জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চালসহ নিত্যপণ্যের দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পাইকারি
ও
খুচরা বাজারে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে
আরও একধাপ। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন
খরচ ট্রাকপ্রতি বেড়েছে
২
থেকে তিন হাজার টাকা। ফলে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে
সে হারে। রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। পরিবহন
খরচ বাড়ার কারণে প্রতিকেজি চাল তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রাজধানীর সর্ববৃহত্ পাইকারি চালের বাজার বাবুবাজার ও কদমতলী বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বাবুবাজারে পাইকারি চাল বিক্রেতা ও বসুন্ধরা রাইস এজেন্সির মালিক সালাউদ্দিন হোসেন
শান্ত বলেন, তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে
চালের দামও। কারণ ট্রাকপ্রতি পরিবহন খরচ বেড়েছে
দুই থেকে তিন হাজার টাকা। টাঙ্গাইলের
গোপালপুর থেকে ৩০০ বস্তা চাল আনতে ট্রাক প্রতি ভাড়া ছিলো ৯ হাজার টাকা। তেলের দাম বাড়ার কারণে তা এখন বেড়ে দঁাড়িয়েছে
১১
হাজার টাকা। এছাড়া রাজধানীতে কুষ্টিয়া থেকে ৩০০ বস্তা চালের পরিবহন
খরচ ছিলো ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দঁাড়িয়েছে
১৮
হাজারে। নওগাঁ, কুষ্টিয়া ও চঁাপাইনবাগঞ্জ থেকে নগরীতে
বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দামের তফাত্ ৫০০ টাকা; যা আগে ছিলো দুই থেকে তিনশ' টাকা। ৫০ কেজি ওজনের লাঙ্গল মার্কা স্পেশাল
মিনিকেট চালের বস্তা চঁাপাইনবাবগঞ্জে
বিক্রি হচ্ছে ১৮শ' টাকা অথচ বাবুবাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২৩শ' টাকা বস্তা। চালকল মালিকরা দাবি করছেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে বেশি দামে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে হয়। প্রতিমণ ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনতে হয় ৮ থেকে ১ হাজার টাকা দরে। এছাড়া দাম বাড়ার কারণে কৃষক ধান মজুদ করে রেখেছে বলেও দাবি করেন তারা। নওগাঁর গ্রামীণ অটো মিলের মালিক সুলতান মাহমুদ টেলিফোনে
জানান, তেলের দাম বাড়ার কারণে চাষিরা ধান মজুদ করে রেখেছেন।
ফলে ধানের আমদানি কম। মণপ্রতি ধান এখন এক থেকে দেড়শ' টাকা বেশি দামে নিতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাও আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার দোহাই দিয়ে আরও একধাপ বাড়াচ্ছে চালের দাম। ফলে চাল কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট ৪৫-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা তেলের দাম বাড়ার আগে বিক্রি
হয়েছে ৩৮-৪০ টাকা দরে। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকা দরে যা তেলের দাম বাড়ার আগে ছিল ৪০-৪২ টাকা। পারিজা
চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা দরে যা আগে ছিল ৩২ টাকা, স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায় যা তেলের দাম বাড়ার আগে ছিল ৩২ টাকা। পলাশি কঁাচাবাজারের
চাল বিক্রেতা ঈসমাইল হোসেন
বলেন, পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে আমাদের বেশি দামে চাল বিক্রি
করতে হচ্ছে। অথচ এখন মিনিকেট ও আমনের মেৌসুম,
আমাদের এখন কম দামে চাল বিক্রির কথা।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় শুধু চাল নয় অন্যান্য
পণ্যের ওপরও এর প্রভাব পড়ছে টর্নেডোর মতো। সবজি ও মাছের বাজারে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা।
শীতকালে সবজির দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু বিক্রেতারা বলছেন পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায়
আমাদের বেশি দামে সবজি বিক্রি
করতে হচ্ছে। রাজধানীতে প্রতিকেজি মরিচ ৮০, শসা ৪০-৪৫, শিম ৪০, বিচি শিম ৫০, পঁেপে ২৫, গাজর ৩০, সাদা মুলা ৩০, লাল মুলা ৩৫, বেগুন ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি বঁাধাকপি ৩৫, ফুলকপি ৪০ ও লাউ ৭০ টাকা দরে বিক্রি
হচ্ছে । বছরের শুরুতে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কিছুদিন পর তা কমতে শুরু করে। বর্তমানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে আবার বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি
হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ২৮০ টাকা ও খাসির মাংস ৪০০-৪৩০ টাকা দরে বিক্রি
হচ্ছে। ডিমের দামও চড়া। প্রতিহালি দেশি মুরগির
ডিম ৪৫, হঁাস ৪৪, ফার্মের
সাদা ডিম ৩৮ ও লাল ডিম ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন