোহা ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানের বাকি ৪৯ শতাংশের মালিকানা থাকবে কপরোসার হাতে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওমর বিন লাদেন বুধবার একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব তথ্য জানান। উল্লেখ্য,দুই বছর আগে কাতারের রাজধানী দোহায় কাতার বিন লাদেন নামের নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন ওসামা বিন লাদেন পুত্র ওমর বিন লাদেন। সাক্ষাতকারে ওমর বিন লাদেন বলেন,‘ দোহার মেট্রোরেল এবং অন্যান্য দ্রুতগতিসম্পন্ন রেল প্রকল্পে কাজ করতে আমরা আগ্রহী। পাশাপাশি হাইড্রলিক প্রকল্পসহ পানি শোধনাগার প্রকল্পেও কাজ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। হাইস্পিড ট্রেন প্রকল্পে করপোসার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে , এখন আমরা একে কাজে লাগাতে চাই। আশা করছি জুনের শেষ নাগাদ প্রকল্প প্রস্তাব দাখিল করতে পারবো।’ তিনি বলেন,‘প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাতারের হাতে সময় খুব কম। আগামী দশ বছরের মধ্যেই এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা এই নিমার্ণ যজ্ঞের সঙ্গে যত বেশি সম্ভব সম্পৃক্ত হতে চাই।’ ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক রাষ্ট্র কাতার প্রতিযোগিতা সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ব্যাপক নির্মাণযজ্ঞ হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য দোহা মেট্রো রেল প্রকল্প। এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে চারটি উচ্চগতিসম্পন্ন ট্রেনের লাইন, যেগুলো বিশ্বকাপের সময় স্টেডিয়ামের সঙ্গে রাজধানী দোহার সংযোগ স্থাপন করবে। ধারণা করা হচ্ছে প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু হলে এতে এক সঙ্গে ২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। চলতি মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানোর আহবান জানানো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
ভারতীয় ক্রিকেটার ছাড়াই শুরু হচ্ছে এসএলপিএল!
স্পোর্টস ডেস্ক
গত বছর শুরু হওয়ার কথা হলেও শেষপর্যন্ত মাঠে গড়ায়নি শ্রীলঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ (এসএলপিএল) টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা। সবকিছু সামলে এ বছর আগস্টে টর্নুামেন্ট শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করেছে আয়োজকরা। শুক্রবার এক বিবৃতিতে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সেক্রেটারি জানিয়েছেন, ভারতীয় ক্রিকেটাররা খেলুক আর না খেলুক প্রতিযোগিতা শুরু করবে তারা। এসএলসির সেক্রেটারি নিশান্থা রানাতুঙ্গা বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটাররা আসুক বা নাই আসুক আমরা টর্নুামেন্ট শুরু করতে যাচ্ছি।’ অবশ্য তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন না। এটা তারা এখনো অফিসিয়ালী ঘোষণা করেননি।’ সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছে, ব্যস্ত সূচির জন্য ভারতীয় ক্রিকেটাররা অংশ নিতে পারবে না লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে। এর জবাবে এমন মন্তব্য করেছেন নিশান্থা। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা। এর আগে আগস্টে অনুষ্ঠিত হবে লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ। গত বছর ভারতীয় ক্রিকেটাররা অংশ না নেওয়ায় কর্তৃপক্ষ স্থগিত করে প্রতিযোগিতা।
শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন জয়া আহসান
বিপুল হাসানঢালিউডের এই সময়ের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে এবার দেখা যাবে জয়া আহসানের বিপরীতে। ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী :  মেইড ফর ইচ আদার’ নামের একটি ছবিতে তারা জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন। নিটোল প্রেমের গল্প নিয়ে এ ছবিটি পরিচালনা করছেন সাফি উদ্দিন। ছবির কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য রচনায় রয়েছেন রুম্মান রশীদ খান। ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী :  মেইড ফর ইচ আদার’ ছবিটির শুভ মহরত অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৪ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে। শুভ মহরতে পরিচালক সাফি উদ্দিন বলেন, ছবির কাহিনীর প্রয়োজনেই শাকিব খান আর জয়া আহসানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ছবিটির গল্প থেকে শুরু করে নির্মাণশৈলীতেও থাকছে নতুনত্ব। এ ধরণের নিটোল প্রেমের ছবি আজকাল খুব কমই তৈরি হয়। আশা করছি, ছবিটির সর্বত্রই দর্শক নতুনত্বের স্বাদ পাবেন।intar
শুভ মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মহম্মদ হান্নান, চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন, কাজী হায়াৎ, এফডিসির এমডি পিযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মাতা ও অভিনেত্রী আফসানা মিমি প্রমুখ। শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে জয়া আহসান বলেন, আমাদের মুলধারার বানিজ্যিক চলচ্চিত্রে শাকিব খান নিজের যোগ্যতা দিয়েই আজকের পর্যায়ে এসেছেন। তার বিপরীত কাজ করাটা নিশ্চয়ই আমার জন্য হবে নতুন অভিজ্ঞতা। আমি এর আগে ‘গেরিলা’, ‘ডুবসাতার’, ‘ফিরে এসো বেহুলা’ প্রভৃতি ছবিতে কাজ করলেও এগুলোকে সেই অর্থে মূলধারার বানিজ্যিক ছবি বলা যায় না। এরই মধ্যে আমি ‘চোরাবালি’ ও কলকাতার ‘আবর্ত’ ছবির শুটিং শেষ করেছি। সত্যিকার অর্থে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী:  মেইড ফর ইচ আদার’-এর মাধ্যমেই মূলধারার বানিজ্যিক ছবিতে আমার অভিষেক হচ্ছে। ছবিটির গল্প আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। সব মিলিয়ে কাজ শুরুর আগেই আমার বিশ্বাস, এটি দর্শকদের কাছে বেশ উপভোগ্য হবে। জয়া আহসানের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করা প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে শাকিব খান বলেন, জয়া আহসানের অভিনয় আমার খুব পছন্দ। তিনি যখন যে চরিত্রে অভিনয় করেন, তা যেন জীবন্ত করে তুলতে পারেন। এরকম একজন দক্ষ অভিনেত্রীর সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পাওয়ায় আমার ভালো লাগছে। জয়া আহসানকে আমি মুলধারার বানিজ্যিক ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানাই। আশা করছি আমাদের এই জুটি সবধরণের দর্শকরাই ভালোভাবে গ্রহণ করবেন ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী:  মেইড ফর ইচ আদার’ ছবিটি নির্মিত হচ্ছে ফ্রেন্ডস ফিল্ম ইন্টারন্যাশানালের ব্যানারে। ছবিটি প্রযোজনায় রয়েছেন চন্দন সিনহা। ২০১৩ সালের ভালোবাসা দিবসে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আগামী মাসে প্রথম সপ্তাহে মালয়েশিয়াতে ছবিটির শুটিং শুরু হবে বলে প্রযোজানা সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য পরিচালক সাফি উদ্দিন পরিচালিত আগের ব্যবসাসফল ছবির মধ্যে রয়েছে ‘প্রেম মানে না বাঁধা’, ‘ও সাথীরে’, ‘তোমার জন্য মরতে পারি’ প্রভৃতি।
সবাই যেন পান বাবা হওয়ার স্বাদ : মাহফুজ আহমেদ
প্রীতি ওয়ারেছাজনপ্রিয় অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ স্বীকৃতি হিসেবে একজীবনে পেয়েছেন বহু পুরস্কার। তবে সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি পেয়েছেন মাত্র কদিন আগে। গত ৭ জুন বৃহস্পতিবার স্ত্রী ইশরাত জাহান কাদের মিমি’র গর্ভে জন্ম নেয় তার প্রথম কন্যা সন্তান আরাধ্য। প্রথমবার বাবা হওয়াটাই মাহফুজ আহমেদের কাছে এ যাবৎকালের সেরা পুরস্কার। এবারের বাবা দিবসে মাহফুজ আহমেদ প্রথম বাবা হওয়ার অনুভূতি শেয়ার করলেন বাংলানিউজের সাথে।
বাংলানিউজ : আপনি একজনের বাবা। এ অনুভূতিটা কেমন ?
মাহফুজ আহমেদ : এই অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নাই। যে কোন প্রবল অনুভূতিই মানুষ ভাষার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারে না, কিংবা পারে না তা হুবহু বর্ণনা করতে। এটা এমন এক অনুভূতি শুধু তিনিই বুঝবে যিনি বাবা হয়েছেন। এজন্য আমি আল্লাহ্র কাছে কামনা করব তিনি যেন প্রতিটা পুরুষকে একবারের জন্য হলেও বাবা হওয়ার তৌফিক দান করেন। এই অনন্য অনুভূতির স্বাদ দিতে মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন। আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি আরাধ্য। সারাজীবনে আমার যত ভাল অর্জন আছে আরাধ্যের কাছে সবকিছুই ম্লান। আমার মেয়ে, সে আমার মেয়ে। কি অবাক!
বাংলানিউজ : বিয়ের কতবছর পর বাবার কাছে আসল মেয়ে আরাধ্য?
মাহ্ফুজ আহমেদ : বিয়ের ১১ বছর পর। বিয়ের পরপরই আমার স্ত্রী অস্ট্রেলিয়া চলে যায় পড়ালেখা করতে। সেখানে এমএস এবং পিএইচডি করে দুই বছর আগে দেশে ফেরে। তার মানে এই নয় যে, আমরা এতদিন আরাধ্যকে আনতে অনিচ্ছুক ছিলাম। আমরা মনে প্রাণে চেয়েছি সে আসুক। আসল কথা হল, আল্লাহ্ যখন যার ওপর রহম করবে। আল্লাহ্ এতদিন ধরে বিমুখ থেকেছে আর যখন চেয়েছে তখনই ঘর আলো করে আরাধ্য এসেছে আমার কাছে।
বাংলানিউজ : সন্তানের মুখ দেখার পর প্রথম কোন কথা মনে হয়েছে?
মাহফুজ আহমেদ : আমি প্রথম থেকেই অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। সন্তান জন্মকালীন সময়ে বউকে কাটাছেঁড়া করা দেখে নিজের মায়ের কথা মনে পড়েছিল। কত কষ্ট করেই না আমার মা তার সন্তানদের ধারণ করেছিলেন, আমাকে নিজের ভেতর ধারণ করেছিলেন। আর যখন ডাক্তার মেয়েকে এনে আমাকে দেখালেন, আমার কোলে দিলেন তখন মনের ভেতর একটা ঘোর কাজ করছিল, মনে হচ্ছিল এটা এই গ্রহের কোন দৃশ্য না। পৃথিবীর ওপারে যদি বেহেশত্ থাকে, তবে ওই মৃহূর্তটা ছিল বেহেশ্তি। আমি অপলক সেই ছোট্ট মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার নিজের রক্ত দিয়ে গড়া আমার অস্তিত্বের অংশ ছোট্ট একটা গোলাপী পরী। সারাজীবনের জন্য একটি স্বপ্নময় মুহূর্ত হয়ে থাকবে মেয়েকে প্রথম দর্শন।
বাংলানিউজ : আপনার বাবার কথা জানতে চাই। আপনার জীবনে বাবার অনুপ্রেরণা কেমন ছিল?
মাহফুজ আহমেদ : বাবা এখন আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আমি কখনো তা অনুভব করি না। আমার বাবা আমার আদর্শ, আমার হিরো। আমার সবকাজের মধ্যেই আমি তাকে অনুভব করি। বাবা গ্রামের হাইস্কুলের একজন শিক্ষক ছিলেন। কত শত সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত একজন গ্রামের স্কুল শিক্ষক হয়েও আমার বাবা ছিলেন সবদিক থেকে আধুনিক মানুষ। আমাদের সব ভাইবোনদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। কিন্তু পেশা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন কিছু চাপিয়ে দেননি। তিনি শুধু আমাদের শিক্ষার ভিত মজবুত করতে পরিশ্রম করেছেন সারাজীবন, তারপরের সিদ্ধান্ত সন্তানদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। সন্তানদের নিজ নিজ স্বাধীনতার মূল্যায়ন করেছেন। আর স্বাধীনতা প্রাপ্তির কারণেই আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছি প্রত্যেকের ভালবাসার ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে।
বাংলানিউজ : আপনি নিজেও এখন বাবা। মেয়ে আরাধ্যের কাছে কেমন বাবা হতে চান?
মাহফুজ আহমেদ : আমার বাবা আমাকে সঠিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে যেভাবে আমার সারাজীবনের মূল্যবোধের গাঁথুনী শক্ত করে দিয়ে গেছেন, আমিও আমার আরাধ্যের জন্য তেমন হতে চাই। আমি ওর সারাজীবনের মূলধন শিক্ষা ওর ভেতরে দিয়ে যেতে চাই। তারপরে সে তার ইচ্ছে মতো স্বাধীন জীবন বেছে নেবে। আমি কখনো তার ইচ্ছেতে আপত্তি জানাবো না। প্রতিটা মানুষই তার পছন্দের বিষয় নিয়ে ভালোবাসার জায়গায় কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। আমি চাই আমার মেয়েও তার মতো করে ভাল থাকুক।
বাংলানিউজ : প্রতিদিন মেয়েকে একটু একটু করে বড় হওয়া দেখছেন। কেমন লাগছে?
মাহফুজ আহমেদ : জুনের ৭ তারিখে পৃথিবীতে এসেছে আরাধ্য। আজকে ১৭ তারিখে ওর ১০ দিন হল বয়স। চোখের সামনে বড় হওয়া টের পাচ্ছি। প্রতিদিনই চেহারা চেঞ্জ হচ্ছে। প্রতিটা দিন ওর মাঝে আমরা নিজেদের আবিস্কার করছি। একদিন আরাধ্যকে দেখতে আমার মত লাগে তো পরেরদিন ওর মায়ের মত, তারপরের দিন দেখি মুখটা আমার মায়ের মত। কি যে অলৌকিক অনুভূতি বোঝাতে পারব না! সত্যিই সবকিছু বলে বোঝানোর ক্ষমতা আল্লাহ্ মানুষকে দেননি। এই জন্যেই আমি সবসময়  আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন সবাইকে এই বেহেশতি সুখ অনুভব করার ভাগ্য দান করেন। মানুষ মনের দিক থেকে খুব বৈচিত্রপ্রিয়, কোন একটা জিনিসের দিকে খুব বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না,  একঘেয়েমি চলে আসে। অথচ সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে কারোরই কোন ক্লান্তি নেই। আমি সারাদিন সারারাত মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি। আল্লাহর কি অপার কৃপা। দিনকে দিন বড় হয়ে যাচ্ছে মেয়ে আমার।
বাংলানিউজ : বাবাকে বাবা দিবস উপলক্ষে কিছু উপহার দিয়েছেন বলে মনে পড়ে?
মাহফুজ আহমেদ : আমরা তো আসলেএই সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বড় হইনি। তাই বিভিন্ন সময় উপহার বাবাকে দিলেও বাবা দিবসকে উপলক্ষ করে কখনো কিছু কেনা হয়নি।
বাংলানিউজ : বাবা দিবসের আগে পেলেন শ্রেষ্ঠ উপহার মেয়ে আরাধ্যকে। মেয়ের কাছ থেকে কী ধরণের গিফট আশা করেন?
মাহফুজ আহমেদ : আমি অলরেডি গিফট পেয়ে গেছি। আরাধ্যের পক্ষ থেকে তার মা এসএমএস করেছে। আমার মেয়ে আরো একটা গিফ্ট আমাকে দিয়েছে সেটার কথা আপনাদের জানাবো না। আমি ভীষণ খুশি বাবা দিবসের স্পেশাল গিফট পেয়ে।
লালনসঙ্গীতে মুগ্ধ করলেন ফরিদা পারভীন
বিনোদন প্রতিবেদক

গুলশানে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১৫ জুন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাউল সম্রাজ্ঞি ফরিদা পারভিনের একক সঙ্গীতসন্ধ্যা। ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ সহ অন্যান্য অতিথি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান লালন সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন । তার কন্ঠে গাওয়া লালনসঙ্গীত দেশে ও বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানটি চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রায় দুই ঘন্টা লালনসঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখেন।
‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘মিলন হবে কত দিনে’, ‘পারে নিয়ে যাও আমায়’, ‘জাত গেল জাত গেল বলে’সহ মোট ২৪টি জনপ্রিয় লালন গীতি শ্রোতাদের গেয়ে শোনান। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। জন্ম নাটোরে হলেও বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুল সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে ফরিদা পারভীন লালনসঙ্গীতে তালিম নেন। লালনের গান গাওয়ার মাধ্যমে তিনি দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে ফরিদা পারভীন সঙ্গীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক অর্জন। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে। শিশুদের লালনসঙ্গীতে দীক্ষা দেওয়ার জন্যে ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি স্কুল গড়ে তোলেন। বাংলাদেশের বহুবার লালন সঙ্গীতে পারফর্ম করার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সময়ে ভারত, পাকিস্তান, জাপান, ইউকেম ইউএসএ, ফ্রান্স,রাশিয়া, কানাডা, জার্মানি, সুইডেন, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, মরোক্কো, তুর্কিতেও  পারফর্ম করেছেন।
 একই দিনে বাপ-বেটার জন্ম!
ইশানা ইশরাত

আমাদের টিভিনাটকের দুই প্রজন্মের জনপ্রিয় দুই অভিনেতা আলী যাকের ও ইরেশ যাকের। এই তারকা বাপ-বেটাকে নিশ্চয়ই নতুন করে পরিচয়  করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। অভিনয় ক্ষমতা আলী যাকেরের যেমন সহজাত, তেমনি উত্তরাধিকার সূত্রেই বোধহয় ইরেশ যাকের পেয়েছেন অভিনয় প্রতিভা।
মজার ব্যাপার হলো বাবা আলী যাকের আর ছেলে ইরেশ যাকেরের জন্মদিন একটাই, অর্থাৎ একই দিন বাপ-বেটার জন্ম। এ আবার হয় কীভাবে? জানতে হলে পড়তে হবে তাদের কথা। বাবার অভাব অনুভব করি তাকে হারানোর পর : আলী যাকের
বাবা দিবস সম্পর্কে জনপ্রিয় অভিনেতা আলী যাকের বললেন, বাবা দিবসের সংস্কৃতিটা আমাদের  নয়। এটা ইউরোপ-আমেরিকার জন্যই বিশেষভাবে প্রযোজ্য। কারণ সেখানে ছেলেমেয়েরা আঠারো বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। এমনকি দেখা-সাক্ষাৎও কমে যায়। তাই বাবার সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তাদের বিশেষ দিন প্রয়োজন হয়। যেদিন বাবার সঙ্গে দেখা করবে বা বাবার কথা স্মরণ করবে। আমাদের দেশে বাপ-বেটার বন্ধনটা এখনও ঐ পর্যায়ে পৌঁছায় নি। অনেক বয়স হলেও ছেলেমেয়েরা এখনো এদেশে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে, কিংবা ছুটি পেলে সোজা বাবা-মার কাছে চলে যায়। তাই আমাদের এখানে আলাদা করে বাবা দিবস বা মা দিবস পালনের প্রয়োজন দেখি না। আলী যাকেরের কাছে তার বাবার স্মৃতি জানতে চাইলে তিনি বললেন, বাবার গুরুত্ব টের পাওয়ার আগেই আমার বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যান। আমি আমার বাবাকে হারাই ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার আগেই। বাবাকে হারানোর পর অনুভব করি বাবার অভাব। সেই সময় তো ‘বাবা দিবস’-এর কোনো নাম গন্ধ ছিল না কোথাও।
এখন বাবা দিবসে আমার ছেলেমেয়েরা আমাকে শুভেচ্ছা জানায়। প্রায় পরিবারেই এখন বাবা দিবস পালন করা হয়। সব মিলিয়ে ভালোই লাগে।
প্রথম বাবা হওয়ার স্মৃতি জানিয়ে আলী যাকের বললেন, আমার প্রথম বাবা হওয়ার অভিজ্ঞতাটা ছিলো বেশ মজার। আমার প্রথম সন্তান ইরেশের জন্ম হয়েছিলো ১৯৭৬ সালের ৬ নভেম্বর। কাকতালীয়ভাবে আমার জন্মতারিখও হলো ৬ নভেম্বর! দু’জনেরই একই দিনে জন্মদিন হওয়াতে এই দিনটা আমার কাছে খুব প্রিয় একটা দিন। প্রথম বাবা হওয়ার মুহূর্তটা সত্যিই অসাধারণ! এই অনুভূতিটা অন্য সব অনুভূতির চেয়ে একেবারেই আলাদা।
সন্তানের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ? উত্তরে আলী যাকের বললেন, আমার মনে হয় বাবা আর সন্তানের সর্ম্পকটা যতোটা পারা যায় বন্ধুত্বপূর্ণ থাকাটাই ভালো। এতে বাবা যেমন সন্তানকে বুঝতে পারে, তেমনি সন্তানও বাবাকে বুঝতে পারে। জেনারেশন গ্যাপ থেকে এতে  দূরে থাকা সম্ভব।
বাবার উদারতার কারণেই আমাদের সম্পর্কটা সাবলীল : ইরেশ যাকের বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক প্রসঙ্গে ইরেশ যাকের বলেন, আমার কাছে বাবা ও সন্তানের সম্পর্কটা খুব পবিত্র আর সুন্দর সম্পর্ক বলে মনে হয়। বাবা যতোটা বন্ধুত্বপূর্ণ হন ততোই ভালো। কারণ অনেক সময় সন্তানের পক্ষে সংকোচ-দ্বিধা কাটিয়ে বাবার কাছে সহজ হওয়া কঠিন। কিন্তু বাবা নিজেই সম্পর্কটা যদি সহজ করার উদ্যোগ নেন, তাহলে সেটা বেশ সহজ। এক্ষেত্রে জেনারেশন গ্যাপ এড়ানো সম্ভব। বাবা দিবসটি কীভাবে উদযাপন করেন ? উত্তরে ইরেশ যাকের বলেন, প্রতি বাবা দিবসে আমি আর আমার বোন মিলে একসঙ্গে বাবাকে উইশ করি। বাবাকে সামান্য কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। অন্যদিনের চেয়ে এইদিন বাবার সঙ্গে একটু বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করি। বাবা আলী যাকেরের সঙ্গে নিজের সাবলীল সম্পর্কের কথা জানিয়ে ইরেশ বললেন, আমি ভীষণ সৌভাগ্যবান। কারণ বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুবই মধুর। আসলে বাবার উদারতার কারণেই আমাদের সম্পর্কটা সহজ-সরল ও সাবলীল হয়েছে। বাবার সঙ্গে আমি খুব খোলামেলা। সবকিছুই তার সঙ্গে শেয়ার করতে পারি। একই সঙ্গে বাবাকে আমি শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি। বাবা কখনোই আমার উপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেন নি। যে কোনো বিষয়ে আমার নেওয়া সিদ্ধান্তকে তিনি ভীষণ গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। ইরেশ যাকের আরো বললেন, আমি যখন অভিনয় করবো বলে ঠিক করি। বাবা আমাকে সেইভাবে উৎসাহ যেমন দেন নি, তেমনি আমাকে অনুৎসাহিতও করেন নি। বরং বলেছেন, অভিনয় করতে যদি তোমার ভালো লাগে, তুমি করতে পারো। অর্থাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটা তিনি আমার উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। পরে অবশ্য আমার অভিনয় দেখে উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, দেখতে হবে না ছেলেটা কার !
নকল মিস্টার বিনের আবির্ভাব!
প্রীতি ওয়ারেছা

মিস্টার বিন নামের মানুষটা প্রাপ্তবয়স্ক হলেও মনটা সেই শৈশবেই আটকে আছে। তার শিশুসুলভ আচরণ জর্জরিত হয় নির্মম বাস্তবতার মাঝে। মিস্টার বিন সিরিজ পছন্দ করেন না এমন বেরসিক মানুষ বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। শিশুসুলভ সরলতা আর আনাড়ি কার্যকলাপের কারণে মিস্টার বিন বিশ্বের দেশে দেশে পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। মিস্টার বিনকে মূখ্য চরিত্র করে এবার ইন্দোনেশিয়ায় নির্মিত হয়েছে ভৌতিক চলচ্চিত্র ‘বিন কেসুরুপান ডিপি’। কে-টু-কে প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হরর মুভি ‘বিন কেসুরুপান ডিপি’ সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় মুক্তি পাওয়ার পর দর্শক উপচে পড়ছে সেখানকার সিনেমা হলগুলোতে। মজার ব্যাপার হলো, মিস্টার বিনকে যিনি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন সেই বিখ্যাত কমেডিয়ান রোয়ান অ্যাটকিনসন এ ছবিটিতে অভিনয় করেন নি। এতে বিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন একজন অপরিচিত ব্রিটিশ অভিনেতা, যার চেহারার সঙ্গে খানিকটা মিল আছে রোয়ান অ্যাটকিনসনের। তাতে কী ? তাকে দেখতেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ইন্দোনেশিয়ার দর্শকেরা। এদিকে ইন্দোনেশিয়ায় ‘নকল মিস্টার বিন’ এর আবির্ভাবে আসল মিস্টার বিনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ জানানো হয়েছে সতর্ক বার্তা ‘নকল মিস্টার বিনের আবির্ভাব! সাবধান !!’ দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, কেউ যেন চলচ্চিত্রটি দেখে হতাশ না হন এই ভেবে যে, এটা মিস্টার বিন সিরিজের নিজস্ব প্রডাকশন। সবার প্রিয় রোয়ান অ্যাটকিনসনের সাথে এই ছবিটির কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে হরর মুভি ‘বিন কেসুরুপান ডিপি’-এর প্রডিউসার কেকে ধিরাজ এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘মিস্টার বিন নামে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানারকম সামগ্রী আছে। যেমন কফি, ফ্রুট, টয়, ইক্যুয়েমেন্ট ইত্যাদি। মালয়েশিয়ায় আছে মিস্টার বিন স্ন্যাকস্। তার মানে এই নয় যে, এসব সামগ্রীর মালিকানা মিস্টার বিন চরিত্রের অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসনের। আমরা শুধু ‘বিন’ শব্দটি সিনেমার নামকরণে ব্যবহার করেছি। ছবিটিকে কখনোই মূল মিস্টার বিনের প্রডাকশন বলে দাবী করিনি।’ ‘বিন কেসুরুপান ডিপি’ ছবিটিতে অভিনয় করছেন ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত অভিনেত্রী দেভি পারসিক। তার বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার মিডিয়া অভিযোগ করেছে, শুটিং চলার সময় অভিনেত্রী দেভি প্রচার করেছেন যে তার বিপরীতে মিস্টার বিন খ্যাত বিখ্যাত অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসন অভিনয় করেছেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তির পর দেখা গেলো, তিনি মিথ্যে প্রচার করেছেন। এ বিষয়ে দেভি আত্মপক্ষ সমর্থন করে  টুইটারে লিখেছেন, ‘এটা ছিল একটা বিজনেজ ট্রিকস্’। আপত্তির বিষয় হল, ‘বিন কেসুরুপান ডিপি’-এর প্রডিউসার তার ছবিতে বিন চরিত্রভিনেতার আসল নামটি গোপন রেখেছেন। তাকে পরিচিত করে তুলেছেন মিস্টার বিন নামেই। অভিনেত্রী দেভি পারসিক নিজেও বলেছেন,‘ আমি তার আসল নাম জানি না। আমি শুধু জানি উনি মিস্টার বিন।’
অবশেষে শাহরুখ-ক্যাটরিনা জুটির প্রথম ছবির নাম চূড়ান্ত
বিনোদন ডেস্ক

শাহরুখ ও ক্যাটরিনাকে নিয়ে নতুন ছবির শুটিং প্রায় শেষ করলেও ছবির নাম ঠিক করা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন বলিউডের পরিচালক ইয়াশ চোপড়া। ছবির শুটিং শুরুর প্রায় ৭ মাস পর ছবিটির নাম চুড়ান্ত করেছেন তিনি। ছবির নাম রাখা হয়েছে ‘ইয়ে কাহা আ গ্যায়ে হাম’।
শাহরুখ ও ক্যাটরিনা জুটির প্রথম ছবিটির নাম নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা কথা। লন্ডন প্রবাসী তরুণ ও তরুণী প্রেমের কাহিনী নিয়ে ছবিটি নির্মিত হওয়ায় অনেকেই ধারণা করেছিলেন ছবির নাম হবে ‘লন্ডন ইশক’। তবে এতো সাধারণ নাম ইয়াশ চোপড়ার পছন্দ হয় নি। তিনি তার নতুন ছবির জন্যে এমন একটি নাম খুঁজছিলেন যা শুনেই প্রেমের গভীরতার ছাপ ফুটে উঠে। অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর তিনি খুঁজে পান উপযুক্ত নাম। আর তা হল ইয়াশ চোপড়ার তুমুল জনপ্রিয় ছবি ‘ছিলছিলা’র একটি গানের প্রথম লাইন ‘ইয়ে কাহা আ গায়ে হাম’। প্রডাকশন হাউজ সূত্রে জানা যায়, ছবির নাম নিয়ে ইয়াশ চোপড়া ও আদিত্য চোপড়া অনেকদিন থেকেই চিন্তা করছেন। কিন্তু কোন নামই ছবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়নি তাদের। হঠাৎ অমিতাভ,জয়া ও রেখার অভিনীত সুপারহিট ছবি ’ছিলছিলা’-এর একটি গানের কথার সঙ্গে ছবির গল্পের মিল খুঁজে পান। তাই জনপ্রিয় এ গানের প্রথম লাইনটিকেই ছবির নাম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ইয়াশ রাজের রোমান্টিকধর্মী ছবি ‘ইয়ে কাহা আ গ্যায়ে হাম’ এর প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহরুখ খান ও ক্যাটরিনা কাইফ। ছবির বেশিরভাগ শুটিং শেষ করা হয়েছে লন্ডনে। চলতি বছর দিওয়ালি উপলক্ষে ছবিটি মুক্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালনক ইয়াশ চোপড়া।
বলিউডের সেলিব্রিটি বাবার যোগ্য উত্তরসূরি 
রাবেয়া বসরি সুমি
বাবা মানে  ‘বটবৃক্ষ’ , বাবা মানে প্রখর রোদেশীতল ছায়া। ছোট বেলা থেকেই সন্তানেরা বাবার ছায়ায় বড় হয়ে উঠে। বাবা কথা-চলাফেরা সবকিছুই প্রভাবিত করে সন্তানকে। বাবার পথ ধরেই অনেক সন্তান সাজায় তার ভবিষ্যৎ। বলিউডেও অব্যাহত আছে এই ধারা। এরকমই কিছু উদাহরণে আসুন চোখ রাখি। 
অমিতাভ-অভিষেক বচ্চন : বাবা বিগ-বি অমিতাভ বলিউডের এভারগ্রিন মেগাস্টার। এখনো অমিতাভের খ্যাতিতে ভাঁটা পড়েনি। ছেলে অভিষেকের খ্যাতি বাবার পর্যায়ে নেই। তবে বাপ-ছেলেতে ভীষণ ভালবাসা আছে একে অপরের প্রতি।
রাকেশ-হৃত্তিক রোশন : বাবা ছেলে যখনই এক সাথে হন তখনই কেঁপে উঠে বলিউডের ফিল্মডোম। কাহোনা প্যায়ার হে, কই মিল গেয়া কৃশ প্রভৃতি সাফল্য তারই প্রতিফলন।
ঋষি-রণবীর কাপুর : বাপ-ছেলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য দুজনই বলিউডের হার্টধ্রব তারকা। তরুণ ঋশির প্রতিফলনই যেন ছেলে রনবীরের মধ্যে। রোমান্টিক চরিত্রে বাবার মতোই ছেলেও অদ্বিতীয়।
bion-anil-sonomধর্মেন্দ্র-সানি-ববি দেউল : ‘ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা’ খ্যাত বাবা যেমন ধর্মেন্দ্র যেমন নিজেই নিজের প্রতিভায় আলোকিত। তেমনি তার দুই ছেলে সানি দেউল ও ববি দেউল আলো ছড়াচ্ছেন নিজের প্রতিভার দ্যুতিতে। দুই ছেলে ছাড়াও ধর্মেন্দ্র এশা ও এহানা নামের দুই কন্যা সন্তানের জনক। বাবা হিসেবে নিজেকে দারুণ সুখী ভাবেন এই তারকা।
রণধীর-কারিশমা-কারিনা : বলিউডের প্রভাবশালী কাপুর পরিবারের দুই রাজকন্যা কারিশমা-কারিনা। সেই রাজ কাপুর থেকে বলিউডে এই পরিবারের রাজত্ব শুরু। তার সন্তান রণধীরও এক সময়কার বলিউডের সফল নায়ক। রণধীরের দুই মেয়ে কারিশমা এবং কারিনা সেই পথ ধরেই বলিউডে আজকের প্রতিষ্ঠিত তারকা।  অনীল-সোনম কাপুর : বাবা অনীল কাপুর শুধু বলিউড নয়, হলিউডেও নিজের প্রতিভা দেখিয়েছেন। তবে নায়িকা হিসাবে খুব একটা ভাল করতে না পারলেও ফ্যাশন আইকন হিসাবে বলিউডে সুপরিচিত সোনম কাপুর।
শত্রুঘ্ন-সোনাক্ষী সিনহা : ‘শর্ট-গান’ খ্যাত সুপারস্টার শত্রুঘ্ন সিনহার কন্যা ‘দাবাং’ খ্যাত কন্যা সোনাক্ষী সিনহা। বাবা-মেয়ে দুজন অ্যাকশন ধর্মী ছবির জন্য সুপরিচিত। সোনাক্ষী তার বাবার উচ্চতায় উঠতে পারেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।



















দুঃখজনক হলেও সত্যি
শারমীনা ইসলাম
ফারজানা লক্ষ করলেন তার মেয়ে ১২ বছরের ঐন্দ্রিলা আজকাল আগের মতো উচ্ছ্বল নেই। সে প্রায়ই স্কুলে যেতে চায় না, বন্ধুদের সঙ্গে খেলায়ও মন নেই। পড়াশোনা ঠিক মতো করছে না। আর খাবার খেতেও অনিহা। কেমন যেন ভেতরে গুটিয়ে গেছে মেয়েটি। ফারজানা কয়েক দিন লক্ষ করে মেয়েকে কাছে ডেকে আদর করে জানতে চাইলেন,“কী হয়েছে, আমাকে খুলে বলো। কেউ কি তোমাকে কিছু বলেছে, মায়ের কাছে কিছু লুকাতে হয় না, আমাকে বলো, কয়েক দিন থেকে লক্ষ করছি তোমার সব কাজই কেমন যেন এলোমেলো”। ঐন্দ্রিলা মাকে জরিয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। ফারজানা ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি ভেতেরে ভেতরে মেয়ের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন। বললেন,“কী হয়েছে মা তোমার”?  ঐন্দ্রিলা কাঁদতে কাঁদতে মাকে জানালো,“স্কুলের দপ্তরি হানিফ স্কুলের একটি কক্ষে ডেকে খারাপ ব্যবহার (যৌন হয়রানি) করতে চেয়েছিলো। আমি চিৎকার করে দৌড়ে চলে এসেছি। হানিফ আঙ্কেল আমাকে নিষেধ করেছে এই কথা কাউকে জানাতে। মা আমি আর ওই স্কুলে যাবো না”। তার মেয়েটির সঙ্গে কী ঘটেছে ফারজানার আর বিষয়টি বুঝতে বাকি রইল না। সে মেয়েকে সান্তনা দিয়ে বুকে টেনে নিল। তাকে আশ্বস্ত করে বললেন,“তুমি ভয় পেয়ো না। আমি তোমার সাথে আছি মা। তোমার কোনো ক্ষতি হবে না”। রাতে ঐন্দ্রিলার বাবা রফিক সাহেব বাসায় এলে ফারজানা সব খুলে বললেন। রফিক আর ফারজানা পরের দিন সকালে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে, দপ্তরি হানিফকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে দিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের সমাজে কিছু হিংস্র হায়না রয়েছে যাদের থাবা থেকে সন্তান সমতুল্য শিশুও নিরাপদ নয়। আর তাই বিভিন্ন কারণে শিশু কিশোরদের মধ্যে কোনো জায়গা বা ব্যক্তির প্রতি ভয় তৈরি হতে পারে। এ বিষয়গুলো অহেতুক ভয় ভেবে এড়িয়ে না গিয়ে ধৈর্য ধরে তার মনের কথা শুনতে হবে। এসব ভয় শিশু-কিশোরদের সুষ্ঠু মানসিক স্বাস্থ্যবিকাশের পরিপন্থী। এধরনের পরিস্থিতি থেকে শিশুকে রক্ষা করতে প্রথম থেকেই সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। যেন সে কোনো কিছু আপনার কাছে না লুকায়। শিশু-কিশোরদের মধ্যে অতিরিক্ত ভয় দেখা দিলে মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন।



ব্রাইডাল অফার
আকাঙ্ক্ষাস গ্লামার ওয়ার্ল্ড দিচ্ছে ব্রাইডালের স্পেশাল অফার। বিয়ের জন্য বৌয়ের শাড়ি-গহনা কেনাটাকা যেমন জরুরি তেমনি বৌয়েরে বিভিন্ন ধরণের সাজটাও কম গুরুত্বপর্ণ নয়। গায়ে হলুদ, বৌভাত ও বিয়ে এই তিনটি অনুষ্ঠারে জন্য এ্যরোমা থেরাপিষ্ট জুলিয়া আজাদ অভিনব আকারে সাজিয়েছে এবারের ব্রাইডাল পাকেজ। এখানে অভিজ্ঞ বিউটিশিয়ানের তত্বাবধানে খুব যত্ন সহকারে বৌ সাজানো হয়। এবারের ব্রাইডাল অফারের মধ্যে থাকছে বৌ সাজের পূর্ববর্তী সাজগুলো যেমন, মেনিকিউর, প্যাডিকিউর, ফেসিয়াল ও হেয়ার স্পা একদম ফ্রি। অথবা বৌ-এর সঙ্গে আসা একজনকে দেয়া হবে ফ্রি সাজ। এ অফার চলবে পুরো জুন মাস জুড়ে। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ব্রাইডাল প্যাকেজের বুকিং নেয়া চলছে। উল্লেখ্য নারীদের প্রিয় আকাঙ্ক্ষাস গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে ত্বকের চিকিৎসা ও ব্রণের বিশেষ এ্যরোমা থেরাপি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। যোগাযোগ ০১৯৩৭ ৫১৩০০৬।
পরিবেশবান্ধব আবাসন নির্মাণে সিটিস্কেপ
আসিফুর রহমান ও ইশিতা ইশরাত
বিশ্বজুড়ে শোনা যাচ্ছে নতুন এক আন্দোলনের কথা ‘সবুজ জীবনযাত্রা’। অন্যভাবে বলতে গেলে পরিবেশ-বান্ধব আবাসনের কথা। একটু গভীরে যেতেই বুঝতে পারলাম, আন্দোলনটির শুরুর সময়টা আসলে শিকড় বিস্তার লাভ করে সেই ৭০-এর দশকেই। প্রথমে ব্যক্তি, তারপর সমষ্টিতে আবদ্ধ থাকলেও হাঁটি হাঁটি পা করে আজ সেই আন্দোলনটি পৌঁছে গেছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে এই সবুজ আন্দোলন এর সূচনা করে আবাসন প্রতিষ্ঠান সিটিস্কেপ ইন্টারন্যাশনাল। স্কুলে-স্কুলে গিয়ে তারা কথা বলছে শিশুদের সাথে- তাদের শেখাচ্ছে, কি করে গড়ে তোলা যায় একটা পরিবেশবান্ধব দেশ ও মানব-সম্পদ। যেমন “টু সেভ দ্য ওয়ার্ল্ড” স্লোগান নিয়ে বর্তমানে সিটিস্কেপ এর “আই অ্যাম গ্রিন” নামে পরিচালিত কার্যক্রম। অনেকটা নীরবেই এসব কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি ‘নির্মাণশিল্পে’ নিয়োজিত এবং এই মুহূর্তেই তাদের নিজস্ব ভবন তৈরির কাজ চলছে গুলশান ২-এ। স্থানীয় আইন অনুযায়ী ৫০ শতাংশ জায়গা ছেড়ে দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভবনটি। কাজে নিয়োজিত দলটির সর্বদা পরিধেয় হল নিরাপদ পোশাক ও ব্যবহার করা হয় সর্বোচ্চ মানের সর্বাধুনিক সব যন্ত্রপাতি। অথচ এই বিশাল কর্মযজ্ঞের সামান্যতম আভাস বাইরে নেই। এক টুকরো ইট বা সুরকি পরে থাকে না রাস্তা বা ফুটপাথে। এর কারণ সিটিস্কেপ শুধু লিড (লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন) সার্টিফায়েড একটি ভবনই নয়, বরং এটি অর্জন করতে চলেছে সর্বোচ্চ লিড সার্টিফিকেশন-লিড প্ল্যাটিনাম সার্টিফিকেট। ইউএসজিবিসির (ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল) পরিবেশ ও মানব সম্পদ এর প্রতি পাঁচটি আলাদা আলাদা ক্ষেত্র বিবেচনা করে তবেই সার্টিফিকেট দেয় করে লিড। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভবনটির অবস্থান, নির্মাণ সামগ্রী, পরিবেশের প্রতি ভবনটি কতটা যত্মশীল, ভবনটি পানির অপচয় রোধ করছে কি-না, ভবনের ভেতরকার পরিবেশ এবং ডিজাইন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা।
আর এভাবেই প্রতিনিয়ত ক্ষয় হওয়া এই শহরের ধুঁকতে থাকা পরিবেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সিটিস্কেপ ইন্টারন্যাশনাল। সারা বিশ্বের সবুজ বিপ্লবের একটি শক্তিশালী যোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশকে প্রমাণ করাই সিটিস্কেপ এর অঙ্গীকার।
সামার ড্রেস “ত্রয়ী” 
লাইফস্টাইল ডেস্ক
গ্রীষ্মের এই তপ্ত গরমে ক্রেতাসাধারনের জন্য নগরদোলা এবার নিয়ে এলো সামার সালোয়ার কামিজ “ত্রয়ী”। গরমে আরামের কথা বিবেচনা করে বেছে নেয়া হয়েছে হালকা রঙ। প্যাস্টেল শেডের তিন রঙ এর সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে “ত্রয়ী”। এইসব রঙ-এর মধ্যে আছে গোলাপী, সবুজ, হলুদ, বিভিন্ন হালকা শেড। ব্যবহার করা হয়েছে হালকা সূতি কাপড়। গরমে পোশাকের কাটিং ও প্যাটার্নে ভিন্নতা নিয়ে আসা হয়েছে। করা হয়েছে স্লিভলেস, সাথে স্লিভ থাকছে এবং আরও থাকছে লেগিংস ও শর্ট ওড়না। সালোয়ার কামিজের পাশাপাশি অন্য আকর্ষণ থাকছে ৫টি হালকা রঙ এর বিভিন্ন ডিজাইনের সূতি শাড়ি। এই শাড়িতে রয়েছে ব্লকের ব্যবহার। এছাড়াও পাওয়া যাবে মেয়েদের কুর্তি, ছেলেদের ফতুয়া ও বাচ্চাদের সব ধরনের আরামদায়ক পোশাক। নগরদোলার পোশাক সম্ভার থেকে দ্রুত বেছে নিন গরমের আরামদায়ক পোশাক। পাওয়া যাবে নগরদোলার সব শোরুমে।
রঙ মেলানো ফ্যাশন 
কামাল শাহরিয়ার
একটা সময় ছিলো তখন ফ্যাশনে খুব একটা চাকচিক্য ছিলনা। সাধারনভাবে একটু আলাদা আলাদা রঙের পোশাক বা প্রসাধনী দিয়ে নতুন ভাবে সাজুগুজু করতেই ভালোবাসত সবাই। একটু আলাদা বৈচিত্র থাকায় এটাকে ফ্যাশন বলা হতো। তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চলতে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন হচ্ছে ফ্যাশনের। বিশেষ বর্তমান সময়ে ফ্যাশন ধারণায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। অবশ্য এ ফ্যাশনের ধারণায় ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নয়; বরং যা পরতে ভালো লাগছে, যা দেখতে ভালো লাগছে তাই পরছে সবাই। তাই লাল শাড়ির সঙ্গে লাল টিপই পরতে হবে বা সোনালি ও রুপালি দুটি রঙ একসঙ্গে পরা যাবে না, এমন কথা এখন আর চলছে না। তবু এর মধ্যেও অনেকেই চান পোশাক ও সাজে রঙের একটা সামঞ্জস্য রাখতে। তাদের জন্যই কিছু পরামর্শ-
বর্তমান সময়ের অনেকেই ব্যাগ ও জুতার রঙ মেলানো নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। বিশেষ করে পোশাকের রঙের সাথে একই রঙের ব্যাগ হবে কি না, আবার জুতাটাও ব্যাগের রঙের সাথে নাকি পোশাকের রঙের সাথে মিলবে- এসব নিয়ে। আপনার জুতা ও ব্যাগের রঙ্গের মিল থাকতে হবে। জুতা যে রঙের ব্যাগও সেই একই রঙের ব্যবহার করাটা বেশ বৈচিত্রের মধ্যে পড়বে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাগের বা জুতার কিছু রঙের বিপরীতে কিছু রঙ থাকলে আরও আলাদা বৈচিত্র আনবে। যেমন ফিরোজা, পেস্ট, হালকা বেগুনি, হলুদ, কমলা এগুলোর সঙ্গে অফহোয়াইট রঙের ব্যাগ ও জুতা; আবার আকাশি, হালকা গোলাপি, গাঢ় নীল এসব রঙের সঙ্গে সাদা ব্যাগ ও জুতা ব্যবহার করাই ভালো হবে। এছাড়া সাদা-কালো কোনো পোশাকের সঙ্গে লাল রঙের ব্যাগ ও জুতা রাখাই ভালো হবে। কেননা লাল রঙটি সাদা বা কালো উভয়ের সাথে সুন্দর মিলে যাবে। কিš‘ কখনোই লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে লাল ব্যাগ ও জুতা ব্যবহার ভালো হবে না। লাল রঙের পোশাকে যদি সোনালির ছটা থাকে, সোনালি রঙের ব্যাগ ও জুতা অথবা লাল পোশাকের সঙ্গে কালো ব্যাগ ও জুতা ব্যবহার করতে পারেন।
জেন্টাল পার্কে কালারফুল সামার

গ্রীষ্মের এই সময়ে ক্যাজুয়াল ফ্যাশন ভক্তদের জন্য কালারফুল আউটফিট এনেছে ফ্যাশন ব্র্যাণ্ড জেন্টাল পার্ক। ক্যাজুয়াল শার্ট, টি শার্ট, জিন্স থেকে  শুরু করে অন্যান্য ফ্যাশন এক্সেসরিজও আছে এই লাইন আপে। মুলত তারুণ্য নির্ভর সামার কালার ও ফ্যাশন সেটআপ করা হয়েছে আধুনিক ডিজাইন ভাবনা থেকেই। সামারের কালারফুল এই পোশাক পাওয়া যাবে ঢাকা, বগুড়া, চট্টগ্রাম আর সিলেটের শোরুমে।
রিবন্ডিং চুল
নারীর সৌন্দর্য প্রকাশের অন্যতম উপাদান সুন্দর চুল। আজকাল ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা চুল রিবন্ডিং করছেন। তবে অনেকেই অভিযোগ করেন রিবন্ডিং করার পর চুল ঙেভে যাচ্ছে, রুক্ষ হয়ে পড়ে যাচ্ছে। আসলে এটা হচ্ছে সঠিক যত্ন না নেওয়ায় জন্য। সবারই চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তবে রিবন্ডিং করা চুলের চাই বাড়তি যত্ন।
যারা চুল রিবন্ডিং করে বিভিন্ন সমস্যায় রয়েছেন জেনে নিন কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন:
  • সপ্তাহে ২ দিন রাতে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ করুন
  • কিছুক্ষণ চুল আঁচড়ে নিন, এতে রক্ত সাঞ্চালন বাড়বে
  • শ্যাম্পু করার আগে ১ টি ডিম, ১ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ১ চা চামচ লেবুর রস এবং সমপরিমাণ মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে মাথার তালুতে লাগান। একঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন
  • গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে আধা ঘণ্টা চুল পেঁচিয়ে রেখে শ্যাম্পু করুন। চুলের রুক্ষভাব কমবে
  • রিবন্ডিং করা চুল খুলে রাখা হয় বলে দ্রুত ময়লা জমে। সপ্তাহে অন্তত তিনবার শ্যাম্পু করুন
  • সাধারন শ্যাম্পু ব্যবহারে চুল রুক্ষ হলে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
  • শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে
  • চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
এভাবে নিয়মিত যত্ন নিলে চুল হবে আরও সিল্কি এবং কাংঙ্খিত সুন্দর।
নো টাইট জিন্স 
কামরুন নাহার সুমি
আঁট-সাট, টাইট জিন্স প্যান্টগুলোকে এবার আলমিরা থেকে সরিয়ে ফেলার সময় এসেছে। একদল মার্কিন বিশেষজ্ঞ টাইট জিন্স প্যান্ট পরার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, টাইট জিন্স প্যান্ট পায়ের বিভিন্ন পেশীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবিসি নিউজের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ম্যারালজিয়া প্যারিসথেটিকা’ নামক এক রোগে আক্রান্ত কিছু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এ রোগের লক্ষণ হিসেবে পায়ের ওপরের অংশে টান টান ভাব, অশারতা ইত্যাদি ধরা পড়েছে। যার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞ দলটি ফ্যাশনের অন্যতম অনুষজ্ঞ টাইট জিন্স প্যান্টকে দায়ী করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বাল্টিমোর মেডিক্যাল সেন্টারের ডাক্তার ক্যারেন বোয়েল বলেন, এটি একটি ব্যাধি যার কারণে পায়ের ওপরের অংশের পেশীগুলো ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, টাইট জিন্স প্যান্টের সাথে উঁচু জুতা এ সমস্যাকে আরও তীব্রতর করে। কারণ উঁচু জুতাও পায়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি করে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জিন্স প্যান্ট পড়লে যদি কারও শরীরে কোনো রকমের চাপ অনূভুত হয় তবে তা অগ্রাহ্য করা মোটেও উচিৎ নয়। কারণ এতে স্থায়ী বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। টাইট জিন্স প্যান্টের বিপরীতে তিনি লেগিংস পরার পরামর্শ দিয়েছেন।


ত্বকের যত্ন প্রতিদিন
আমরা সবাই সুন্দর থাকতে চাই। এই তীব্র গরমে বাইরে গেলে রোদে পুড়ে ত্বক  কালো হয়, ত্বকে বলিরেখা পড়ে, ত্বকের অ্যালার্জি হতে পারে, ধুলাবালি জমে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়, ত্বক ঘেমে তেলতেলে হয়ে যায়, আরও কত সমস্যা। সৌন্দর্য ধরে রাখতে চাই নিয়মিত পরিচর্যা। ত্বকের যত্ন নেওয়া সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের তাপ থেকে ত্বক রক্ষা করতে প্রতিদিন সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। গরমের সময় আমাদের ত্বকের যত্নে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। আসুন বিস্তারিত জেনে নিই
সারা দিনের রূপচর্চা:
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা ব্যস্ত থাকি তবে ত্বক সুন্দর রাখতে এই ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় ত্বকের জন্য ছাড়তে হবে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠেই ত্বকের ধরন অনুযায়ী টোনার দিয়ে বাড়তি তেল পরিষ্কার করে নিন  
  • শসার রস, গোলাপজল ভালো প্রাকৃতিক টোনারের  কাজ করে
  • স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অফিস যেখানেই যান না কেন, বাইরে বের হওয়ার সময় সানব্লক ব্যবহার করুন
  • শুধু রোদের সময় নয়, বৃষ্টির দিনেও সানব্লক ক্রিম ব্যবহার করুন
  • রোদে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে সানব্লক ক্রিম মাখুন
  • সানব্লক ক্রিম লাগানোর ১৫ মিনিট পর প্রসাধনী ব্যবহার করুন
  • সানব্লক ক্রিম ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত রোদ থেকে ত্বকের সুরক্ষা করে
  • দিনে অবশ্যই পানি দিয়ে কয়েক বার ভলোভাবে তক্ব পরিষ্কার করুন
  • বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ব্যবহার করুন
  • ফুলহাতা পোশাক পরুন
  • সব সময় সবার পার্লারে গিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করার সময় না পেলে, বাসায় কাঁচা দুধ, শসার রস ও লেবুর রস এবং ময়দা দিয়ে মাস্ক তৈরি করে মুখ, হাত, পা ও গলায় মেখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন
  • ত্বকের ধরন অনুযায়ী মধু, লেবুর রস, ডিমের সাদা অংশ দিয়ে মাস্ক সপ্তাহে দুই দিন ত্বকে মেখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন
  • শসার রস ফ্রিজে রেখে আইস কিউব করেও রাখতে পারেন
  • রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ফেস টোনার এবং কটন দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।
এছাড়াও প্রচুর পানি খেতে হবে, ফল এবং ফলের রস নিয়মিত খান। আর এভাবে প্রতিদিন ত্বকের যত্নে কিছুটা সময় বরাদ্দ করুন। এতেই সবার চোখে হয়ে উঠবেন আরও সুন্দর।

গরমে করণীয়
তীব্র গরমে জনজীবন অস্থির। শরীর-মনের সঙ্গে ত্বকের অবস্থাও নাজুক। তবে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না, প্রয়োজন বাড়তি যত্ন এবং কিছু সচেতনতা। সারা বছরই  ত্বকের যত্ন নিতে হয়। তবে গরমকালে এটি বাধ্যতামূলক। কারণ এ সময় ঘাম বেশি হয়। বাতাসে ধুলা ময়লাও  বেশি থাকে। গরমে শরীরে অনিয়মের ফলে তৈরি হয় নানা সমস্যা। অনেকেই অলসতা করে এসব বিষয়ে উদাসীন থাকি। তার ফলাফল কিন্তু খুব ভালো হয় না। ফলে এই সময়টায় ত্বক এবং শরীর ঠিক রাখতে একটু সচেতন হতেই হবে।

এই গরমে কেমন করে সজিব, সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকা যায়, তার কিছু পরামর্শ:
  • সর্ব প্রথম ত্বক পরিস্কার রাখতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই
  • বাইরে থেকে ফিরে নিয়মিত ত্বক পরিস্কার করতে হবে
  • বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন
  • সপ্তাহে অত্যন্ত দুই দিন ঘরে তৈরি প্যাক লাগাতে হবে। এতে করে ত্বকের ভেতরের ময়লা দূর হয়ে ত্বকের উজ্বলতা ফিরে আসবে
  • ২ চামচ ময়দা, ১ চামচ মধু এবং পাকা কলার মাক্স লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
  • ভালো মানের ফেস ওয়াস ব্যবহার করুন
  • সপ্তাহে ২ থেকে তিন দিন স্ক্রাব লাগান। চালের গুড়া ভালো প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ করে
  • এছাড়াও পর্যাপ্ত পানি এবং পানীয় পান করতে হবে
  • টক-মিষ্টি-দই খেলে হজম ভালো হয়, ত্বকও ভালো থাকে
  • পেঁপে এবং বেলের সরবত খেতে পারেন
  • বাইরের ভাজা খাবারের পরিবর্তে চিড়া, মুড়ি খেতে পারেন
  • গরমে সহজপাচ্য ও হালকা মশলাযুক্ত খাবার খান
  • এসময় প্রচুর মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকেও লাগাতে পারেন তরমুজের রস এবং অন্যান্য ফল
  • দেহে ঘাম জমে ঘামাচি হতে পারে, দিনে দুইবার গোসল করুন
  • পোশাকের ক্ষেত্রে হালকা রঙের সূতি কাপড়ের প্রাধান্য দিন।
গরমে নিজের ও পরিবারের সবার যত্ন নিন সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন